২০১৬ সালে ওই দিনে ঈদের জামাতের আগে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে প্রবেশপথের সংযোগ সড়কে মুফতি মোহাম্মদ আলী জামে মসজিদের সামনের তল্লাশি চৌকিতে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেড, গুলি ও চাপাতির আঘাতে দুই পুলিশ কনস্টেবল, গৃহবধূ ও এক জঙ্গি নিহত হন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই এ মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, এ ঘটনায় সফলভাবে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এ মামলার সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি।
পুলিশ জানায়, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ওই ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম এবং উক্ত এলাকার গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক ও আবির হোসেন নামে এক জঙ্গি ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ সময় পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে গুরুতর আহত অবস্থায় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক সশস্ত্র জঙ্গি এবং তানিম নামে স্থানীয় এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করা হয়। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় সর্বশেষ ২৪ জঙ্গিকে আসামি করা হলেও এদের প্রায় সবাই হলি আর্টিজান হামলারও আসামি। এদের মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ‘বন্দুকযুন্ধে’ নিহত হয়।
এ কারণে বেঁচে থাকা পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া সম্ভব হয়। তারা হলো-কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক জানান, ইতোমধ্যে এ চাঞ্চল্যকর মামলাটির চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আদালত সাক্ষীর জন্য প্রস্তুত। সাক্ষীর জন্য ২২ জুলাই তারিখ ধার্য করা আছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সফল তদন্ত শেষে মামলাটির চার্জশিট দিয়েছে। দেশ কাঁপানো এ জঙ্গি হামলা আমাদের জন্যও বিশেষ বার্তা ছিল। আজকে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা গ্রহণ করে এদের নির্মূল করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহতদেরও চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সহযোগিতা করেছে সরকার। এমনকি নিহত দুই পুলিশ সদস্যের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতা এবং নিহত গৃহবধূর এক সন্তানকে অত্র এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’