%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
দৃষ্টিনন্দন পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষের দিকে
বহুল প্রতীক্ষিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত করবে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) জানায়, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হবে।
এই এক্সপ্রেসওয়েটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে।
রাজধানীর প্রগতি সরণি ও বিমান বন্দর সড়কের সঙ্গে পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসকে সংযুক্ত করবে এই সড়কটি।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে সড়কটি ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৪ লেনের এক্সপ্রেসওয়ে (বিরতিহীন সড়ক, যেখানে কোনো সিগনাল থাকবে না)।
রাজউক সূত্রে জানা যায়, সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে রাজধানীর কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪ লেন বিশিষ্ট। এরমধ্যে ৮ লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ৬ লেন সড়ক হবে স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য সার্ভিস রোড।
বালু নদী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক হবে ১২ লেনের। এরমধ্যে ৬ লেন সড়ক হবে এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি ৬ লেন হবে সার্ভিস রোড। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬৪ কোটি টাকা।
এছাড়া এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলের জন্য ১০টি বড় সেতু নির্মাণ করা হবে (২০১৫ সালের মূল প্রকল্প সেতু ছিল ৬টি)। সেতুগুলো নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮৮ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে বাংলাদেশসহ এতদঞ্চলের ৩ বিলিয়ন মানুষ উপকৃত হবে
কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত পুরো এলাকায় সড়ক নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। এখন চলছে সড়ক ও খালের পাশে ড্রেন নির্মাণের কাজ। অনেক জায়গায় সড়কের মাঝে ডিভাইডার নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রকল্প নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে রাজউক। জলাবদ্ধতা নিরসনে এই খাল খনন ও সংস্কার করা হচ্ছে।
রাজউক আরও জানায়, হাতিরঝিলের আদলে ১৩টি আর্চ ব্রিজ (বাঁকানো সেতু) নির্মাণ করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২২৭ কোটি টাকা। এক্সপ্রেসওয়ের পাশের এলাকার লোকজন যাতে গাড়ি নিয়ে সার্ভিস লেন থেকে মূল সড়কে ঢুকতে পারে। সেজন্য ৫টি এ্যাটগ্রেড ইন্টার সেকশন নির্মাণ করা হচ্ছে। ইন্টার সেকশনের নিচ দিয়ে পাতাল সড়ক যুক্ত হবে এক্সপ্রেসওয়েতে।
এছাড়াও এ প্রকল্প এলাকায় চার কিলোমিটার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের লাইন, ২টি কালভার্ট, ১২টি ওয়াটার বাসস্ট্যান্ড নির্মাণ করা হবে।
তাছাড়া ২০১৫ সালের মূল প্রকল্পে উল্লেখ থাকা পথচারী-সেতুর সংখ্যা ৪টি থেকে বাড়িয়ে ১২টি, পাম্প হাউস ১টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি, সুইটগেইট ৪টি থেকে বাড়িয়ে ১০টি করা হয়েছে।
রাজউকের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা ইউএনবিকে বলেন, কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পে বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের পুরো কাজ শেষ হবে। আশা করছি আগামী ৩ মাসের মধ্যে উদ্বোধন করা হবে। এ সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হবে। এই সড়ক নির্মাণ হলে রাজধানীর সঙ্গে পূর্বাচলের যোগাযোগ সড়ক ও আধুনিক হবে। রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানে রাজউক ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি খাল ডুমনি, বোয়ালিয়া ও এডি-৮। এগুলো দিয়ে এক সময় বিমানবন্দর, নিকুঞ্জ, বারিধারাসহ আশপাশের এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্তু তিনটি খালই প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এখন এসব খাল সংস্কারের জন্য এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে। তাই প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে। এই খালের মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমে কুড়িল ডিওএইচএস, বারিধারা, সেনানিবাস ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকাসমূহের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
চেয়ারম্যান বলেন, সড়ক নির্মাণ ও খাল সংস্কারের কাজ শেষ হলে এই এলাকাটি ঢাকার নিকটতম পর্যটন স্পটে রূপ নিবে। অতি দ্রুতই ওই রাস্তার নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশসহ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ। আগামী ২/১ মাসের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দর থেকে পূর্বাংশের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাবদ্ধতা হবে না। কুড়িল থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই লোকজন যাতায়াত করতে পারবেন। এতে ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে।
প্রকল্প বিষয়ে তিনি জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সংস্কার হচ্ছে তিনটি খাল। বর্ষা মৌসুমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর,নিকুঞ্জ, সেনানিবাস, বারিধারা, বারিধারা ডিওএইচএস, জোয়ারসাহারা, কালাচাঁদপুর, কাওলা, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ১০০ ফুট খালটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে শুধুমাত্র কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশে ১০০ ফুট খাল দিয়ে বিশাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়। তাই প্রকল্পের সঙ্গে নতুন করে ডুমনি, বোয়ালিয়া ও এডি-৮ খাল তিনটি যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০০ ফুট সড়কটি এক্সপ্রেসওয়ে করা হচ্ছে। এছাড়া ১০০ ফুট খাল খনন, ১৩টি আর্চ ব্রিজ, ৫টি এ্যাটগ্রেড ইন্টার সেকশন, বিদ্যমান ৬টি ব্রিজ প্রশস্ত করা, কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ১৪ লেন সড়ক উন্নয়ন, বালু নদী থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২ লেন উন্নয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি এডি-৮ খাল, বোয়ালিয়া খাল ও ডুমনি খাল উন্নয়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাউন্ডারি ওয়াল, ইউড্রেন নির্মাণ, জিআরপি পাইপ লাইন স্থাপন ও নিকুঞ্জ লেক উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্প থেকে জানায়, কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশে (কুড়িল-বালু নদী পর্যন্ত) ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আবাসন প্রকল্পের বাইরে এটিই রাজউকের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প।
প্রকল্পটি সর্বপ্রথম মেয়াদ ছিল ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট। তিন বছরের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ৫ হাজার ২৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এরসঙ্গে আরও তিনটি খাল, সড়ক, সেতুসহ আনুষঙ্গিক বিষয় যুক্ত হওয়ায় সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ৫ হাজার ৪২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। এতে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: ৮টি বিমানবন্দরের অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরেই: বেবিচক প্রধান
রোজাদারদের পছন্দের শীর্ষে খুলনার নানা হালিম
মুখরোচক খাবার হিসেবে হালিমের জুড়ি নেই। সারাদিন রোজা রাখার পর মুখে রুচি বাড়াতে খুলনায় ইফতারে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অনেকেই রাখেন বিখ্যাত নানা হালিম।
বর্তমানে বাহারি ইফতার আইটেমের ভিড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে এই নানা হালিম।
নানার হালিমের মালিকের নাম মো. হজরত আলী (৭৯)। নানা নামের আড়ালে তার নিজের নাম প্রায় হারিয়েই গেছে।
খুলনা মহানগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনে নানা হালিমের একমাত্র বিক্রয়কেন্দ্র। বিক্রি হয় শুধু রমজান মাসেই। দূরদূরান্ত থেকে ভোজন রসিকরা আসেন এখানে। রোজার সময় দুপুরের পরই শুরু হয় ভিড়।
আরও পড়ুন: চুইঝালের হালিম বদলে দিয়েছে খুলনার রাশেদের জীবন
রান্নার কলাকৌশল ও বৈচিত্র্যময় নামের কারণে খুলনায় নানা হালিম এখন বেশ প্রসিদ্ধ বলে জানান ক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রমজানের প্রথম দিন শুক্রবার (২৪ মার্চ) জুম্মার পর থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছে ফুটপাতের ওপরে শামিয়ানা টাঙানো ‘নানা স্পেশাল হালিম’ এর দোকান। বিখ্যাত এই হালিম খুলনার মানুষের ইফতারির অন্যতম অনুষঙ্গ। কেউ কেউ নানা হালিম নিতে বাড়ি থেকে পাত্র নিয়ে এসেছেন। আবার কেউ কেউ ওই দোকানের মাটির পাত্রে হালিম নিয়ে যাচ্ছেন।
মালিক মো. হজরত আলীসহ দোকানের ১১ জন কর্মচারী ডেকচি থেকে মাটির পাত্রে ভরে ক্রেতার চাহিদামত হালিম তুলে দিচ্ছেন।
রফিকুল হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, নানা হালিম খুলনায় খুবই বিখ্যাত। প্রতি বছরই রমজানে এখান থেকে হালিম কিনি। তাই এ বছরও কিনতে এলাম।
আবু সাঈদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, বিখ্যাত নানা হালিমের সুনাম আজ শহরময়। প্রতিবছরই রমজানে এখান থেকে হালিম কিনি। নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভোজন রসিকরা এসে এখান থেকে হালিম কিনে নিয়ে যান।
নানা হালিমের মালিক হজরত আলী বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি রমজানে এই হালিম বিক্রি করে আসছি। নিজের হাতেই রান্না করি। রমজানের প্রথম দিন ১১৫ কেজি হালিম রান্না করেছি। যার দাম ১৫০ টাকা, ৩০০ টাকা, ৫০০ টাকা ও ৮০০ টাকা।
এছাড়া সব দ্রব্যের দাম বাড়লেলেও নানা হালিমের দাম বাড়ানো হয়নি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম রমজান শুক্রবার হওয়ায় জুম্মার নামাজের পরই ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়ে গেছে। যা চলবে মাগরিব পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে মাল্টা ও কমলা চাষে লাভবান চাষিরা
মাছ আমদানি বন্ধ হলে লাভবান হবেন দেশের চাষিরা
৭৩ বছর পর ট্রেন যাচ্ছে মোংলা সমুদ্র বন্দরে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্রুত এগিয়ে চলেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এবার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।
এরইমধ্যে খুলনা-মোংলা রেলপথের কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনে বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সেলফি তোলার সময় ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে এই বন্দরের অবস্থান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য ও পর্যটন পরিবহনে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে রেলপথের ৯৬ শতাংশ কাজ। চলতি বছরের জুনে পুরো কাজ শেষ হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রেলসেবা চালু হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। রেলপথ না থাকায় এতদিন বন্দরের বড় বড় কন্টেইনার পরিবহনে সমস্যা হতো।
এছাড়া সুন্দরবনে পর্যটক পরিবহন সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল, মশিউর রহমান ও ইকবাল হোসেন জানান, মোংলা দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর হলেও এখানে এতদিন রেল সংযোগ ছিল না। ফলে বন্দরটিতে অন্য দেশের বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। বরং বড় বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসছিল। এতে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
তারা আরও জানান, মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনতে ইতোপূর্বে একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে দেশের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সম্প্রসারণে বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১শে ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এরমধ্যে:
প্যাকেজ ১-রেললাইন নির্মাণ,
প্যাকেজ ২-রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু,
প্যাকেজ ৩-টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম।
আরও পড়ুন: যশোরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক বরখাস্ত
এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।
তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।
ইতোমধ্যে ওই সেতুর কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৩১টি ছোট সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর ১০৭টি কালভার্টের মধ্যে ১০৫টির কাজ শেষ হয়েছে। ৯টি ভিইউপি’র নির্মাণকাজ এবং ২৯ এলসি গেটের মধ্যে ২৬টির কাজ শেষ হয়েছে।
সাতটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ফুলতলা, আড়ংঘাটা ও মোহাম্মদ নগরের কাজও শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ স্টেশনের মধ্যে কাটাখালীর ৮০ শতাংশ, চুলকাঠির সাত শতাংশ, ভাগার ৭২ শতাংশ, দিগরাজের ৯৮ শতাংশ ও মোংলা স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। গত কয়েক মাসে আরও অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পুরো রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
এছাড়া জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় লোন রয়েছে দুই হাজার ৯৪৮ কোটি এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বাকি এক হাজার ৩১২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরকারি ফান্ড থেকে ব্যয় হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণের জেলাগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে জানালেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। সেইসঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় কমবে।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি বন্দরের নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহন সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
