মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় শুক্রবার রাত থেকে উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। তবে বাগেরহাটে বিভিন্ন খাল ও নদী দখল, পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া এবং অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ নানা কারণে বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বলে পৌরবাসীর অভিযোগ।
বৃষ্টি থামলে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌর ভবনের সামনে, শালতলার মোড়, সাধনার মোড়, বাসাবাটি, খারদ্বার, আমলাপাড়া, সাহাপড়া, আলিয়া মাদরাসা রোড ও মিঠাপুকুরপাড়সহ বিভিন্ন সড়কে পানি জমে আছে।
অনেককে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘর থেকে থালা এবং বালতি দিয়ে পানি পরিষ্কার করতে দেখা যায়।
আলিয়া মাদরাসা রোড এলাকার বাসিন্দা তহুরা খাতুন, আলেয়া বেগম, আলমগীর হোসেন ও মিঠুসহ বেশ কয়েকজন জানান, শুক্রবার রাত ২টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চলতে থাকে। টানা বৃষ্টিতে তাদের বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে।
তারা আরও বলেন, লাগাতার এবং ভারী বৃষ্টি হলেই তাদের পানিবন্দী অবস্থায় দিন পার করতে হয়। তারা দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দাবি জানান।
সুজন দাস, তালুকদার বাবুল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন ও কল্পনা হালদারসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েজন পৌরবাসীর অভিযোগ, ভারী বৃষ্টিপাত হলেই শহরের রাস্তায় পানি জমে যায়। নিচু এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠে পড়ে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বৃষ্টির পানি দ্রুত সরতে পারছে না জানিয়ে তারা আরও বলেন, অনেক সময় জোয়ারে পাশের ভৈরব নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি উঠে পড়ে। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চান এসব পৌরবাসী।
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ বাকী তালুকদার জানান, পৌরসভার সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের চেষ্টায় একটি প্রকল্প পাওয়া গেছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পৌর এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাশেস শিপন জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থা এত নাজুক যে অতিবৃষ্টি হলে সব পৌরসভায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ‘পৌর এলাকাকে জলাবদ্ধতা মুক্ত করতে আমরা চেষ্টা করছি।’
‘কিন্তু অনেক জায়গায় আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষ করে পৌর এলাকার মধ্যে যে পাঁচটি খাল আছে তা সংস্কার না করার কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না,’ যোগ করেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে ২৪ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন এবং শহর রক্ষা বাঁধে ৪০টি স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ চলছে। ড্রেন এবং গেট নির্মাণ কাজ শেষ হলে শহরে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।