৩৬০ জন আউলিয়ার শিরোমনি শাহ জালাল (র:) এর সফর সঙ্গী হযরত শাহ শামছুদ্দিন বুখারী (র:) ১২২৫ খ্রিস্টাব্দে তিনজন সঙ্গী শাহ নাসির, শাহ কবীর ও শাহ কলন্দরকে নিয়ে কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাই অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তিনিই এ অঞ্চলের প্রথম ইসলাম ধর্মের প্রচারক। এছাড়া তিনি ছিলেন বার আউলিয়ার একজন।
প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ মঙ্গলবার কুড়িখাই শাহ শামছুদ্দিন বুখারী (র:) মাজারে সপ্তাহব্যাপী মেলা শুরু হয়। মেলা শুরুর আগের দিন সোমবার দিবাগত রাতে মূলত যিকির আজগার ও মিলাদের মাধ্যমে শামছুদ্দিন বুখারী (র:) ওরস হয়। পরবর্তীতে এক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী মেলা বসে।
এতে কাঠের জিনিসপত্র, মিষ্টি, খেলনা, মিঠাই, মন্ডা, মুড়ি ও বিন্নি খৈ এর বিরাট হাট বসে। এছাড়াও সাকার্স, পুতুল নাচ, নাগরদোলারসহ আয়োজন করা হয় বিভিন্ন বিনোদনের। মেলা উপলক্ষে এ অঞ্চলের জামাইদের বিশেষভাবে দাওয়াত দেয়া হয় এবং মেলার প্রধান আকর্ষণ মাছের হাট।
লোক বিশ্বাস মতে কুড়িখাই মেলায় বোয়াল মাছ খেলে সে বছরের জন্য শনির দশা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। মেলাকে উপলক্ষ করে প্রত্যেক বাড়িতে জামাইদের দাওয়াতের প্রচলন রয়েছে। মেলার বিশেষ আকর্ষণ বউ মেলা, যা শেষ দুদিন বসে। শুধুমাত্র এলাকার বিভিন্ন বয়সের মহিলারা মেলায় এসে কেনাকাটা করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় লক্ষাধিক লোকের আগমন ঘটে। এখানে মাজার শরীফ, মসজিদ, পুকুর, প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিশ্রামাগারসহ পাগল ফকিরদের আবাসিক স্থান রয়েছে।
মেলা উপলক্ষে ইতোমধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কটিয়াদী উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. মো. মোস্তাকুর রহমান জানান, মেলা এ অঞ্চলের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। ফলে মেলাকে ঘিরে বাংলার যে লোক ঐতিহ্য তা আরও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেলার নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. আক্তারুননেছা বলেন, হযরত শাহ শামছুদ্দিন বুখারী (র:) আউলিয়ার ওরস উপলক্ষে কুড়িখাই এর মেলা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এ অঞ্চলের লোকজনের মিলনমেলা। ফলে এর ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে।