%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে ইউপি কার্যক্রম
মো. মিজানুর রহমান মিজু
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। এই পরিষদের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। আধা পাকা জরাজীর্ণ দুটি টিনশেড ঘরে ইউপি কার্যক্রম চলছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা একটি কক্ষে গাদাগাদি করে বসে পরিষদের কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছেন।
এতে পরিষদ থেকে সেবা পেতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ইউনিয়নবাসী। তবে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভবন নির্মাণের জন্য একনেকে আবেদন করা হয়েছে, পাস হলে শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে তিন শতাধিক পরিবার
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ হাত দুটি টিনশেড দু’চালা ঘরের মধ্যে চলছে এই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। এর একটিতে গোডাউন ও সভার কাজে ব্যবহৃত হয়। আর একটি ঘরে রয়েছে উদ্যোক্তার ও ইউপি সচিবের জন্য ছোট একটি কক্ষ। চেয়ারম্যান ছোট্ট একটি কক্ষে বসে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও গ্রাম আদালত ও ইউপি সদস্যদের বসার কোনো কক্ষ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত সীমান্তবর্তী ৫ দশমিক ৮৩২ বর্গ কিলোমিটারের গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের জনসংখ্যা ৩২ হাজার ৫৯২ জন। এর উত্তরে ভারত দক্ষিণে চলবলা ইউনিয়ন পশ্চিমে চন্দ্রপুর ও পূর্বে আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ও কমলাবাড়ী ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন: সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
১৯৬৪ সালে গোড়ল ইউনিয়ন বোর্ডকে ইউনিয়ন কাউন্সিলে পরিবর্তন করা হয়। আর এর জন্য এক একর জমি প্রয়োজনীয়তায় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, সে সময়কার চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন আহমেদের চেষ্টায় চাকলারহাট এলাকায় মরহুম সোনাউল্লাহ সরকারের জ্যেষ্ঠপুত্র মরহুম হাফিজ উল্লাহ সরকার এক একর জমি দান করেন। তখন থেকে সেখানেই ইউনিয়ন পরিষদের কাজ চলে আসছে।
২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের বরাদ্দ আসলে সে সময় জমি দাতার পুত্র আদালতে জমি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করেন। ফলে কমপ্লেক্স নির্মাণের বরাদ্দ বাতিল হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ দিন উচ্চ আদালতে ঝুলে ছিল গোড়ল ইউনিয়ন বাসীর কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের স্বপ্ন। তিন বছর আগে মামলার বাদী মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা আর হয়নি।
পাহাড়ি ‘ঝাড়ু ফুল’ যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে
জাতীয়ভাবে বলা হয় ‘উলুফুল’, তবে স্থানীয় ভাষায় এটি ‘ঝাড়ু ফুল’ বা ‘ফুল ঝাড়ু’ নামে অধিক পরিচিত। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এই ‘ফুল ঝাড়ু’ ঘরবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে ঘরে ঘরে প্রতিদিনই ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিবছর ঝাড়ু ফুল দেশের গন্ডি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
প্রাকৃতিক এ ‘ঝাড়ু ফুল’ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে দেশের বহু পরিবার। এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা গেলে পাহাড়ের অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
জানা যায়, পাহাড়ে থেকে ‘ফুল ঝাড়ু’ কেটে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে আসে লোকজন। এরপর বাজার থেকে স্থানীয় গ্রামবাসী ব্যবহারের জন্য সেগুলো কিনে নেয়। অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীরাও স্থানীয় বাজারগুলো থেকে ফুল ঝাড়ু কিনে নেন।
শীত মৌসুমে ‘ফুল ঝাড়ু’ উৎপাদিত হয়। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়। চাষাবাদ করতে শুধুমাত্র ঝোপঝাড় পরিস্কার ও ফাঁকা স্থানগুলোতে এর চারা লাগিয়ে দিলেই হয়। বাড়তি কোন যত্ন, সার, কীটনাশক কোন কিছুরই প্রয়োজন হয় না।
ইতোমধ্যে পাহাড় থেকে ঝাড়ু তৈরির জন্য ‘ঝাড়ুফুল’ কাটা শুরু হয়েছে। গহীন পাহাড় থেকে এ ফুল সংগ্রহ করার আনন্দে মেতে উঠেছে ‘ঝাড়ু ফুল’ সংগ্রহকারীরা। এ ফুল ঝাড়ু দেশের বড় বড় শহরে বিক্রির জন্য মজুদ করা হচ্ছে।
ফুল ঝাড়ুর ৮-১০টি কাঠি নিয়ে একটি বান্ডিল তৈরি করা হয়। বন বিভাগের ভাষায় এটির নাম ‘ভ্রুম’।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: বেবিচক
অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: বেবিচক
দেশের সকল অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধিসহ আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সাতটি বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রী সেবার মান বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও কক্সবাজার, রাজশাহী, সৈয়দপুর, নীলফামারী এবং বরিশালে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে।
আরও পড়ুন: অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জোরদারে গুরুত্বারোপ: সরকারি নথি
পর্যায়ক্রমে সব অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে আধুনিকায়ণের পদক্ষেপ
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিজুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের সাতটি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রী সেবার মান বাড়ানোর কাজ চলছে।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্প্রসারণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। এছাড়া বাকি সবগুলোতেই দ্রুত সময়ে কাজ শুরু হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, শাহজালালের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, বিমানবন্দরগুলোর অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল ভবনগুলো একইভাবে সম্প্রসারণ করা হবে এ জন্য একটি বাজেট ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রূপান্তরের কাজ চলছে। ওই কাজের অংশ হিসেবে সেখানে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালকে আরও আধুনিকায়ন করা হবে।
বেবিচক জানায়, অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের চাপ সামাল দেয়ার পাশাপাশি সেবার মান বাড়ানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শাহজালালের অভ্যন্তরীণ পুরনো টার্মিনাল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ৮ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্লোর তৈরি করা হচ্ছে। ওই ফ্লোরের অর্ধেক অংশ জুড়ে থাকবে দুটি আন্তর্জাতিক মানের লাউঞ্জ। আর বাকি অর্ধেক জায়গায় থাকবে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা। থাকবে লিফটসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা।
তিনি আরও জানান, শাহাজালাল বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীন টার্মানালে আধুনিক স্ক্যানিং মেশিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম, আন্তর্জাতিক মানের দুটি লাউঞ্জ, ৩০০ অধিক যাত্রী বসার ব্যবস্থা, স্মোকিং রুম, ডায়াপার চেঞ্জিং স্টেশন, মাদার্স কর্নার স্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরে ৩০ স্বর্ণের বার জব্দ, বিমানের নিরাপত্তা কর্মীসহ আটক ২
অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে চাপ বাড়ছে
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমানচলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইউএনবিকে বলেন, বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিমানবন্দরে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলো আরও আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যমান যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে যাত্রী প্রতিনিয়তই বাড়ছে। দেশের মানুষ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত হয়েছে। বিদেশি, ব্যবসায়ী, পর্যটক সময় বাঁচাতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে বেশি যাতায়ত করছে ফলে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্যই আমরা সকল অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের কাজগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প হাতে নিয়েছি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা প্রচুর হওয়ায় ঢাকায় অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যাত্রীদের অপেক্ষমাণ সময় আরও স্বাচ্ছন্দবোধসহ সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সকল অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোকে ঢেলে সাজানো হবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দেরের সকল সুবিধা অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দেরে কীভাবে করা যায় আমরা সে উদ্যোগ নিয়েছি।
বেবিচক জানায়, অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আপডেট করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে অপরাধ ঠেকাতে নিরাপত্তা সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। সব রুটে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।
পড়ুন: বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
বিমানবন্দর এবং এয়ারলাইন্স উভয় ক্ষেত্রেই সেবার মান উন্নত করা দরকার
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তবে সবচেয়ে বেশি বিমান পরিচালনা করছে ইউএস বাংলা-এয়ারলাইন্স।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স-এর মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ৭-৮ বছরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে প্রায় ৩০০ শতাংশ যাত্রী বেড়েছে। সে অনুযায়ী যাত্রীদের সুবিধা বাড়েনি। যাত্রী সেবার মান আগের অবস্থায় রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এয়ারলাইন্সগুলো শুধু যাত্রী সেবার মান বাড়ালে হবে না। সাথে এয়ারপোর্টও সেবার মান থাকতে হবে। মোট কথা যাত্রী সেবার মান এয়ারপোর্ট ও এয়ারলাইন্স দুটো মিলিয়েই থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা, কক্সবাজার ও রাজশাহীতে যাত্রী লাউঞ্জ স্থাপন করা হয়েছ। তেমনি বাকি সবগুলো অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে যাত্রী লাউঞ্জসহ সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
চিলমারী নৌবন্দর ছেড়ে গেল পণ্যবাহী প্রথম জাহাজ
কুড়িগ্রামের হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার পথে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে ঐতিহাসিক চিলমারী নৌবন্দর। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো এই নৌবন্দর থেকে পণ্য নিয়ে ভারতের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বাংলাদেশি পতাকাবাহী ভ্যাসেল (নৌযান)।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় চিলমারী নৌবন্দরের রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল নৌ পয়েন্ট থেকে সান আবিদ-১ নামে একটি বাংলাদেশি নৌযান ঝুট পণ্য নিয়ে ভারতের ধুবড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
স্বাধীনতার পর এই প্রথম চিলমারী নৌবন্দর থেকে বাংলাদেশি নৌ পথে পণ্য ভারতে রপ্তানি করা হলো।
আরও পড়ুন: পোশাকপণ্য নিয়ে ইতালির উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে ‘এমভি সোঙ্গা চিতা’
রপ্তানির প্রথম চালান হিসেবে ২৭ টন ঝুট পণ্য নিয়ে লিজেন্ড কনসোর্টিয়াম লিমিটেডের শান আবিদ-১ নামের একটি নৌযান চিলমারী নৌ বন্দর থেকে ভারতের আসাম রাজ্যের ধুবড়ি নৌ বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। শেরপুর তুলার মিল নামক রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান নৌ পথে এই ঝুট পণ্য রপ্তানি করল।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে চিলমারী সফরে এসে এই নৌবন্দর চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর একই বছর চিলমারী নৌবন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান। চিলমারী নৌবন্দরের উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩’শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর থেকে ভারতের ধুবড়ি ট্রানজিট ব্যবহার করে ভুটান থেকে ক্রাস্টন পাথর ভ্যাসেলে করে প্রায় ছয় মাস আগে থেকে আমদানি করছে বাংলাদেশ। প্রতিমাসে গড়ে ৩০টি ভ্যাসেলে করে প্রায় সাড়ে চার হাজার ক্রাস্টন পাথর আমদানি করা হয়ে থাকে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা জোরদারে গুরুত্বারোপ: সরকারি নথি
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও গ্রামীণ উন্নয়ন জোরদারের প্রতি গুরুত্বারোপ করছে সরকার।
এক বাজেট নথি অনুসারে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার জোরদারকরণ নিশ্চিত করতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় গড়ে আট দশমিক সাত শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৪৭৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন কোটি।
২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার ও গ্রামীণ উন্নয়নের প্রাক্কলন ব্যয় যথাক্রমে ৪৭৭ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ও ৪৩৫ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতের জন্য বরাদ্দ ৪২১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন টাকা। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে তা ৪২৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা ৩২৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা ছিল ৩১৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন টাকা।
আরও পড়ুন: প্রজন্মের উন্নয়নে চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত করা, শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা কমানো, শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত করা এবং ভূগর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ ও এর পরিবর্তে মাটির ওপরের পানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে বাস্তবসম্মত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সরকারি নথি অনুযায়ী, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সরকার বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এসব উদ্যোগের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ‘একটি বাড়ি, একটি খামার’ কর্মসূচি।
এই কর্মসূচির আওতায় ৫৭ লাখ উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে দুই হাজার ৯৯১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে; আয় উৎপাদন করতে পারে এমন ৩২ দশমিক ৪৯ লাখ পারিবারিক খামার স্থাপন করা হয়েছে এবং দুই লাখ ৬৪ হাজার উপকারভোগীকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গৃহীত ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ফরিদপুরে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে তিন শতাধিক পরিবার
পানি নিষ্কাশনের জায়গা দখলের অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছে ফরিদপুর শহরতলী সিএন্ডবি ঘাট সংলগ্ন আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাগি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। জলাবদ্ধতার ফলে জমে থাকায় পানিতে পরিবেশ নোংরা এবং নানা রোগের উপদ্রব বাড়ছে।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী পদ্মা নদী থেকে বেশ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী ট্রলার বা জাহাজ থেকে তুলে সিএন্ডবি ঘাট পদ্মা পাড়ের (আইজমুদ্দিন মাতুব্বরের) এলাকায় জড়ো করে। আর এই বালু থেকে বের হওয়া পানি এলাকাতে ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। এছাড়াও বর্ষা ও বৃষ্টির পানিতেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা গত চার বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে অনেকেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে চলাচলের কাজ চারিয়ে নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের যে পথ ছিল সেগুলো নানাভাবে দখল হয়েছে, এছাড়াও ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী ও অর্থবৃত্তের মালিক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়টি অনেকবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত এই জলবন্ধতা নিরসন করা হবে।
পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম, আসমা বেগমসহ অনেকে জানান, এই গ্রামে পাশে যে মাঠ সেখানে ধানসহ বিভিন্ন ফসল হতো, কিন্তু গত চার বছর হলো সারাবছর পানি জমে থাকে। সেখানে কোনে খেতখামার করা যায় না, এছাড়াও প্রত্যেকটি বাড়ি চার পাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া পরিবেশটি বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে গেছে। এখানকার ছেলে-মেয়েরা সব সময় বিভিন্ন রোগে ভুগছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য পাঞ্জু শেখ বলেন, বালুর ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বহু আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পথগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয় না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যারও সমাধান হয় না।
আরও পড়ুন: বাঁশের সাঁকোই ৩০ হাজার মানুষের ভরসা
তিনি জানান, বর্ষার সময়ে পানি গোটা এলাকায় নিমজ্জিত হলে সেই পানি বের হওয়ার তেমন কোনো পথ থাকে না ফলে জলাবদ্ধতার সমস্যাও প্রকট হয়।
স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক মাওলনা নাজমুল হাসান বলেন, ‘এই জলাবদ্ধতায় আমরা বাস করতে পারছি না, শিশুসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিপদে রয়েছি। গৃহপালিত পশু পালন করা যাচ্ছে না।’
ডিক্রীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা উন্নয়ন সভায় তুলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরশন করা হবে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মাসুদুল আলম বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। নানাবিধ সমস্যার কারণে বর্ষা বা বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেতে পারছে না। তাছাড়া আমাদের পানি নিষ্কাশনের পথগুলো অত্যন্ত নাজুক। আমরা দ্রুতই এই জলাবদ্ধাতার সমাধানের চেষ্টা করবো।’
অতিথি পাখিতে মুখরিত রাণীসাগর দিঘি
অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত এখন রাণীসাগর দিঘি। পাখি দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়ও বেড়েছে। পুরো দিঘির জলাশয় সেজেছে নতুন সাজে। দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্যে সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রতি বছর শীত এলেই এসব পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে।
পাখিদের কলতানে পুরো দিঘি এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘিপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় খাবারের সন্ধানে রামরাই দিঘিতে ভিড় জমায় তারা।
রাণীশংকৈল উপজেলা শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে উত্তরগাঁও গ্রামের নিকটেই বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তর জলাশয় রাণীসাগরের অবস্থান।
আরও পড়ুন: শীতের অতিথি পাখি দেখতে কোথায় যাবেন?
