%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
দীর্ঘ অবরোধে দেশের অর্থনীতিতে মন্দা
দেশব্যাপী গত কয়েকদিনের টানা অবরোধে দেশের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পাইকারি বাজারগুলো ক্রমে জনশূন্য হয়ে গেছে এবং সপ্তাহব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে।
এর প্রভাব পড়েছে ঢাকার নিউমার্কেট, চাঁদনী মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, এলিফ্যান্ট রোড, ফার্মগেট, গুলিস্তান মার্কেট, শান্তিনগর, কাকরাইল, মৌচাক মার্কেট, রামপুরা-বাড্ডা, মিরপুর, ধানমন্ডি, গুলশান-বনানী ও উত্তরার মতো এলাকায়।
নবাবপুর, চকবাজার, ইসলামপুর, বাবুবাজার, শাঁখারিবাজার, মৌলভীবাজার ও বঙ্গবাজারেও বাণিজ্য কার্যক্রম কমেছে।
ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম জানান, অবরোধের সময় বেচাকেনা খুবই কম ছিল।
তিনি বলেন, ‘কোনো ক্রেতা নেই, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অবরোধ চলতে থাকলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব।’
বায়তুল মোকাররম এলাকার অলিম্পিয়া বেকারিশপের কর্মচারীরাও একইভাবে বিক্রি কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ কারণে তারা পরিচিত নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে বিকল্প বিক্রয় কৌশল অবলম্বন করেছেন।
পল্টন মোড়ের চা বিক্রেতা সবুজ জানান, গত সপ্তাহে তার দোকানে বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ১০-১২ হাজার টাকার কেনাবেচা করি। এখন এটা ২-৩ হাজার টাকায় নেমে গেছে।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে আগে থেকেই ক্রেতা সংকটে ভুগছিল খাতটি। এখন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এর ফলে শুধু রপ্তানি খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। এটি রিজার্ভের উপরও প্রভাব ফেলবে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি: বিশ্লেষকরা
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান লোকসান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পণ্যের অভ্যন্তরীণ পরিবহন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। শিল্প উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। রপ্তানি খাত চলমান অবরোধের কারণে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।’
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী ইউএনবিকে বলেন, অবরোধের কারণে পরিবহন সংকটে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বন্দরে আটকে থাকা কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারছেন না।
চলমান ধর্মঘট অবরোধ সম্মিলিতভাবে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, এই ধরনের কর্মসূচি দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে যেতে পারে।
গত ২৯ অক্টোবর বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকে সারাদেশে হরতাল পালিত হয়।
৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধের পর ৫ ও ৬ নভেম্বর অবরোধ চলে। এরপর একদিন বিরতি দিয়ে ফের ৮ ও ৯ নভেম্বর অবরোধ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: চলমান রাজনৈতিক সংকটে উৎকণ্ঠায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা
২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে জিডিপির ১১.২% কর আদায়ের লক্ষ্য সরকারের
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি: বিশ্লেষকরা
চলমান রাজনৈতিক ও শ্রমিক অসন্তোষ দেশের অর্থনীতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলীয় জোট সরকারকে পদত্যাগের জন্য চাপ দিতে দেশব্যাপী হরতাল ও অবরোধ পালন করছে।
অন্যদিকে, মজুরি বৃদ্ধির জন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের অব্যাহত বিক্ষোভ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, হতাহত ও যানবাহনে; প্রধানত বাসে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকারবিরোধীদের বিক্ষোভ দেশের অর্থনীতিতেও আঘাত হেনেছে। কোভিড-১৯ বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি এখন বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, টাকার মান ৩০ শতাংশের বেশি কমে যাওয়া, দুই অংকের মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ও শ্রমের উচ্চমূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং এর সাবেক গভর্নরদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
আলোচনাসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আমন্ত্রিত অর্থনীতিবিদরা মার্কিন ডলার সংকট, স্থিতিশীল বিনিময় হার ও মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে আনতে নীতি পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন।
আলোচনায় উপস্থিত বিশ্লেষকেরা অভিমত দিয়েছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে উচ্চ মজুরির জন্য শ্রমিক অসন্তোষও এই খাতের তৈরি পোশাক কারখানার মালিক ও নীতি নির্ধারকদের মাধ্যমে সমাধানযোগ্য।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ
