পরিবেশ-ও-কৃষি
দূষিত বাতাসের তালিকায় ঢাকার পাশাপাশি শীর্ষ পাঁচে দক্ষিণ এশিয়ার শহর
সারা দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ৬ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৭৫ স্কোর নিয়ে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
ভারতের কলকাতা, পাকিস্তানের করাচি ও লাহোর এবং ভারতের দিল্লি যথাক্রমে ২৪০, ২১১, ১৮৩ ও ১৭৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম চারটি স্থান দখল করেছে।
১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর', ১৫০ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ৬ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রেরসংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: সারা দেশে চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ৬ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।
এ সময় মাঝ পদ্মায় আটকা ছিল ২টি ফেরি। এছাড়া পাটুরিয়ায় ২টি ও দৌলতদিয়া ঘাটে আরও ৭টি ফেরি আটকিয়ে রাখা হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন নদী পার করতে আসা যাত্রীরা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা সেক্টরের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আবদুস সালাম জানান, মধ্য রাত থেকে কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকে। রাত দেড়টায় ঘন কুয়াশায় পুরো নৌপথ ঢেকে যায়। এতে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ
তিনি আরও জানান, মাঝ পদ্মায় আটকা পড়ে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর ও করবি নামে দুইটি ফেরি। এছাড়া আরো ১০টি ফেরি উভয় ঘাটে আটকিয়ে রাখা হয়।
এদিকে ফেরি বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া পাড়ে আটকা পড়ে অর্ধশত যাত্রীবাহী বাস ও তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তা বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় ঘন কুয়াশার প্রকোপ কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় ঢাকার বদলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নামল সিলেটে
ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১২ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
কৃষিপণ্যের মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
দেশে কৃষিপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
তিনি বলেন, যে পদ্ধতি অনুসরণ করলে মধ্যস্বত্বভোগীদের ধ্বংস করে দেওয়া যাবে আমরা সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাই। আমরা ভোক্তাদের জন্য মার্কেট স্ট্যাডি করতে চাই।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:
এর আগে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আচিম ট্রোস্টার। সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার।
তিনি আরও বলেন, মার্কেট দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এখনই তার কোনো ডেডলাইন দেওয়া যাচ্ছে না।
মন্ত্রী বলেন, কত দিনের মধ্যে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে সে বিষয় ডেডলাইন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য যতগুলো সেক্টর আছে সবাই একত্রিত হয়ে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা নেব। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়েই আমরা বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে চাই।
তিনি বলেন, বেশি মুনাফার জন্য মানুষের বুকে চাকু মারলাম, সেটা তো হয় না। বাজার নিয়ন্ত্রণে বাজার বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পেশায়-নেশায় সবকিছুর মধ্যে কৃষক: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এগিয়ে যাওয়া। এগিয়ে যাওয়ার জন্য উন্নত প্রযুক্তির চাষাবাদ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। এখানে অনেক বিজ্ঞানী রয়েছেন, আমরা তাদের কাজে লাগাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, উৎপাদন যাতে বেশি হয়, ফসল যাতে বেশি হয়, সেজন্য আমরা কোনো জমি খালি রাখতে চাই না। যেসমস্ত জায়গায় ফসল ফলানো যায়, সেখানে যাতে কৃষকরা উৎপাদনে উৎসাহিত হয়, আমরা সে পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে আমরা উঠান বৈঠক করব। গ্রাম পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা রয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে তিনজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা প্রতিটি এলাকায় ঘুরে ফসলের সমস্যা কী, কীটনাশক সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা ও সঠিক মাত্রায় সার দিচ্ছে কি না- তা তদারকি করে থাকেন। সেই তদারকি আরও জোরদার করা হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের মুক্তি নিয়ে কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত: আইনমন্ত্রী
জামার্নির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ বলেন, স্বাধীনতার সময় থেকে জার্মানির সঙ্গে আমাদের একটা সুসম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। জার্মানি উন্নত দেশ, কৃষিতে উন্নত। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা করবে। পূর্বাচলে আমরা একটি আন্তর্জাতিকমানের প্যাকিং হাউজ ও ল্যাব করতে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে জার্মানির কারিগরি সহযোগিতা দরকার। এ বিষয়েও তারা সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জার্মানিতে আম, আনারস, শাকসবজি রপ্তানি করতে চাই। তাদের বলেছি, কোয়ালিটির ব্যাপারে আমরা কোনো আপস করব না। উৎপাদনের ক্ষেত্রে মানের প্রশ্নে আপস করা হবে না। এক্ষেত্রে আমাদের জিরো টলারেন্স।
আরও পড়ুন: আলু আমদানি হলে দাম কমবে, মানুষ স্বস্তি পাবে: কৃষিমন্ত্রী
চলমান মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে ঢাকায় কবে বৃষ্টি হবে?
