প্রতিদিন গন্তব্য পৌঁছানোর জন্য তাদের জীবন ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশ সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়।
সম্প্রতি ইউএনবি প্রতিনিধি এলাকা পরিদর্শনকালে দেখেন, ফেনীর দাগনভূঁইয়া, সদর উপজেলা ও কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ২০টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য প্রতিদিন সেতুটি অতিক্রম করে। কারণ এটি তাদের জন্য যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের উত্তর কৈখালী, দক্ষিণ কৈখালী, কৌশল্যা, নারায়ণপুর, সাদেকপুর, সেকান্দরপুর, ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের উত্তর আবুপুর, দক্ষিণ আবুপুর, এলাহিগঞ্জ, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের বাকগ্রাম, দক্ষিণ বান্দেরজলা, উত্তর বান্দেরজলা, আলকরা, ধোপাখিলা, নারায়ণকুরি এবং গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া, চাঁপালিয়া পাড়া, বৈধড়া, খাডরা, গুণবতী গ্রামবাসী সেতুটি ব্যবহার করে থাকে।
স্থানীয়রা জানায়, তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ছোট নদীর ওপর তারা একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছেন কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।
উত্তর সেকান্দরপুর গ্রামের মো. আলী হোসেন বলেন, প্রতিবছর বর্ষার সময় বাঁশের সাঁকোটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বর্ষা শেষে আবার আশপাশের গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে সাঁকোটি নির্মাণ করে।
ফেনী সরকারি কলেজের ছাত্র শরিফ উল্লাহ বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসহ অনেকেই ভয়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে চলাচল না করে নৌকায় নদী পার হয়। নদী পারাপারে জনপ্রতি দিতে হয় পাঁচ টাকা করে। দরিদ্র লোকজন বাধ্য হয়ে সাঁকো ব্যবহার করে।
নৌকার মাঝি রুস্তম আলী বলেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতারা নদীর ওপর পাকা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু নির্বাচনের পর তারা তা ভুলে যান।
সিন্দুরপুর ইউনিয় পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নূর নবী বলেন, ওই সাঁকোর জায়গায় সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে কয়েকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
‘গত বর্ষায় সাঁকো থেকে পড়ে সেকান্দরপুর ও উত্তর কৈখালী গ্রামের দু’টি শিশু মারা গেছে,’ যোগ করেন চেয়ারম্যান।
দাগনভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন বলেন, জেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
ফেনী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজ আহম্মদ চৌধুরী বলেন, এতো বড় সেতু নির্মাণের জন্য বাজেট জেলা পরিষদের থাকে না। তবু বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে জানান।