আরও পড়ুন: ঈদ যাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ৭ এপ্রিল
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পর্যাপ্ত মুকুল আসলেও পরিচর্যা খরচ বাড়ায় হিমশিম খাচ্ছেন আম চাষিরা
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের জেলা খ্যাত চঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগানগুলোতে এবার ব্যাপক পরিমাণে মুকুল এসেছে। ইতোমধ্যে মুকুলে আমের গুটিও আসতে শুরু করেছে।
ভালো ফলনের আশায় বাগান পরিচর্যা করছেন চাষিরা। তবে কীটনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাগানের পরিচর্যায় হিমশিম খাচ্ছেন চাষিরা। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি চাচ্ছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরী ফসল আম। ফজলি, খিরসাপাত, গোপালভোগ, ল্যাংড়াসহ দেড় শতাধিক সুস্বাদু জাতের আম উৎপাদন হয় এ জেলায়। এখানে উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালান হওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে আম গাছ। ফাগুনের হাওয়ায় আম গাছের ডালে ডালে দোল খাচ্ছে সোনালী রঙ-এর মুকুল। এরই মধ্যে মুকুলে আসতে শুরু করেছে গুটি। আর এমন দৃশ্য এখন শুধু গ্রামীণ জনপদেই নয়, শহরের গাছে গাছেও শোভা পাচ্ছে। আর এ দেখে শুধু আম চাষিরাই নয় সংশ্লিষ্ট সবাই এবার আমের ভালো ফলনের সম্ভাবনার কথা বলছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের গোলাপগঞ্জে গাছে গাছে আমের মুকুল, বৃষ্টি না হলে ক্ষতির আশঙ্কা
আম চাষিরা জানান, মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ফলে গাছে গাছে ব্যাপক পরিমাণে মুকুল এসেছে। বর্তমানে মুকুলে আমের গুটি আসতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার জেলায় আমের বাম্পার ফলন আশা করছেন তারা। সেই সেঙ্গে ভালো লাভের আশাও করছেন। আর সেই আশাতেই বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন আম চাষিরা।
তবে এবার বাগানের পরিচর্যার খরচ বেড়েছে অনেক বলে জানালেন আম চাষিরা। কীটনাশক, বালাইনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদেরকে। আর এজন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
আম চাষি আব্দুর রাকিব বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার পাওয়েল এলাকায় আমার আম্রপালির একটি বাগান আছে। বাগানে এক হাজার গাছ আছে। এ বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে বাগানে ব্যাপক মুকুল হয়েছে। বর্তমানে মুকুল থেকে গুটি আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এ বছর বাগানের পরিচর্যার খরচটা অনেক বেড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, গতবার এক লিটারের এক বোতল কীটনাশকের দাম ছিল ৫০০টাকা। এবার দাম হয়েছে ৮০০ টাকা। প্রতি লিটার বোতলে ৩০০টাকা বেড়েছে। গতবার যে ছত্রাকনাশক কিনেছি ৯০০ টাকা, এবার কিনতে হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাগানে সেচ খরচও বেড়েছে। পাশাপাশি লেবার খরচও বেড়েছে।
এই আম চাষি জানান, গতবার যে লেবারকে দিতাম ৪০০টাকা এবার তাকে ৫০০টাকার ওপর দিতে হচ্ছে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা হিমশিম খাচ্ছি।
তিনি জানালেন যে এখন পর্যন্ত তার বাগান পরিচর্যায় খরচ হয়েছে প্রায় ৫৬ হাজার টাকা। সামনে আম পাড়া পর্যন্ত বাগানের আরও পরিচর্যা করতে হবে।
আরও পড়ুন: দালানে ঠাসা শহর খুলনায় আমের মুকুলের শোভা
আরেক চাষি আজম আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার সব বাগানে প্রচুর মুকুল এসেছে। আমরা পরিচর্যা করছি। আর এবার কীটনাশকের দাম বেশি। লেবারের খরচও বেশি। তার পরেও বাগানের পরিচর্যা করছি। তবে গাছ ভরা মুকুল এলেও খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমরা কিছুটা চিন্তিত।
একই কথা জানালেন ময়েজ হোসেনসহ আরও অন্যান্য চাষি।
তারা বলছেন, এখন সরকার যদি এ ব্যাপারে সুদৃষ্টি দেয়, একটু নজর দেয় তাহলে তাদেরে জন্য হয়তো কিছুটা সহায়ক হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯০ শতাংশের বেশি গাছে মুকুল এসেছে। বাগান পরিচর্যায় চাষিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর চার লক্ষাধিক মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি বিভাগের হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৫৮৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এ বছর থেকে চার লাখ ৪০ হাজার ৯৫৬ মেট্রিক টন আম উপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছেল তিন লাখ ১৩ হাজার ৭৩৬ মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় গাছে গাছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে সৌরভ
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে বাংলাদেশসহ এতদঞ্চলের ৩ বিলিয়ন মানুষ উপকৃত হবে
মাতারবাড়ী বন্দর বাংলাদেশসহ আশেপাশের অঞ্চলের প্রায় তিন বিলিয়ন জনগণ এর সুফল ভোগ করবে। পুরোপুরি চালু হলে মাতারবাড়ী বন্দর দেশের জিডিপিতে শতকরা দুই থেকে তিন ভাগ অবদান রাখবে।
এছাড়া, গভীর সমুদ্রবন্দরটি চালু হলে বাণিজ্যিকভাবে আঞ্চলিক হাব বন্দর হবে এটি। তখন এই বন্দরটি পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের বিভিন্ন বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের পর মাতারবাড়ী বন্দরও প্যারালাল অর্থনীতির লাইফলাইন হবে।
ইউএনবিকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছন।
আরও পড়ুন: এসেনসিয়াল ড্রাগসে ৪৭৭ কোটি টাকা লোপাট: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে এটি বাণিজ্যিক হাব হবে। চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনীতির লাইফলাইন। এটি চালু হলে এরপর মাতারবাড়ী বন্দরও প্যারালাল অর্থনীতির লাইফলাইন হবে।’
তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর দৃশ্যমান হয়ে গেছে। যেভাবে কাজ চলমান আছে, এভাবে কাজ চললে ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে আগামী জুলাই নাগাদ জেটি ও কন্টেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এই বন্দরে বড় ধরনের ফিডার ভেসেল আসবে। অর্থ ও সময় বাঁচবে। অর্থনীতিতে সুপ্রভাব ফেলবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি ধলঘাট এলাকায় বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে এক হাজার ৩১ একর জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে এই বন্দরটি। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে আট হাজার ২০০ টিইইউএস ক্ষমতাসম্পন্ন কন্টেনার বহনকারী জাহাজ নোঙর করতে পারবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় একটি পণ্যের চালান পাঠাতে সময় লাগে ৪৫ দিন। মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে মাত্র ২৩ দিনেই সরাসরি নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। ফলে পণ্য নিয়ে সিঙ্গাপুর, কলম্বো ও মালয়েশিয়ার বন্দরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৬ সালে। কিন্তু এর মধ্যে গত দুই বছরে এ বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়েছে ১১২টি। এই ১১২টি জাহাজ থেকে মোট ছয় কোটি ৮৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যতসব যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম বড় বড় জাহাজে করে এসেছে তা সব মাতারবাড়ীর গভীর সমুদ্রবন্দরের চ্যানেল দিয়ে এসেছে। এই চ্যানেলের গভীরতা বেশি হওয়ায় বিশ্বের যেকোনো বাণিজ্যিক বড় জাহাজ এই বন্দরে নোঙর করতে পারবে এবং লোড-আনলোড করার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে।
