আদালতের নির্দেশে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে ওসি উছমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে জিআরপি থানায় শুক্রবার এ মামলাটি দায়ের করেন।
পাকশি থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে এবং জেল গেট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ভিকটিম নিজেই এ মামলার বাদী। ’
মামলায় জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ঘটনার রাতের ডিউটি অফিসার এবং অজ্ঞাত আরও তিন পুলিশকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী অফিসার পাকশি এসপি অফিস থেকে নির্ধারণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে খুলনা রেলস্টেশনে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সদস্যরা ওই গৃহবধূকে মোবাইল চুরির অভিযোগে আটক করে। পরদিন শনিবার তাকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ফুলতলায় পাঠানো হয়।
৪ আগস্ট আদালতে জামিন শুনানিকালে বিচারককে ওই নারী জানান, জিআরপি থানায় নির্যাতন ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। থানা হাজতে ওসি উছমান গণি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করে। এরপর আদালতের নির্দেশে সোমবার (৫ আগস্ট) তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
এ ঘটনায় পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ এবং সদস্যরা হলেন কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের ডিআইও-১ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শ ম কামাল হোসেইন ও দর্শনা রেলওয়ে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. বাহারুল ইসলাম। এ তদন্ত কমিটি গত মঙ্গলবার তদন্ত শুরু করে এবং ৮ আগস্ট জেল গেটে ভিকটিমের জবানবন্দি গ্রহণ করে।
খুলনা জিআরপি থানা হাজতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গত ৭ আগস্ট থানার ওসি উছমান গণি পাঠান ও এসআই নাজমুল হককে প্রত্যাহার করে জিআরপি লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ জানান, তদন্তকালে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের কারণে পুলিশ বাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।