ধারাবাহিক এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্ত্বরে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ, ক্যাম্পাসে লালকার্ড প্রদর্শন এবং রাতে মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘ছি ছি ছি ছি এ কেমন ভিসি’ ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’ ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’ ‘ধরি ধরি ধরি না, ধরলে পরে ছাড়ি না’ এমন উপাচার্য বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এখন একমাত্র ভরসা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের বিভিন্ন অপকর্ম, দুর্নীতি, ভর্তি ও নিয়োগ বাণিজ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে অনিয়ম, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, অনশনের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার চোখে কালো কাপড় বেঁধে উপাচার্যের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, ‘প্রশাসনের ইন্ধনে’ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় বৃহস্পতিবার আরও একজন সহকারী প্রক্টর সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির পদত্যাগ করেছেন। এর আগে, কৃষি বিভাগের মো. নাজমুল হক খান ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে এবং ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষক মো.তরিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে, এ বিষয় ইউজিসির তদন্ত দল বুধবার ও বৃহস্পতিবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদেরও বক্তব্য নিয়েছেন কমিটি।
এ আন্দোলনে শুক্রবার পর্যন্ত ২৯ আন্দোলনকারী শিক্ষর্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এ প্রতিবেদক দেখেন, প্রশাসনিক ভবনের সামনে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপাচার্য বিরোধী আন্দোলন করছেন। বৃষ্টির কারণে মাথার ওপরে সামিয়ানা (তাবু) টাঙিয়ে, রাস্তায় বেঞ্চে বসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এছাড়াও কিছু সময় পর পর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে খণ্ড খণ্ড মিছিল করছেন। তাছাড়া বহিরাগতরা যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে ক্যাম্পাসে প্রবেশকারীদের আইডি কার্ড দেখে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. নুরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ইউজিসির একটি তদন্ত দল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিল। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। রেজিস্ট্রারের দপ্তরে যেসব তথ্য ছিল আমি তাদের সেসব তথ্য দিয়েছি।’