আরও পড়ুন: ‘স্থানীয় ও পুলিশের হামলার’ প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সমুদ্রপথে মাতারবাড়ীর দূরত্ব ৩৪ নটিক্যাল মাইল। জাহাজে যেতে সময় লাগে দুই থেকে তিন ঘণ্টা। সড়কপথে এর দূরত্ব প্রায় ১১২ কিলোমিটার। সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে মাতারবাড়ী ধলঘাট পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সড়ক ও বন্দর নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। সড়ক নির্মাণের জন্য বিভিন্ন স্থানে পাথর ও মাটি ভরাট করা হচ্ছে।
এছাড়া এ বন্দরের অনেক কাজ এগিয়ে নিয়েছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি। বন্দরের জন্য যে চ্যানেল তৈরি হয়েছে সেটি ২৫০ মিটার চওড়া, ১৮ দশমিক পাঁচ মিটার গভীর এবং ১৪ দশমিক তিন মিটার দীর্ঘ। সাগর থেকে উপকূল পর্যন্ত পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঁধ। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকায় চ্যানেলের পানি পুরো নীল।
প্রকল্প সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে বন্দরের নিরাপত্তায় উত্তর ও দক্ষিণ দিকে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রের ঢেউ প্রতিরোধ বাঁধ। প্রকল্পের বিশদ নকশা তৈরি কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া জেটি নির্মাণ, জাহাজ হ্যান্ডেলিং সরঞ্জাম সংগ্রহ ও টাগ বোট ক্রয়সহ তিনটি প্যাকেজে ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সকল প্রস্তুতি শেষে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় প্রকল্পের নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান ইউএনবিকে বলেন, মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে অন্যান্য বন্দর থেকে এর দূরত্ব বেশি হবে না। চট্টগ্রাম থেকে সমুদ্রপথে মাতারবাড়ীর দূরত্ব ৩৪ নটিক্যাল মাইল, পায়রা বন্দর থেকে মাতারবাড়ীর দূরত্ব ১৯০ নটিক্যাল মাইল ও মোংলাবন্দর থেকে গভীর সমুদ্রবন্দরের দূরত্ব ২৪০ নটিক্যাল মাইল। তাই মাতারবাড়িতে মাদার ভেসেল (বৃহদাকার কন্টেনার জাহাজ) থেকে পণ্য খালাস করে অল্প সময়ের মধ্যে সড়ক ও সমুদ্রপথে অন্যান্য বন্দরে পরিবহন করা যাবে। পুরোদমে মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। পরিসংখ্যান বলছে গভীর সমুদ্রবন্দর জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে দুই থেকে তিন শতাংশ অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: নতুন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ চ্যালেঞ্জের রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিগুলোতে সাধারণত মাত্র ৯ দশমিক পাঁচ মিটার ড্রাফটবিশিষ্ট জাহাজ বার্থ করতে পারে। তবে সম্প্রতি ১০ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ ভেড়ানো হয়েছে। কিন্তু এসব জাহাজ ৮০০ থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪০০ টিইইউএস কন্টেনার বহন করতে পারে। একটি মাদার ভেসেলের ধারণক্ষমতার আট হাজার থেকে ১০ হাজার টিইইউএস কন্টেনার। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হলে আট হাজার টিইইউসের বেশি সক্ষমতাসম্পন্ন কন্টেনার বহনকারী জাহাজ নোঙর করতে পারবে। সহজেই আসতে পারবে বৃহদাকার কন্টেনার জাহাজ।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি অনুমোদনের পরে বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়। বর্তমানে ড্রইং ডিজাইনের কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের উত্তর পার্শ্বে দুই হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পার্শ্বে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কন্টেইনার ইয়ার্ডসহ সকল বন্দর সুবিধাদি নির্মাণের জন্য তিনটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, তিন প্যাকেজে মাতারবাড়ী বন্দর সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। মাতারবাড়ী থেকে চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে এটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চারলেন মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। সড়কটি নির্মাণের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সড়ক বাস্তবায়ন হলে বন্দর পণ্য সড়কপথে দেশের যে কোনো স্থানে পরিবহন করা যাবে।
সড়ক নির্মাণের তিনটি প্যাকেজ মধ্যে বন্দরের উত্তর-দক্ষিণে সংযোগের জন্য এক দশমিক ১৫ কিলোমিটার চারলেনের সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে সিডাব্লিউ-৩ এ প্যাকেজে। এই প্যাকেজের আওয়ায় আরও প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: সৌদিতে ২০২৪ সাল থেকে ওষুধ উৎপাদন করবে বেক্সিমকো
এছাড়া ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে চারটি সেতু, দুইটি গোলচত্বর ও একটি রেলওভারপাস নির্মাণ করা হবে। প্যাকেজ সিডাব্লিউ-৩বি’র আওতায় ছয় দশমিক ৪০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক, চারটি সেতু ও একটি রেলওভার পাস নির্মাণ করা হবে। প্যাকেজ সিডাব্লিউ-৩সি’র আওতায় ৯ দশমিক ১২ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ক, ছয় সেতু ও একটি রেলওভার পাস নির্মাণ করা হবে।
বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কাজের সামান্য অগ্রগতি
গত আট মাসে কামরাঙ্গীরচরের কাছে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল পুনরুদ্ধারের কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যায়নি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু করলেও প্রাথমিক কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সীমানা নির্ধারণ কার্যক্রম, উচ্ছেদ অভিযান, পুনঃখনন ও বর্জ্য অপসারণ।
দূষণ ও দখলের কারণে গৌরব হারানো আদি চ্যানেলটির অবস্থান বুড়িগঙ্গা নদী থেকে পুরান ঢাকার শহীদনগর-হাজারীবাগের বেড়িবাঁধ আর কামরাঙ্গীরচরের মাঝ বরাবর।
গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দূষণ আর দখলের থাবায় প্রাণ হারিয়েছে নদীর চিরচেনা রূপ। প্রায় ৭ কিলোমিটার জায়গার দুই পাশ দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন স্থাপনা।
তবে আদি বুড়িগঙ্গার গৌরব ফিরিয়ে আনতে ডিএসসিসি গত বছরের জুন মাসে দখলদারদের কাছ থেকে চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ করছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে ডিএসসিসির কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে চ্যানেলটি উদ্ধারে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ধাপে রাজধানীর লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
তারা বলেন, চ্যানেলটি পুনরুদ্ধারের ফলে ঢাকার হাজারীবাগ, লালবাগ, ধানমন্ডি ও কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই চ্যানেলটি ঢাকাবাসীর জন্য বুড়িগঙ্গা থেকে তুরাগ নদীতে যাতায়াত সহজ করবে এবং খরচ কমার কারণে পণ্য পরিবহনও সহজ হবে।
ডিএসসিসি জানায়, নান্দনিক ডিজাইনের পাশাপাশি চ্যানেলের দুই পাশে গড়ে তোলা হবে ওয়াকওয়ে ও আলাদা সাইকেল লেনসহ আধুনিক নানান সুযোগ-সুবিধা।
২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর কামরাঙ্গীরচরে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল দখলকারীদের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে নির্দেশও দেন তিনি।
বিস্তারিত পরিকল্পনার পর ডিএসসিসি চ্যানেলটিকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করার প্রকল্প হাতে নেয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী চ্যানেলের দুই পাশে ১৪ কিলোমিটার হাঁটার পথ ও সাইকেল লেন নির্মাণ করা হবে। রাজধানীর বাসিন্দাদের পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সেতু নির্মাণ করা হবে।
ডিএসসিসি জানায়, এ বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই ও পরিকল্পনা শেষে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনটি প্যাকেজে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে ডিএসসিসি। প্রথম পর্বের কাজ বর্তমানে চলমান।
তিনটি প্যাকেজের মধ্যে প্রথম প্যাকেজের আওতায় আদি বুড়িগঙ্গার প্রান্ত স্লুইস গেট থেকে ইসলামবাগ পর্যন্ত পলি, রাবিশ ও আবর্জনা অপসারণ করা হবে। এখানে ১২০০ মিটার খনন কাজ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান ইউএনবিকে বলেন, ‘বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে (সিএস) রেকর্ড অনুযায়ী উদ্ধার ও খনন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ৮টি বিমানবন্দরের অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরেই: বেবিচক প্রধান
তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল দখল ও ভরাট করে নির্মাণ করা কারখানা ও বাড়িঘরের পানি বিদ্যুৎ গ্যাসসহ সব নাগরিক সুযোগ এখনই বন্ধ করে দেয়া এবং অবিলম্বে সব দখল, ভরাট ও দূষণমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। সিএস রের্কড অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সীমানা নির্ধারণ করে স্থায়ী পিলার স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।’
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন ইউএনবিকে জানান, ‘আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল দখল করে অবৈধভাবে যেসব ভবন ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ইতোমধ্যে ডিএসসিসি, রাজউক, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন, জরিপ অধিদপ্তর চিহ্নিত করেছে। চিহ্নিত করা সেসব ভবনের অবৈধ বর্ধিতাংশ ভেঙে ফেলতে মেয়র আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি এবং তা অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে উদ্ধার করা অংশে আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।’
এ বিষয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ইউএনবিকে বলেন, ‘দখলদারদের নানাবিধ বাধা উপেক্ষা করেই বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখানে অনেক বাধা ছিল, অনেকগুলো মামলাও করা হয়েছে। হাইকোর্ট ডিভিশনে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্প অনুযায়ী বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি চলমান উদ্ধারকাজ শেষ করতে বদ্ধপরিকর।’
মেয়র বলেন, ‘মাত্র অর্ধশতাধিক বছরে আদি বুড়িগঙ্গা ভরাট হয়েছে ময়লা-বর্জ্য দিয়ে। এই প্রথম আমরা আদি বুড়িগঙ্গাকে পুনরুদ্ধারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কাজটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও দুরূহ। চারপাশ দখল করে এটাকে সংর্কীর্ণ করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা এটার প্রশস্ততা প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের কার্যক্রম চলমান।’
শেখ তাপস বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। সেটার আওতায় আমরা কাজ আরম্ভ করেছি। এছাড়াও এরই মাঝে আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি এবং নতুন করে প্রকল্প প্রাক্কলনের কাজ চলমান রয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো নদীটাকে পুনরুদ্ধার করা এবং স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা। যাতে আর কেউ এটা দখল করতে না পারে এবং ময়লা-বর্জ্য ফেলার সুযোগ না পায়। তাছাড়া নদীর দুই পাশ দিয়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানোর পথ, গণপরিসর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যাতে করে পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারেন সে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এ বছরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী
বার্সেলোনা মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস: ফাইভজি বিপ্লবের ভবিষ্যত সম্ভাবনা প্রদর্শন টেলিকম জায়ান্টদের
ফাইভজি ব্যবহারের মাধ্যমে আগামীতে অতি ঝুঁকিপূর্ণ শিল্প ব্যবস্থাপনাকে কিভাবে নিরাপদ করা সম্ভব হবে তার একটি বড় প্রদর্শনী দেখানো হয়েছে স্পেনের বার্সেলোনায় চলমান মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি)।
বিশ্বের সব টেলিকম কোম্পানির চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন স্পেনের রাজা ফিলিপে। স্পেনের প্রেসিডেন্ট প্রেডো সানচেজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। টেলিকম শিল্পের বড় ক্রীড়ানকদের বার্ষিক এই সমাবেশে প্রায় ৮০ হাজার প্রতিনিধি প্রত্যাশিত।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফাইভজি প্রযুক্তিতে ভার্চুয়াল ইন্টারেক্টিভ অ্যাপ্লিকেশন, রোবট ক্লাস্টার, মনুষ্যবিহীন ড্রাইভিং, বুদ্ধিমান পরিধানযোগ্য সরঞ্জাম, বুদ্ধিমান টহল পরিদর্শন, বুদ্ধিমান ব্যাপক মাইনিং, স্মার্ট টানেলিং এবং কয়লা খনিতে অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে অনেক টেকনোলজি উদ্ভাবনকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিচ্ছে।
মূলত ফাইভজি এই বছরের কংগ্রেসে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে।
শিল্প জায়ান্টরা ফাইভজি প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবহার শুধু শিল্প উৎপাদনেই নয়, মানুষের জীবনেও প্রদর্শন করছে। যেমন- ফাইভজি চালিত মনুষ্যবিহীন হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে ঘরের কোনে থাকা ফাইভজি রাউটার প্রভৃতি।
