স্থানীয়রা জানায়, আবরারের পরিবারকে সমবেদনা এবং তার কবর জিয়ারত করার জন্য সকালে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। তার আসার কথা কুষ্টিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে আবরারের আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী ও গ্রামবাসী আগে থেকে বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপাচার্য আবরারের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা পৌঁছান। এ সময় তার সাথে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন ও পুলিশ সুপার এসএম তানভীন আরাফাত ছিলেন। সেখানে তিনি আবরারের বাবা বরকতুল্লাহ’র সাথে দেখা করেন এবং আবরারের কবর জিয়ারত করেন।
কবর জিয়ারত শেষে নিহত আবরারের মাকে সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে যাওয়ার সময় উত্তেজিত গ্রামবাসী উপাচার্যকে ঘিরে রেখে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে বুয়েট ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম পিছু হটতে বাধ্য হন। পরে জেলা প্রশাসকের গাড়িতে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। উপাচার্য চলে যাওয়ার পর পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
গ্রামবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আবরারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলেও উপাচার্য সেসময় ঘটনাস্থলে যাননি, এমনকি তার নামাজে জানাজাতেও অংশ নেননি। আবরারের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানাননি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ভিসি এখন কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে অবস্থান করছেন। এখান থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
প্রসঙ্গত, বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে (২১) গত রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে বুয়েটের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মাসুক এলাহি তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার রাতে বুয়েটের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে আবরারের মরদেহ কুষ্টিয়ায় আনা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় কুষ্টিয়া শহরের পিটিটিআই রোডস্থ নিজ বাড়িতে আবরারের মরদেহ পৌঁছালে সেখানে আল-হেরা জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে তৃতীয় জানাজা শেষে আবরার ফাহাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়।