চুয়াডাঙ্গা, ০২ জানয়ারি (ইউএনবি)- মধ্য পৌষে চুয়াডাঙ্গায় আঘাত হেনেছে তীব্র শীত। দিনের অধিকাংশ সময় আকাশ ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। উত্তরের হিমেল বাতাস সেই তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। যেন বাঘ কাঁপানো ঠান্ডা নিয়ে এসেছে পৌষ। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রার পারদ।
গত এক সপ্তাহ ধরেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রতিদিনই তাপমাত্রার পারদ নিচে নামতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে এ জনপদে ৬.৭ ডিগ্রি নিচে নেমেছে তাপমাত্রা। আর এ কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তীব্র শীত আর কনকনে হাওয়ায় কারণে অনেকটা বিপর্যস্ত চুয়াডাঙ্গার ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবন। দিনের অধিকাংশ সময়ই ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে আকাশ। একই সাথে মেঘাচ্ছন্ন ও উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বাইরে বের হচ্ছেন না।
ছিন্নমূল মানুষগুলো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে আছেন। খড়কুটার আগুনেই যেন একমাত্র ভরসা তাদের। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের জালশুকা গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, তিনি একজন মাটি কাটা শ্রমিক। গত তিন দিনে তিনি শহরে এসে কোন কাজ পাননি। কনকনে শীতই কাজ না পাওয়ার কারণ বলে জানান তিনি।
একই কথা জানান, সদর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের দিনমজুর সবদুল মন্ডল। তার মতে, শীতের কারণে কোন মহাজনই কাজ করাতে চাইছেন না। এতে করে কাজ না পেয়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় হাসপাতাগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
বৃদ্ধ ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিউমোনিয়া, কোল্ড ডায়রিয়াসহ শ্বাসকষ্ট জনতিরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই প্রায় অর্ধশত নতুন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক সামাদুল হক জানান, 'এবার একটু বিলম্বে শীত এসেছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।
যদিও বুধবার রৌদ্দজ্জল আকাশ ছিলো। তারপরও কনকনে ঠান্ডা বাতাস অব্যাহত থাকায় তাপমাত্রার সুফল পাচ্ছে না মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস জানান, গত বছরের কিছু শীতবস্ত্র আমাদের গুদামে ছিলো। চলতি মৌসুমে ঢাকা থেকে কয়েক হাজার শীতবস্ত্র এসেছে।
কিছু শীতবস্ত্রি ইতিমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, নির্বাচনের কারণে পুরাপুরি বিতরণ করা হয়নি। দুই এক দিনের মধ্যেই জেলার ছিন্নমূল মানুষদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।