%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
রাজধানীতে যানজট দিন দিন বাড়ছেই, নেই কোনো প্রতিকার
রাজধানীতে যানজট দিন দিন বাড়ছেই। যানজট এখন একটি আতঙ্কের নাম। রাস্তায় বের হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে কত সময় লাগবে তা কারোর জানা নেই। এর নেই কোনো প্রতিকার, নগরবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়ছে এই যানজটের ভোগান্তিতে।
ঢাকার কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে।
বনানী থেকে বিমানবন্দর- উত্তরা রোড
বনানী থেকে বিমানবন্দর- উত্তরা রোড, দুই পাশেই হঠাৎ যানজট তৈরি হয়। যার ফলে এই সড়কের যাত্রীদের প্রায়ই ফ্লাইট মিস করতে হয়। বিমানবন্দর এলাকায় যানজটেই শুধু বসে থাকতে হয় দেড় থেকে দুই ঘন্টা। যানজট তৈরি হলে পল্টন বা মতিঝিল আসতে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘন্টা।
উত্তরা থেকে পল্টন- মতিঝিল
বিমানবন্দর এলাকার জন্য উত্তরা থেকে পল্টন- মতিঝিল বা এদিকে প্রতিদিন যাতায়াতকারীদের জন্য খুবই কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। হাতে অতিরিক্ত দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় নিয়ে প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হয়।
উত্তরা থেকে সচিবালয় প্রতিদিন অফিস করেন রায়হান। তিনি ইউএনবিকে জানান, উত্তরা থেকে সচিবালয় পর্যন্ত আসতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। হয়ত সৌভাগ্যক্রমে কখনও রাস্তা ফাঁকা থাকলে দেড় ঘন্টায় আসা যায়। তবে এটি খুবই কম। যদি হঠাৎ কোনো যানজট তৈরি হয়, তখন অনেক সময় দুই/তিন ঘন্টার বেশি সময় লাগে আসতে। বেশি যানজট হয় বিমানবন্দর, বনানী, ও তেজগাঁও এলাকায়।
তেজগাঁও-ফার্মগেট-ধানমন্ডি-শাহবাগ
তেজগাঁও-ফার্মগেট-ধানমন্ডি-শাহবাগ প্রতিদিন এই এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। এসব এলাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজট, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
গুলশান-বনানী-বাড্ডা-কুড়িল
গুলশান-বনানী-বাড্ডা-কুড়িল এলাকায় তীব্র যানজট লেগেই থাকে।
গুলিস্থান-নবাবপুর-জিপিও-পল্টন-মতিঝিল
গুলিস্থান-নবাবপুর-জিপিও-পল্টন-মতিঝিল এলাকায় রাস্তা ফাঁকা পাওয়া কঠিন। এই এলাকায় যানজট প্রতিদিনের সঙ্গী।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পল্টন অফিস করেন ফেরদৌস। তিনি ইউএনবিকে বলেন, দেড়-দুই ঘন্টা সময় লাগে যদি বেশি সকালে বের হতে পারি। আর যদি ১০টার পর বের হই, তাহলে সময় লাগে দুই ঘন্টা। কখনো অস্বাভাবিক যানজট তৈরি হলে আড়াই-তিনঘন্টা সময় লেগে যায় পল্টন পৌঁছাতে। এই রোডে বেশি যানজট হয় বাড্ডা, মৌচাক ও পল্টন মোড়ে।
মিরপুরে বসবাসকারী মুন্না ইউএনবিকে বলেন, মিরপুর থেকে মতিঝিল আসতে সময় লাগে দুই ঘন্টা। আর যদি প্রায় সময় এখন যানজট বেশি হয় ফলে আসতে সময় লাগে আড়াই ঘন্টার বেশি। এই রোডে যানজট বেশি থাকে ফার্মগেট ও শাহবাগ এলাকায়।
ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে চললে এবং শৃঙ্খলা মেনে গাড়ি চালালে অনেক সময় যানজট কম হয়। রাস্তায় বিশৃঙ্খল ও এলোমেলোভাবে গাড়ি চালালে, যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে রাখলে, যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী উঠানোর জন্যই যানজট বৃদ্ধি পায়। সে জন্য আমাদের মাইন্ডসেট করতে হবে।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিমি দীর্ঘ যানজট
অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ঢাকা সিটির অনেক জায়গায় উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে, ফলে সে কারণেও যানজট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর এলাকায় রাস্তার কাজের জন্য সম্প্রতি সময়ে বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যানজট কমিয়ে আনতে হলে শুধু ট্রাফিক পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। সেজন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যানজট নিরসনে স্কুলের বাচ্চাদের যাতায়াতের জন্য স্কুলবাস পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে স্কুলে আসা যাবেনা। স্কুলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা উত্তর সিটির ব্যবস্থাপনায় স্কুলবাস চালু করা হবে। এখন পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুলবাস সেবা চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, অনেক স্কুলে একজন শিক্ষার্থীর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়, এরকম অসংখ্য গাড়ি রাস্তায় চলাচল করে। স্কুলবাস চালু হলে প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার অনেক কমে যাবে। ছেলে-মেয়েরা স্কুল বাসে একসঙ্গে যাওয়া-আসা করলে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে এবং সামাজিক বন্ধনও সুদৃঢ় হবে।
মেয়র আরও বলেন, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করতে পারলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার প্রবণতা কমবে। নগরীর যানজট কমাতে এটি অনেক সহায়ক হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ইউএনবিকে বলেন, যানজট নিরসনে আমরা সমন্বিত পদক্ষেপ নিচ্ছি। বিভিন্ন রাস্তায় চলমান উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বর্তমানে একটু বেশি যানজট হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দুই সিটি মিলে উদ্যোগ নিয়েছি একটি কোম্পানির অধীনে গণপরিবহন নিয়ে আসার। তাহলে রাস্তায় অসুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও কিভাবে উন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটার যানজট, ভোগান্তি
জলবায়ু পরিবর্তন: খুলনায় চিংড়ি চাষ বিপন্ন
খুলনার চাষি ও রপ্তানিকারকরা চিংড়ির উৎপাদন কমে যাওয়ায় চিন্তিত। কারণ, এ অঞ্চল থেকে রপ্তানিতেও প্রভাব পড়েছে। প্রধানত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রার পরিবর্তনে এই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।
২০২১-২০২২ অর্থবছরে খুলনা থেকে মাত্র ৩৩ হাজার ২৭১ টন চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরের ৪২ হাজার ৪৮৯ টন রপ্তানির হিসাবে যা বেশ কম।
শিল্প পরিচালকরা বলছেন যে জলাশয়গুলো তাদের নাব্যতা হারাচ্ছে। চাঁদের মহাকর্ষীয় টানের কারণে প্রাকৃতিক ভরা জোয়ারের দুর্বল শক্তির কারণে লবণাক্ততার স্তর ওঠানামা করছে। যা এই অঞ্চলে চিংড়ি চাষকে প্রভাবিত করছে।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবীর ইউএনবিকে বলেন, ‘৬০’র দশকে দেশে চিংড়ি চাষ শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি শিল্প হয়ে ওঠে।’
তিনি বলেন, ‘গুণগত মানের কারণে ৮০’র দশক থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত বাগদা চিংড়ি বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। কিন্তু এখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে চিংড়ি উৎপাদন কমেছে। সেই সঙ্গে চাহিদা ও দামও কমেছে।’
হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাল-বিল, নদী-নালা শুকিয়ে ভরাট হয়ে গেছে। পানির উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চিংড়ির মৃত্যুহার বেড়েছে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় জেল-ইনজেক্টেড চিংড়ি জব্দ, আটক ১৮
তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক চিংড়ির পোনাও মিলছে না। অল্প কিছু পাওয়া গেলেও ঘেরে ছাড়ার পর পানির তাপমাত্রা সহনীয় না থাকায় সেগুলো টিকছে না। ফুটন্ত পানিতে চিংড়ি কতক্ষণ টিকতে পারে? তাপমাত্রা সহনীয় থাকার কথা ছিল। কিন্তু তা এখন নেই।’
ভালো পরিবেশ না থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিংড়ির পোনা খুবই স্পর্শকাতর। এর জন্য পানি, খাবার, পরিবেশ ও তাপমাত্রা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি তাপমাত্রা সহনীয় না থাকা ও রোগবালাই শেষ না হওয়াকে ইঙ্গিত করেন।
খুলনা বিভাগীয় পোনা মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পাইকগাছা উপজেলার পুরস্কারপ্রাপ্ত ঘের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, ‘জানুয়ারি মাস থেকে এই অঞ্চলের নদ-নদীতে লবণাক্ত পানি চলে আসে। গত বছর লবণাক্ত পানি আসতে দেরি হয়। ফলে এক মাস পিছিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে লবণাক্ত পানি আসে। এ বছরও তাই হয়েছে। বৃষ্টির সময় বৃষ্টি নেই। পানিতে লবণের পরিমাণ অসময়ে বেশি হচ্ছে, আবার প্রয়োজনের সময় কমে যাচ্ছে।’
চিংড়ির চাষ ব্যাহত হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণত মে-জুন মাসে পানিতে লবণের মাত্রা ১৬-১৮ পিপিটি থাকে। কিন্তু মাঝে মধ্যে ৮-১০ পিপিটিতে নেমে আসে। বৃষ্টির স্বাভাবিক গতি ঠিক না থাকায় লবণের মাত্রায় হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
কিবরিয়া জানান, ‘আগে সনাতন পদ্ধতির ঘেরে হ্যাচারির পোনা ছাড়ার পর ৬০-৭০ শতাংশ টিকতো। এখন ১৫-২০ শতাংশ পোনাও বাঁচে না। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়া ও লবণের মাত্রায় হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে চিংড়ি চাষে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। এ অবস্থায় কেউ কেউ চিংড়ি ছেড়ে সাদা মাছ চাষ করছেন।’
আরও পড়ুন: কলাপাতায় চিংড়ি ভাপা
