সেই সাথে ওবায়দুল কাদের বাধাহীনভাবে দ্বিতীয়বারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
দলের কাউন্সিলরা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কাউন্সিলের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে আগামী তিন বছরের জন্য তাদের নির্বাচিত করেন।
তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তাদের নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
এ সময় এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শেখ হাসিনা দল পরিচালনার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মাঝে নতুন মুখ হিসেবে এসেছেন শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান। তবে এ জন্য আগের কমিটির পুরোনো ১৪ জনের কাউকে বাদ দেয়া হয়নি।
নানক ও আবদুর রহমান আগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নতুন কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুব উল আলম হানিফ ও দীপু মনি সাথে নতুন মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন ড. হাছান মাহমুদ ও বাহাউদ্দিন নাছিম।
আগের কমিটিতে হাছান মাহমুদ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বাহাউদ্দিন নাছিম সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
এছাড়া, আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক ও আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপনের সাথে এবার যুক্ত হয়েছেন এসএম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম। সাংগঠনিক সম্পাদক পদের আরও তিনটি পদ এখনো খালি রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে এ কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। পরবর্তী তিন বছরের জন্য নতুন আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব নির্বাচন করতে ৭৯টি সাংগঠনিক জেলার প্রায় সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর এতে যোগ দেন।
অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। সেই সাথে দলের সাধারণ সম্পাদক ও ছয় বিভাগ থেকে সাতজন কাউন্সিলর বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদ, সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ভেঙে দেন।
পরে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সভাপতির পদে নামের প্রস্তাব চান। অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু কাউন্সিলরদের পক্ষে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন এবং পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য এটি সমর্থন করেন। এরপর নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন আগামী তিন বছরের জন্য শেখ হাসিনাকে সর্বসম্মতভাবে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার ঘোষণা দেন।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ওবায়দুল কাদেরের নাম প্রস্তাব করেন এবং আবদুর রহমান এটি সমর্থন করেন।
শেখ হাসিনা ১৯৮১ সাল থেকে গত ২৮ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন।
তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশনের বাকি দুই সদস্য ছিলেন ড. মশিউর রহমান ও ড. সাইদুর রহমান খান।
পরে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি দলের সাধারণ সম্পাদককে সাথে নিয়ে মঞ্চে আসেন এবং ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ, সংসদীয় বোর্ড ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটিগুলোর বাকি সদস্যদের সভাপতি নিজ ক্ষমতাবলে নিয়োগ দেবেন।
কাউন্সিলরা নতুন কমিটিগুলোর বিষয়ে কণ্ঠ ভোটে সমর্থন জানান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য: সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরুল্লাহ, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মান্নান খান, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, শাহজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আবদুর রহমান।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদাধিকার বলে ১৯ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম।
সাংগঠনিক সম্পাদক: আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম।
সম্পাদক: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লায়লী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সুজীত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, শিক্ষা মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ড. রোকেয়া সুলতানা।
এছাড়া অর্থ সম্পাদক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, বাণিজ্য সম্পাদক এবং শ্রম সম্পাদক পদগুলো খালি রয়েছে।
সংসদীয় বোর্ড: শেখ হাসিনা, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ, ওবায়দুল কাদের ও রাশিদুল আলম। খালি পদগুলো পরে ঘোষণা হবে।
স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড: শেখ হাসিনা, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফরুল্লাহ, মোহাম্মদ নাসিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, ওবায়দুল কাদের, রশিদুল আলম, মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।
উপদেষ্টা পরিষদ: ড. এসএ মালেক, এএমএ মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, অ্যাডভোকেট রহমত আলী, এইচটি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সৈয়দ আবু নাসের, সতিস চন্দ্র রায়, অধ্যাপক ড. আব্দুল খালেক, ড. রুহুল হক, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কাজী আকরাম উদ্দিন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ড. অনুপম সেন, ড. হামিদা বানু, ড. মো. হোসেন মনসুর, অধ্যাপক সুলতানা শফী, আফম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, মুহাম্মদ জমির, গোলাম মাওলা নকশীবন্দী, ড. মির্জা জলিল, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ মালিক, অধ্যাপক ড. সাঈদুর রহমান খান, ড. গওহর রিজভী, রশিদুল আলম, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, কাজী সিরাজুল ইসলাম, আলহাজ্ব মকবুল হোসেন, মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, অ্যাডভোকেট আবুল বাসেত মজুমদার, মুকুল বোস, সালমান এফ রহমান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আতাউর রহমান ও জয়নাল হাজারী।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৪১ থেকে ৫১ জনে উন্নীত করা হয়েছে এবং তা কাউন্সিলেও অনুমোদন পেয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদ সম্পর্কে শেখ হাসিনা জানান, সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ফলে আগের কমিটির সদস্যরাও নতুন কমিটিতে থাকবেন।