তবে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আগামী নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমতের পরামর্শ দেওয়া ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে তাদের কিছু বলার নেই।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব অর্থনীতিকে বড় অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থার শান্তিপূর্ণ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতির ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিণতি হতে পারে।
মনসুর বলেছেন, ‘কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজনীতিবিদদের মনোভাবে নমনীয়তার কোনো লক্ষণ নেই। কয়েক দিনের জন্যও উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হলে, তা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। এটি মুদ্রাস্ফীতির চাপ, ডলারের সংকট ও কর্মসংস্থানের সুযোগের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান মনসুর বলেন, আমদানি-রপ্তানি, বেসরকারি খাতের ঋণ বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহ, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব সংগ্রহ এবং অন্যান্য সব খাত এই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তারা জানায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মূল উৎস রপ্তানি খাত। প্রতি মাসে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আসে পণ্য রপ্তানি থেকে।
তারা আরও জানায়, গত অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি ১৪ শতাংশ কমেছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৩ শতাংশ। ২০২৩-২৪ সালের অক্টোবর মাসে ৩ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের রপ্তানি আয় হয়েছে। যা ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার কম।
আরও পড়ুন: আমদানি নিয়ন্ত্রণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, হরতাল-অবরোধে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। এতে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে অনেক জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা মনে করে যেভাবেই হোক রাজনৈতিক সমঝোতা হওয়া উচিত। সবাইকে দেশের অর্থনীতি ও স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান ইউএনবিকে বলেন, নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব ও সাম্প্রতিক শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
সময়মতো পণ্য হাতে না পাওয়ার অনিশ্চয়তার কারণে কিছু ক্রেতা ব্র্যান্ড রপ্তানির অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘ক্রেতারা উদ্বিগ্ন; তারা আমাদের পরিস্থিতি বুঝতে চায়। ঢাকায় ক্রেতা ফোরামের পক্ষ থেকে একটি বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, একদিনের হরতালে ৬ হাজার থেকে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
অবরোধের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতিও বিশাল। অবরোধ চলাকালে কিছু দোকানপাট খোলা থাকে, তবে ক্রেতা আসে গুটিকয়েক। বিক্রিতে দৈনিক পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত লোকসান হতে পারে।
তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং অর্থনীতিকে বাঁচাতে সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সবাইকে দেশের স্বার্থ সব কিছুর ঊর্ধ্বে রাখতে হবে।
কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন জানান, অবরোধে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।
বিক্ষোভের দিনগুলোতে বাজারে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ ইউএনবিকে বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অর্থনীতির সব খাতে প্রভাব ফেলে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতেই এর সমাধান করা উচিত।
তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে অর্থনীতিতে দ্বিগুণ আঘাত আনবে।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে, উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অনিশ্চয়তার কারণে ক্রেতাদের আস্থা হ্রাস পাচ্ছে। উৎপাদনে ব্যবহৃত মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি হ্রাসের প্রবণতা বেশ উদ্বেগজনক। মূলধন আমদানি হ্রাস মানে আউটপুট হ্রাস পাবে। এতে রপ্তানি আরও কমবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বিভিন্ন আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস রপ্তানি খাত। কিন্তু এ খাত থেকেও আয় কমেছে।
পণ্য রপ্তানি থেকে মাসে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়। কিন্তু গত অর্থবছর ২০২২-২৩ সালের একই মাসের তুলনায় অক্টোবরে পণ্য রপ্তানি ১৪ শতাংশ কমেছে।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাকের কাঁচামাল আমদানি ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ কমেছে।
পোশাক উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল তুলার আমদানি প্রায় ৩৯ শতাংশ কমেছে। সুতা, কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামালও প্রায় একই হারে কমেছে। পোশাক ছাড়া অন্যান্য কাঁচামাল আমদানি ৩৬ শতাংশের বেশি কমেছে।