নদ-নদীর নাব্যতা ফেরাতে ড্রেজিং করা জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নদ-নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে। সেখানে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। জোয়ারের পানি ঘেরে ঢোকানোর ফলে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা আসতো। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে এখন ওসব পোনা আসে না। পানির এ অবস্থার কারণে মাটির তারতম্যে পরিবর্তন হয়েছে হয়তো। যে কারণে চিংড়ি চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ৩০-৪০ বছর ধরে আমরা যারা চিংড়ি চাষ করছি, তারাও লোকসানে পড়েছি।’
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার বলেন, ‘পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে চাষিদের ঘেরের গভীরতা বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে নজরদারি বাড়ানোসহ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’
চাষি থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানির মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানান জয়দেব কুমার।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের প্রধান ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোস্তফা সারোয়ার বলেন, ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে চিংড়ির রেণুর মৃত্যুরহার বেড়েছে। প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কৃত্রিম খাবার দেয়া লাগছে। এতে অল্প কিছু রেণু টিকছে। বাকিগুলো মারা যাচ্ছে।’
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে রেণুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির পরিবেশ তৈরি না হওয়ার কথা বলেন মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘রেণুর তাপ সহ্য ক্ষমতা আর বয়স্ক চিংড়ির তাপ সহ্য ক্ষমতার পার্থক্য আছে। সাধারণত ঘের তৈরির পর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে রেণু ছাড়া হয়। মার্চে এসে মারাত্মক গরম পড়ে। তখন তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি হলে তো পানির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি থাকে না। সেটি ২৭ ডিগ্রিতে উঠে যায়। যা রেণুর জন্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে না।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির গবেষণা: হাওরের ইকোসিস্টেম সার্ভিসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপণ
তিনি আরও বলেন, গরম পানিতে রেণু টিকতে পারছে কম। আর ঘেরের গভীরতা কম, ঘেরে পানির উচ্চতাও বাড়ে না। বায়ুর তাপে পানি গরম হয়ে ওঠে। যা চিংড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাপমাত্রা বাড়লে যেকোনো ধরনের ভাইরাসের দাপট বেড়ে যায়। ভাইরাসের জীবনচক্র সক্রিয় অবস্থানে রাখতে প্রয়োজন তাপমাত্রা।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করে মোস্তফা বলেন, ‘এতে গরমের কারণে চিংড়ির পোনার টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় যদি ভাইরাস পানির সংস্পর্শে চলে আসে সেটা ভাইরাসের জন্য সহনীয় অবস্থান। ফলে বড় চিংড়িতে ভাইরাস আক্রান্তে সময় লাগলেও ছোট চিংড়ি আক্রান্ত হতে সময় লাগে না। এজন্য রেণু দ্রুত মারা যায়। চিংড়িতে মড়ক দেখা দেয়।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নতুন বৈশ্বিক উদ্যোগ চায় ঢাকা
বাংলাদেশ রেলওয়ে: ঢেলে সাজানোর বিস্তর পরিকল্পনা সরকারের
যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য রেলওয়ে খাতটিকে সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে সরকার দেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে।
একটি সরকারি নথি অনুসারে, রেলওয়ে খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার একটি সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।
এ সমস্ত কার্যক্রম অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২১-২০২৫) অধীনে করা হবে, যা পরবর্তী পাঁচ বছরে গড়ে আট দশমিক ৫১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। পরিকল্পনাটি সময়সীমার শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ৭৯৮ দশমিক ০৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, বিদ্যমান রেললাইনের বিপরীতে ৮৯৭ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ/ডাবল রেললাইন এবং ৮৪৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সংস্কারের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর মধ্যে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে সেতু নির্মাণ এবং লেভেল ক্রসিং গেট, দেশীয় কনটেইনার ডিপো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আউটলেটগুলোর নির্মাণ ও আধুনিকীকরণসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে সব আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন: বাংলাদেশ রেলওয়ে
