বুধবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি প্রকল্পের সার্বিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্প নিয়ে নানামুখী বিতর্ক থাকার পরও তা সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু শুরুতেই ক্ষুদ্র একটি অংশে যে ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তা এ প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। সেখানে মাত্র ২৫ কোটি টাকা খরচের ক্ষেত্রেই যে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র দেখা যাচ্ছে তাতে শঙ্কিত হতেই হয়,’ যোগ করেন তিনি।
ড. জামান আরও বলেন, এ অনিয়মের দায় কোন মন্ত্রণালয়ের সেই বিতর্কে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা জড়িয়েছেন। সেই সাথে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবার একে দুর্নীতি বলে মানতে নারাজ এমন তথ্যও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
‘‘আমরা আরও বেশি শঙ্কিত, কারণ দুর্নীতি দমন কমিশনও ‘ধীরে চলো’ নীতি ঘোষণা করেছে, প্রকল্পটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং বিভাগীয় তদন্ত চলছে- এই যুক্তিতে। প্রকল্পটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণেই শুরুতেই সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে সতর্কবার্তা দিতে হবে, যেন ‘বালিশ-কেটলির’ উপাখ্যান পুরো প্রকল্পে সম্ভাব্য অনিয়মের ‘হিমশৈলের চূড়া’ হিসেবে প্রতীয়মান না হয়,’’ বলেন তিনি।
প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকারের আরও দৃঢ় অবস্থান নেয়া জরুরি উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে রাশিয়া, এর বাস্তবায়নের দায়িত্বও তাদের হাতে। আর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি এবং সে দেশের সরকার ও সরকারের যোগসাজশপুষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ধার ধারে না। তাই এ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য এখন থেকেই সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে।’
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার’ নীতির যথাযথ প্রতিফলনের দাবি জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।