কুড়িগ্রামে ১৪০ একর জমিতে হচ্ছে কৃষিবান্ধব বাণিজ্যিক সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে ১৪০ একর জমিতে তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম কৃষিবান্ধব বাণিজ্যিক সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে উৎপাদন হবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যা কৃষিখাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী তারেক রহমান।
ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ভূমি লিজ নেওয়ার কাজ শেষের পথে। আর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে এমএগ্রিন এনার্জি লিমিটেড।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর তীরবর্তী সোনাইকাজী ও যতীন্দ্র নারায়নের চরে এক ফসলি জমিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি। ২০২২ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০৪৭ সাল পর্যন্ত। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে প্রকল্পের মূল কাজ শেষ হলে দেশের জাতীয় গ্রীডে যোগ হবে উৎপাদিত ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
ইতোমধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ২৫ বছরের জন্য লিজ নেওয়া হয়েছে প্রকল্পের প্রায় ৮০ ভাগ জমি। বিনিময়ে প্রথম দুই বছর জমির ভাড়া হিসেবে একর প্রতি কৃষকদের দেওয়া হবে ৭ হাজার করে টাকা। পরবর্তী তৃতীয় বছর থেকে কৃষকরা একর প্রতি পাবেন ৩০ হাজার টাকা, সঙ্গে জমিতে ফসল ফলানোর সুযোগ পাচ্ছেন কৃষকরা। তবে অধিকাংশ কৃষক খুশি হয়ে তাদের জমি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য হস্তান্তর করলেও এখনও কিছু কৃষক রয়েছেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে।
আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন
শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় দুবলার চরে জড়ো হতে পারেন ১০ হাজার জেলে
শুঁটকির মৌসুম শুরু হওয়ায় উপকূলীয় এলাকার ১০ হাজার জেলে শুঁটকি পল্লী খ্যাত দুবলার চরে জড়ো হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতি বছর কয়েক হাজার জেলে ও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা মাছ ধরতে ও শুঁটকি তৈরি করতে এই অঞ্চলে ভিড় জমান।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলেদের আবাসন ও শুঁটকি সংরক্ষণের জন্য ১০৮টি অস্থায়ী ঘর ও ৭৮টি ডিপো নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জেলেরা সুন্দরবনে ১ হাজার ৫০০টি ট্রলার ব্যবহার করে মাছ ধরবেন। তারা মাছগুলো প্রক্রিয়াজাত করবেন এবং শুকানোর জন্য সূর্যের নিচে রাখবেন।
কর্তৃপক্ষ জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়ার পর দুবলার চর ইতোমধ্যেই শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
গত বছর দুবলার চর থেকে সরকার ৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে এবং এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৮৮ জেলে আটক
দুবলার চরে লইট্যা, ফাইস্যা, কোরাল, রূপচাঁদা, বিভিন্ন প্রকার চিংড়ি, ছুরি, থুড়ে, কাইন, বাইন, লাক্ষ্যা, কঙ্কন, টুনা, স্যামনসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। রাসায়নিক দ্রব্য ও ফরমালিন ব্যবহার না করে প্রক্রিয়াজাত হওয়ায় এই এলাকার শুঁটকির চাহিদা বেশি।
রামপাল উপজেলার জেলে রবিউল ইসলাম জানান, শুক্রবার তিনি দুবলার চরে এসে বাঁশ, পলিথিন ও হোগলা দিয়ে অস্থায়ী বাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটান।
মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শহীদ মল্লিক বলেন, ইতোমধ্যে হাজার হাজার জেলে ওই এলাকায় পৌঁছেছেন এবং অনেকেই মাছ ধরতে সাগরে গেছেন।
আলোরকোল পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ মজুমদার বলেন, জেলেরা অস্থায়ী ঘর নির্মাণে ব্যস্ত, যা শেষ হতে ২-৩ দিন সময় লাগে।
তিনি বলেন, কিছু জেলে খোলা আকাশের নীচে তাদের ধরা মাছ প্রক্রিয়াকরণে ব্যস্ত ছিলেন।
সুন্দরবন পূর্ব জোনের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব জানান, ৩ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শুঁটকির মৌসুম চলবে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
জেলেরা ৫ মাস ধরে আলোরকোল, মাঝেরকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া ও শেলার চরে অবস্থান করবেন।
শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শেখ মাহবুব হাসান বলেন, দুবলার চরে জেলেদের ছদ্মবেশে কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য বন বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৫০ জেলে আটক
লালমনিরহাটে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ২০ হাজার মানুষ
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি মালদাহা নদীতে সেতু না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।
নদীটি পারাপারে নৌকা ব্যবহার করতে হয় স্থানীয়দের। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থীসহ ৩ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা নৌকা। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে মালদাহা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
