তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, দুর্নীতির অভিযোগে অনেক প্রভাবশালীকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পদ-পদবি কিংবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাজ হচ্ছে না।’
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বেসরকারি খাতের দুর্নীতি বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ভূমিকা নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও সিএমআই-এর সিনিয়র গবেষক ইনজি আমুনডেসের সাথে মতবিনিময়ে ইকবাল মাহমুদ এ কথা বলেন।
দুদকের সীমাবদ্ধতা নিয়ে তিনি বলেন, কমিশনের সক্ষমতায় কিছুটা ঘাটতি হয়তো রয়েছে। তা অতিক্রমের জন্য কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তাছাড়া, কেউ দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে- এ বার্তা দিতে কমিশন সফল হয়েছে।
টিআইবি প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সার্বিকভাবে টিআইবি ভালো কাজ করছে। তারা গবেষণার মাধ্যমে দুর্নীতির উৎস শনাক্তকরণসহ তা নিরসনে কিছু কাজ করছে।
টিআইবির সাথে দুদকের সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের সাথে কমিশনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান আছে।
দুদক প্রধানের মতে, টিআইবি শিক্ষা বিশেষ করে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষায় যেসব মেগা কর্মসূচি রয়েছে সেগুলোর প্রান্তিক পর্যায়ের কার্যক্রমের ওপর গবেষণা করতে পারে। এতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে সরকারের নীতি-নির্ধারকরা যেমন সচেতন হবেন, তেমনি তৃণমূল পর্যায়েও দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা বাড়বে।
‘একই ভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও টিআইবি গবেষণা করলে এ ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা দেয়ার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো যেমন চিহ্নিত করতে সহজ হবে, তেমনি সমাধানে গবেষণালব্ধ সুপারিশও পাওয়া যেতে পারে। সার্বিকভাবে এ ক্ষেত্রে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে টিআইবির। তাদের নির্মোহ থেকে এসব গবেষণা সম্পন্ন করতে হবে,’ যোগ করেন দুদক প্রধান।
বেসরকারি খাতের দুর্নীতি সম্পর্কে তিনি জানান, সরাসরি এসব দুর্নীতি দুদকের আওতায় নেই। তবে সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে দুর্নীতির ঘটনা যখন ঘটে তখন দুদকের হস্তক্ষেপ করার আইনি সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং দুদক এ দায়িত্ব পালনও করছে।
বেসরকারি খাতে টিআইবির ভূমিকা সম্পর্কে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে সুশাসনের জন্য অনেক আইন রয়েছে, তবে এসবের প্রয়োগে সমস্যা আছে। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ কেন হচ্ছে না? এর মূলে রয়েছে এসব আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া এবং দুর্নীতি। এ ক্ষেত্রে টিআইবি এবং সিপিডির মতো প্রতিষ্ঠান গবেষণার মাধ্যমে দুর্নীতি-অনিয়মের কারণ, ধরন ও ব্যাপকতা শনাক্ত করে তা প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারে।’