বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি। তাদের সাথে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান (পিপিএম-সেবা) সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সাজ্জাদ হোসেন বরকত (বামে) ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল (ডানে)
তিনি জানান, গত ১৬ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বদরপুর মোড় হতে প্রথমে বরকত, রুবেল ও বিপুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আগ্নেয়াস্ত্রসহ যা যা জব্দ করা হয়েছে- পাঁচটি পিস্তল ও ৯১ রাউন্ড গুলি, দুটি শর্টগান ও ১৮০টি কার্তুজ, ছয় বোতল বিদেশি মদ, ৬৫ পিস ইয়াবা, সরকারি ১২৬০ বস্তা চাল, ৩ হাজার মার্কিন ডলার, ৯৮ হাজার ভারতীয় রুপি ও বাংলাদেশি ২৯ লাখ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- সহযোগী রেজাউল করিম বিপুল, আওয়ামী লীগ নেত্রী ইয়াসমিন সুলতানা বন্যা মন্ডল, ছাত্রলীগ নেতা এনামুল ইসলাম জনি, অমিয় সরকার, বর্ধিত ১৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চক্রবর্তী, সাবেক ৬ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মাহফুজুর রহমান মামুন ও জাহিদ খান।
গ্রেপ্তার বরকত ও রুবেল সম্পর্কে আপন দুই ভাই। তাদের গ্রেপ্তারের খবরে জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি। বরকত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের প্রত্যাশা নামক পত্রিকার সম্পাদক।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান বলেন, ‘বরকত, রুবেলের কোমড় হতে গুলিভর্তি ম্যাগজিনসহ সেভেন পয়েন্ট সিস্ক ফাইভ বোরের পিস্তল জব্দ করা হয়। এছাড়া বরকতের রেস্ট হাউস হতে বিদেশি মদ ও খাদ্য অধিদপ্তরের ১২শ’ বস্তাভর্তি চাল এবং রুবেলের ড্রয়ার হতে ৬৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।’
পুলিশ সুপার জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও সরকারি চাল গুদামজাত করার অপরাধে নিয়মিত মামলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, ভূমি দখল, চাঁদাবাজিসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ নাজমুল ইসলাম লেভী বলেন, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে অতিদ্রুত পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে গ্রেপ্তারের খবরে তাদের বিচার ও শাস্তি দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল বের করে আওয়ামী লীগের একাংশ।
ফরিদপুরে প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ফরিদপুর কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ বোস।
এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মনিরুল হাসান মিঠু, কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খলিফা কামাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামচুল আলম চৌধুরী সহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।