তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা যাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শান্তিরক্ষীদের সাথে প্রতিযোগিতায় নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বুধবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
আবদুল হামিদের মতে, শান্তিরক্ষীদের পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ভাষায় দক্ষতা বাড়াতে উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়াও তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
‘এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে মিশন এলাকার জলবায়ু ও ভূমির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতমানের সামরিক পোশাক ও সরঞ্জামের পাশাপাশি নিরাপত্তার সার্বিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস, এ উদ্যোগ শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে,’ যোগ করেন রাষ্ট্রপতি।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে জাতিসংঘ সম্প্রতি নারী প্রতিনিধিত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ২১৪ জন নারী শান্তিরক্ষী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত আছেন। তা সত্ত্বেও জাতিসংঘ সদরদপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের নিযুক্তিতেও বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে।
কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে গত ৫ মে সড়ক দুর্ঘটনায় অতিরিক্ত আইজিপি রৌশন আরা বেগমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।
তিনি শান্তিরক্ষীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা অনুকরণীয় পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শন করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন, যা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে প্রথম সারির শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে যে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে, তা আপনাদের সাহস, বীরত্ব, অসামান্য পেশাদারিত্ব ও দক্ষতারই ফসল। এ গৌরব আপনাদের সমুন্নত রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
এ সময় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এএমএমএম আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ও রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অনুষ্ঠানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সেই সাথে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানে নিহত ও আহত ছয় শান্তিরক্ষীর পরিবারকে সম্মাননা পদক দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সাথে কথাও বলেন।