আরও পড়ুন: ২০৩৩ সালের মধ্যে গৃহস্থালির ৩৯ শতাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয় হতে পারে: বিশেষজ্ঞরা
মনুষ্যবিহীন হেলিকপ্টার প্রদর্শন করছে টি মোবাইল। এই হেলিকপ্টারটি কোন চালক ছাড়াই যাত্রীসহ নিরাপদে উড়তে ও অবতরণ করতে পারবে। এমনকি আকাশে ওড়ার সময় কোন প্রতিকূল পরিস্থিতি টের পেলে নিকটস্থ নিরাপদ স্থান বেছে নিয়ে জরুরি অবতরণও করতে পারবে হেলিকপ্টারটি।
ফাইভজি রাউটার এখনকার রাউটারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা হবে।
তারবিহীন এই রাউটারে শুধুমাত্র একটি কোডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অপারেটরের কাছ থেকে কোডের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হবে। আর এই একটি রাউটারে যে ব্যান্ডউইথ থাকবে তা দিয়ে পরিবারের সব ধরনের স্মার্ট ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা সম্ভব হবে। ডিভাইস উচ্চগতির এছাড়া রাউটারটির বিস্তৃত ব্যবহার এবং স্মার্ট সিটির মডেলের প্রদর্শনী তো আছেই।
ফাইভজি’র আগামী ব্যবহার নিয়ে জিএসএমএ’র মহাপরিচালক ম্যাটস গ্রানার্ড মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের একটি সেমিনারে বলেন, ফাইভজি আগামীতে সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে বড় শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থায় কি অসাধারণ পরিবর্তন আনবে সেটা এই মুহুর্তে উপলব্ধি করা কঠিন। এবারের এমডব্লিউসিতে ‘স্মার্ট মাইনিং’ প্রকল্প দেখিয়েছে সেই পরিবর্তন কি ধরনের হতে পারে। আগামীতে নিরাপদ, সহজ, সাশ্রয়ী ও মানবিক জীবন ব্যবস্থা, বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ফাইভজির কার্যকর ব্যবহারের যে প্রদর্শন হলো তা নিশ্চিতভাবেই পুরো বিশ্বকে ফাইভজি ব্যবহারের ক্ষেত্র প্রস্তুতে নিশ্চিতভাবে সহায়তা করবে।
নতুন ধরনের ডিভাইস, নতুন ধরনের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, এমনকি আগামীতে কি ধরনের প্রযুক্তি আসছে সে বিষয়গুলোও তুলে ধরা হচ্ছে প্রদর্শন কেন্দ্রগুলোতে।
ইনটেলের প্যাভিলিয়নে দেখা গেল, আগামী প্রজন্মের কম্পিউটারের সম্ভাব্য প্রসেসর। অরেঞ্জ দেখিয়েছে অদূর ভবিষ্যতের স্মার্ট প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের আবেগ কিভাবে মিশে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যাদুর স্পর্শে।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় রোবোট্যাক্সির সফল পরীক্ষা চালাল অ্যামাজনের জুক্স
এছাড়াও ভেলোসিটি উদ্যেগকে সামনে রেখে এবারের আয়োজনে বিশ্বের প্রায় সব বড় বড় প্রতিষ্ঠান স্মার্ট প্রযুক্তির প্রদর্শনকেই প্রাধান্য দিয়েছে। ডিভাইস যেমন- স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচ ও স্মার্ট কম্পিউটার নির্মাতারা তাদের আগামী দিনের ডিভাইসে স্মার্ট প্রযুক্তি কিভাবে সংযুক্ত হবে তার প্রদর্শন করেছেন।
যারা ডিভাইসের মূল উপাদান যেমন- মাইক্রেচিপ, চিপসেট, সেমি কন্ডাকটর, প্রসেসের, মাইক্রো প্রসেসর তৈরি করছেন তারাও সামনে এনেছেন স্মার্ট প্রযুক্তি। সব মিলিয়ে আগামীর স্মার্ট পৃথিবী হচ্ছে এবারের মূল আকর্ষণ।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তৈমুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস ২০২৩ এ বছর বিশেষ প্রযুক্তির ওপর নয় বরং উদ্ভাবনী সেবার ওপর বেশি জোর দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়াও এটি নেটওয়ার্কের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। উদ্ভাবনী পরিষেবার কিছু উদাহরণ হল যে কীভাবে বেশিরভাগ টেলিকম প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাহায্য করতে পারে যেমন লজিস্টিক এবং ড্রোনের মাধ্যমে ডেলিভারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোটিক্সের মাধ্যমে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, নেটওয়ার্কে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সামগ্রিক খরচ কমানোর কিছু উদাহরণ হল- দক্ষ নেটওয়ার্ক ডিজাইন সফ্টওয়্যার, সরলীকৃত নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার সমাধান ও নেটওয়ার্ক উপাদানগুলির শক্তি খরচ হ্রাস ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: মাইক্রোসফট বিংয়ের নতুন সংস্করণে থাকছে চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি
পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবন ও অবস্থার পরিবর্তন
ভ্যানচালক সাইফুল এখন পদ্মা সেতুর কাছে ‘ফুচকা’ বিক্রি করেন। তিনি এখন আগের তুলনায় বেশি উপার্জন করেন। ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় পর্যটনে যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তা তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘আগে ভ্যান চালাতাম। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ধার্য হওয়ার পর থেকেই ভ্যান চালানো বাদ দিয়েছি। এখন ঘুরে ঘুরে ফুচকা বিক্রি করি। আগের চেয়ে রোজগারও ভালো হচ্ছে।’
সাইফুলের মতো অনেক দিনমজুর এই এলাকার ইতিবাচক পরিবর্তনের সুবিধা পাচ্ছেন।
উন্নত যোগাযোগের সুবিধার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, শুধুমাত্র পদ্মা সেতু দেখতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন।
সেতুর কাছে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট ও পার্ক তৈরি করা হয়েছে। বেশি রোজগারের আশায় অনেকেই তাই নিজেদের আগের পেশা পরিবর্তন করেছেন।
পদ্মা সেতু সংলগ্ন নাওডোবা এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘ফুড এক্সপ্রেস’ নামে একটি রেস্তোরাঁ।
রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরাই প্রথম পদ্মা সেতু এলাকায় রেস্তোরাঁ দিয়েছি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে পদ্মা সেতু দেখতে। পদ্মা সেতু দেখা শেষে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা আমার রেস্টুরেন্টে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে সেতু দেখতে আসা মানুষের রাতে থাকার জন্য এখানে আবাসিক হোটেল নির্মাণের কাজও চলমান রয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সুবাদে প্রথমবার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির সাক্ষী হলো মোংলা বন্দর
এবার ৩০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা গদখালীর ফুলচাষীদের
ফেব্রুয়ারি মানেই বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। অন্য সব মাসের তুলনায় এ মাসে বাংলাদেশে ফুলের চাহিদা থাকে অনেক বেশি।
এই তিন দিবসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দিন রাত ফুল বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত গদখালীর ফুল চাষিরা।
বাংলাদেশ ফুল চাষি সমিতির সভাপতি আ. রহিম জানান, দেশের গোলাপ ফুলের চাহিদার সিংহভাগ আসে যশোরের গদখালী থেকে। শুধু গোলাপই নয়, এই এলাকা জুড়ে অনেক ধরনের ফুল চাষ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই তিন দিবসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দিন রাত ফুল ও ফুলগাছের পরিচর্যা করে যাচ্ছেন চাষিরা।