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার একমাত্র সরকারি পর্যটন কেন্দ্র রামরাই দিঘি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে এখানে। পাখিদের কলকাকলিতে পুরো এলাকা মুখরিত। পাখিপ্রেমি ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্রের পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন।
কিন্তু স্থানীয় ও পর্যটকদের মতে, কিছু লোক লেকে পোল্ট্রি বর্জ্য ফেলে পানি দূষিত করায় অতিথি পাখিরা এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
পর্যটকদের প্রায়ই হ্রদে বা এর তীরে ফেলা বর্জ্য থেকে নির্গত দুর্গন্ধ থেকে সুরক্ষার জন্য মুখ ঢেকে রাখতে দেখা যায়। তবে কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে যথেষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই।
আরও পড়ুন: অভিনব কায়দায় চলছে অতিথি পাখি শিকার
করোনার ঊর্ধ্বগতি আরও ২ সপ্তাহ চলবে: আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের
করোনার দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ধরন ওমিক্রন বাংলাদেশে বর্তমানে পুরোদমে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন করছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরও দুই সপ্তাহ দেশে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে।
তারা বলছেন, করোনা শনাক্তের হার আগামী মাসের শেষের দিকে দ্রুত কমার আগ পর্যন্ত মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
সরকারি তথ্য মতে, গেল কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে করোনার শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, করোনায় আক্রান্ত অনেক মানুষ পরীক্ষা না করায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও শনাক্তের হার সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল, ডা. বে-নাজির আহমেদ, ডা. মুশতাক হোসেন ও এম এইচ চৌধুরী লেনিন করোনার সংক্রমণ কমাতে সরকারকে বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় বাধ্য করার পরামর্শ দিয়েছেন।
চূড়ার দিকে যাচ্ছে করোনা
হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. লেনিন বলেন, ‘দেশে করোনা শনাক্ত চূড়ার দিকে যাচ্ছে। এজন্য করোনা শনাক্ত ক্রমাগত বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাণঘাতী করোনার তৃতীয় ঢেউ ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের দিকে হ্রাস পাওয়ার ধাপ শুরু হতে পারে। তবে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে- এর ওপর নির্ভর করে এটি দ্রুত বা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট ব্যবহার করে দেশে দুই লাখের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা যেতে পারে। কিন্তু আমি জানি না, কেন এ ধরনের পরীক্ষা দেশে এখনও এত কম। অনেক মানুষ করোনা পরীক্ষা বাইরে থেকে যাচ্ছেন এবং আমরা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পাচ্ছি না।’
ডা. লেলিন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির আংশিক চিত্র পাওয়ায় আমাদের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মাঝে মাঝে সঠিক পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।’
করোনা সংক্রান্ত জনস্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ডা. ফয়সাল বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ দেখা যাবে। আগামী মাসের শেষের দিকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’
তবে তিনি বলেন, ‘অনেক আক্রান্ত মানুষই পরীক্ষা করান না। তাই সরকারি হিসাবে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিফলিত হয় না। সরকারি হিসাবে করোনা আক্রান্তের খুব ক্ষুদ্র অংশ রেকর্ড করা হচ্ছে। প্রতিদিন অন্তত এক বা দুই লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ঝুঁকিতে গ্রামীণ মানুষ
ডা. ফয়সাল বলেন, ‘ভাইরাসটির সংক্রমণ এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়তে থাকবে। ‘এই ভাইরাস কাউকে ছাড়বে না। এটা উদ্বেগের যে গ্রামীণ এলাকার অনেক মানুষ এখনও করোনার টিকা নেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষার করার বিষয়ে গ্রামীণ এলাকার মানুষ খুব কম সচেতন। অধিকাংশ জেলায় কমিউনিটি ট্রান্সমিশন চললেও আমরা করোনা পরিস্থিতির আসল চিত্র পাব না।’
এই বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বন্ধ করা যাবে না। আমাদের এখন রোগী ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেয়া উচিত। গ্রামীণ এলাকার অধিকাংশ মানুষ টিকা না নেয়ায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা উচিত।’
তিনি বলেন, যারা এখনও টিকার এক ডোজও নেয়নি তারা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। ‘তাই তাদের খুব সতর্ক থাকা উচিত। এছাড়া বয়স্ক মানুষ ও যাদের একাধিক রোগ রয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া উচিত। কেননা তাদের মধ্যে মৃত্যু হার বেশি।’
পড়ুন: করোনায় আরও ৩১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৩ হাজার ৫০১
বিধিনিষেধ শুধু কাগজে
ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ ভয়ানকভাবে বাড়লেও স্বাস্থ্যবিধির প্রতি মানুষের এখনও চরম অনীহা।’
তিনি বলেন, ‘মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আইন প্রয়োগে সরকারও মনে হয় অনিচ্ছুক। যদি এটা চলতে থাকে, আমি মনে করি, বর্তমান ঢেউ আমাদের অনুমানের চেয়ে আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।’
ডা. ফয়সাল বলেন, ‘অধিকাংশ সরকারি বিধিনিষেধ শুধু কাগজেই আছে। কেননা সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো অভিযান নেই। মানুষ এখনও মাস্ক পরতে এবং জনসমাগম এড়াতে অনিচ্ছুক।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড সংক্রমণ কমাতে সরকারের উচিত সব বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।’
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব টার্গেট জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে টিকাদান কর্মসূচি আরও বাড়ানো উচিত।’
সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞা ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিক না। অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সব কিছু স্বাভাবিকভাবেই চলছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা, বিভিন্ন নির্বাচন, সব সামাজিক সভা চলছে এবং দোকানপাটও খোলা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মৃত্যু হারও খুব কম হলেও প্রতিটি জীবনেরই মূল্য আছে। ‘জীবন বাঁচাতে এবং মানুষকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টা নেয়া উচিত।’
এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘অন্তত আরও তিন সপ্তাহ মানুষকে খুব সাবধানে থাকতে হবে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাওয়া উচিত না এবং যে কোনো ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে যাওয়া। স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনা চলা উচিত এবং মাস্ক ছাড়া বাইরে বের না হওয়া।’
অঅরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি: বাগেরহাটে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
এপ্রিলে আসতে পারে আরেক ঢেউ
ডা. বে-নাজির মনে করেন, ‘করোনার তৃতীয় ঢেউ মার্চের মাঝামাঝি সময়ে নিয়ন্ত্রণে এসে পড়তে পারে। দেশে আরেকটি ঢেউ পরে আবার আঘাত হানতে পারে।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা এপ্রিলে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় এর আগের দুই বছর এপ্রিলে করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়েছে।’
তিনি এও বলেন, ‘মনে হচ্ছে করোনাভাইরাস খুব শিগগিরই বিদায় নেবে না। কেননা আরও বিপজ্জনক ধরন যে কোনো সময় আবির্ভূত হতে পারে। ভাইরাসটিকে সঙ্গে নিয়েই কীভাবে বাঁচা যায়-তা আমাদের শিখতে হবে।’
তেঁতুলিয়ায় সৌরভ ছড়াচ্ছে ‘টিউলিপ’
শীতের জেলা পঞ্চগড় রাঙিয়ে তুলেছে নানা রঙের টিউলিপ ফুল। সীমান্তবর্তী এই জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সারিয়ালজোত ও দর্জিপাড়া গ্রামে টিউলিপ ফুল উৎপাদিত হচ্ছে। ৪০ শতাংশ জমিতে এবারই প্রথম রাজসিক সৌন্দর্য এর ফুল টিউলিপ উৎপাদন করেছেন চাষিরা।
পঞ্চগড় জেলায় শীত মৌসুমে তাপমাত্রা কম থাকায় টিউলিপ ফুল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে প্রমাণ করে দিয়েছেন তেঁতুলিয়ার শারিয়াল জোত ও দর্জিপাড়া গ্রামের চাষি মুক্তা বেগম, আনোয়ারা বেগম, সুমি আক্তার, আয়শা বেগম, মোছা. হোসনেয়ারা বেগম, মনোয়ারা বেগম, মোর্শেদা বেগম ও সাজেদা বেগম। তারা সকলেই ইকো সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইএসডিও) নারী সদস্য।
তারা জানান, বাল্ব বা চারার দাম, শেড নেট, ফেন্সিং নেট, রাসায়নিক সার, জৈবসার, কীটনাশক ও শ্রমের মূল্য বাবদ মোট খরচ প্রায় ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা। ৪০ হাজার টিউলিপ ফুল ১০০ টাকা হারে বিক্রি করতে পারলে ৪০ শতক জমি থেকে মাত্র দুই মাসে ৮ লাখ টাকা আয় করবেন চাষিরা। পরবর্তীতে বছরের অন্য সময়টাতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফুল চাষাবাদও করতে পারবেন। ফুল বাগানে ক্ষুদ্র পরিসরে বিনোদন পার্ক তৈরি করে পর্যটক ও ফুলপ্রেমিদের জন্য প্রবেশ মূল্য চালু করেছেন। এতে ফুল বিক্রি বাদেও তারা অতিরিক্ত টাকা আয় করতে পারবেন।
