জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার ভোরে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে সিলেট চিড়িয়াখানায় দুটি জেব্রাসহ ৯ প্রজাতির প্রাণী নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে দুটি জেব্রা ছাড়াও রয়েছে- ২টি হরিণ, ১২টি ময়ূর, গোল্ডেন ফিজেন্ট পাখি একটি, সিলভার ফিজেন্ট পাখি তিনটি, ম্যাকাও পাখি তিনটি, আফ্রিকান গ্রে পেরট চারটি, সান কানিউর চারটি, ছোট লাভ বার্ড ৩০টি ও অজগর একটি।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘লোকবলের অভাবে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘদিন পরও এখানে প্রাণী আনা সম্ভব হয়নি। গত মঙ্গলবার ৫৮টি প্রাণী নিয়ে আসা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরও দুটি হরিণ আসবে। বাঘ আনা হবে ডিসেম্বরে।’
তিনি বলেন, শুক্রবার থেকে টিকিটের মাধ্যমে দর্শনার্থী প্রবেশ শুরু হবে। নামমাত্র প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করতে ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে।
সিলেট বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে নগরীর টিলাগড় এলাকায় টিলাগড় ইকো পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাহাড় টিলা বেষ্টিত ও ঘন সবুজে আচ্ছাদিত ১১২ একর আয়তনের এই ইকোপার্ক তৈরিতে প্রথম পর্যায়ে ব্যয় হয় এক কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ টাকা। ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সিলেটে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। টিলাগড়ের ওই ইকোপার্কে চিড়িয়াখানা নির্মাণে ওই বছর নয় কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দও দেয়া হয়। ওই প্রকল্পের কাজ তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। তবে সংশ্লিষ্টরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ে বরাদ্দের প্রায় ১০ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ছয় কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাকি টাকা ফিরিয়ে নেয় অর্থ মন্ত্রনালয়।
২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটি সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের কাজ শুরুর দিকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে বণ্যপ্রাণী কেনা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে- বাঘ, জেব্রা, ময়ূর, গোল্ডেন ফিগল প্রভৃতি। প্রায় ছয় বছর ধরে এগুলো গাজীপুরে সাফারি পার্কে ছিল। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র পুরো প্রস্তুত না হওয়ায় এগুলো সিলেটে আনা যায়নি।
সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পের মেয়াদকালেই টিলাগড় ইকোপার্কে প্রাণীদের জন্য ১১টি শেড নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ময়ূর শেড, গন্ডার শেড, হরিণ শেড, হাতি শেড প্রভৃতি।
শেডে থাকা ও বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর জন্য পুণর্বাসন কেন্দ্র এবং হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে।