কলেজছাত্রী মেয়েকে ফিরে পেতে গত সাত মাস বিভিন্ন স্থানে খুঁজে বেড়ালেও মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে তার বেঁচে থাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম।
দেশ স্বাধীন করেও এখন নিজের মেয়ের জন্য কিছুই করতে না পারার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শান্তার বাবা সিরাজুল বলেন, ‘ওড়া আমার মেয়েকে হয়তো এতদিনে মেরে ফেলেছে, নয়তো বিদেশে পাচার করে দিয়েছে।’
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আরো বলেন, ‘অপহরণকারীরা আমার নিকট আত্মীয়দের কাছে শান্তাকে এক ভবঘুরের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। আমি রাজি হইনি বলে ওরা আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।’
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে অন্য আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা।
আখ্যেপ করে তিনি বলেন, ‘এজন্যই কি দেশ স্বাধীন করেছিলাম! যুদ্ধে গিয়ে আহত হয়েছি এখন স্বাধীন দেশে মেয়ের বিচার পাচ্ছিনা। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
বাবা সিরাজুলের ভাষ্য অনুযায়, গত ১৮ মে শান্তা তার নিজ বাড়ি উপজেলার চাষি বালিগাওঁ গ্রাম হতে ফুফু শাহানা বেগমের সাথে পাশের বালিগাঁও বাজারে যাচ্ছিল। পথে বাজারের পূর্ব পাশে শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দি গ্রামের খবির হালদার, সাব্বির হালদার, আমিন হালদার গংরা শান্তাকে অপহরণ করে।
ঘটনার এক মাস পরে গত ১৮ জুন শান্তার বাবা সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে টঙ্গীবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু অপহরণের ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও শান্তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
শান্তা সাভার বেপজা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সে বাবা-মায়ের সাথে সাভার উপজেলার গাজিরচট এলাকায় বসবাস করতো। কলেজ ছুটিতে গ্রামের বাড়ি টঙ্গীবাড়ি উপজেলার চাষী বালিগাওঁ গ্রামে বেড়াতে গেলে সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে অপহরণকারীরা।
যোগাযোগ করা হলে টঙ্গীবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, ‘বাদি আমাদের আসামিদের ধরতে কোন সহযোগিতা করছেনা। তার পরেও আমরা এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’