চলমান মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে।
অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, প্রথম ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে, পরের ২৪ ঘণ্টায় বলা হয়েছে- রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে
কুয়াশার কারণে উড়োজাহাজ চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। কুয়াশার কারণে দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে বলে অধিদপ্তর জানিয়েছে।
আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে। গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয় টেকনাফে।
আরও পড়ুন: দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন
মঙ্গলবার সকালে বিশ্বে দ্বিতীয় দূষিত বাতাস ঢাকার
সারা দেশে চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
সারা দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় রয়েছে। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টা ২৯ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৭৫ স্কোর নিয়ে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
ভারতের দিল্লি ও কলকাতা এবং পাকিস্তানের করাচি ও লাহোর যথাক্রমে ২৪৩, ২১২, ২১২ এবং ১৯৫ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম চারটি স্থান দখল করেছে।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া, ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার সকালে বিশ্বে দ্বিতীয় দূষিত বাতাস ঢাকার
কুড়িগ্রামে তীব্র ঠান্ডায় বীজতলা ও ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা আর শীতের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। রাতভর বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া কুয়াশা আর দিনের বেলা হিম বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র ঠান্ডায় কাজ করতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। কাজের ফাঁকে শুকনো খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শ্রমিকরা।
এদিকে তীব্র শীতে বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। কনকনে ঠান্ডার হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে স্বচ্ছ সাদা রঙের প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখছেন বীজতলা। এমন বৈরি আবহাওয়ায় জমিতে চারা রোপণের সাহস পাচ্ছেন না কৃষকরা।
কথা হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বোরো আবাদের জন্য বীজতলার চারার পরিণত বয়স হয়েছে। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে জমিতে রোপণ করতে পারছি না। এদিকে বীজতলাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে প্লাস্টিক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রেখেছি।
আরেক কৃষক মো. মন্তাজ আলী বলেন, যে শীত পড়ছে তাতে কৃষি আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বিশেষ করে আলু খেত, বীজতলায় হিম ধরা শুরু করেছে। স্প্রে করতেছি কোনো কাজ হচ্ছে না। কী হবে আল্লাহ জানে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে বোরো ধানের বীজতলা ও সবজির ক্ষতির আশঙ্কায় যশোরের কৃষকরা
শ্রমিক মো. রহমত আলী বলেন, ‘বাহে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ছে। হাত পা টট্টরিয়া নাগছে (বরফ মত)। মাঠে এক-দেড় ঘণ্টা কাজ করলে আর কাজ করা যায় না। কাজের ফাঁকে আগুন তাপা নাগে। কী করমো কাজ না করলে পেটে কি ভাত জুটবে?’
