তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা আদায়ে আইন অনুযায়ী যা যা করার দরকার সবই করব। টাকা মাফ করার কোনো ক্ষমতা বিটিআরসির নেই।’
সোমাবার বিটিআরসির প্রধান কার্যালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) নতুন কমিটির সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জহুরুল হক জানান, বিটিআরসির গ্রামীণফোনের কাছে প্রায় এক যুগ ধরে অডিট অনুযায়ী এ টাকা পাওনা হয়েছে। টাকার পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতিদিন শতকরা ১৫ ভাগ লেট ফি হিসাবে টাকা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ অডিট এককভাবে হয়নি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গ্রামীণফোন শুধু আদালতে গিয়ে সময় নিচ্ছে। ‘গ্রামীণফোন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে টাকা না দিয়ে শুধু সময় নিচ্ছে।’
পাওনা আদায়ে অপারেটর কোম্পানিটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে উল্লেখ করে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ্রামীণফোনকে যা যা সুবিধা দেয়া দরকার তা দেব। তারপরও যদি আমরা টাকা না পাই সে ক্ষেত্রে বিটিআরসি আইনে যেসব ক্ষমতা দিয়েছে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে গ্রামীণফোনের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) বন্ধ করে দেব, কল ব্লক করে দেব, লাইসেন্স বাতিলে শোকজ করব, আইনে যা যা আছে সবই করব।’
পর্যায়ক্রমে সব মোবাইল অপারেটরকে অডিট করা হবে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে কাউকে একচেটিয়া ব্যবসা করতে দেয়া হবে না জানিয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কোনো অপারেটরের সাথে বেআইনি আচরণ করছি না, সবার সাথে সমান আচরণ করছি। আইনে যা আছে বিটিআরসি তাই করছে।’
মোবাইল নেটওয়ার্ক ও নেট সার্ভিসে মানসম্পন্ন সেবার কোনো বিকল্প নেই। মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে আমার কাজ করছি, বলেন তিনি।
সম্প্রতি বিটিআরসি থেকে গ্রামীণফোনের সিইওকে পাওনা টাকা দিতে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু গ্রামীণফোন কয়েকদিন আগে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মিডিয়াকে জানায়, বিটিআরসির অডিট অনুযায়ী টাকা পাওনা ভিত্তিহীন।
বিটিআরসি নিয়োগকৃত অডিট ফার্মের হিসাব অনুযায়ী গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা প্রায় ৪ চার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- টিআরএনবি সভাপতি মুজিব মাসুদ ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল অনোয়ার খান শিপুসহ বিটিআরসির কমিশনার ও মহাপরিচালকরা।
এ সময় মহাপরিচালক (লিগ্যাল ও লাইসেন্সিং) শহীদুজ্জামান বলেন, টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন অনুযায়ী চারটি কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়া হলেও তারা ব্যবসা করতে পারছে না। এ বিষয়ে সব অপারেটরের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সব অপারেটরের ২৫-৩০ হাজার টাওয়ার আছে। টাওয়ার শেয়ারিংয়ে চারটি টাওয়ার কোম্পানি ও অপারেটরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি। তাই বিটিআরসি এ বিষয়ে আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে তাদের চিঠি দিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে, তখন তারা তা মানতে বাধ্য হবেন, বলেন তিনি।