সরকারি সূত্র অনুযায়ী, নিজেদের উন্নয়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ২০১৯-২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে।
ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক রমিজ উদ্দিন ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ডিপিডিসি এমন এক বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবে, যা দুই শহরের অধিকাংশ এলাকায় বসবাসরত গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে।’
তিনি জানান, গত বছরের ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত গত সরকারের সর্বশেষ একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়।
প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ১ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা এবং ডিপিডিসির নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৭৮ কোটি টাকা।
রমিজ উদ্দিন আরও জানান, কাজের ঠিকাদার নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করতে তারা এখন কাগজপত্র প্রস্তুত করছেন। দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া শেষ করতে এক থেকে দুই মাস সময় লাগবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফলতা অর্জনের পর বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থা উন্নয়নে সরকারের যে বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তার অংশ হিসেবে এ নতুন প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
তারা বলেন, দেশে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন রেকর্ড ১১ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করেছে। কিন্তু দুর্বল বিতরণ ও সঞ্চালন নেটওয়ার্কের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এখনও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি।
‘যার ফলে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত থাকার পরও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়,’ বলেন বিদ্যুৎ বিভাগের এক সিনিয়র কর্মকর্তা।
কর্মকর্তারা জানান, ডিপিডিসি প্রধানত ঢাকার কেন্দ্র ও দক্ষিণ-পশ্চিম জোন এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং প্রকল্পটি এ দুই শহরে বাস্তবায়ন করা হবে।
কর্মকর্তারা আরও জানান, প্রকল্পটি ২০৩০ সাল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সুবিধা দেবে এবং তা বজায় রাখার জন্য আরেকটি নতুন প্রকল্পের দরকার হবে।
প্রকল্পের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, অনেকগুলো ৩৩/১১ কেভি ক্ষমতার পুরোনো সাবস্টেশন পরিবর্তন, ১৬৫ কিলোমিটার নতুন উৎস লাইন নির্মাণ, ৩৩ হাজার ১৫৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি বসানো এবং ১ হাজার ৬৪২ কিলোমিটার লাইন সংস্কার করা হবে। সেই সাথে ১১ কেভির ৩৬১ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ লাইন এবং ২ হাজার ৫৭৫টি ট্রান্সফরমার বসানোও প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
ডিপিডিসি বর্তমানে ১১ লাখ ৭৮ হাজার গ্রাহকের মাঝে ১ হাজার ৫৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। আর প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ করা এলাকায় প্রতিবছর ১২ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে।