বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন দাবি করেন, রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা ভোর সোয়া ৪টার দিকে সদর উপজেলার পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থান করছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহানের নেতৃত্বে তারা সেখানে অভিযান চালান।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ সদস্যরাও তাদের জীবন রক্ষার জন্য গুলি চালান, বলেন তিনি।
ওসি আরও বলেন, বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থলে একজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা তাকে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বলে শনাক্ত করে।
তার দাবি, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহানসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহ-জাহান হোসেন, এসআই হাবিবুর রহমান ও মনিরুজ্জমান এবং কনস্টেবল হাবিবুর রহমান।
এদিকে, দুপুরে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক ডা. সোহরাফ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদেস্যের মেডিকেল বোর্ড নয়নের মরদেহের ময়নাতদন্ত করে।
ডা. সোহরাফ জানান, নিহত নয়নের শরীরে তিনটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে। শরীরের পেছন দিক থেকে লাগা গুলিগুলো বুকের ডান দিক থেকে দুটি ও বাম দিক থেকে একটি বের হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবির মোহাম্মদ হোসেন নয়নের লাশ তার মামা মিজানুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন।
আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান আসামী নয়ন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ায় বরগুনার সর্বস্তরের মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে।
গত ২৬ জুন জেলা শহরে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে রিফাতকে (২২) কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। হত্যার ঘটনা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন স্থানীয়রা। ভিডিও ভাইরাল হলে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
দেশব্যাপী আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সোমবার দুই অভিযুক্ত মোহাম্মাদ অলি ও তানভীর হোসেন হত্যাকাণ্ডে তাদের জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন।
এছাড়া, আদালত গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুল হাসান, সায়মুন ও সাগরকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।