উপজেলার নুরুলাগঞ্জ ইউনিয়নের ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের বিল ধোপাডাঙ্গা মৌজার এক টুকরো আবাদি কৃষি জমির ওপর বিশ্বের অন্যতম ভৌগলিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট কর্কটক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার ছেদ বিন্দুটি ঘিরে প্রায় চার বছর আগে সরকারি পর্যায়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়।
সম্প্রতি বিজ্ঞান লেখক ড. জাফর ইকবালের ‘একটি স্বপ্ন’ শিরোনামের নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানটি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়টি উন্মোচিত হয়।
ভূগোল, ইতিহাস ও বিজ্ঞান- সব বিবেচনায় বৈশ্বিক গুরুত্ব বহনকারী এ ভূখণ্ডটুকু দেশ ও জাতির কাছে নতুন করে পরিচিত হয়ে ওঠার বিষয়টি দারুনভাবে আন্দোলিত করেছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষকে।
পৃথিবীর চারটি উত্তর-দক্ষিণ রেখা এবং তিনটি পূর্ব-পশ্চিম রেখা সব মিলিয়ে ১২ জায়গায় ছেদ করেছে। নিঃসন্দেহে এ ১২টি বিন্দু হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিন্দু।
এ ১২টি বিন্দুর দশটি বিন্দুই পড়েছে সাগর-মহাসাগরে। তাই মানুষ সেখানে যেতে পারে না। একটি পড়েছে সাহারা মরুভূমিতে, সেখানেও মানুষ যায় না। শুধু একটি বিন্দু পড়েছে শুকনো মাটিতে, যেখানে মানুষ যেতে পারে। সেই বিন্দুটি পড়েছে বাংলাদেশে। আর জায়গাটি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামে।
ফরিদপুর শহর থেকে ভাঙ্গা যাওয়ার পথে শিব সুন্দর একাডেমি সংলগ্ন নুরুলাগঞ্জমুখী রাস্তা ধরে গেলে ৩ কিলোমিটার দূরে ভাঙ্গারদিয়া গ্রাম। সেখানে বিল ধোপডাঙ্গা মৌজায় বারেক মাতুব্বর, ইকবাল মাতুব্বর, কুটিপাগলা, জাকির হোসেন, ইউসুফ মাতুব্বর, আজিজুল মাতুব্বর, শাহ জাহান শেখ ও মোফাজ্জেল হোসেনের প্রায় ৫ একর কৃষিজমিকে প্রাথমিকভাবে মানমন্দির প্রকল্পের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে কৃষি নির্ভর এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হবে, বদলে যাবে তাদের জীবন ধারা।
সম্প্রতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানমন্দির’ স্থাপন করার জন্য প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির একটি সভাও হয়ে গেছে।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ইতোমধ্যে একাধিকবার ভাঙ্গারদিয়া গ্রামের ওই জমি সরকারি লোকজন পরিদর্শন করেছেন।
আন্তর্জাতিক মানের এ মানমন্দির ও পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করতে বেশ কয়েক একর জায়গার প্রয়োজন হবে।
ফরিদপুরের মানুষ সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান প্রফেসর স্বপন কুমার হালদার বলেন, কর্কটক্রান্তি এবং ৯০ ডিগ্রি দ্রাঘিমার ছেদ ফরিদপুরের রয়েছে। এই ছেদ বিন্দুকে ঘিরে সরকার বড় প্রকল্প গ্রহণ করলে এ দেশকে যেমন পৃথিবীর মানুষ আরও চিনবে, তেমনি এ অঞ্চলের মানুষে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।