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে গদখালি ফুল চাষিরা বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের জন্য বাজারে ফুল সরবরাহ করবেন।
ফুল চাষি বাবলুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে প্রতিদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ফুল কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ঝিকর গাছার গদখালী বাজারে।
দেশের সর্ব বৃহৎ পাইকারী ফুলের বাজার এই গদখালি। এই কারণে গদখালিকে দেশের ফুলের রাজ্য বা রাজধানী বলা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল চাষ
যশোর শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ঝিকরগাছা উপজেলার ৭৫টি গ্রামের সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয় হরেক রকমের ফুল।
গদখালির গ্রামগুলোর রাস্তার দুইপাশে দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের ফুলের সমাহার দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকতে হয়।
যশোর-বেনাপোল রোড ছেড়ে ডানে, বায়ের গ্রামগুলোয় ঢুকে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে দিগন্ত জোড়া ফুলের মাঠ। রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস, গোলাপ আর গাঁদা ফুল চাষ হয় এসব গ্রামে।
প্রতিবছর ৫০০ কোটি টাকার ফুল উৎপাদন হয় এসব মাঠ থেকে। শত শত বিঘা জমি নিয়ে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, ডেইজি জিপসি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ আরও বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ।
পানিসারা গ্রামের ফুল চাষি ইসমাইল হোসেন জানান, এবছরে ফুলের রাজ্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে টিউলিপ ফুল। শীত প্রধান দেশের ফুল টিউলিপ এদেশে ফুটবে ভাবেনি কেউ! টিউলিপ ফুল বাংলাদেশে প্রথমে ঢাকার গাজীপুরে পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করা হয়, এরপরে দ্বিতীয় বারের মত যশোরের গদখালীতে গত বছর চাষ হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এ বছরও চাষ করা হয়েছে টিউলিপ।
আরও পড়ুন: সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
ব্যবসায়ীরা এই ফুল কিনে দেশের সর্ববৃহৎ ফুল মার্কেট ঢাকার শাহবাগে সরবরাহ করেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহীসহ সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুল সরবরাহ করে আসছেন পাইকাররা।
গদখালির বিরলিয়া গ্রামের ফুল চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, , ১৯৯০ সালে ঢাকার কয়েকজন যুবক অন্যের জমি লিজ নিয়ে এই এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথম গোলাপ চাষ শুরু করেন। ফলন ভালো আর ওই যুবকদের সফলতা দেখে স্থানীয়রাও ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ চাষ শুরু করেন। খুব কম সময়ের মধ্যে গ্রামটিতে গোলাপের চাষ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
এবছরও গদখালি এলাকার প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে গোলাপসহ নানা রকম ফুল চাষ করেছেন স্থানীয় চাষিরা। এ গ্রামের ৯০ শতাংশ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন এই ফুল চাষ করে।
ফুলচাষিরা বলেন, সারাদেশে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে যে ফুল বেচা-কেনা হয় তার অনেকটাই পূরণ করে বিরলিয়ার উৎপাদিত ফুল। আসছে ১৩ ফেব্রুয়ারি বসন্ত বরণ, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট নিয়েছেন।
সফল ফুল চাষি নাসরিন নাহার এবং সাজেদা খাতুন বলেন, কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হওয়ায় অসংখ্য দর্শনার্থী বিরলিয়ার ফুল বাগান দেখতে আসেন।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুম হোসেন পলাশ জানান, উপজেলার গদখালীতে এবার সাড়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষের আওতায় আনা হয়েছে। গদখালির কয়েকটি গ্রাম ও বাজার সড়কের পাশে, বাড়ির সামনে এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনের ফাঁকা জায়গাতেও ফুলের চাষ করা হয়েছে। দুপুরের পর প্রতিটি বাগানেই শ্রমিকদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। ফুল কাটা, বাছাই, ভেজানো, বাঁধা সবকিছুই কৃষক সন্ধ্যার আগেই শেষ করেন। কারণ সন্ধ্যার পরই জমে ওঠে গদখালীর ফুলের বাজার।
আরও পড়ুন: জবা ফুলের চা: গুণাগুণ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বানানোর পদ্ধতি
৮টি বিমানবন্দরের অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে চলতি বছরেই: বেবিচক প্রধান
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেছেন, ৩৫ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আটটি বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের কাজ চলতি বছরের শেষ নাগাদ সমাপ্ত হবে।
কাজ শেষ হলে বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। প্রতিটি বিমানবন্দর হবে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে নিরলস কাজ চলছে। করোনার মধ্যেও বেবিচকের প্রকৌশলীরা প্রকল্প বাস্তবায়নে দিনরাত কাজ করেছেন। প্রতিটি কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে। ইকুইপমেন্ট ও নিরাপত্তা সামগ্রীর মান ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ড মেনে করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম উদ্বোধন হবে এ বছরের অক্টোবর মাসে। এই প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনালটি উদ্বোধন করবেন। বর্তমানে প্রকল্পের ৭০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা আর টার্মিনাল পরিচালনা কর্তৃপক্ষ নিয়োগের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু এখন সময়ের ব্যাপার।
বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়প্রকল্প), এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিমানবন্দরে যাত্রী হ্যান্ডেলিং ক্যাপাসিটি ১০ লাখ থেকে ২২ লাখে দাঁড়াবে। কার্গো হ্যান্ডেলিং দুই লাখ ২০ হাজার টন থেকে সাত লাখ টনে উন্নীত হবে।
এছাড়া টার্মিনাল ইকুইপমেন্ট ও সিকিউরিটি ইকুইপমেন্টসহ নতুন প্যাসেঞ্জার বিল্ডিং (তৃতীয় টার্মিনাল-দুই লাখ ৭২ হাজার বর্গমিটার) নতুন কার্গো কমপ্লেক্স ৬৩ হাজার বর্গমিটার, র্যাপিড এক্সিট টেক্সিওয়ে ১৯ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, অ্যাপ্রোন পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার ও কানেক্টিং টেক্সিওয়ে ৬৬ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, টানেলসহ বহুতল কারপার্কি ৬২ হাজার বর্গমিটার, যন্ত্রপাতিসহ ফায়ার ফাইটিং স্টেশন চার হাজার বর্গমিটার, এন্ট্রি ও এক্সিট র্যাম্পসহ রোড নেটওয়ার্ক, ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম, সোয়ারেজ ট্রিটমেন্ট, ইনটেক পাওয়ার প্ল্যান্ট, কার্গো ইকুইপমেন্ট ক্রয়, এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সুবিধা তৈরি হবে। এ বছরের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