নথিতে বলা হয়েছে যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ১৬০টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ, আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ সরঞ্জাম, ২২২টি স্টেশনে সিগনাল সিস্টেমের উন্নতি এবং রেলওয়ে ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা হবে।
এদিকে, সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩০ বছর মেয়াদী সংশোধিত মহাপরিকল্পনা (২০১৬-২০৪৫) বাস্তবায়ন করছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় ঢাকাকে কক্সবাজার, মোংলা সমুদ্রবন্দর, টুঙ্গিপাড়া, বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত উদ্যোগগুলো হল- ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে ও আঞ্চলিক রেলওয়ে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা এবং আধুনিক কমিউটার ট্রেন পরিষেবা চালু করে নিকটবর্তী শহরতলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে সংযুক্ত করা।
১৯৬০ এর দশকে শুরু হওয়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক লাখ ১৪ হাজার কিলোমিটার রেলপথ নিয়ে গঠিত। এটির লক্ষ্য হচ্ছে ইএসসিএপি (ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন ফর এশিয়া অ্যাড দ্য প্যাসিফিক) অঞ্চল এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য ও যাত্রীদের জন্য কার্যকর রেল পরিবহন পরিষেবা প্রদান করা।
এই মহাপরিকল্পনার আওতায় ছয়টি ধাপে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। যাতে খরচ হবে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
নথিতে বলা হয়েছে, পদ্মা বহুমুখী রেল সংযোগ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ এবং যমুনা নদীর ওপর ডাবল ট্র্যাক ডুয়েল গেজ রেল সেতু নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রেলওয়ের ৪ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বরখাস্ত
এতে আরও বলা হয়, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাকের ৭১ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এতে উল্লেখ আছে, রূপসা রেলসেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ।
সরকার ফরিদপুরের ভাঙা থেকে পায়রা বন্দর হয়ে বরিশাল ও পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দরকে পদ্মা রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
নথি অনুসারে, ৪৭ হাজার ৭০৩ টি পদের সংশোধিত জনবল কাঠামোর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা রেলওয়ের পরিষেবার মান বাড়াবে।
আরও পড়ুন: রেলের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে ৭ দিন সময় পেল রেলওয়ে
ভয়কে পেছনে ফেলে চট্টগ্রামে আদিবাসীর সাজে হাজির দুর্গা!
গত বছরের সাম্প্রদায়িক হামলার ক্ষত ও আতঙ্ককে জয় করে বন্দরনগরীর হিন্দু সম্প্রদায় এ বছর ধুমধাম ও সৃজনশীল থিমের মধ্যে তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করছে।
শহরজুড়ে ২৮২টি মণ্ডপের মধ্যে একটি মণ্ডপ সবচেয়ে বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করছে। আদিবাসী নারীর সাজে এখানে আবির্ভূত হয়েছেন দেবী দুর্গা।
দক্ষিণ নালাপাড়া পূজা উদযাপন পরিষদ তার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনে এই অনন্য থিম নিয়ে এসেছে। ‘পার্বণ’ (উৎসব) নামের মণ্ডপটি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের জীবন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরছে।
দুর্গা ও তার চার সন্তান লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের পোশাকে দেশীয় সংস্কৃতির উদযাপন দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। পুরো মণ্ডপটি বাঁশ, বাঁশের কারুকাজ করা দেয়াল এবং আদিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন থেকে অনুপ্রাণিত অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এক মণ্ডপে ১৫১টি প্রতিমা: দুর্গার পরিবারে আমন্ত্রিত যারা
থিম পরিকল্পনাকারী রাজিব বিশ্বাস রাজা বলেন, এবার পূজার থিমের নাম হচ্ছে পার্বণ। আদিবাসীদের জীবনধারা ও কর্মযজ্ঞ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে এখানে। বাঁশ ও বাঁশের বেড়া দিয়ে সাজানো হয়েছে পুরো পূজা মণ্ডপকে। মণ্ডপে প্রায় ১৪ হাজার বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। ভাবনা ও সৃজনে রয়েছেন বিশ্বজিৎ আইচ। পাঁচ মাস আগে থেকে আমরা এই কাজ শুরু করেছিলাম। দিন-রাত কাজ চালিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করছি দর্শনার্থীদেরও কাছে আমাদের এই আয়োজন দৃষ্টিনন্দন হবে।
দুর্গা নিজেও মাথায় আদীবাসীদের মুকুট পরেছেন, বাঁশের তৈরি অলঙ্কার এবং তার শাড়ির মোটিফও দেশীয় ঐতিহ্য থেকে বেছে নেয়া হয়েছে। দেব-দেবী ছাড়াও অন্যান্য চরিত্র ছিল উপজাতীয় পুরুষ, মহিলা এবং শিশু। এদেরও উপজাতিদের পোশাক 'পিনন হাদি' পরানো হয়েছে। পূজা মন্ডপে বাদ্যযন্ত্রসহ নাচের মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে এ 'পার্বণ'।
