%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
যশোর অঞ্চলে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর প্রত্যাশা
প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ বেশি হওয়ায় এবার যশোর অঞ্চলে রোপা আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শতকরা ২৩ ভাগ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মাঠের সব ধান চাষিদের ঘরে চলে আসবে। অকাল বর্ষণে আবাদী ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও এবছর ফলন ভালো হওয়ায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়নের যোগীপোল গ্রামের প্রবীণ কৃষক শচীন্দ্র নাথ দাস বলেন, দেড় বিঘা জমিতে চিকন জাতের হাইব্রিড ধান আবাদ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ধান কাটার কাজ চলছে। এখন বাড়িতে আনার অপেক্ষা। কাঠায় দেড় মণ করে ধান পাবেন বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের আবু তালেব জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবছরও ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তিনি দুই বিঘা জমিতে উপসী ও গুটি স্বর্ণা জাতের ধান চাষ করেছেন। ধান কাটা শুরু করেছেন। এখনও কাটা শেষ হয়নি। তবে এ সপ্তাহেই সব ধান ঘরে চলে আসবে।
পড়ুন: খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সড়কে মরণ ফাঁদ ‘বেইলি সেতু’
মণিরামপুর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের নাদড়া গ্রামের কৃষিজীবী নেকবার মোড়ল জানান, এ বছর অকাল বর্ষণে উচু এলাকায় ফসল ভালো হলেও নিচু এলাকায় পানি সরে না যাওয়ায় ফসল তেমন ভালো হয়নি। তার চার বিঘা জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তবে তার এলাকার অনেকেরই ধান কাটা হয়নি।
যশোর সদর উপজেলার বড় হৈবৎপুর গ্রামের কৃষিজীবী প্রবীর তরফদার জানান, তিনি উপসী জাতের ধান চাষ করেছেন। কাঠা প্রতি প্রায় মন মণ ধাণ উৎপাদন হয়েছে। ধানের দামও ভালো।
যশোর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর এই ছয় জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয় চার লাখ ৫১ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি। কিন্তু আবাদ হয়েছে চার লাখ ৫৫ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার ৪৮৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ বেশি হয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেলায় হাইব্রিড ধান ৯ হাজার ১১৭ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ২৮ হাজার ৪৪৩ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের এক হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় হাইব্রিড ধান সাত হাজার ৬৫৭ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল ৯৬ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। মাগুরা জেলায় হাইব্রিড ধান ১০ হাজার ৩০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ৫০ হাজার ৫৩৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৯০২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
এছাড়া কুষ্টিয়া জেলায় হাইব্রিড ধান ১০ হাজার ৪৭৪ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ৭৭ হাজার ৩৩৮ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের এক হাজার ৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় হাইব্রিড ধান দুই হাজার ৬৩৯ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল ৩২ হাজার ২৭৮ হেক্টর জমিতে এবং মেহেরপুর জেলায় উচ্চ ফলনশীল ২৬ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
পড়ুন: হাওরে পানি কমার সাথে সাথে বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত কৃষকরা
কয়লার দাম বৃদ্ধি: খুলনায় ১৫ দিনে ২ শতাধিক ইটভাটা বন্ধ
তিনি জানান, ১১ নভেম্বর পর্যন্ত আবাদ হওয়া মোট জমির ২৩ শতাংশ ফসল কাটা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফসল কাটার কাজ সম্পন্ন হবে।
অকাল বর্ষণে আবাদী ফসলের কিছুটা ক্ষতি হলেও এবছরে চালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ১৭৫ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে উদ্বৃত্ত হবে বলে এই কৃষি কর্মকর্তা জানান।
খাগড়াছড়ির পাহাড়ি সড়কে মরণ ফাঁদ ‘বেইলি সেতু’
খাগড়াছড়িতে ৮০ এর দশকে নির্মিত বেইলি সেতুগুলো এখন পাহাড়ি সড়কের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব সেতুতে পাঁচ টনের বেশি মালামাল নিয়ে চলাচল নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ধারণ ক্ষমতার ৫ গুণ বেশি মালামাল নিয়ে যাতায়াত করছেন চালকরা। এতে অনেক সময় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনা হয়। বন্ধ হয়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগও। তবে সংকট সমাধানের পর্যায়ক্রমে সব বেইলি সেতুর পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগ।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জন পথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় ঝুঁকিপুর্ণ বেইলি সেতুর সংখ্যা ১০টি।
