তবে আর্থিক সমস্যা থাকায় এবং ব্যক্তিগত স্পন্সর না পাওয়ায় সান্ত্বনা রানীর বুলগেরিয়া যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুলগেরিয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ১৮ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইটিএ) মহাসচিব সোলায়মান শিকদারের কাছে জমা দিতে হবে। বিমানভাড়া, থাকা–খাওয়া, অংশগ্রহণ ফি, ভিসা ফি, ভিসা সংগ্রহ খরচ ও পোশাক–পরিচ্ছদের খরচ বাবদ এই টাকা জমা দিতে হবে। ২৩ আগস্ট বাংলাদেশ দলের সদস্যদের বুলগেরিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে।
সান্ত্বনা রানী রায় জেলা লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের হরিদাস গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র রায় ও মা যমুনা রানীর মেয়ে। দরিদ্র কৃষক পরিবার মেয়ে সান্ত্বনা রানী রায় তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে এলএলবি শেষ করছেন। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন লালমনিরহাট জেলার প্রথম নারী খেলোয়াড় সান্ত্বনা রানী রায়।
দেশে ও বিদেশে অনুষ্ঠিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত আটটি স্বর্ণ, দুটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৪ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সপ্তম এশিয়ান তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক, ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত ২০তম বিশ্ব তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক এবং চলতি বছর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ওপেন সাউথ এশিয়ান তায়কোয়ান্দো আইটিএফ চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক।
সান্ত্বনা রানীর বুলগেরিয়ায় যেতে দরকার ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর মধ্যে তিনি জোগাড় করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ১৮ আগস্টের মধ্যে বাকি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিতে না পারলে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পদকজয়ী মার্শাল আর্ট কন্যা।
তিনি বলেন, ‘আমার দরিদ্র পিতা সুবাস চন্দ্র রায়ের পক্ষে কোনো রকম আর্থিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব নয়। আমার সঞ্চিত ৪০ হাজার টাকা আছে। এছাড়া আর্থিক সাহায্য প্রদানের আবেদনে সাড়া দিয়ে রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও লালমনিরহাট তায়কোয়ান্দো অ্যাসোসিয়েশনের অনুকূলে ৮০ হাজার টাকার একটি চেক আমাকে প্রদান করেছেন। আমার দরকার ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু অবশিষ্ট টাকা জোগাড় করার কোনো উপায় দেখছি না।’
বাংলাদেশ আইটিএফ তায়কোয়ান্দো অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল সোলায়মান শিকদার বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা অন্য কোনো সংগঠনের কাছ থেকে আবেদন করেও আমরা বিদেশে খেলতে যাওয়ার স্পন্সর পাই না।’