দুর্গার নান্দনিক ও আদিম রূপের আভাস পেতে ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীরা মণ্ডপে ভিড় করতে শুরু করেছেন।
এ বছর চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় মোট দুই হাজার ৬২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে বলে চট্টগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা জানিয়েছেন।
শেরপুরের পালবাড়ি পূজামণ্ডপ: ১২৭ বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলা
গত ১২৭ বছর ধরে শেরপুরের পালবাড়ি পূজামণ্ডপে জাঁকজমকভাবে পালিত হচ্ছে দুর্গাপূজা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং ধর্মের স্বাধীনতা যে বাংলাদেশি মানসিকতায় গভীরভাবে নিহিত রয়েছে তার প্রমাণ পালবাড়ি।
নালিতাবাড়ির ভোগাই নদীর তীরে খালভাঙ্গা এলাকায় পালপাড়ায় শিক্ষাবিদ নগেন্দ্র চন্দ্র পালের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এ দুর্গাপূজাটি। প্রতিবছর পালবাড়ির পারিবারিক পূজা হলেও এটি এখন সর্বজনীন পূজায় পরিণত হয়েছে।
ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, বাঙালিয়ানার অন্যন্য নিদর্শন পালবাড়ির পূজামণ্ডপটি শেরপুর জেলার সর্ব প্রাচীন পূজামণ্ডপই নয়, এটি দেশের দ্বিতীয় প্রাচীন পূজামণ্ডপ হিসেবেও পরিচিত।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: মৌলভীবাজারে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
পালবাড়ির পূজা কমিটির সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র পাল বলেন, ১৮৯৫ সালে পালপাড়ায় আমাদের পূর্বপুরুষ মঙ্গল রাম সরকার পারিবারিকভাবে তৈরি করেন শ্রী শ্রী মঙ্গল ভবন পূজামণ্ডপ। তৈরির পর থেকেই পারিবারিকভাবে চলতে থাকে দুর্গাপূজা। হঠাৎ মঙ্গল রাম সরকার স্বর্গীয় হন। এরপর থেকেই ঐতিহ্যবাহী এ পূজামণ্ডপটির হাল ধরেন তার ছেলে নালিতাবাড়ির শিক্ষাগুরু নগেন্দ্র চন্দ্র পাল।
বছরের পর বছর ধরে পালবাড়িতে দুর্গাপূজা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। নিছক পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে এটি একটি জনপ্রিয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পালবাড়ি পূজাকে একটি সন্ধিক্ষণ হিসেবে দেখেন যেখানে সকল ধর্মের মানুষ সুখ খুঁজে পেতে একত্রিত হয়।
প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে পূজামণ্ডপটি পরিচালনা করেছেন নগেন্দ্র চন্দ্র পাল। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশত্যাগে বাধ্য হলেও দুর্গাপূজার ব্যত্যয় ঘটেনি। শরণার্থী অবস্থাতেই সীমিত আকারে পালবাড়ির লোকজন দুর্গাপূজা অব্যাহত রেখেছেন।
প্রয়াত নগেন্দ্র পালের ছেলে ব্যাংকার বিশ্বজিৎ পাল বলেন, শতবর্ষী পুরনো ঐতিহ্যবাহী এ পূজামণ্ডপে আগে থেকেই দুর্গাপূজাকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এক সম্প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হয়ে আসছে। কে হিন্দু কে মুসলিম তার বালাই নেই। সকলে মিলে একসঙ্গে দূর্গোৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
আরও পড়ুন: শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
তিনি বলেন, পূজামণ্ডপের সামনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরতি ও লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেবল দুর্গাপূজার ধর্মীয় অনুসঙ্গ থাকেনি, হয়ে উঠেছে সব শ্রেণির মানুষের আনন্দ-বিনোদনের অংশ। আগে এখানে যাত্রাপালা, নাটক মঞ্চস্থ হতো। প্রতিবছর নবমী পূজার দিনে জারি গান, আনন্দ-বিনোদনে এক অপূর্ব মিলনমেলার আবেশ সৃষ্টি হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা চারপুরুষ ধরে এ দুর্গাপূজাটির আয়োজন করে আসছি। আমাদের পঞ্চম প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। এখন তাদের হাতে আমরা পূজা আয়োজনের ভার ছেড়ে দিতে যাচ্ছি। এই দুর্গাপূজার মধ্য দিয়ে আমরা মানুষকে আনন্দ দিতে চাই। সর্বস্তরের মানুষের মঙ্গল কামনা করি।
স্থানীয় সাংবাদিক বিপ্লব দে কেটু বলেন, স্বাধীনতার পরপরই আমার জন্ম। সেই ছোটকাল থেকে আমি পালবাড়ির পূজা দেখতে আসি। এবারও আসছি। এই পূজা না দেখলে আমাদের মনের সাধ পূর্ণ হয় না। আগে তো নদী পার হয়ে আসতে হতো। কত কষ্ট হয়েছে। তারপরও সবাই এ পালবাড়ির পূজামণ্ডপের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। সেটা মনে এক আলাদা তৃপ্তি এনে দেয়।
এ বছর শেরপুর জেলায় ১৪৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।
এ উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপকে সিসি টিভির আওতায় আনা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, আনসার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র্যাব-পুলিশের কড়া নজরদারি ও টহল চলছে। স্থানীয়ভাবে প্রতিটি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: বাগেরহাটে ৬৪২টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
