তিনি বলেন, ‘সুস্থ সংস্কৃতির লালন ও বিকাশে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চায় উৎসাহিত করুন। কারণ সুকুমার বৃত্তির চর্চাই মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘শিল্পকলা পদক ২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সংস্কৃতি হচ্ছে জীবনের দর্পণ। সংস্কৃতি নিয়ে কেউ জন্মায় না। প্রতিনিয়ত চর্চার মাধ্যমে সংস্কৃতি অর্জন করতে হয়। একজন সংস্কৃতিবান কখনো সমাজের ক্ষতি করতে পারেন না। তাই সমাজ থেকে পঙ্কিলতা দূর করতে সংস্কৃতিকে হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।’
সামাজিক অবক্ষয় রোধে সংস্কৃতিকে রক্ষাকবচ হিসেবে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘সমাজ থেকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর করতে সংস্কৃতির বিকাশ খুবই জরুরি।’
‘গ্রাম থেকে শহর, নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত- প্রতিটি স্তরে সংস্কৃতির চর্চা যত বেশি হবে সমাজ তত বেশি আলোকিত হবে। আলোকিত সমাজই পারে মানবিক সমাজ গড়তে, একটি দেশ ও জাতির কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধি ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে,’ যোগ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘কালের বিবর্তনে সমাজে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সংস্কৃতিতেও এর ছোঁয়া লেগেছে। আকাশ সংস্কৃতির বদৌলতে প্রতিনিয়ত আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভিনদেশি সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটছে।’
বিদেশি বা আকর্ষণীয় হলেই সবকিছু লুফে নেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে যতটুকু সামঞ্জস্য ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয়, বিজাতীয় ও অপসংস্কৃতির সবকিছু বর্জন করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে দেশের শিল্প ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদান রাখা সাতজন ‘শিল্পকলা পদক ২০১৮’ গ্রহণ করেন।
তারা হলেন- কণ্ঠসঙ্গীতে গৌর গোপাল হালদার, যন্ত্রসঙ্গীতে সুনীল চন্দ্র দাস, নাট্যকলায় ম. হামিদ, লোক সংস্কৃতিতে মিনা বড়ুয়া, চারুকলায় অলকেশ ঘোষ, নৃত্যকলায় শুক্লা সরকার ও আবৃত্তিতে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেকে স্বর্ণপদক, ১ লাখ টাকার চেক ও সনদ পান।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।