স্থানীয়রা জানান, কেরানীগঞ্জ আতাশুর এলাকার আমান, তসলিম ও আনোয়ারসহ বেশ কয়েকজন কেমিক্যাল ব্যবসায়ী আট থেকে দশটি বিশাল বিশাল গোডাউন গড়ে তুলেছেন। এতে এখানে প্রতিদিন কাভার্ডভ্যানযোগে বিভিন্ন রাসায়নিক ড্রাম, বস্তা ও গ্যালন মজুদসহ বাজারজাত করে আসছে।
পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টায় কেমিক্যাল বিস্ফোরণে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর কেরানীগঞ্জে গোডাউনের আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন পার করেছেন। আতাশুর ছাড়াও কালিন্দী, খোলামোড়াসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকাও কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে থেকে এ সব এলাকার অনুমোদনবিহীন কেমিক্যাল গোডাউনের সঠিক কোনো হিসাবও পাওয়া যায়নি।
কেমিক্যাল গোডাউনের বিষয়ে কেরানীগঞ্জের মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়েরের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তার থানা এলাকায় কোনো কেমিক্যাল গোডাউন নেই। অথচ সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এসব গোডাউনে কাভার্ডভ্যান যোগে টনকে টন কেমিক্যাল আনা-নেয়া ও মজুদ করাসহ শ্রমিকরা মুখে গামছা বেঁধে বিভিন্ন কেমিক্যাল প্যাকেটজাত করার মতো দৃশ্য দেখা গেছে।
কেরানীগঞ্জ কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, পুরান ঢাকার মতো আমরা ও কেরানীগঞ্জ কেমিক্যাল মুক্ত চাই। আতাশুরসহ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় থাকা কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরিয়ে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অপরদিকে কেরানীগঞ্জে কেমিক্যাল পল্লী স্থানান্তর করতে সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বেশ কিছু কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জের গদাবাগ, দেওশুর, কোণাখোলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সব এলাকার যে কোন স্থানে জমি একরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও কেরানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাজাহান জানান, ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জের যে সমস্ত এলাকায় কেমিক্যাল পল্লীর জন্য সরকারি কর্মকর্তারা জমি অধিগ্রহণ করতে জমি দেখেছেন সে জমিগুলো আবাসিক এলাকার সংলগ্ন হওয়ায় ওই এলাকাগুলি বাদ দিয়ে ধলেশ্বরী নদীর সোনাকান্দা, লাকিরচর, চান্দের চর, পলাশপুর ও মোল্লারহাটে জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এছাড়া এসব এলাকা ব্যতীত আবাসিক এলাকায় কেমিক্যাল পল্লী তৈরি করতে চাইলে কেরানীগঞ্জবাসীকে সাথে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে বলে জানান তিনি।