প্রতিয়িত ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ, মাদরাসার কয়েক শত শিক্ষার্থী, ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও।
এলাকাবাসীরা জানান, গত কয়েক বছরে একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা এসে মাপযোগ ও মাটি পরীক্ষার কাজ করলেও বাস্তবে কোনো ফল পাচ্ছেন না গ্রামবাসীরা।
তারা দাবি জানান, মহিষতুলির মালদাহা নদীর উপর সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে সুবিধার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তরাঞ্চলে চাহিদা বাড়ছে নোনা ইলিশের
স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ মিয়া বলেন, ‘সেতু না থাকায় আমরা ব্যাপক ভোগান্তিতে আছি। আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিষতুলি, ফলিমারী, দুলালী ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর, উত্তর গোবধা, শঠিবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের লোহাকুচি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করেন।’
তিনি আরও বলেন, সেতু না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যাওয়ার সমস্যা হয়, তাই তারা ন্যায্য মূল্য পান না। শিক্ষার্থীসহ এই পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেতু নির্মাণ হলে চলাচলে দুর্ভোগ কমার পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে লক্ষাধিক মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রত্যাশা
চলমান রাজনৈতিক সংকটে উৎকণ্ঠায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা
একটানা অবরোধের কারণে দেশে চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,অবরোধের মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি কমে গেছে। কারণ যাদের বাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একটু দূরে, তারা সন্তানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন না।
এ ছাড়া, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা আসন্ন, তারাও তা পেছাতে বাধ্য হচ্ছে।
গত ২৯ অক্টোবর বিএনপিসহ সমমনা দলের ডাকে সারাদেশে হরতাল পালিত হয়েছে। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে তিন দিনের অবরোধ শেষে ফের ৫ ও ৬ নভেম্বর দুদিনের অবরোধ চলমান। এভাবে দফায় দফায় অবরোধের ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আতঙ্কে রয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপিসহ সমমনা দলের রাজনৈতিক চলমান কর্মসূচি নভেম্বর মাসে আরও কঠোর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে নভেম্বর মাসের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া, নভেম্বর শেষে অথবা ডিসেম্বর মাসেই স্কুলগুলোতে নতুন বই পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে নভেম্বর মাসটি শিক্ষাক্ষেত্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবরোধের কারণে এসব কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির অবরোধ: ঢাবির বিভিন্ন ফটকে ছাত্রদলের তালা
রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরেই হরতাল-অবরোধের প্রভাব বেশি পড়ছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসায় বেশি ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা।
গ্রামগঞ্জে রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রভাব খুব বেশি না থাকলেও সারা দেশের স্কুল-কলেজ একই শিক্ষাপঞ্জি মেনে চলে। গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলোতেও কাছাকাছি সময়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়। কারণ শহরাঞ্চলের স্কুলগুলো নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন তৈরি করে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এখনও বেশ কিছু স্কুল একসঙ্গে একই প্রশ্নে পরীক্ষা নেয় বা শিক্ষকদের সমিতি থেকে প্রশ্ন কিনে নেয়।
এজন্য মফস্বলেও একেক স্কুলের একেক দিন পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। ফলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণির প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে হরতাল-অবরোধের প্রভাব পড়বে।
অন্যদিকে, বেশ কিছু ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হরতাল ও অবরোধের দিন বন্ধ রেখে বন্ধের দিন এবং শুক্রবার ও শনিবার স্কুল খোলা রেখেছিল।
এখন আবার ৫ ও ৬ নভেম্বর অবরোধে কারণে ফিজিক্যালি ক্লাস না করে বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছে।
বসুন্ধরায় অবস্থিত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ‘প্লে-পেন’ এ বাচ্ছা পড়ে তার একজন অভিবাবক সরোয়ার আলম ইউএনবিকে বলেন,একটানা অবরোধের কারণে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে, তাই না বাসা থেকে অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। শারীরিক উপস্থিতিতে ক্লাস আর অনলাইন ক্লাসের অনেক পার্থক্য রয়েছে, আবার চলতি মাসে ১০ নভেম্বর থেকে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা কীভাবে হবে বলতে পারছি না।
আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্র মেরামতের কাজ চলছে’ লিখে কুবির প্রধান ফটকে ছাত্রদলের তালা!