শাহজালালের বর্তমান এক্সপোর্ট কার্গো অ্যাপ্রোন সম্প্রসারণ প্রকল্পটি ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের আওতায় ৭৩ হাজার ৫৪৮ বর্গমিটার কার্গো অ্যাপ্রোন নির্মাণ কাজ এখন চলমান। প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ। এটি বাস্তবায়নের পর অ্যাপ্রোনে অতিরিক্ত চারটি সুপরিসর কার্গো এয়ারক্রাফট পার্ক করতে পারবে।
আরও পড়ুন: নাদিয়ার মৃত্যু: বিমানবন্দর সড়কে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ঘণ্টাখানেক যান চলাচল বন্ধ
শাহজালালে জেনারেল এভিয়েশন হ্যাঙ্গার নির্মাণ, হ্যাঙ্গার অ্যাপ্রোন ও ফায়ার স্টেশন সম্প্রসারণ প্রকল্পটি
৪৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই প্রকল্পে রয়েছে ২৩ হাজার ৫৮৯ বর্গমিটার জেনারেল এভিয়েশন হ্যাঙ্গার নির্মাণ, ৬৫ হাজার ৬৮ বর্গমিটারের হ্যাঙ্গার অ্যাপ্রোন, ২৯ হাজার ৯৮৮ বর্গমিটারের নতুন পার্কিং এরিয়া ও পাঁচ তলাবিশিষ্ট পাঁচ হাজার বর্গমিটারের ফ্লোরস্পেসের ভবন তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে।
ঢাকার কুড়িলে হ্যালিপোর্ট প্রকল্পটি ৫০৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হেলিকপ্টারের নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ সুবিধা নিশ্চিত করা।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় ৪৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে রানওয়ে ও টেক্সিওয়ের শক্তি ৪১ পিসিএন থেকে ৯০ পিসিএনে উন্নীত করা হচ্ছে। কাজের ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এই বিমানবন্দরে পুরো দমে বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ অবতরণ করতে পারবে।
ইতোমধ্যেই এই রুটে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালু হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: সিলেট বিমানবন্দরে ই-গেট যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বাড়াবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটি দুই হজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটার প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল, ছয় হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়,কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প (১ম পর্যায়-তৃতীয় সংশোধনী) প্রকল্প দুই হাজার ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে বিমানবন্দরের রানওয়ে ছয় হাজার ৭৭৫ ফুট দৈর্ঘ্যকে ৯ হাজার ফুটে উন্নীত, সোল্ডারসহ ১৫০ ফুট প্রস্থকে ২০০ ফুটে উন্নীত করা সহ রানওয়ে লাইটিং ব্যবস্থার উন্নতি করা হচ্ছে।
এছাড়া ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ে ছয় হাজার থেকে সাত হাজার ৫০০ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। রানওয়ের চওড়া ১০০ থেকে ১৫০ ফুট করা হচ্ছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন প্রকল্পটি ২৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পটির ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এর আওতায় ১০ হাজার ৯১৩ বর্গমিটার টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। ঝিনুক আকৃতির এই ভবনটি খুবই দৃষ্টিনন্দন। এতে থাকছে আন্তর্জাতিক মানের সব সুযোগ-সুবিধা।
তিন হাজার ৭০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সাল থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আওতায় রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৯ হাজার ফুট থেকে ১০ হাজার ৫০০ ফুটে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই বিমানবন্দরে পূর্ণ লোডে সুপরিসর বিমান চলাচল করতে পারবে।
এতে স্থানীয় যাত্রীর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ট্যুরিস্ট মুভমেন্ট বাড়বে। এতে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়বে। এছাড়া ১৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে কানেকটিং টেক্সিওয়ে ও প্যারালাল টেক্সিওয়ে নির্মাণ বর্তমানে চলমান রয়েছে।
শাহ আমানতের বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ ও বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরামর্শক সেবা প্রকল্পটি ৫৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ফুল লোডেড বোয়িং ৭৭৭ বিমান রানওয়েতে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারবে। প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের শক্তি (পিসিএন) ৬৬ থেকে ৯১-তে উন্নীত হবে।
এছাড়া ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের বিস্তারিত ড্রয়িং সম্ভাব্যতা সমীক্ষা, ড্রয়িং-ডিজাইন, ব্যয় প্রাক্কলন ও মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুতের কাজ চলছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পে ১৩৬ কোটি টাকার কাজ চলমান। এজন্য মাদারীপুর ও শরীয়তপুর এ দু’টি স্থানকে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনটি ৩১ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। এটি বাস্তবায়ন হলে বিল্ডিংয়ের ক্যাপাসিটি ৩১০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৬৭০ জনে উন্নীত হবে। এছাড়া এই বিমানবন্দরের জন্য একটি নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন, অটোমেশনসহ কার্গো ভবন, অ্যাপ্রোন, টেক্সিওয়ে, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ অপারেশনাল ভবন নির্মাণ করা হবে। এই বিমানবন্দরকে রিজিওনাল বিমানবন্দর বানানোর জন্য ৮৫১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
রাজশাহীর টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্পটি ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পে টার্মিনাল ভবন, ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল ও কন্ট্রোল টাওয়ার নির্মাণসহ যোগাযোগ ও নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে বর্তমান টার্মিনালের যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ২৬০ থেকে ৮৫০-এ উন্নীত হবে। এছাড়া বর্তমান রানওয়ে বাড়িয়ে ১০ হাজার ফুটে উন্নীত করা হবে।
যশোর টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণ প্রকল্পটি ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরনো টার্মিনাল ভবনে যাত্রী ক্যাপাসিটি ৩০০ জন থেকে বাড়িয়ে ৬০০ জনে উন্নীত করা হচ্ছে। প্রকল্পটির ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৫৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরের সারফেসে অ্যাসফল্ট কংক্রিট ওভারলেকরণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ৩ বিমানবন্দরের উড্ডয়ন-অবতরণ সহজ হবে। এই প্রকল্পে রানওয়ের পিসিএন ১৭ থেকে ৫০-এ উন্নীত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশা: ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঘুরে গেছে, ৭টি বিলম্বিত