রাত-দিন মহাসড়ক থ্রি-হুইলারের দখলে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দুই একটি থ্রি হুইলার আটক করে মামলা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন কর্মকর্তারা। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটো কুমার নাথ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শার্শার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড় থেকে বেনাপোল, বাগআঁচড়া থেকে নাভারণ সাতক্ষীরা মোড় পর্যন্ত মাহেন্দ্রা অবাধে চলাচল করছে। সাতক্ষীরা মোড়ে তৈরি করা স্ট্যান্ড থেকে কয়েক মিনিট পরপর বেনাপোল ও বাগআঁচড়ায় ছেড়ে যাচ্ছে মাহেন্দ্রাগুলো। সড়কে মাহেন্দ্রার পাশাপাশি চলাচল করছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত থ্রি-হুইলার ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান, নছিমন ও করিমন। এছাড়া ঝিকরগাছা-লাউজানী, নাভারণ-নবীবনগর, গদখালী-ঝিকরগাছা ও বেনেয়ালী- ঝিকরগাছা রুটে অবৈধ ১৩০টির মতো তিন চাকার যান চলাচল করছে।
কাগজে-কলমে এখনও এসব মহাসড়কে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও কাগজপত্র ও ফিটনেসবিহীন এসব তিন চাকার যান রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কখনও সোজা, কখনও উল্টো পথে চলাচলের ফলে প্রতিনিয়তই ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অসংখ্য মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। অনেকে আবার পঙ্গু হচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নাভারণ হাইওয়ে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে এ যানগুলো চলাচল করেছে। পৌর এলাকার মহাসড়কে চলাচল করতে পৌর কর্তৃপক্ষের নামেও এ সকল চালকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা তোলা হয়।
থ্রি-হুইলারচালক আবুল হোসেনসহ বেশ কয়েক জন জানান, মহাসড়কের পাশ দিয়ে বা বাইপাস দিয়ে পৃথক কোনো সড়ক নেই। মহাসড়কে যান চালাতে না পারলে তাদের পরিবারের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তাই ঝুঁকি নিয়ে তাদের মহাসড়কে উঠতে হয়। মাঝে মাঝে পুলিশ আটকালে ‘ম্যানেজ’ করতে হয়।
যশোর জেলা বাস মালিক সমিতির কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান জানান, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধের দাবিতে বিগত দিনে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
নাভারণ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটো কুমার নাথ বলেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। একাধিক গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। টাকা নিয়ে অবৈধ এ সকল যান চলাচলের কোনো সুযোগ দেয়া হয় না বলে দাবি করে তিনি।
হাইওয়ে যশোর সার্কেলের এএসপি মোহাম্মদ ইউএনবিকে বলেন, গত এক মাসে ২ শতাধিক থ্রি-হুইলার আটক করা হয়েছে। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির কোনো সদস্য টাকা নিয়ে অবৈধ যান চলাচলের সুযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।