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন ইউএনবিকে বলেন, আগামী ৯ নভেম্বর থেকে স্কুলগুলোর বার্ষিক মূল্যায়ন শুরু হবে। আমরা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে চাই। কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা যায়, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে বেশ আগেই একটি সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছিল মাউশি অধিদপ্তর। সেখানে ৫ নভেম্বর থেকে নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে ৯ নভেম্বর থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তবে এখনও পরীক্ষা শেষ করার সময় ৩০ নভেম্বরই রাখা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের দুই পরীক্ষার মধ্যে সময় কমে আসবে। গত সোমবার এ সংক্রান্ত সংশোধিত চিঠি স্কুলগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
অভিভাবকরা বলছেন, তারা বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই সন্তানদের স্কুলে নিয়ে আসছেন।
বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রুহুল আমীন ইউএনবিকে বলেন, ‘আমার দুই বাচ্চা বনশ্রী আইডিয়াল স্কুলে পড়ে। আগের দফায় হরতাল-অবরোধে বাচ্চাকে স্কুলে আসতে দেইনি। এক সপ্তাহ স্কুল করেনি। এখন আবার অবরোধ। এভাবে কতদিন চলবে কে জানে। এজন্য আবার বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে এলাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে, কখন-কোথায় কী হয়।’
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ সুজন ইউএনবিকে বলেন, ‘চলতি মাসেই বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষা। এরমধ্যে হরতাল এবং একটানা অবরোধে অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে ভয় ও উদ্বেগে আছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় বিএনপির অবরোধের প্রথমদিন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসার প্রধান শাখা এবং বসুন্ধরা শাখা, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রামপুরা একরামুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়, রাজউক উত্তরা, বনানী বিদ্যানিকেতনসহ রাজধানীর প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভাগীয় ও জেলা শহরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম।
আরও পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ অক্টোবরের সকল পরীক্ষা স্থগিত
ইসলামে নারীবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে মদিনা পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ওমেন ইন ইসলাম: স্ট্যাটাস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট’– শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার তিন দিনের সরকারি সফরে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এক বাণিজ্যিক ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৪টা ১০ মিনিট) মদিনার প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সচিবালয়ের সমন্বয়ে সৌদি আরব আগামী ৬ থেকে ৮ নভেম্বর এই সম্মেলন আয়োজন করবে।
রবিবার আসরের নামাজের পর নবী মুহাম্মদের (সা.) রওজা মোবারকে ফাতেহা পাঠ করবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর শেখ হাসিনা জেদ্দার উদ্দেশে মদিনা ত্যাগ করবেন এবং মক্কায় ওমরাহ পালন করবেন।
সোমবার তিনি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ওমেন ইন ইসলাম’-শীর্ষক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে তার বক্তব্য দেবেন।
এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ইরানের নারী ও পরিবারবিষয়ক বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এনসিহ খাজালি, ওআইসি নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. আফনান আলশুয়াইবি এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন।
একই দিনে (৬ নভেম্বর) প্রিন্সেস নুরা ইউনিভার্সিটি আয়োজিত উইমেন ইন ইসলাম প্রদর্শনীর উদ্বোধনেও তিনি যোগ দেবেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মসজিদুল হারামে নামাজ আদায় করবেন।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে মক্কা ত্যাগ করবেন শেখ হাসিনা।
বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণের কথা রয়েছে।
ইসলামে নারীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি মুসলিম উম্মাহর পণ্ডিতদের ব্যাপক অংশগ্রহণে ইসলামে নারীর অধিকার ও দায়িত্ব, বিশেষ করে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার স্পষ্ট করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ফরিদপুরে লক্ষাধিক মেট্রিক টন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের প্রত্যাশা
চলতি রবি মৌসুমে ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিরা লক্ষাধিক মেট্রিকটন মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যেই জেলার লক্ষ্যমাত্রার ৫০শতাংশ চাষাবাদ শেষ করেছেন তারা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পেঁয়াজ বাজারের অস্থিরতা কিছুটা স্থিতিশিল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ও ডিগ্রিরচর ইউনিয়নে কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করার জন্য চাষিরা খেতে কাজ করছেন। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন, আবার কেউ প্রস্তুতকৃত জমিতে ভাল্ব (ছোট পেঁয়াজ) রোপন করছেন ।
