তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে সম্প্রতি ভারতের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শংকরের সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এস. জয়শংকরের সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটিই প্রথম সাক্ষাৎ।
‘কনফারেন্স অন ইন্টারেকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়া (সিআইসিএ)’ এর পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গী হিসেবে তাজিকিস্তান যান ড. আবদুল মোমেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান গভীর হৃদ্যতাপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সন্তোষ জানিয়ে দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করেন, এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।
বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সম্পাদন ও সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ড. মোমেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতের সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে বলেন, প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে ভারতের সদ্ভাব ও সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পরিণত সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করেছে।
ভারতের পূর্বমুখী অর্থনৈতিক কূটনীতির প্রবেশদ্বার হিসেবে বাংলাদেশের অনন্য সম্ভাবনা ও ভূ-কৌশলগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে ড. এস. জয়শংকর বলেন, বিমসটেককে শক্তিশালী করলে তা উভয় দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। ভারত আঞ্চলিক সংযোগের ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করে।
ড. মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুদেশের মধ্যে দীর্ঘ অমীমাংসিত ও স্পর্শকাতর ইস্যুসমূহ সমাধান করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে যে অভূতপূর্ব উচ্চতায় উন্নীত করেছেন, তা বিশ্বের অপরাপর দেশসমূহের জন্য এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
তিনি ভারতের সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ হতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ড. এস. জয়শংকরকে অভিনন্দন জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বাংলাদেশে প্রায় ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভারতীয় বিনিয়োগ আকর্ষণে ড. এস. জয়শংকরের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে ভারতকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অতিসত্বর বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ড. এস. জয়শংকর দ্রুতই একটি সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।
১৯৭১ সালে ভারতে শরণার্থী হিসেবে তার অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করে ড. মোমেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।