বাগেরহাট: পূর্বপুরুষদের পেশা ছাড়তে চায় প্রতিমা শিল্পীরা, সহায়তার আশ্বাস ডিসির
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগেরহাটের প্রতিমা শিল্পীরা। বংশ পরম্পরায় প্রতিমা তৈরির এসব শিল্পীদের মন ভালো নেই। কারণ পরিশ্রম অনুযায়ী কাঙ্খিত মূল্য পাচ্ছে না তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন এসব প্রতিমা শিল্পীরা। এ অবস্থায় পূর্বপুরুষদের এই পেশা ছেড়ে বিকল্প পেশা খুঁজছে প্রতিমা কারিগরেরা। তবে তাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
সরেজমিনে শহরের শালতলা শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দিরে দেখা গেছে, শিল্পীরা রং তুলিতে দেবদেবীর প্রতিমা সাজাচ্ছেন। সেই সঙ্গে চলছে সাজসজ্জা আর লাইটিংয়ের কাজ।
আরও পড়ুন: দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে মাগুরায়
শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ হচ্ছে দেবদেবীদের প্রতিমা। আর এই মুহূর্তে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দেবদেবীর প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে। শিল্পীরা অপরূপ সাজে প্রতিমা সাজাচ্ছেন। মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিলেও প্রতিমার কারিগরদের জীবন অনেক কষ্টে যাচ্ছে। প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও তাদের পারিশ্রমিক বাড়েনি বলে জানালেন প্রতিমা শিল্পীরা।
বাগেরহাট শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দির দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার জানান, দুর্গোৎসব শুধু হিন্দুদের নয়। এটি বাঙালির সাংস্কৃতির অংশ। এই পূজা নির্বিঘ্নে করার জন্য সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাতায়াত সহজ হওয়ায় সুন্দরবন ও ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পর্যটকদের ক্রমবর্ধমান ভিড় নিয়ন্ত্রণে সুন্দরবনে আরও চারটি ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার খুলতে যাচ্ছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: মৌসুমের শেষ পর্যায়ে বৃষ্টি: বাগেরহাটে আমন চাষে আশার আলো
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সুন্দরবনে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। ভিড় সামলাতে নতুন করে আলীবান্দা, আন্দারমানিক, শেখেরটেক এবং কালাবগিতে আরও চারটি ইকোট্যুরিজম সেন্টার চালু করা হচ্ছে। পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সুন্দরবনের করমজল, হারবারিয়া, কলাগাছিয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলা এবং হিরোনপয়েন্ট এলাকায় সাতটি ইকোট্যুরিজম সেন্টার রয়েছে।
মৌসুমের শেষ পর্যায়ে বৃষ্টি: বাগেরহাটে আমন চাষে আশার আলো
চলতি বছর খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে ফসল আবাদ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও মৌসুমের শেষ পর্যায়ে টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটে আমন ধান চাষে আশার আলো জাগিয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মৌসুমের শেষ পর্যায়ে কৃষকরা জমিতে ধানের চারা রোপণ করছে। পানির অভাবে দুই সপ্তাহ আগেও লক্ষ্যমাত্রার ৪০ শতাংশ জমি ফাঁকা পড়েছিল। প্রচণ্ড খরায় ধানের জমি ফেঁটে চৌচির হয়ে যায়। তবে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর টানা ছয় দিনে বৃষ্টি হওয়ায় আমন রোপণের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ইতোমধ্যে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ শেষ হয়েছে।
সদর উপজেলার পুটিমারী এবং কচুয়া উপজেলার শিয়ালকাঠি গ্রামে সরজমিনে দেখা গেছে, প্রচণ্ড খরায় ফেঁটে চৌচির থাকা জমিতে পানির দেখা মিলেছে। আর ধান রোপণের জন্য প্রস্তুত করা শুকনা জমিতে ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি পানি জমে আছে। এই পানির অভাবে ধানের যেসব চারা শুকিয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছিল সেসব ধানের পাতা সবুজ বর্ণে রূপ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ২০২১ সালে বাগেরহাটে মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত চার মাসে তিন হাজার ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়। আর চলতি বছরের মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত দুই হাজার ৫৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সেই হিসাবে ৪৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। আর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৬১ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। জেলায় এ বছর ৭৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার ৭০৩ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ জমি রোপণ করা হয়েছে। এ বছর দুই লাখ ৬৬ হাজার ৯৮০ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলায় দুই লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮টি কৃষক পরিবার রয়েছে।
দুর্গাপূজা: মৌলভীবাজারে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় পূজামণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মাটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে। এখন চলছে প্রতিমাগুলো রং ও সাজসজ্জার কাজ। অন্যান্য বছরের ন্যায় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে আশা করছেন আয়োজকরা। পূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রীতি কমিটি গঠনসহ নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে পূজার আয়োজন হলেও মানুষের মাঝে একটা উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছিল। পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোতে মানুষের চলাচল সীমিত ছিল।
এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কম থাকায় সবার মাঝে একটা উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে।
চিত্ত রঞ্জন ও জয় দেব নামের প্রতিমা শিল্পী জানান, মূর্তি তৈরির জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে হতাশা। বিগত বছরগুলোতে মাটি, খেড়, বাশ, দুর্গা প্রতিমাসহ অন্যান্য দেবদেবীর শাড়ী, চুড়ি আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কম থাকলেও এ বছর সেটা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে
প্রতিমা তৈরির আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল না থাকায় অনেক প্রতিমাশিল্পী শুধু মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিম দে জানান, দুই বছর করোনার কারণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারেননি। তবে এবার জেলায় সার্বজনীন পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে তারা আশাবাদী।
অপরদিকে শহরের বাইরে চা বাগান এলাকা এবং গ্রামগঞ্জের পূজামণ্ডপগুলোতে তারা নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুতের ব্যবস্থাসহ পূজার পাঁচ দিন পূজামণ্ডপ পাহাড়ার জন্য কমিটি করা হয়েছে।
জেলার ছয়টি স্থানে অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও ব্যতিক্রমী আয়োজনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানগুলো হচ্ছে রাজনগরের পাঁচগাঁও, কুলাউড়ার কাদিপুরে শিব মন্দির, সদর উপজেলার ত্রিনয়নী, আবহান, মহেশ্বরী ও শ্রীমঙ্গরের রুপসপুর মণ্ডপ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, এবার এক হাজার সাতটি পূজামণ্ডপ থাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সবকটি উপজেলায় নেয়া হয়েছে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, পাঁচ দিনের বৃহৎ এই পূজাকে ঘিরে বড় বড় পূজামণ্ডপগুলোতে দিন রাত মিলিয়ে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। ফলে অধিক ঝুকিপূর্ণ ৮২টি পূজামণ্ডপসহ আইনশৃঙ্খলার সার্বিক নিরাপত্তায় সাত শত ৪৭ জন পুলিশ সদস্য এবং ছয় হাজার ৮২০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
তাছাড়া সাদা পোশাকে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখের মতো দুর্গাপূজাও সবার উৎসব: শিক্ষামন্ত্রী
পুলিশ সুপার বলেন, দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা সভা করেছেন। প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপের আশপাশের সকল ধর্মের লোকজনদের নিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণসহ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলায় সরকারিভাবে প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে ৪১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু
মান বজায় রাখতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউজিসি সতর্ক করেছে: বিশ্বজিৎ চন্দ
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেছেন, উচ্চশিক্ষার মান দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
ইউএনবির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ইউজিসি সদস্য এ কথা বলেন।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বজিৎ বলেন, উচ্চশিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখতে হলে এ বিষয়ে আসন সংখ্যা কমাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘একটি ক্লাসে ৩৫-৫০ জন শিক্ষার্থী থাকা উচিত। প্রয়োজনে বেশি সেকশন করে কম করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের দেশে কখনও কখনও একটি বিভাগে ২০০০-৩০০০ শিক্ষার্থী থাকে, যা শিক্ষার মানকে অনেকাংশে ক্ষুণ্ন করে। আমরা যদি আসন সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারি তবে উচ্চশিক্ষার মান উন্নত হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বজিৎ বলেন, শিক্ষার কোয়ালিটি ধরে রাখতে হলে যেমন ভালো শিক্ষক প্রয়োজন তেমন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও জরুরি। পাশাপাশি আসন সংখা কম থাকতে হবে। বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলে কোয়ালিটি ধরে রাখা কঠিন।
