একনেক চেয়ারপার্সন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরের প্রথম একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ৭৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।’
তিনি জানান, মোট ব্যয়ের মধ্যে ৬ হাজার ৪১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা সরকারি তহবিল, ১৮৯ কোটি ৬ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল ও বাকি অর্থ প্রকল্প সাহায্য হিসেবে আসবে।
অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে ১০টি নতুন এবং বাকিগুলো সংশোধিত।
এমএ মান্নান বলেন, বৈঠকে ব্যয় না বাড়িয়ে ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব থ্রি হ্যান্ডলুম সার্ভিস সেন্টারস ইন ডিফারেন্ট লুম ইনটেনসিভ এরিয়া (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
১ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্প বিষয়ে মন্ত্রী জানান, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় আনোয়ারা, পটিয়া, হাটহাজারী ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ করা হবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে আবদুল মান্নান বলেন, মহাসড়কে ধীর গতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, পর্যায়ক্রমে সব জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সড়ক প্রশস্ত করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি না নেয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান যে সোনাদিয়া দ্বীপে প্রাকৃতিক পার্ক এবং কক্সবাজারে সি অ্যাকুরিয়াম নির্মাণ করা হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া বাকি প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২ হাজার ৫২ কোটি ৯৫ লাখ টাকায় সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন (প্রথম সংশোধিত), ৯৮৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়), ৭০৭ কোটি ৩২ লাখ টাকায় বগুড়া (জাহাঙ্গীরাবাদ)-নাটোর জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫০৩) যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, ৬৯৬ কোটি ৩১ লাখ টাকায় ঢাকা (মিরপুর)-উথুলী-পাটুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের (এন-৫) নবীনগর হতে নয়ারহাট ও পাটুরিয়া ঘাট এলাকা প্রশস্তকরণসহ আমিন বাজার হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এলাকা ডেডিকেটেড লেনসহ সার্ভিস লেন ও বাস-বে নির্মাণ ও ৬০৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকায় নদী তীর সংরক্ষণের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ভাঙন হতে ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলা সদর সংরক্ষণ (প্রথম সংশোধিত)।
আরও অনুমোদন পেয়েছে- ৩১১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএডিসির বিদ্যমান সার গুদামসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ, পুনর্বাসন এবং নতুন গুদাম নির্মাণের মাধ্যমে সার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম জোরদারকরণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প, ২৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে বিভিন্ন এলাকায় সড়কবাতি ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রকল্প ও ২২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরণ এবং ১৩টি জেলা কার্যালয় স্থাপন প্রকল্প।
বাকি চারটি প্রকল্প হলো- ২২৫ কোটি ৬ লাখ টাকায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনস্থ জরাজীর্ণ ডাকঘরসমূহের সংস্কার/পুনর্বাসন (দ্বিতীয় পর্যায়)(প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প, ১২৬ কোটি ৫২ লাখ টাকায় কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প, ১২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯টি সেতু নির্মাণ ও ৬১ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় লাকসাম (বিনয়ঘর)-বাইয়ারা বাজার-ওমরগঞ্জ-নাঙ্গলকোট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ।