তিনি বলেন, ‘পণ্যের মান এবং পরিমাপ সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে বিএসটিআইকে আপোসহীন হতে হবে। জাতীয় মান নির্ধারণী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পণ্য ও সেবার গুণগত মান সুরক্ষা বিএসটিআই এর পবিত্র দায়িত্ব। সম্প্রতি বিএসটিআই এর কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে। বিএসটিআই এর কর্মকাণ্ডের ফলে মানুষের বিবেক নাড়া দিয়েছে। ম্যানেজ করে চলার দিন শেষ। সব ধরনের ভয়-ভীতি, প্রলোভন ও ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
সোমবার বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস-২০১৯ উপলক্ষে তেজগাঁস্থ বিএসটিআই মিলনায়তনে আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক পরিমাপ পদ্ধতির একক মৌলিকভাবে উত্তম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিএসটিআই মহাপরিচালক মো. মুয়াজ্জেম হোসাইন। সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএসটিআই’র পরিচালক (মেট্রোলজি) মো. আনোয়ার হোসেন মোল্লা।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই বিএসটিআইকে একটি শক্তিশালী ও আন্তর্জাতিকমানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী শিল্প মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বিএসটিআই এর সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির টেস্টিং রিপোর্ট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করতে ইতিমধ্যে বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, পণ্যের মান এবং ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিত করতে হলে জেলা পর্যায়ে বিএসটিআই এর অফিস সম্প্রসারণ করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের জনবল বৃদ্ধি করতে হবে।
বিএসটিআই এর একার পক্ষে পণ্য ও সেবার মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পণ্যের উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের সৎ থাকতে হবে। ওজন ও পরিমাপে কারচুপি এবং পণ্যে ভেজাল না দেয়ার শপথ নিতে তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
শিল্প সচিব বলেন, বছরের শুরু থেকেই বিএসটিআই এর কার্যক্রমে গতি এসেছে। ছুটির দিনেও সংস্থাটির লোকজন কাজ করছে। সম্প্রতি বিএসটিআই ৫২টি নিম্নমানের পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে। হাইকোর্ট এ বিষয়ে কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে। বিএসটিআই তার সীমিত জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। এভাবে বিএসটিআই এর লোগো মানুষের আস্থার জায়গায় পৌঁছাবে।
বিগত ১০ বছরে বিএসটিআই এর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং আন্তর্জাতিক অর্জনের বিষয় তুলে ধরেন বিএসটিআই মহাপরিচালক।
তিনি বলেন, বিএসটিআই এর ল্যাবরেটরি, প্রোডাক্টস সার্টিফিকেশন সিস্টেম এবং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সার্টিফিকেশন ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ফলে এসব পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই এর মানসনদ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে। প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশের ২১টি পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই প্রদত্ত মানসনদ গ্রহণ করেছে। আরও কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে এ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিএসটিআই এর কেমিক্যাল ও ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরির ৩৫টি পণ্যের ৪১১টি প্যারামিটার ইতিমধ্যে অ্যাক্রেডিটেশন অর্জন করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।