হাসপাতালটি স্থানীয় জনগণ ও মিয়ানমারের রাখাইন থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া মানুষদের উন্নত চিকিৎসার প্রধান ভরসাস্থল।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী জরুরি স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সংস্কার কাজে অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন করে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইসিআরসি কক্সবাজার অফিসের প্রধান সাবরিনা ডিনংক বলেন, ‘এটা শুধু আন্তর্জাতিক মানের বিষয় নয়, এটা জীবন বাঁচানোর জন্য। যদি রোগীদের সঠিক সময়ে চিকিৎসা দেয়া যায় তাহলে তাদের বাঁচানোর হার অনেক বেশি বাড়ানো সম্ভব।’
তার মতে, জরুরি বিভাগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম সবার মানা উচিত। যেমন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সবার আগে চিকিৎসা দেয়া এবং রোগীদের সাথে পরিবারের একজনের বেশি সদস্য না থাকা। তাহলেই জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা রোগীদের ভালোভাবে সেবা দিতে পারবেন।
আইসিআরসি বাংলাদেশের হেড অফ ডেলিগেশন জেরার্ড পেট্রিগনেট, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহিউদ্দিন, আইসিআরসি কক্সবাজার অফিসের হসপিটাল প্রজেক্ট ম্যানেজার রিচার্ড উইলিয়ম কুকসহ আইসিআরসি এবং সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আইসিআরসি সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
জরুরি বিভাগকে নতুনভাবে সংস্কারের অংশ হিসেবে আইসিআরসি অবকাঠামো পুনর্বাসন এবং আসবাবপত্র ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম সহায়তা হিসেবে দিয়েছে।
পাশাপাশি জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, যেন রোগীরা সর্বোচ্চ সেবা পেতে পারেন।
আইসিআরসি আরও জানায়, যেকোনো মানব সৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি ব্যাপকভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটে সে ক্ষেত্রে রেফারেল সিস্টেম ব্যবস্থাপনার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করবে তারা।
সদর হাসপাতালের এ জরুরি বিভাগকে সহায়তা দিতে ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট আইসিআরসি এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তিন বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল।
রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা জনগোষ্ঠীর কারণে উখিয়া ও টেকনাফে স্বাস্থ্যসেবার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। তা মোকাবিলায় আইসিআরসি ও বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (বিডিআরসিএস) বিভিন্ন শিবির ও সীমান্ত এলাকা তুমব্রুর কোনারপাড়ায় ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ এ সেবা পেয়েছেন।
সেই সাথে ২০১৪ সাল থেকে আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস উখিয়া ও টেকনাফে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল নিয়োগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা সরঞ্জামসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছে।