র্যাব-৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাতে আমিনবাজারের সালেহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ম্যাগজিন, ১৯০ গ্রাম হিরোইন, ৫০০ পিস ইয়াবা ও দেশীয় অস্ত্রসহ দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়।
র্যাবের দাবি, গাংচিল বাহিনী ২০০২ সালে আমিনবাজার এলাকার পাশে সাভার থানার একজন এসআইকে হত্যা, ২০০৭ সালে দুজন র্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্র লুট ও আমিনবাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্র লুটের সাথে জড়িত ছিল।
এ বাহিনী তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিনবাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করত। এছাড়া, এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাংচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করতেন এবং চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হতো। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা ও ছিনতাইসহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই পাড়ে একক আধিপত্য বিস্তার ছিল এ বাহিনীর প্রধান কাজ।
আমিনবাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে ২০০০ সালে উত্থান হয় গাংচিল বাহিনীর। যার প্রধান ছিলেন আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার। বেশির ভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলানো হতো বলে এর নাম দেয়া হয় গাংচিল বাহিনী। ২০১৭ সালের পর সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিন বাহিনীর নেতৃত্বে আসেন। এ বাহিনী মূলত আমিনবাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাঁধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, খুন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
এ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে সাভার মডেল থানায় খুন, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানিয়েছেন যে তারা সবসময় নদীতে ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন এবং বেশির ভাগ সময় নদীপথে ডবল ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে যাতায়াত করেন। তারা সাভার-আমিনবাজার এলাকার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক ও তুরাগ-বুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচলকারী বালুর ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায় করতেন।