এর আগে দুপুরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে শেলা নদীর ধানসাগর স্টেশনের তাম্বুলবুনিয়া এলাকায় বাঘ ও মানুষের মাঝে এ লড়াইয়ের ঘটনা ঘটে।
প্রাণে বেঁচে যাওয়া মাসুম শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর গ্রামের আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে।
মাসুমের বড় ভাই জাহিদুল হাওলাদার জানান, মাছ ধরতে ধানসাগর স্টেশন থেকে অনুমতি নিয়ে দুই ভাই একটি নৌকাসহ সকাল ৯টার দিকে বনে প্রবেশ করেন। দুপুর দেড়টার দিকে মাসুম তাম্বুলবুনিয়া এলাকায় শেলা নদীর চরে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন। এসময় হঠাৎ একটি বাঘ মাসুমের ডান পায়ে থাবা মারে। মাসুম চিৎকার দিয়ে বাঘটিকে লাথি মারলে বাঘ পা ছেড়ে হাতে থাবা দিয়ে তাকে বনের মধ্যে নিয়ে যায়। পরে মাসুমের সাথে বাঘটির ধস্তাধস্তি চলে।
এসময় জাহিদুলের চিৎকারে আশপাশের চারজন জেলে ছুটে আসেন এবং সবাই মিলে বনের মধ্যে বাঘটিকে ধাওয়া দেন। এক পর্যায়ে জাহিদুলের হাতে থাকা বৈঠার আঘাত পেয়ে বাঘটি মাসুমকে ফেলে বনের মধ্যে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
জাহিদুলের দেয়া তথ্য মতে, পূর্ণবয়স্ক বাঘটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ১০ ফুট। বাঘটি কেয়াবনের মধ্য দিয়ে শেলা নদীর চরে চলে আসে এবং সেখানেই অপেক্ষা করছিল।
মাসুমকে বাঘের মুখ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা জেলেদের মধ্যে হাবিবুর রহমান খলিফা জানান, তারা কাছাকাছি মাছ ধরছিলেন। এসময় চিৎকার শুনে তারা কয়েকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং বাঘটিকে ধাওয়া দেন।
শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিপন নাথ জানান, মাসুমের শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহামুদুল হাসানের তথ্য মতে, ২০০১ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সুন্দরবনে ৩৫টি বাঘের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে দুস্কৃতিকারীদের হাতে ১০টি, লোকালয়ে ঢুকে পড়লে জনতার হাতে ১৪টি, বার্ধ্যকজনিত কারণে ১০টি এবং ২০০৭ সালের সিডরে একটি বাঘ মারা যায়। এসময়ে বাঘের পাল্টা আক্রমণে প্রায় ৩০০ জেলে, বাওয়ালী, মৌয়াল এবং গ্রামবাসী মারা গেছেন।