শনিবার হেডিংলিতে টসে জিতে আগে ব্যাট করে ২২৭ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে আফগানিস্তান। কিন্তু অধিনায়ক গুলবাদিন নাইবের একাধিক ভুল সিদ্ধান্তের সুফল পায় সরফরাজ আহমেদের দল।
আফগান স্পিনারদের কিপটে বোলিংয়ে পাকিস্তান যখন জয়টাকে মরীচিকার মতো দেখছিল, তখন শিনোয়ারি, রশিদ ও মুজিবদের মোট ৫ ওভার বাকি থাকলেও আগের ৮ ওভারে ৪৭ রান দেয়া গুলবদিন বল হাতে আসলেন ৪৬তম ওভারে। লাইন-লেংথের বালাই না করে ফুল টস আর বাজে স্লোয়ারে দেন ১৮ রান।
কিন্তু আফগান অধিনায়কের ভুল এখানেই শেষ নয়। শেষ ওভারেও লড়াই করতে পারতেন তারা, কারণ জয় থেকে তখনও ৬ রান দূরে ছিল পাকিস্তান। কিন্তু অন্য কাউকে বল না দিয়ে আবারও বল হাতে নিলেন গুলবাদিন। তবে তার বাজে বোলিংয়েও চাপে থাকা পাকিস্তান রান তুলতে পারছিলেন না। উল্টো তৃতীয় বলে সহজ রান আউট মিস করায় পাকিস্তান তুলে নেয় মূল্যবান ২ রান।
এসব দেখে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুলবদিনের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ তুলেছেন।
শুধু আফগান অধিনায়ক নয়, দুই আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তগুলোও ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে রিভিউ নিয়ে যে আম্পায়েরর ভুলকে ধরিয়ে দেবেন সে সুযোগও মাত্র ১০ ওভারের মধ্যে নষ্ট করেছেন সেই গুলবাদিন নাইব।
মুজিবের করা বল আগের ম্যাচের শতক করা বাবর আজমের প্যাডে লেগেছিল। কিন্তু উইকেটরক্ষক আলীখিল ও বোলার মুজিব আবেদন নিয়ে অতটা চিন্তিত না থাকলেও আচমকা রিভিউ নিয়ে নেন গুলবাদিন। এর ফলে শুরুতেই নষ্ট হয়ে যায় রিভিউয়ের পথ।
যে কারণে পরবর্তীতে হারিস সোহেল ও ম্যাচ সেরা ইমাদ ওয়াসিমরা ইনিংসের শুরুতেই আউট হলেও আম্পাোরের ভুলে জীবন পেয়ে যান। প্রথমবার গুলবাদিন নিজেই উইকেট বঞ্চিত হন। হারিসের ব্যাটের ছোঁয়া নিয়ে উইকেটরক্ষকের কাছে বল গিয়েছিল, কিন্তু আম্পায়র নাইজেল লং আউট দেননি। পরে রিপ্লেতে স্নিকো মিটারে আউট ধরা পড়েছিল।
অপরদিকে পাকিস্তানের জয়ের নায়ক ইমাদ আউট হয়ে যেতে পারতেন মাত্র ১ রানেই। রশিদের করা বল প্যাডে লাগার পরে জড়ালো আবেদনেও আউট দেননি আম্পায়ার। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল ওটা নিশ্চিত আউট ছিল। সেই ইমাদই পরবর্তীতে দলকে জিতিয়ে ফেরেন। তাই পাকিস্তানের জয়ে আম্পায়ারদেরও অবদান রয়েছে বলাই যায়।
কষ্টার্জিত এ জয়ের মাধ্যমে ৮ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে এক ম্যাচ কম খেলা ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে উঠে এসেছে পাকিস্তান। অপরদিকে এখন পর্যন্ত কোনো জয়ের দেখা না পাওয়া আফগানিস্নাতেনর পয়েন্টের খাতা শূন্যই রয়ে গেল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২২৭/৯ (রহমত ৩৫, গুলবাদিন ১৫, শাহিদি ০, ইকরাম ২৪, আসগর ৪২, নবি ১৬, নাজিবউল্লাহ ৪২, সামিউল্লাহ ১৯*, রশিদ ৮, হামিদ ১, মুজিব ৭*; ওয়াসিম ১০-০-৪৮-২, আমির ১০-১-৪১-০, আফ্রিদি ১০-০-৪৭-৪, হাফিজ ২-০-১০-০, ওয়াহাব ৮-০-২৯-২, শাদাব ১০-০-৪৪-১)।
পাকিস্তান: ৪৯.৪ ওভারে ২৩০/৭ (ফখর ০, ইমাম ৩৬, বাবর ৪৫, হাফিজ ১৯, হারিস ২৭, সরফরাজ ১৮, ওয়াসিম ৪৯*, শাদাব ১১, ওয়াহাব ১৫*; মুজিব ১০-১-৩৪-২, হামিদ ২-০-১৩-০, গুলবাদিন ৯.৪-০-৭৩-০, নবি ১০-০-২৩-২, রশিদ ১০-০-৫০-১, সামিউল্লাহ ৮-০-৩২-০)।