বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইসির সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ডিসেম্বরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্প্রতি কমিশন ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইসির আনুমানিক হিসেব অনুযায়ী, মোট ব্যয়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা এবং বাকি ৩০০ কোটি টাকা নির্বাচন পরিচালনার জন্য ব্যয় করা হবে।
তারা জানায়, ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোট ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। এরমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ২০০ কোটি টাকা এবং ১৪৭টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়। বাকি ১৫৩ টি সংসদীয় আসনে ইসিকে ভোটের আয়োজন করতে হয়নি।
সারা দেশে প্রায় ৪০ হাজার ১৯৯টি সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ৪০ হাজার ১৯৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, প্রায় ৮০ হাজার সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পাঁচ থেকে ছয় লাখ পোলিং অফিসারসহ প্রায় সাত লাখ নির্বাচন পরিচালনাকারী কর্মীকে দেশব্যাপী নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আগামী নির্বাচন পরিচালনার জন্য বরাদ্দ হওয়া ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ১৬০ কোটি টাকা সাত লাখ নির্বাচন পরিচালনাকারী কর্মীর পেছনে ব্যয় করা হবে। এছাড়া দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়া অন্যান্য মুদ্রণ সামগ্রী কেনার জন্য ১০ কোটি টাকা এবং স্ট্যাম্প প্যাড, বিভিন্ন ধরনের সিল ও কালি কেনার জন্য ৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
ইসি সচিব হেলালউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নির্বাচন কমিশন ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে।
দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের অধীনে পছন্দের নেতা নির্বাচনের জন্য প্রায় ১০.৪২ কোটি ভোটার তাদের ভোট দিবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মোট ব্যয় ছিল মাত্র ২৮৩ কোটি টাকা কারণ ১৫৩ টি সংসদীয় আসনে ইসিকে ভোটের আয়োজন করতে হয়নি। দশম সাধারণ নির্বাচনে দেশের ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় ৯.১৯ কোটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কিন্তু এবার নির্বাচনের খরচ দ্বিগুণের বেশি হবে, কারণ ইসিকে দেশের মোট ৩০০টি সংসদীয় আসনে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি বলেন, নবম জাতীয় নির্বাচনে মোট ব্যয় ছিল ১৬৫.৫০ কোটি টাকা এবং অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে ব্যয় হয় ৭২.৭১ কোটি টাকা।
১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সংসদীয় নির্বাচনের ব্যয় ছিল মাত্র ৮১.৩৬ লাখ টাকা যখন ভোটার সংখ্যা ছিল মাত্র ৩.৫২ কোটি।
ইসি কর্মকর্তাদের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দ্বিতীয় জাতীয় নির্বাচনে ২.৫২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। এছাড়া তৃতীয় নির্বাচনে ৫.১৬ কোটি টাকা, চতুর্থ নির্বাচনে ৫.১৫ কোটি টাকা, পঞ্চম নির্বাচনে ২৪.৩৭ কোটি টাকা এবং ষষ্ঠ সাধারণ নির্বাচনে ৩৭.০৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়।