পর্যটন ও কৃষি অর্থনীতি বিকাশের সাথে সাথে পাহাড়ি সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। পাহাড় থেকে কাঠসহ বিভিন্ন ভারি মালামাল নিয়ে যাতায়াত করে।
চালকরা জানান, তাদের বাধ্য হয়ে ধারণ ক্ষমতার বেশি মালামাল নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দুর্ঘটনা রোধে বেইলি সেতুর পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: পাথরবোঝাই ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ল বেইলি সেতু
তারা জানান, এ সব ব্রিজে পাঁচ টনের বেশি মালামাল নেয়া নিষেধ। কিন্তু আমাদের খালি গাড়ির ওজনই ৯ টন। মালামালসহ হয় ২২ টন। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। বাধ্য হয়ে আমরা গাড়ি চালাই। আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পাকা সেতু হলে আমাদের দুর্ভোগ দূর হত।
খাগড়াছড়ি চেম্বার অব কর্মাস এর সহসভাপতি মো. কাশেম বলেন, খাগড়াছড়ির বেইলি সেতুগুলোর বয়স প্রায় ৪০ বছর। পাহাড়ে বনজ, কৃষি ও পর্যটন অর্থনীতি বিকাশের কারণে সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। এখন এসব সেতুর কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
পাহাড়ি সড়কে যানচলাচল বাড়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে বেইলি সেতুর পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, গত কয়েক বছরে খাগড়াছড়ির সড়ক বিভাগের আওতাধীন ৭০টি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট বেইলি সেতুগুলোতে পাকা সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান। ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেইলি সেতুর বদলে পাকা সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। প্রকল্প পাস হলে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: কাঠ বোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়ল দীঘিনালা বেইলি সেতু
সুনামগঞ্জে বেইলি সেতু ভেঙে ট্রাক খাদে, নিহত ২
হাওরে পানি কমার সাথে সাথে বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত কৃষকরা
হাওরের পানি কমার সাথে সাথে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি ও চারা উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা। তবে গত বছরের চেয়ে এবার বীজ ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
এ বছর জেলায় হাইব্রিড, স্থানীয় উফশী মিলে ১০ হাজার ৬১২ হেক্টর বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আর বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমি।
কৃষি বিপণন কার্যালয় জানায়, এবার হাইব্রিড, স্থানীয় উফশী মিলে ৪ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন বীজ ধান বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। বোরো মৌসুমের শুরুতে দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, কুমিল্লা, পাবনা ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের সরকারি বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা বীজ নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকায় আসছেন ট্রাকচালকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগৃহীত বীজ ধান বড় ট্রাক থেকে ছোট ট্রাকের মাধ্যমে ২০২ জন বীজ ডিলারের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত ঠেকাতে হাওরে হবে এক হাজার ছাউনি
সদর উপজেলার হাছনবসত গ্রামের কৃষক আনফর আলী বলেন, ‘গেলবার ব্রি ২৮ জাতের বীজ ধানের চাষি পর্যায়ে মূল্য ছিল ৩৯০ টাকা, আর এবার ৫০০ থেকে ৫৩০ টাকা। ব্রি ২৯ জাতের দাম ছিল ৩৮০ টাকা এবার ৪৯০ থেকে ৫২০ টাকা।’
একই গ্রামের কৃষক মনির উদ্দিন বলেন, ‘ইবার (এবার) হালি ধানের দাম বেশি। সরকার ডিজেলের দামও বাড়াইছে (বাড়িয়েছে)। গেলবার থাকি (থেকে) এবার গিরস্থির (চাষের) খরচ বেশি হইবো। বৈশাখ মাসে ধানের দাম পাওয়া যায় না। কার্তিক মাসে গিরস্থির লাইগ্গা (জন্য) ভারাল (গোলা) খালি কইরা ধান বিক্রি করছি। এভাবে চললে আগামীতে কেউ ক্ষেতকিষি (চাষ) করতো না।’
বীজ ডিলার সাহেদ আলী জানান, বোরো মৌসুম শুরু হওয়ায় বীজ ধানের চাহিদা বেশি।
সুনামগঞ্জ বীজ বিপনণ কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক আমিনুর রহমান বলেন, এখন বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। সারা জেলার ডিলারদের সুনামগঞ্জ থেকে বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত ১০১ জন ডিলার বীজ উত্তোলন করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, এতো আগে বীজ ধান ফেললে কোল্ড ইনজুরির শিকার হতে পারে। তাই আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের এখন বীজ তলায় বীজ ফেলতে নিষেধ করছি। আরও ১৫ দিন পর বীজ ফেলার আহ্বান জানিয়েছি।
জেলায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ছোট, বড়, মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নিকলী হাওরে নিখোঁজ পর্যটকের লাশ উদ্ধার
হাওর অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে: মন্ত্রী
কয়লার দাম বৃদ্ধি: খুলনায় ১৫ দিনে ২ শতাধিক ইটভাটা বন্ধ
অক্টোরর থেকে নির্মাণ মৌসুম শুরু হয়েছে। এ সময় ব্যবসার করার জন্য মুখিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। অথচ কয়লার দামের বৃদ্ধির কারণে খুলনাঞ্চলের ইটভাটার ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে। এক কথা বলা চলে বন্ধই রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মৌসুমের শুরুতে ইট তৈরির জ্বালানি কয়লার দাম দ্বিগুণেরও বেশি থাকায় গত ১৫ দিন ধরে খুলনাঞ্চলের দুই শতাধিক ইটের ভাটা বন্ধ রয়েছে। ফলে খুলনায় স্থবির হয়ে পড়েছে নির্মাণ খাত।
সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, কয়লার দাম দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইটভাটা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালী গণপূর্তের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে মানুষের বসবাস
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,গত বছর এক টন কয়লার মূল্য ছিল আট হাজার টাকা থেকে সাড়ে আট হাজার টাকা। সেই কয়লার দাম বেড়ে এখন ২২ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফলে অতিরিক্ত মূল্যে কয়লা কিনলে লোকসান দিতে হবে ইটভাটা মালিকদের। সে কারণে তারা ইটের ভাটা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।
খুলনা জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও ডুমুরিয়ার বাহার ব্রিক্সের মালিক আব্দুল হাই বাহার বলেন, ‘কিছুদিন আগেও এক টন কয়লার দাম ছিল আট হাজার টাকা। বর্তমানে সেই কয়লার দাম বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার টাকা। এত টাকা দিয়ে কয়লা কিনে ইটভাটা চালাতে গেলে লোকসানে পড়তে হবে। ফলে ডুমুরিয়া উপজেলার ৩১টি ইটভাটা বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ভাটায় এক হাজার ইট বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকায়। সেই ইট খুলনা শহরে পৌঁছাতে আরও দেড় হাজার টাকা খরচ পড়ছে। ফলে এক হাজার ইট কিনতে গ্রাহকের খরচ পড়ছে সাড়ে ১১ হাজার টাকা।’
খুলনা জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুস সাত্তার জানান, গত বছর ইন্দোনেশিয়ার যে কয়লা যশোরের নওয়াপাড়ার বাজারে টন প্রতি ৮-৯হাজার টাকা ছিল সেই কয়লা এখন ২১ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পুরাতন কয়লা টন প্রতি ১৮ হাজার টাকা থেকে ১৯ হাজার টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘ফকির মিসকিনও এই গ্রামোত আসপের চায় না’
তিনি জানান, এক হাজার ভালো ইট পোড়াতে খরচ পড়ে ১৪ হাজার টাকা। ফলে লোকসান দিয়ে ইটের ব্যবসা করা সম্ভব নয়। এছাড়া লোকসানের আশঙ্কায় গত ১৫ দিন ধরে খুলনা জেলার প্রায় ২০০ ইট ভাটা মালিক তাদের ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বাজারে এখন ইটের সংকট দেখা দিয়েছে।
৫০ বছরেও সেতু নির্মাণ হয়নি, ভেঙে যাওয়া সাঁকোই শেষ ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ভেঙে যাওয়া বাঁশের সাঁকোয় হামাগুড়ি দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পারাপার করছে মানুষ। প্রতিবছর স্থানীয় উদ্যোগে সাঁকোটি মেরামত করা হলেও সরকারিভাবে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়ায় বিপাকে রয়েছে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে প্রায়শই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। স্থায়ীভাবে সাঁকো নির্মাণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলবাড়ী গ্রামে নবিউলের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি জরাজীর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। চলতি বছরে বন্যার তীব্র স্রোতে সাঁকোর মাঝামাঝি জায়গায় কয়েকটি খুটি ভেঙে সাঁকোটি বেঁকে হেলে পরেছে। এরই উপর দিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে মানুষ। ভারি বস্তা বা সামগ্রী পারাপার করতে হিমশিম অবস্থা তাদের।
আরও পড়ুন: ধানক্ষেতের মাঝে ৪০ লাখ টাকার সেতু, ব্যবহার হয় ‘সেলফি’ তোলায়!
স্কুল-কলেজে যাওয়া শিক্ষার্থীরা সাইকেলকে লাঠি হিসেবে ব্যবহার করে সতর্কভাবে পারাপার করছে। ধান কাটার মৌসুমে বিপাকে পরে চাষিরা। এসময় নৌকা সংগ্রহ করে ধান,পাট,ভুট্টাসহ শাক-সবজি অতিরিক্ত পয়সা গুণে পার করতে হয়।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারিভাবে ১৬টি নদ-নদীর কথা উল্লেখ থাকলেও বারোমাসিয়া নামে কোন নদীর কথা উল্লেখ নেই। স্থানীয় সংবাদকর্মী অনীল চন্দ্র সরকার জানান, বারোমাসিয়া বা বাণিদহ নদীটি ধরলা নদীর একটি উপশাখা নদী। যা সরাসরি ভারত থেকে প্রবেশ করে কুড়িগ্রামে মূল ধরলা নদীতে মিশে গেছে। ধরলা নদী এবং বারোমাসিয়া নদীর পানির রঙ সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে বারোমাসিয়া নদীটি আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করছে। নদীটি ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সীমান্তবর্তী মরাকুটি গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডপ গ্রাম দিয়ে। স্থানীয়ভাবে এটিকে বাণিদহ বা বারোমাসিয়া নদী বলা হয়ে থাকে। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫ কিলোমিটার। এই উপশাখা নদীর উপর দুটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। একটি গতমাসে নির্মাণ করা হলেও নবীউলের ঘাটের সাঁকোটি বন্যায় ভেঙ্গে পরায় শোচনীয় অবস্থা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাঁকো ছাড়া অচল সেতু!
সাঁকো পারাপার করার সময় সাঁকোর ওপারের ঝাউকুটি গ্রামের স্কুল শিক্ষার্থী মমিনুল (১৪) ও আজমেরী (১৩) জানায়, তারা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে সাঁকোটি পার হয়। ভাঙা জায়গাটি পার হতে গিয়ে মনে হয় এই বুঝি সাঁকোটি ভেঙ্গে পরে যাবে।
মাথায় ধানের বস্তা নিয়ে পার হতে গিয়ে শাহাদত (৪৫) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভারি জিনিস নিয়া বাঁশের হাঙ্গরাত যাওয়া আমার খুব কষ্ট হয়। একনা সাইকেল পার করা, ভার ধরি যাওয়া খুব কষ্ট হয়।’
এই গ্রামের কৃষক হামিদ মিয়া জানান, ‘ছয় বছর আগে এখানে একটা ঘাট ছিল। তখন আমরা নৌকা দিয়ে পারাপার করছি। তারপরে জনগণের কাছে বাঁশ কালেকশন করি আমরা একটা বাঁশের সাঁকো দিছি। এবার সাঁকোটি ভেঙে গেছে। এখন পারাপারে খুবই সমস্যা।’
আরও পড়ুন: আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে: সেতুমন্ত্রী
বালাহাট স্কুল এন্ড কলেজের সহকারি শিক্ষক ও মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন জানান, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ এই এলাকার উৎপাদিত পণ্য এই ব্রীজের ওপর খুব ঝুঁকি নিয়ে পার করতে হয়। সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ ফুট। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পারাপার করে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগ সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরা এখানে একটি স্থায়ী সেতু চাই।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ইতোমধ্যে জনদুর্ভোগ কমাতে দুটি জরাজীর্ণ সেতু আমরা ঠিক করার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়াও এরকম কোন বিষয় আমাদের নজরে আসলে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করি। যাতে জনদুর্ভোগ কমিয়ে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
শীতের আগমনে ব্যস্ত খুলনার ধুনকাররা
হেমন্ত মানেই শীতের পূর্বাভাস। এর মধ্যে রাতের শেষাংশে হিম শীতল ঠান্ডা আর ভোরের হালকা কুয়াশা প্রতীয়মান হচ্ছে। আগাম শীতকে সমানে রেখে এমনকি করোনা সংক্রমনে পিছিয়ে পড়া ব্যবসাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে লেপ-তোষক তৈরির পাশাপাশি তুলা ছাঁটাইয়ের কাজে ব্যস্ত খুলনার ধুনকাররা।
তাছাড়া মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে এই পেশার সাথে জড়িত মালিক কর্মচারীরা তাদের দুর্ভোগ বা অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর দৌলতপুরস্থ বেডিং ফেয়ার, হেনা বেডিং সেন্টার, করিম বেডিং হাউজ, শরিফ বেডিং হাউজ, ওয়াহেদ বেডিং, আল্লাহদান বেডিং সেন্টার নামীয় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে এখন সাজা সাজ রব। তুলা ভেদ করে খসখস শব্দ তুলে সুঁই চলছে প্রতিটি দোকানে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, বাড়ছে শীতজনিত রোগ
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের প্রকোপ কথা মাথায় রেখে দৌলতপুর আশপাশের অঞ্চল দেয়ানা, মধ্যডাঙ্গা, শলুয়া, শাহ্পুর, রংপুর, মধ্যডাঙ্গা, রেলিগেট, মহেশ্বরপাশা, পাবলা, কাশিপুর, খালিশপুরসহ নিকটস্থ অঞ্চল হতে মানুষ আগে ভাগেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেপ, তোষক বানাতে আসতে শুরু করেছে। তবে করোনার সংকটে পড়ে এ বছর নতুন লেপ-তোষক তৈরি হতে অধিকাংশ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে কারিগরা। কেউ কেউ আবার নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছে লেপ, তোষক ও বালিশ।
দৌলতপুর বেডিং ওয়াহিদ বেডিংয়ের মালিক শফি জানান, তারা বছরে প্রায় ৬ মাসই বেকার বসে থাকেন। টুকিটুকি কেনাবেচা হয়। আর শীত মৌসুমেই লেপ-তোষক সিজিন। বিগত শীতে করোনা মহামারীসহ লকডাউনের জন্য দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চাকা অবরুদ্ধ হয়। যার কারণে করোনা শুরু হতে বেশি সময় সম্পূর্ণ বেকার বসে ছিলাম। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই শিথিল, আশাবাদী এই শীতে ভালো সাড়া মিলবে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে
দৌলতপুর আল্লাহর দান বেডিং সেন্টারের মালিক হোসেন বলেন, শীত এখনো জেঁকে না বসলেও অনেকে আগে ভাগেই লেপ ও তোষক বানাতে আসছেন। সারা বছরের চেয়ে শীতের এ তিন মাস বেচাকেনা একটু বেশিই হয়। তাই ক্রেতাদের কথা ভেবে কাজের গুণগতমান বজায় রেখে অর্ডারি কাজের পাশাপাশি রেডিমেড জিনিসও তৈরি করে বিক্রি করছি।
খালিশপুর বেডিং এর কর্মচারী জহিরুল জানান, সারা বছরই গেল করোনার। করোনার কারণে দেনা হয়ে পড়েছি। পেছনের দেনা কাটিয়ে উঠতে পারি নাই। আশা করি এবারের শীতে ভালো কাজ হবে।
চাকুরিজীবী মিরাজুল ইসলাম জানান, এখনো শীতের দেখা না মিললেও আগে ভাগেই শীতের জন্য একটি জাজিম বানিয়ে নিচ্ছি। কারণ শীতের শুরুতেই চাহিদার কারণে দাম বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন: শীতের আগমনে কদর বেড়েছে লেপ-তোষকের, বেড়েছে কারিগরদের ব্যস্ততা
খুলনা আঞ্চলিক আওহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, ইতোমধ্যেই দিনের তাপমাত্রা কমতে শুরু করছে। সেই সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তথা খুলনা বিভাগে এরই মধ্যে শীতের অনুভব শুরু হয়েছে। তবে আকাশ মাঝে মাঝে মেঘলা থাকায় এখন শীত কিছুটা কম অনুভূত হচ্ছে তবে মেঘ কেটে গেলে শীতের আগমন বেশি ঘটবে। তাছাড়া এ বছর বর্ষা কম হওয়ায় মাটির আদ্রতা কমে গেছে, তাপ ধারণ ক্ষমতাও কম এ কারণে শীতের বার্তা আগে থেকে অনুভব করা যাচ্ছে।
চলতি মাসের ২৯ তারিখ হতে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
পটুয়াখালী গণপূর্তের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে মানুষের বসবাস
পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১৪৪টি আবাসিক ভবনের ৫৩টি ভবন বসবাসের সম্পূর্ণ অযোগ্য ঘোষণা করা হলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখনো অনেকে স্বপরিবারে ওইসব ভবনে বসবাস করছেন। পরিত্যক্ত এসব ভবন সংলগ্ন আবাসিক এলাকার বসতিরা ভবন ধসে পড়ার অজানা আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে পটুয়াখালীকে মহাকুমা থেকে জেলায় রুপাস্তরিত করা হয় দেশের অন্য ১৮টি জেলার মতো। জেলা হেড কোয়াটার নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ দায়িত্ব পায়। সেই থেকে সিঅ্যান্ডবির তত্ত্বাবধানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসস্থান জন্য এ টাইপ, বি ও সি টাইপ নামক আবাসিক ভবন গড়ে তোলা হয়। শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে ভবনগুলোর অবস্থান। সরকারি এসব ভবনের মধ্যে এ টাইপ ক্যাটাগরির ৩২টি ভবনের ২৪টি, বি টাইপ ভবনের ৭২টির মধ্যে ১৭ ও ৪০টি সি টাইপ ভবনের ১২টি ভবন বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। আর এসব পরিত্যক্ত ভবনগুলো রাতের বেলায় অপরাধীদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়। তবুও নিম্নশ্রেণির কর্মচারীরা ওইসব ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় দিন পার করছেন।
আরও পড়ুন: ‘ফকির মিসকিনও এই গ্রামোত আসপের চায় না’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বি টাইপের একটি জরাজীর্ণ ভবনে বসবাসরত একজন কর্মচারী জানান, তিনিসহ অধিকাংশই অনুমতি ব্যতিত বসবাস করছেন। বহু আগেই ভবনগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী ও কর্তৃপক্ষের ঝুকিপূর্ণ সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হলেও স্বল্প আয়ের মানুষগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়েই দিন পার করছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের একজন রাখাল সাহা জানান, দিন যায় ভালো কিন্তু রাতটি প্রতিনিয়ত আতঙ্ক নিয়ে পার করতে হয়। যেকোন সময় ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তিনি ছাড়াও পার্শ্ববর্তী অনেক আবাসিক বসতিদের মধ্যে এই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরকারিভাবে প্রতি বছর আবাসিক ভবনগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ না থাকায় গণপূর্ত বিভাগ অসহায় হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাণহীন জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি!
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ জানান, জরাজীর্ণ ভবনগুলোকে শিগগিরই নিলাম করা হবে। আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এর মধ্যে ১০তলা বিশিষ্ট সাতটি বহুতল আবাসিক ভবনের নকশা প্রস্তুত করে স্থাপত্য অধিদপ্তরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
‘ফকির মিসকিনও এই গ্রামোত আসপের চায় না’
গণগ্রেপ্তারের ভয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের পুরুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন। এতে করে গ্রামগুলোতে ব্যবসা ও আয়মূলক কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়েছে। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির দালালরা মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে উলিপুর থানা পুলিশ জানায়, গ্রামের মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে যাচাই-বাছাই করে আটক করা হচ্ছে। দালাল চক্রের বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রশাসনের নজরেও এসেছে। সেটি কঠোরভাবে নজরদারী করা হচ্ছে।
চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার ঘটনায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের পাঁচ মন্দিরে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা প্রতিমা ভাঙচুরসহ বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। পরে উলিপুর থানা পুলিশ বাদী হয়ে মন্দির ভাঙচুর ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে পৃথক পাঁচটি মামলায় ৭৯ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় সাত শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আর এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬৬ জনকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করতোয়া নদী দখল করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!
এছাড়া মামলার পর থেকে গুনাইগাছ ইউনিয়নের নেফড়া, কালুডাঙ্গা গ্রামের কাঠালীপাড়া, হাজীপাড়া, খারিজাপাড়া, মৌলভীপাড়া, পূর্বপাড়া, কালুডাঙ্গাপাড়া এবং থেতরাই ইউনিয়নের রামপ্রসাদ, হোকডাঙ্গা, কিশোরপুর, বকশিপাড়া, তেলিপাড়া, থেতরাই বাজার এলাকার ফকিরপাড়া, সাতদরগাহ্, বকশিরবাজার, দালালীপাড়া, মতুল্ল্যাটারী, বকশিপাড়া, নাপিতপাড়া, হাজীপাড়া, কানিপাড়া, তেলিপাড়া পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে আশেপাশের গ্রামসহ হাট বাজারগুলোতে। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রেপ্তার আতঙ্কে ওইসব গ্রামে দিনের বেলা কিছু মানুষ চোখে পরলেও বিকাল হওয়ার সাথে সাথে গ্রামগুলো পুরুষ শূন্য হয়ে পরে। ফলে হাটবাজারগুলোতে আগের মত কোলাহল বা ভিড় দেখা যাচ্ছে না। বেচাকেনা না হওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসার সাথে জড়িত লোকজন বিপাকে পড়েছে।
আরও পড়ুন: প্রাণহীন জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি!
উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের রামপ্রসাদ পাড়ার বাসিন্দা কৃষক বাবলু মিয়া বলেন, ‘মামলার ভয়োত কামলারা পলাইছে। এ্যালা শাক তোলার কামলা পাবার নাগছি না। হামার এটে এবার ভালোই শাকসবজি হইছে। কিন্তুক বর্তমানে এলাকাত পুরুষ মানুষ নাই। ফকির মিসকিনও এই গ্রামোত আসপের চায় না।’
একই ইউনিয়নের সাতদরগা গ্রামের মুদি দোকানদার জাহাঙ্গীর জানান, ‘হামার এটে বেশির ভাগ পুরুষ মানুষ আর মাদরাসা ছাত্ররা বাড়ি ছাড়ি পালাইছে। মুই পঙ্গু মানুষ সাহস করি দোকানদারী করবের নাগছং। গণ্ডগোলের পর থাকি বেচাকেনা নাই। চা বেচেয়া কোনদিন দশ টেকা কোনদিন বা ২০ টেকা লাভ হয়। এই দিয়া কী সংসার চলে।’
থেতরাই বাজারের পাশে ফকিরপাড়ার বাসিন্দা সাথী আক্তার জানান, গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ির পুরুষ মানুষগুলো পালিয়ে রয়েছে। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে এলাকার নারীরাই এখন বাজার করছে।
বাজারের অটোচালাক খোরশেদ আলম জানান, আগে দিনে ৮০০ থেকে হাজার পর্যন্ত আয় হতো। কিন্তু মামলার পর থেকে এলাকায় পুরুষ শূণ্য হওয়ায় প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না। এখন দিনে দু’-আড়াইশ টাকার বেশি কামাই হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে মুরাদনগরের ‘মৃৎশিল্প’
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু জানান, প্রকৃত অপরাধীদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বাংলাদেশে সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট করতে দেয়া যাবে না। তবে দালাল চক্র যাতে ফায়দা লুটতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি জানান, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেটি প্রভাব ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ কবীর জানান, এখন পর্যন্ত ৬৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন তথ্যাবলী ও ভিডিওর মাধ্যমে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিরীহ কেউ যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ রয়েছে। আর গ্রামের সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
নবগঙ্গা নদী গর্ভে ১শ একর ফসলি জমি
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বাবলা হাসলা ইউনিয়নের ভাঙনকবলিত হাসলা এলাকায় নবগঙ্গা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রায় ১শ একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। এর কারণে হাসলা ও পাটকেলবাড়ি গ্রামে বসতবাড়ি, ফসলি জমি ভাঙনের কবলে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর ৯ পরিবারের ১৩টি পাকা ও আধা পাকা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ, দু’টি ইটভাটা এবং তিন শতাধিক গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। তিনটি ইটভাটা ও পাঁচটি বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। গত ১ অক্টোবর এলাকাবাসী বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ, নদী ভাঙনরোধ ও নদীর তীর স্থায়ী সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন করলেও বালু উত্তোলনকারীররা থামেনি।
আরও পড়ুন: তাহিরপুরে নতুন বাজার থেকে শ্রীপুর বাজারের বেহাল সড়কে ভোগান্তি
জানা গেছে, কালিয়া উপজেলার বাবলা হাসলা ইউনিয়নের তিনশ বছরের পুরোনো শুক্তগ্রাম বাজার, শুক্তগ্রাম কুমার ও চর পাড়া, হাসলা, চান্দেরচর, পাটকেলবাড়ি ও কাঞ্চনপুর গ্রাম তিন দশক ধরে প্রতি বছরই কম-বেশি নবগঙ্গা নদীতে ভাঙছে। এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক দোকান ও বসত-বাড়ি, অসংখ্য গাছপালা, তিনশ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসা-গোরস্থান, মন্দির ও বেড়িবাঁধ রয়েছে। এ বর্ষা মৌসুমেও প্রায় ১৫ একর ফসলি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ অবস্থার মধ্যেও গত ১ বৈশাখ থেকে আগামী ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এক বছর এ ইউনিয়নের বৃ-হাসলা মৌজার বালুর চরটি কালিয়ার পুরুলিয়া ইউনিয়নের দিয়াডাঙ্গা গ্রামের ত্বকি সরদারের নামে প্রশাসনের কাছ থেকে দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকায় ইজারা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কয়রায় জরুরি বাঁধ মেরামতের নামে অর্থ আত্মসাৎ!
হাসলা গ্রামের মোশাররেফ হোসেন বলেন, ‘বালুর চরের ইজারাদার বৃ-হাসলা মৌজায় ৯ একর জায়গার চর থেকে কাটার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে এসে দেড়’শ একরের বেশি জায়গায় রাত-দিন বালু উত্তোলন করছে। আগে ৩৫ ট্রলার ও ড্রেজার দিয়ে বালু কাটলেও বর্তমানে প্রায় ১৫টির মতো ড্রেজার দিয়ে কাটছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুল এর প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি। এলাকার কয়েকশ মানুষ নিয়ে মানববন্ধন করেছি, কালিয়া থানার ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু কেউ এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’
হাসলা গ্রামের হাসি বেগম জানান, ‘আমার বাড়ির সামনে বালি কাটছে। গত ১ মাস আগে আমার একটি ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। বড়ো ঘরটি ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছি। গ্রামের জাফরুল মোল্যা, জোমাত সিকদার ও জাবেদ খানসহ অনেকেরই ১২টি ঘর চলে গেছে। এছাড়া শামসুর রহমান ও তানজিলাসহ অন্যানদের বাড়ি ভাঙনের মুখে। এখন অনেকে আবার নিজেরা ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছেন।
এ ইউনিয়নের মেম্বর বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘হাসলা মৌজা লাগোয়া পাটকেলবাড়ি এলাকার অনেক ফসলি জমি, দু’টি ইটভাটা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আরও তিনটি ভাটা ও অনেক ফসলি জমি ভাঙনের মুখে রয়েছে।’
বালু ঠিকাদার ত্বকি সরদারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: করতোয়া নদী দখল করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!
তবে চরের ইজারাদার মো. মোশারফ জানান, নির্দিষ্ট চরের বাইরে এবং রাতের আঁধারে বালু কাটা হচ্ছে না। কৃষি জমি ও ঘর বাড়ি নদী গর্ভে যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, কিছু ফসলি জমি ও বাড়ি ভাঙছে এটা কিছুটা সত্য। তবে বালুর চর থাকলে সেখান থেকে বালু না কাটলে পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে নদীর যে কোনো তীর ভাঙার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া বালু কাটার জন্য মসজিদ, সংগঠনে অনুদান ও বিভিন্ন মহলকে খুশি করতে হয় বলে জানান।
স্থানীয় বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের সাথে যোগযোগ করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টির অভিযোগ পাওয়ার পর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি মৌখিকভাবে আমাকে জানিয়েছেন অভিযোগের কিছু সত্যতা আছে। তবে লিখিত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তাহিরপুরে নতুন বাজার থেকে শ্রীপুর বাজারের বেহাল সড়কে ভোগান্তি
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জেলার তাহিরপুরের শ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে শ্রীপুর বাজার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উক্ত ইউনিয়নের আশপাশের বড়ছড়া, ট্যাকেরঘাট, লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা, চারাগাও, কলাগাও, জঙ্গলবাড়ি, বাগলী, সুন্দরবন, রতনপুর, দুধের আউটা, পুটিয়া, ব্যুড়াঘাট, জামালপুর, নবাবপুর, মদনপুর, মন্দিয়াতা, কামালপুর, মুজরাই, জয়পুর, গোলাবাড়ি, তরং, খালা শ্রীপুর, মাটিয়ান, উজ্জলপুর, বালিয়াঘাট, বানিয়াগাও, ইসলামপুর, গোলকপুর, তেঁলীগাও, শিবরামপুরসহ প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ এ সড়কে দিয়ে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও শ্রীপুর ইউনিয়ন ডিহিভাটি ভূমি অফিসে আসা সেবা গ্রহীতরা চলাচলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি
এ রাস্তায় প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন হাজার মানুষ যাতায়াত করে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে , বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে রাস্তার দু’পাশের মাটি সরে রাস্তার অধিকাংশ স্থানই বড় বড় ভাঙন দেখা গেছে। ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন আরোহীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুধু গাড়ি চালক নয়, পথচারীদের জন্যও দুর্বোধ্য হয়ে উঠেছে এ রাস্তাটি।
স্থানীয় সোনার বাংলা মোটরসাইকেল সমিতির সভাপতি শাহানশাহ বলেন, ‘আমরা রাস্তা সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধির শরণাপন্ন হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমাদের রাস্তার বেহাল অবস্থা কিন্তু দেখার কেউ নেই। পাকা রাস্তার দু'পাশের মাটি সরে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল। পরে আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে যোগাযোগ সচল রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা এ রাস্তা সংস্কারের কোনো পদক্ষেপ নেননি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এই রাস্তাটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।
আরও পড়ুন: করতোয়া নদী দখল করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ!
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সুবল বলেন, ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। তাই যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাচল করাই কঠিন। এ কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে আমার মেয়েও দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল।’
রাস্তাটির সংস্কার হলে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের চলাচলের পথ সুগম হবে।
শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন ডিহিভাটি ভূমি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ‘পাঁকা রাস্তার দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। পুরো রাস্তা জুড়ে ভাঙন আর ভাঙন। গাড়ি চলাচল দূরের কথা পায়ে হেঁটে চলাও কষ্টের বিষয়।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার অধিকাংশ লোকই চরম কষ্টে আমার অফিসে আসেন খাজনা ও ভূমি বিষয়ে সেবা নিতে। এমনকি শিক্ষার্থীরাও সময়মতো স্কুলে যেতে পারে না।’
আরও পড়ুন: প্রাণহীন জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি!
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবির বলেন, ‘রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠিয়েছি। বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু করা হবে।’