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন, রবিবার জেলায় সকাল ৬টায় ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিন এমন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকবে। তবে মাসের শেষে একটি শৈত্য প্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা রয়েছে। ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় কৃষকদের বোরো আবাদে বিলম্বিত হচ্ছে। বীজতলা এখনও নষ্ট হওয়া শুরু করেনি। তবে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে চারা খাদ্য গ্রহণ করতে না পারায় পাতা হলুদ হয়ে যায়। বীজতলা নষ্টের হাত থেকে বাঁচাতে কৃষকদের বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শৈত্য প্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় যে পরামর্শ দিল কৃষি মন্ত্রণালয়
আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে
আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
অন্যদিকে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে।
এছাড়া, আবহাওয়া অফিস আজ সকাল ৯টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলেছে, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে, কুয়াশার কারণে উড়োজাহাজ চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ও সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে এবং সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
তাছাড়া, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাসে বলেছে।
চলমান ঘন কুয়াশা ও শীতে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জেলাসমূহের সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো বেশ বিপাকে পড়েছেন। শিশু ও বয়স্করা কষ্ট পাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালগুলোতে বেড়ে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রি
দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন
মঙ্গলবার সকালে বিশ্বে দ্বিতীয় দূষিত বাতাস ঢাকার
ঢাকার বাতাসের মান আজ 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা। সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৮৪ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।
ভারতের দিল্লি, কলকাতা এবং পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ২৬১, ১৭৯ এবং ১৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া, ২০১ থেকে ৩০০ একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: সোমবার সকালে ঢাকার বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর'
দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত দৈনন্দিন জীবন
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি প্রাথমিকভাবে মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, বরিশাল এবং ভোলাসহ উত্তরাঞ্চলকে প্রভাবিত করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই শীতের প্রভাব বিশেষভাবে দিনমজুর, শিশু ও বয়স্কদের ওপর পড়ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ আবহাওয়া বুলেটিনে সারাদেশে তাপমাত্রার তারতম্য তুলে ধরা হয়েছে, বরিশালে তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। আর টেকনাফে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার মানদণ্ড অনুযায়ী ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে হালকা শৈত্যপ্রবাহ হিসাবে ধরা হয়। তাপমাত্রা হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে তীব্রতাও বৃদ্ধি পায়।
এই আবহাওয়ার ধরণটি মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশাও বয়ে নিয়ে আসে, বিশেষত মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত এবং কিছু অঞ্চলে দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে। এতে মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াত এবং অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সোমবার সকালে ঢাকার বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর'
এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও, কোথাও কোথাও আকাশ আংশিক অস্থায়ীভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাত এবং দিনের তাপমাত্রায় সামান্য বৃদ্ধি প্রত্যাশিত, যদিও অনেক অঞ্চলে দিনে ঠান্ডা আবহাওয়া অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এই শৈত্যপ্রবাহে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বাসিন্দারা হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মুখোমুখি হয়েছে। এটি সাধারণ জীবনযাত্রাকেকে উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত করেছে। হাড় কাঁপানো শীত থেকে জনগণের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশকে রক্ষা করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রি
শৈত্য প্রবাহ থেকে ফসল রক্ষায় যে পরামর্শ দিল কৃষি মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) এর তথ্য অনুসারে, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের (রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট) উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আগামী ২ থেকে ৩ দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এ মৃদু শৈত্য প্রবাহের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মাঠের ফসল রক্ষার জন্য কিছু জরুরি পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসককে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বদলি
পরামর্শগুলো হলো-
কুয়াশা ও মৃদু, তীব্র শীতের এ অবস্থায় বোরো ধানের বীজতলায় ৩ থেকে ৫ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে।
ঠাণ্ডার প্রকোপ থেকে রক্ষা এবং চারার স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য বীজতলা রাতে স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, বীজতলা থেকে পানি সকালে বের করে দিয়ে আবার নতুন পানি দিতে হবে এবং প্রতিদিন সকালে চারার উপর জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে।
আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতিতে আলুর নাবী ধ্বসা রোগের আক্রমণ হতে পারে। প্রতিরোধের জন্য অনুমোদিত মাত্রায় ম্যানকোজেব গোত্রের ছত্রাকনাশক ৭ থেকে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।
সরিষায় অলটারনারিয়া ব্লাইট রোগ দেখা দিতে পারে। রোগ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনুমোদিত মাত্রায় ইপ্রোডিয়ন গোত্রের ছত্রাকনাশক ১০ থেকে ১২ দিন পর পর ৩ থেকে ৪ বার স্প্রে করতে হবে।
ফল গাছে নিয়মিত হালকা সেচ প্রদান করতে হবে। কচি ফল গাছ ঠাণ্ডা হাওয়া থেকে রক্ষার জন্য খড়, পলিথিন শীট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন পেঁয়াজ অস্থিতিশীল বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে: কৃষি মন্ত্রণালয়