এসব খেতের চাষিরা জানান, এ বছর পেঁয়াজের ভালো দর পাওয়ায় রবি মৌসুমে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা খেত প্রস্তুত করেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদের জন্য। সরকারি আবাদের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভাল্ব রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
আরও পড়ুন: ৯ দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন সরকারের
বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে দৈনিক ১৭২৬০ যানবাহন চলাচল করতে পারবে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে দৈনিক ১৭ হাজার ২৬০ এবং বছরে ৭৬ লাখ যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তাতে দেশের জিডিপিতে বছরে শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বাড়াতেও সাহায্য করবে টানেলটি।
আগামীকাল শনিবার (২৮ অক্টোবর) টানেলটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানেল উদ্বোধনের পর আনোয়ারা প্রান্তে ইপিজেড মাঠে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন তিনি।পরদিন ২৯ অক্টোবর ভোর ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এটি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইউএনবিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, টানেল নির্মাণকে ঘিরে চট্টগ্রাম শহরকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ বা ‘এক নগর দুই শহর’-এর মডেলে গড়ে তোলা হবে।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
সেতুমন্ত্রী বলেন, দৈনিক ১৭ হাজার ২৬০ এবং বছরে ৭৬ লাখ যানবাহন চলাচল করতে পারবে এ পথে। নদীর মধ্য ভাগে কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ সড়কটি অবস্থান করবে মাটি থেকে ১৫০ ফুট গভীরে। এর নির্মাণকাজ শেষ করে চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)। এই সুড়ঙ্গ কর্ণফুলী নদীর দুই তীরের অঞ্চলকে যুক্ত করবে। এটিই হবে বাংলাদেশের প্রথম টানেল এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশের দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গপথ।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলকে আগলে রেখেছে যে কর্ণফুলী, তার বুক চিরে তৈরি হয়েছে ৩ দশমিক ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ। দেশের এ প্রবেশদ্বারে ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত্তি আরও মজবুত করতে আলাদা শক্তি জোগাবে এই টানেল। বাণিজ্যিক এই রাজধানীতে আরও স্থাপন হবে নতুন নতুন শিল্প ও কলকারখানা, পরিধি বাড়বে আমদানি-রপ্তানির, গতি পাবে অর্থনীতি। সমৃদ্ধির অধিগম্যতায় প্রবেশ করবে চট্টগ্রাম।
কাদের বলেন, টানেলটি চালুর পর চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে সাগর ও বিমানবন্দরেরও দূরত্ব কমে আসবে। অর্থনীতির গতিপথ আরও গতিশীল করতে এই টানেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে নদীর দক্ষিণ পাড়ের আনোয়ারা, কর্ণফুলী, পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এই উপজেলায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ শুরু হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে আমানত শাহ সেতু হয়ে যেতে অনেক সময় লাগত। এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল হয়ে যেতে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটের সে পথ তিন মিনিটেই যাওয়া যাবে। এতে বাঁচবে খরচ ও সময়।
২৯ অক্টোবর থেকে উন্মুক্ত
২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পরদিন ভোর ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য টানেল উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এটা কোনো সাধারণ ব্রিজ বা কালভার্ট নয়, এটা টানেল। থ্রি হুইলার, মোটরসাইকেল কোনোভাবেই টানেলে প্রবেশ করতে পারবে না। আমাদের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থাকবে। সেখান থেকে সবকিছু মনিটর হবে। এফ এম রেডিওতে যেভাবে ঘোষণা দেওয়া হয় বা তথ্য জানানো হয়, এখানেও সার্বক্ষণিকভাবে সেটা থাকবে। বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট্রি দেওয়া হবে।’ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত টোল হার ২৯ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।
বঙ্গবন্ধু টানেল টোল
বঙ্গবন্ধু টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য গত আগস্টে টোল হার চূড়ান্ত করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ। টানেলের মধ্য দিয়ে যেতে হলে ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার), জিপ ও পিকআপকে দিতে হবে ২০০ টাকা করে। আর মাইক্রোবাসের জন্য দিতে হবে ২৫০ টাকা। ৩১ বা এর চেয়ে কম আসনের বাসের জন্য ৩০০ এবং ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের জন্য ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে।
টানেলে দিয়ে যেতে হলে ৫ টন পর্যন্ত ট্রাককে ৪০০ টাকা, ৫ দশমিক ১ টন থেকে ৮ টনের ট্রাককে ৫০০, ৮ দশমিক ১ টন থেকে ১১ টনের ট্রাককে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে। তিন এক্সেলবিশিষ্ট ট্রাক-ট্রেইলরের টোল চূড়ান্ত করা হয়েছে ৮০০ টাকা। চার এক্সেলের ট্রাক-ট্রেইলরকে দিতে হবে ১০০০ টাকা। এর বেশি ওজনের ট্রাক-ট্রেইলরকে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী
ভারতের আইআইটি-তে স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের
ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি হায়দরাবাদে (আইআইটি হায়দরাবাদ) স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন বাংলাদেশসহ বিদেশের শিক্ষার্থীরা।
ভারতের তেলেঙ্গানার সাঙ্গারেডি জেলার কান্দি গ্রামে প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। প্রায় ৬০০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা সরকারি এ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার অন্যতম পছন্দের হয়ে উঠেছে। এখানে প্রকৌশল, প্রযুক্তি, স্থাপত্য, কলা, মনোবিজ্ঞান, সাইবার নিরাপত্তা, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), শিল্প-বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন আধুনিক বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি (২০ অক্টোবর, শুক্রবার) বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল পরিদর্শন যায় ভারতের এই প্রতিষ্ঠানটিতে। আইআইটি হায়দরাবাদ এর প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক বি এস মূর্তি এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আইআইটি হায়দরাবাদের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ভারতের আইআইটিগুলোর মধ্যে আইআইটি-হায়দরাবাদ অন্যতম। বর্তমানে গোটা ভারতে তৃতীয় অবস্থানে
আইআইটি এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ৪ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী, যার মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ১ হাজার ৭৬০, স্নাতকোত্তর ১ হাজার ২৮০ ও ডক্টরাল শিক্ষার্থী আছেন ১ হাজার ১৬০ জন। ভবনগুলো এমন প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে যে এসির প্রয়োজন হচ্ছে না।
আইআইটি হায়দরাবাদে পড়তে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে সিজিপিএ ১০-এর মধ্যে ন্যূনতম ৮ লাগে জানিয়ে তিনি বলেন, ফার্স্ট স্কিমের মাধ্যমে আমরা বিদেশি শিক্ষার্থীদের পূর্ণ অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ পিএইচডি করার সুযোগ দিচ্ছি। ফেলোশিপ হিসেবে প্রতিমাসে শিক্ষার্থী ৬০ হাজার রুপি করে পাবেন এবং বছরে গবেষণা সহায়তা হিসেবে এক লাখ রুপি করে পাবেন। এই ফেলোশিপের মেয়াদ থাকবে চার বছর।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে অর্থনীতিকে কোভিড পূর্ব অবস্থায় ফেরানোর আশা সরকারের
ইঞ্জিনিয়ারিং অথবা টেকনোলজি সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়ে ভালো ফলাফলসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকলে যে কেউ এই ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানান পরিচালক।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, কীভাবে দুটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করা যায়। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাংলাদেশে গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসুক। মেধা তালিকার ভিত্তিতে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
বি এস মূর্তি বলেন, আইআইটি হায়দরাবাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখানে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় আগ্রহী হলে তাদেরও সে ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা করব আমরা। প্রয়োজনে আমরা বাংলাদেশিদের জন্য আরও বেশি সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করব।
আরও পড়ুন: দেশের এভিয়েশন সেক্টরে রূপান্তরের অঙ্গীকার নিয়ে শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন শনিবার
তিনি আরও জানান, অস্ট্রেলিয়ার সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি ও ডিকিন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ ডক্টরাল ডিগ্রি প্রোগ্রাম আছে আইআইটি হায়দরাবাদের। নানা সুযোগ-সুবিধার কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে পিএইচডি শিক্ষার্থীর হার বাড়ছে। ২০২০ সালে এই প্রতিষ্ঠানে পিএইচডি করতে আসেন ২৩০ জন, পরের বছর সে সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৭০ জনে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্সের ডিন প্রফেসর তরুণ কান্তি পান্ডা বলেন, আমরা বাংলাদেশের বেশি বেশি শিক্ষার্থীকে এখানে দেখতে চাই। বাংলাদেশের সঙ্গে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কাজ করবে। নিশ্চয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যথাসম্ভব ভালো কিছু করা হবে।
আরেক প্রশ্লে তিনি বলেন, বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নেই। বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা করতে পারবো।
অধ্যাপক তরুণ কান্দি বলেন, ২৫ থেকে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, এখানে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি রয়েছে গবেষণার দারুণ সুযোগ। এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর প্রায় ১০০ স্টার্ট আপ দাঁড় করান।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি