তিনি বলেন, ‘সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন আমরা দেখছি তা বাস্তবায়নে প্রয়োজন রক্তদাতাদের মতো ত্যাগী মানুষ, যারা কোনো কিছুর প্রত্যাশা ছাড়াই নিঃস্বার্থভাবে রক্তদান করে যাচ্ছেন।’
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আয়োজিত রক্তদাতা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রক্তদানের মতো মহৎ উদ্যোগের জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, কোয়ান্টাম গত ১৮ বছরে দশ লাখের অধিক ইউনিট রক্ত সরবরাহ করেছে। গত বছর সরবরাহ করেছে এক লাখের অধিক ইউনিট রক্ত, যা দেশের মোট চাহিদার সাত ভাগের এক ভাগ। স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রম নিয়ে যে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে তার মধ্যে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, কোনো রকম বিদেশি সাহায্য ছাড়াই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন বহুমুখী সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে বান্দরবানের লামা উপজেলায় এতিম-বঞ্চিত শিশুদের জন্যে বিদ্যালয় অন্যতম। এছাড়া কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের আরেকটি জনপ্রিয় কার্যক্রম কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন কোর্স, যার মাধ্যমে লাখো মানুষ উপকৃত হয়েছেন। স্ট্রেস বা টেনশন দূর করাসহ মনোদৈহিক রোগের চিকিৎসায় এটি এখন বিশ্বব্যাপী বহুল ব্যবহৃত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।
রক্তদাতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২৫ বা ৫০ বার রক্তদান করেই থেমে থাকবেন না। সুস্থতা সাপেক্ষে ৬০ বছর পর্যন্ত আপনারা রক্তদান এবং মুমূর্ষু মানুষের জীবন রক্ষায় ভূমিকা রেখে যাবেন।
অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ১০, ২৫ ও ৫০ বার স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছেন এমন ১৭৩ জন রক্তদাতাকে সনদপত্র, আইডি কার্ড, সম্মাননা ক্রেস্ট ও মেডেল দেয়া হয়।
এ সময় স্বেচ্ছা রক্তদাতা তারেক কুদ্দুস এবং নিয়মিত রক্তগ্রহীতা থ্যালাসেমিয়া রোগী সুমাইয়া আক্তার সুমি তাদের অনুভূতি বর্ণনা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন আহমদ জানান, দেশে ৩০-৩৫ শতাংশ রক্ত আসে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের কাছ থেকে, ৫৫-৬০ শতাংশ আসে রোগীর আত্মীয়-পরিজন-বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে। বাকি রক্ত আসে পেশাদার রক্ত-বিক্রেতাদের কাছ থেকে, যা দূরারোগ্য ব্যাধির জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
রক্তদানের মতো মহৎ মানবকল্যাণের সাথে জড়িত রক্তদাতাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান অনুষ্ঠানের সভাপতি কোয়ান্টাম স্বেচ্ছা রক্তদান কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মাদাম নাহার আল বোখারী।
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে ব্লাড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৫৯ হাজার ৩ ইউনিট রক্ত ও রক্ত উপাদান সরবরাহ করেছে কোয়ান্টাম। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নিয়মিত স্বেচ্ছা রক্তদাতারা দূরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকেন। তাদের হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও অনেক কম।