সংস্থাটি এ বিধানকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের মূলচেতনা ও অভীষ্টের পরিপন্থী বলে সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে।
দক্ষ, জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন নিশ্চিত করতে এবং আইনের চোখে সব নাগরিক সমান বলে যে সাংবিধানিক বিধান রয়েছে তার সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক হওয়ায় আইনটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে আইনটি ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়ার সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সাধারণ জনগণের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধান রেখে সরকারি চাকরি আইন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী। আইনটি এভাবে কার্যকর হলে বর্তমান সরকারের আমলেই প্রণীত ও বাস্তবায়নরত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের সাথেও এটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী হবে।’
ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের আগে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নেয়ার বিধান ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ ধারার সাথেও সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দুর্নীতিবাজ ও অসৎ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি যে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তার প্রতি আস্থা রেখে ড. জামান বলেন, নতুন আইনটি কার্যকর হলে সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এছাড়া, বিতর্কিত বিধানটি দুদকের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে খর্ব করে একে সম্পূর্ণ অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পর্যবসিত করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।
উল্লেখিত বিধানটি প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা, স্বচ্ছতা, উন্নততর পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন নিশ্চিতের পরিপন্থী উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকারি চাকরি আইন নামটিই সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এ আইনের নাম হওয়া উচিত জনপ্রশাসন আইন। তাই আমরা পুনরায় আইনটির নাম সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি।’
তড়িঘড়ি করে আইনটি কার্যকর করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের আগে সরকারের অনুমতি নেয়ার বিধানটি বাস্তবে সরকারি খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধের পরিবর্তে আইনের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অপরাধের সুরক্ষা ও ব্যাপকতা বাড়ার ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি করবে।