শীতপ্রধান অঞ্চল হিসেবে পঞ্চগড়ে টিউলিপ রোপণ ও উৎপাদনে সফল হওয়ায় ভবিষ্যতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে টিউলিপ রপ্তানির সম্ভাবনা জাগিয়েছেন। ফুল বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হলে আগামী বছর প্রায় ৫ একর জমিতে টিউলিপের চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
প্রতিদিন দূর-দূরান্তের শত শত প্রকৃতিপ্রেমি শিশু কিশোর, যুবক, নারী-পুরুষ পরিবার পরিজন নিয়ে দলবেধে দৃষ্টিনন্দন টিউলিপ ফুলের অপরুপ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন এসব ফুল বাগানে। নানা ধরনের চোখ ধাঁধানো টিউলিপ দেখে স্থানীয়সহ পর্যটক সকলেই বিস্মিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
সুন্দরবনে গত ২১ বছরে ৪০টি বাঘ মারা গেছে। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের দুবলারচরের কাছে রুপার খাল থেকে একটি মৃত বাঘ উদ্ধার করা হয়েছে। বাঘটি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে বলে ধারণা করছে বন বিভাগ।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বন বিভাগের সদস্যরা শুক্রবার সকালে টহল দেয়ার সময় বনের রূপার খালে মৃত অবস্থায় একটি বাঘ ভাসতে দেখে। পরে তারা গিয়ে মৃত বাঘটি উদ্ধার করে। বাঘটির আনুমানিক বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছর এবং বাঘটি পুরুষ প্রজাতির। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
ডিএফও আরও জানান, বন বিভাগের সদস্যরা বাঘটিকে তীরে উঠানোর পর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে বাঘের শরীরের কোথাও কোন ধরনের আঘাতের চিহ্ন নেই। ধরাণা করা হচ্ছে, বাঘটি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০১ থেকে ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সুন্দরবনে নানাভাবে ৪০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২৪টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬টি বাঘের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে মৃত বাঘ উদ্ধার
কখনও শিকারির হাতে কিংবা সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে বের হলে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা যায় বাঘ। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোগ ও বার্ধক্যজনিত কারণেও বাঘ মারা গেছে।
এ সময়ে ২০টি বাঘের চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে।
২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুসারে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। তবে এখন সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কত তা বলতে পারেনি বন বিভাগ। বাঘ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ নেয়ায় বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে- এমনটাই প্রত্যাশা বন বিভাগের।
বাঘ রক্ষায় উদ্যোগ
ডিএফও মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বাঘ রক্ষায় সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সুন্দরবনে বাঘসহ বন্যপ্রাণির আবাসস্থল বৃদ্ধি করা হয়েছে। মোট ছয় লাখ এক হাজার ৭০০ হেক্টর বনের মধ্যে এখন তিন লাখ ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর অভয়ারণ্য এলাকা। আগে ছিল মাত্র এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর।
২০১৭ সালে সরকার সুন্দরবনে অভায়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করে। সুন্দরবনে বাঘের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল ফাঁড়ির কার্যক্রমের পাশাপাশি স্মার্ট পেট্রোল করা হচ্ছে সুন্দরনে। এছাড়া বনের সীমান্ত এলাকায় বন বিভাগের টহল বাড়ানো হয়েছে। সার্বক্ষণিক বন বিভাগ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে ডিএফও জানান।
জানা গেছে, সুন্দরবনে প্রতিটি বাঘ তাদের আবাসস্থলের জন্য ১৪ থেকে ১৬ বর্গ কিলোমিটার (হোমরেঞ্জ) চিহ্নিত করে সেখানে বাস করে। আর গোটা সুন্দরবন জুড়েই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণ।
আরও পড়ুন: মতলবে খাঁচায় বন্দি মেছো বাঘ, জনমনে আতঙ্ক
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে লবণাক্ততা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করছে বাঘ।
নদী-খাল ভরাট হওয়ার কারণে বাঘ মাঝে মধ্যে সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। বন সংলগ্ন গ্রামে ঢুকে পড়লে গ্রামবাসীর হাতে মাঝে মধ্যে বাঘের প্রাণহানি ঘটে। আর সুন্দরবনে চোরা শিকারিদের তৎপরতা একেবারে বন্ধ করাও সম্ভব হয়নি।
বিভিন্ন সূত্র মতে, বাঘের আট উপ-প্রজাতির তিনটি ইতিমধ্যে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মাত্র ১২টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। সারা বিশ্বের বন উজাড়, শিকারি ও পাচারকারীদের কারণে বাঘ ‘বিপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।