একইসাথে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকাও বাড়ছে। গত ৪ জুলাই হতে শুরু হওয়া চলমান মৌসুমী বৃষ্টিপাতের কারণে গত বছরের তুলনায় বেশি দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
আইওএম-বাংলাদেশ মিশনের উপ প্রধান ম্যানুয়েল পেরেইরা বলেন, টানা বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাসে ক্যাম্পে অবর্ণনীয় দুর্দশা বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জরুরি সাহায্য প্রদান ও তাদের পুনরায় আশ্রয় দেয়ার জন্য আমাদের সবগুলো টিম দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। যদিও আমরা দুর্যোগের তাৎক্ষণিক ক্ষতি কাটানোর জন্য কাজ করছি কিন্তু আমাদের অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আইওএম গত দুইদিনে (৯ এবং ১০ জুলাই) প্রায় ৬,০০০ রোহিঙ্গাকে জরুরি সাহায্য প্রদান করেছে এবং ২০১৮’র শেষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৭০ মানুষকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
‘কিন্তু আমরা দেখছি যে এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি এই অঞ্চলের মানুষকে বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ করছে এবং আমরা সবে মাত্র এই মৌসুমের অর্ধেক সময় পার করছি,’ যোগ করেন তিনি।
গত ৪৮ ঘণ্টায় আইওএমের ক্যাম্পে থাকা টিমগুলো ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে প্রায় ৫,০৭৯ টি প্লাস্টিক ট্রিপল বিতরণ করেছে। কুতুপালং মেগাক্যাম্প এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আইওএম এবং এর পার্টনার সংস্থাগুলো চলমান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ করছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে প্রয়োজনমতো তাৎক্ষণিক সাহায্য করছে।
গত ৯ জুলাই রাত থেকে ১০ জুলাই রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ৯৯৮ জন মানুষ এবং ৯১২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আইওএমের টিমগুলো গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৬টি মাটি ধস, ৮ বার ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত এবং ১৭৪ জন মানুষ গৃহহীন হওয়ার খবর রেকর্ড করেছে।
আইএসসিজি (ইন্টার সেক্টর কোর্ডিনেশন গ্রুপ) বলছে, মৌসুমী দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে এবছর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০১৮ সালের রেকর্ড ছাড়াতে পারে।
তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী- চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০১৮ সালের মৌসুমে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৫৫ হাজার।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে প্রায় ৫,৬০০ মানুষ গৃহহীন হয়েছে অথচ ২০১৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬,২০০।