তিনি বলেন, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া উচিত এবং বেশি সেকশন রাখা উচিত। এছাড়া প্রত্যেকটি শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোয়ালিটি শিক্ষা অর্জনে কারিকুলাম থেকে শুরু করে স্কিল ডেভেলপমেন্ট অত্যন্ত জরুরি। দক্ষ ও ভালো শিক্ষককের পাশাপাশি অবকাঠামো এবং শিক্ষকদের ট্রেনিং ব্যবস্থা থাকতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, একটি ভালো শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করার জন্য শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
ইউজিসির মনিটরিং সিস্টেম সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্বজিৎ বলেন, আমরা সব সময় গুণগত মান বজায়া রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বলছি। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষায় কোয়লিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেখানেই আমরা সতর্ক করেছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ ইউজিসির
তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চশিক্ষার মান বজায় রাখতে আমরা সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মনিটরিং করছি। বিশেষ করে আমি যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখি সেক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনেকগুলো ভালো মানের পড়াশোনা চালাচ্ছে। আবার কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ রয়েছে। যেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে কঠোর বার্তা দিয়ে মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে।
বিশ্বজিৎ আরও জানান, ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ছয় মাসব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা করার কথা ভাবছে, যাতে শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, যেসব ক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মান এর সমস্যা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে আমরা ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে এবং আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করার চিন্তাভাবনা করছি, তবে আমাদের দেশে যে সকল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যা রয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের ইউজিসির জনবলের সংখ্যা কম, সে কারণে হয়তো মনিটরিং ব্যবস্থা সেরকম হয়নি এটা আমাদের দুর্বলতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা যুক্ত করার আহ্বান ইউজিসির
অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে কেমন শিক্ষার কোয়ালিটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশ থেকে আমরা শিক্ষায় কতটুকু কোয়ালিটি এটি আসলে নির্ভর করে একেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর। আমাদের দেশে যেমন কিছু পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাদের পড়াশুনার মান অনেক ভালো, যা বিদেশ থেকেও কম নয়। তবে সব বিশ্ববিদ্যালয় নয়। সবক্ষত্রে আমরা এখনো অন্যান্য দেশ থেকে ভালো না হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা অনেকদুর এগিয়েছি। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালো পড়াশোনার মান রয়েছে আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় খারাপ হয়েছে তবে এটি পর্যায়ক্রমে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ডে একত্রিত করা যাবে না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান ভালো জানতে চাই বিশ্বজিৎ বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি ভাল এটা আলাদা পার্থক্য করা বিষয় না। একেকটি একেক ধরনের শিক্ষা অর্জন করা হয় সেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভাল শিক্ষা অর্জন করা যেতে পারে আবার এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অর্জন করা যেতে পারে হয়তোবা সেইক্ষেত্রে কোন কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালো করছে আবার কোন কোন ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালো করছে। সেটি নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় ওপর।
আরও পড়ুন: ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে: ইউজিসি