দলের চার এমপি শপথ নেয়ার দুই ঘণ্টা পর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতিতে মারাত্মক সংকটের মধ্যে আমাদের দল চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার যথাযথ চিকিৎসা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবির অংশ হিসেবে সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শেষ সময়ে শপথ নেয়া বিএনপির দুজন এমপি দাবি করেন, তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা শপথ নিয়েছেন।
শপথ গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে হারুন-উর-রশিদ ও অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার বলেন, তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করেই তারা সংসদে এসেছেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী সাত্তার বলেন, তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারেক রহমানের সাথে কথা বলেছেন এবং তিনি শপথ নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
হারুন বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশেই আমরা সংসদে এসেছি এবং শপথ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না এবং এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত না। ‘৩০ ডিসেম্বর কোনো নির্বাচন হয়নি। যে কারণে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু সরকারের অপশাসনের বিষয়ে কথা বলতেই আমরা সংসদে যোগ দিয়েছি।’
তারেক রহমানের নির্দেশনা সত্বেও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল কেন শপথ নেননি এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে তিনিই (ফখরুল) ভালো বলতে পারবেন।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দলের সবুজ সংকেত পাওয়ার আগেই শপথ নেয়ায় জহিদুর রহমান জাহিদকে বহিষ্কার করা হয়। ‘তিনি আজ তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং তার বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে।’
এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত চার সংসদ সদস্যকে শপথ বাক্য পাঠ করান। সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
শপথ নেয়া বিএনপির চার এমপি হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশীদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম ও বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন।
এ নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের ৩০০ এমপির মধ্যে ২৯৯ জন শপথ নিলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখনো শপথ গ্রহণ করেননি। শপথ গ্রহণের সময়সীমা আজই শেষ হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাহিদুর রহমান জাহিদ এমপি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। পরে শনিবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বিএনপি ও গণফোরামসহ আরও কয়েকটি দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে বিএনপি ছয়টি আসনে এবং গণফোরাম দুটি আসনে বিজয়ী হয়।
তবে তারা ‘ব্যাপক ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে জোট নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করে এবং সংসদের যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই এমপি সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২) ও মোকাব্বির খান (সিলেট-২) যথাক্রমে ৭ মার্চ ও ২ এপ্রিল শপথ নেন।