প্রোজেরিয়া রোগে আক্রান্ত আদিলা মজা করতেও ভালোবাসে। মোবাইলে ভিডিও দেখে খিলখিল করে হাসে, মাঝে মাঝে লজ্জাও পায়।
আর মাত্র ২ বছর পরই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে আদিলাকে। মানে এ যাবত চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিসংখ্যান বলছে, প্রোজেরিয়া আক্রন্তরা সর্বাধিক তের বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। খবর এনডিটিভির।
এরপরও উচ্ছ্বল-উৎফুল্ল আদিবা। কান্না বাদে জীবনে যত রকমের অভিব্যক্তি সবই হচ্ছে তার জীবনে। তবে কান্নাও জমে আছে, জমে আছে পাথর চাপা এগারো বছরের ছোট্ট মেয়ের বাবা-মায়ের বুকেও। আসলে হাতে আর মাত্র দুই বছর আছে। এরপর সবই স্মৃতি ....
মাত্র তেরো বছর। জিনের বিরল রোগ প্রোজেরিয়ার আক্রান্তরা এর বেশি তো বাঁচে না। ফেসবুকে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে এমনই এক শিশুর ভিডিও। কম বয়সে অত্যধিক বুড়িয়ে যাওয়া এই রোগের কথা ‘পা' সিনেমায় তুলে ধরেছিলেন অমিতাভ বচ্চন।
এগারো বছরের ‘বৃদ্ধা’র নাম আদিলা রোজ। ২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর আমেরিকার টেক্সাসে জন্ম নেয় আদিলা। প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা সাধারণত জন্মের সময় একেবারেই সুস্থ থাকে। জন্মের পর দশ থেকে ২৪ মাস সাধারণত তাদের তেমন পরিবর্তন হয় না। কিন্তু তারপরেই রাতারাতি যেন বুড়িয়ে যেতে থাকে এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা। তেমনই হয়েছে আদিলার ক্ষেত্রেও। মাত্র ১১ বয়সেই মাথার সব চুল উঠে গেছে , ঠেলে বেরিয়ে আসছে ডানচোখ। হাত-পা, শরীর ক্ষীণকায় বললেও কম হবে।
তবু আদিলা হাসে, খিলখিল করে হাসে আর নাচে। সুন্দর সেজে সেলফি তোলে। টুইটার অ্যাকাউন্টে সে এখন বিশ্বের ‘অনুপ্রেরণা'। নিজের নানা ভিডিও পোস্ট করে, কখনও বাবা মায়ের সাথে কখনও বা একাই। ভিডিওতে আদিলা এক অন্য মানুষ যেন। হেসে গেয়ে মাত করে দেয়া আর পাঁচটা বাচ্চার মতোই। কিন্তু সত্যিই তো এটাই আর পাঁচটা বাচ্চার মতো সে না। তবু বিরল এই রোগের বিরুদ্ধে লড়তে আর জীবনকে ভালোবাসে সবার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। তার চেহারায় একবারও আক্ষেপ বা দুশ্চিন্তার ছাপ চোখে পড়ে না। বরং মন ভালো করে দেয়া বাচ্চামো নিয়ে সহজেই পৃথিবীর সব কিছু উপভোগ করে নিচ্ছে সে।
ইন্টারনেট জগতে এই বয়সেই তাই অন্যতম ‘অনুপ্রেরণা' সে। তার ভিডিও তার কথা আর মিষ্টি হাসি প্রোজেরিয়ার মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্তদের জন্যও বিশেষ মন ভালো করার অস্ত্র। আর কদিন পরই আদিলার জন্মদিন। ১১ বছরে পা দেবে। তারপর যাত্রা হবে অনন্তের... অকালে ঝরে যাবে। ক্ষণস্থায়ী বলেই এত সুন্দর, এত প্রাণময় আদিলা।