বিশেষ সংবাদ
বৈদেশিক আর্থিক প্রস্তাবে দরকষাকষির জন্য বাংলাদেশের একাধিক বিকল্প প্রয়োজন: জাপানি বিশেষজ্ঞ
জাপানের এক বিশেষজ্ঞের মতে, যেকোনো প্রস্তাব, বিশেষ করে আর্থিক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরও বেশি বিকল্প থাকা দরকার। এটি বাংলাদেশকে আরও বেশি দরকষাকষির সুযোগ দেবে।
ইন্টারন্যাশনাল হাউজ অব জাপানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং কেইও ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. কেন জিম্বো সম্প্রতি ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশকে আরও বেশি অবাধ সুযোগ-সুবিধা দিতে এ ধরনের প্রস্তাব তৈরিতে আমাদের অত্যন্ত শক্তিশালী হতে হবে। আপনার যদি দুটি বা ততোধিক বিকল্প থাকে তবে এটি আরও ভালো। আসলে আমাদের উভয়েরই আরও বিকল্প থাকা দরকার।’
জাপানের ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক (এফওআইপি) বিষয়ক নতুন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জাপান কোনো শর্ত ছাড়াই ৫১টি আইটেম প্রস্তাব করছে এবং যেটি আকর্ষণীয় সেটি বেছে নিতে পারে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব: জাপানি রাষ্ট্রদূত
২০২০ সালে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তারো কোনোর বিশেষ উপদেষ্টা এবং ২০১৮-২০ সাল পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই জাপানি বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, চীনের প্রস্তাবগুলো নিয়মভিত্তিক এবং আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে তারা তা বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, 'যদি চীন থেকে খুবই আকর্ষণীয় কোনো প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে প্রস্তাব আসে এবং জাপান বা অন্য কোনো দেশের বিকল্প কোনো প্রস্তাব না থাকে, তাহলে চীনের অর্থ নেওয়া ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো উপায় নাও থাকতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক কেন বলেন, এফওআইপিতে অবশ্যই সহযোগিতামূলক উপাদানগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক উপাদান রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাপানি সংস্করণে, আপনি প্রচুর সহযোগী উপাদান খুঁজে পেতে পারেন, আমরা যে আইটেমগুলোর রূপরেখা করেছি সেগুলোর মধ্যে প্রায় অনেকগুলোই।’
জাপানি এই বিশেষজ্ঞ বলেন, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা ও সামর্থ্য বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা একটি সক্ষমতা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করি। কোনো ধরনের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ দেখা দিলে আমরা যৌথভাবে যেন তা মোকাবিলা করতে সক্ষম হই। এটাই ভিত্তি।’
অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক কেন স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা বাংলাদেশের স্থিতিশীল শাসন ব্যবস্থার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা তৈরি করবে।
তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, বাংলাদেশে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক মানসিকতা এবং জনগণের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য এটি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
অধ্যাপক কেন বলেন, 'আমি মনে করি, বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল দেশ হিসেবে তুলে ধরতে হলে গণতন্ত্র একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, কারণ আপনাকে জনগণের কথা শুনতে হবে, সরকারে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে জনগণের নানা রকম স্বার্থের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’
এফওআইপি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাপান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ২০১৬ সাল থেকে মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাটি প্রচার করছে।
প্রফেসর কেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণার প্রতি গভীর মনোযোগ দিচ্ছে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তাদের সম্পৃক্ততা ও সহযোগিতা বাড়াচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের 'ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক' ঘোষণাকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: জাপানি ব্যবসায়ীদের শিল্পকারখানা স্থাপনের জন্য জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
অধ্যাপক কেন উল্লেখ করেন, ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণাটি ২০১০ এর দশকে আবির্ভূত হয়েছিল কারণ ১৯৮০ এর দশক থেকে এশিয়ার আঞ্চলিক ধারণাগুলো প্রকাশ হয়েছিল।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতির প্রথম আনুষ্ঠানিক সংস্করণটি জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ভাষণ থেকে আসে। ২০১৬ সালের আগস্টে কেনিয়ার নাইরোবিতে টিআইসিএডির ষষ্ঠ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলেন।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সুতরাং এটি আজও গুরুত্বপূর্ণ জাপানি আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা ধারণা হিসেবে রয়ে গেছে। মার্কিন-চীন মহাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যান্য অনেক অঞ্চলেও প্রভাব বিস্তার করছে।’
তিনি বলেন, জাপান অর্থনৈতিক সংযোগ, প্রশাসনিক সংস্কার, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উপর অনেকগুলো আইটেম নিয়ে নতুন পরিকল্পনার প্রস্তাব করছে। এতে সহযোগিতার অনেকগুলো আইটেম রয়েছে যা জাপান কোনো বিশেষ শর্ত ছাড়াই সরবরাহ করতে পারে।
অধ্যাপক কেন বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবকাঠামো তহবিল, সংযোগ বিনিয়োগসহ অনেক আইটেম অনেক দেশের জন্য রয়েছে। তারা সত্যিই পছন্দ করে বেছে নিতে পারে।এখানে অনেকগুলো বিকল্প রয়েছে্।’
তিনি বলেন, জাপানের উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশনে এটি অর্থনীতিককেন্দ্রিক বা নিরাপত্তা আওতায় যাওয়ার অনুরোধ। ‘আমি মনে করি প্রধানত অর্থনৈতিক দিক থেকে এটি অনেক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ।’
‘স্মার্ট গ্রিড’র দিকে যেতে শীর্ষ মার্কিন পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে পাওয়ার সেল
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সরকার প্রচলিত গ্রিড সিস্টেমকে ধীরে ধীরে স্মার্ট গ্রিডে উন্নীত করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে- প্রাথমিকভাবে স্মার্ট গ্রিড সিস্টেমটি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এবং ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) অধীনে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, প্রাথমিকভাবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এবং ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) অধীনে স্মার্ট গ্রিড সিস্টেম স্থাপন করা হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপকে (বিসিজি) নিয়োগ দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কারিগরি শাখা পাওয়ার সেল জাতীয় গ্রিড ও সংযুক্ত ইউটিলিটির বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন এবং নতুন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করতে জরিপ পরিচালনার জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
আরও পড়ুন: আদানি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুত সঞ্চালন শুরু
‘বাংলাদেশের পাওয়ার ইউটিলিটিগুলোর জন্য ও স্মার্ট গ্রিড রোডম্যাপের প্রযুক্তিগত সহায়তা’ শিরোনামে এরই মধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিসিজি।
ইউএস ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির আর্থিক সহায়তায় এবং ফলোআপ হিসেবে বিজিসি এই জরিপ পরিচালনা করে। ইউএসটিডিএ পরবর্তী জরিপ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য ১ জুন অনুদান হিসেবে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে পাওয়ার সেলের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে।
পাওয়ার সেলের কর্মকর্তারা জানান, চুক্তির আওতায় বিসিজি সামগ্রিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পাশাপাশি সব বিদ্যুৎ ইউটিলিটির প্রযুক্তিগত ও আর্থিক চাহিদা মূল্যায়ন করে আরও বিস্তৃত ও বিশদ অধ্যয়ন করবে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, "প্রকৃতপক্ষে, একটি মার্কিন পরামর্শক সংস্থা সামগ্রিক সিস্টেমকে একটি স্মার্ট গ্রিড সিস্টেমে রূপান্তর করার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করবে। সেখানে সবকিছু ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হবে এবং বিদ্যমান ম্যানুয়াল সিস্টেমের পরিবর্তে একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম স্থাপন করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অফ-গ্রিড নবায়নযোগ্য ও ক্যাপটিভ পাওয়ারসহ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ২৭ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট। এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট উৎপন্ন হয়েছিল।
ট্রান্সমিশন লাইনের দৈর্ঘ্য ১৪ হাজার ৯৩৪ সার্কিট কিলোমিটার যেখানে ৬৩ হাজার ৮৯৫টি গ্রিড সাবস্টেশন রয়েছে এবং বিতরণ লাইনের দৈর্ঘ্য ৬ লাখ ৪৩ হাজার কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১
মোট গ্রাহক সংখ্যা ৪৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন এবং সিস্টেম লস ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
২০৩০ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪০ হাজার মেগাওয়াটে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
কর্মকর্তারা বলেন, শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পেছনে দ্রুত বর্ধনশীল সিস্টেমকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য সরকার স্মার্ট গ্রিড প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তারা বলেন, পরামর্শক সংস্থা বিসিজি ডিসেম্বরে পরবর্তী প্রতিবেদন জমা দেবে। যার ভিত্তিতে পিজিসিবি ও ডিপিডিসি স্মার্ট গ্রিড সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করবে।
এদিকে প্রাথমিক জরিপসহ জমা দেওয়া প্রতিবেদনে বিজিসি সাইবার নিরাপত্তাকে একটি মূল ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এখানে পিজিসিবিসহ বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রিড নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে পিছিয়ে রয়েছে।
স্মার্ট গ্রিড প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ৮টি মূল চ্যালেঞ্জ ও ২৮টি প্রযুক্তি সমাধান ও উদ্যোগ চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুতের বিতরণ খাতে ১৫টি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন, অসঙ্গতিপূর্ণ বিদ্যুতের গুণমান, ম্যানুয়াল অপারেশন ও সম্পদের সীমিত দৃশ্যমানতা, সরবরাহের পরিবর্তনশীলতা বৃদ্ধি, বিলিং দক্ষতা উন্নত এবং অ-প্রযুক্তিগত ক্ষতি হ্রাস, উন্নত গ্রাহক সন্তুষ্টি, বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং পয়েন্টের অভাব এবং অসম্পূর্ণ রাজস্ব আদায়ের মতো মূল চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিসিজি বিদ্যুৎ খাতের ট্রান্সমিশন বিভাগের জন্য ৫টি চ্যালেঞ্জও চিহ্নিত করেছে।
সেগুলো হলো- উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি লস, ক্রমবর্ধমান ট্রান্সমিশন লস, গ্রিড সম্পদের ম্যানুয়াল অপারেশন ও প্রতিক্রিয়াশীল ভিএআর (ভোল্ট-অ্যাম্পস প্রতিক্রিয়াশীল) ব্যবস্থাপনা।
সবশেষে এই সেক্টরের জেনারেশন সেগমেন্টের জন্য ২টি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে।
সেগুলো হলো- উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি প্রকরণ ও পাওয়ার বাধা।
আরও পড়ুন: তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের পুরানো কূপ থেকে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ শুরু
কুড়িগ্রামে পাকিস্তান আমলে নির্মিত সেতুর মেরামত হয়নি, ভোগান্তিতে ৬ গ্রামের মানুষ
বন্যা ও ভূমিকম্পে ২০১৬ সালে ভেঙে পড়ে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ি ইউনিয়নের বেরুবাড়ী ছড়ার উপর নির্মিত সেতুটি। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ৬টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পণ্যবাহী পরিবহন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিতে না পারা এবং আগুন ধরলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারায় মহাবিপাকে পড়েছেন স্থানীয়া। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দফায় দফায় অভিযোগ করেও প্রতিকার না পাওয়ায় দুর্ভোগের শিকার এসব গ্রামবাসী।
৭ বছর থেকে কেন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন এখানকার মানুষ - এ প্রশ্ন সর্বত্র। তাই জনদুর্ভোগ নিরসনে অবিলম্বে নতুন করে সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে পাটের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা হতাশ
স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, পাকিস্তান শাসনামলে বেরুবাড়ীর ছড়ার উপর প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে আর মেরামত করা হয়নি। ২০১৬ সালে ভূমিকম্পে সেতুর পশ্চিম দিকে ২০ মিটার অংশ এবং পূর্ব দিকে ১০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। এতে চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে সেতুটি।
একই বছর সেতুর নিচ দিয়ে একটি ট্রাক্টর যাওয়ার সময় সেতুটিতে ধাক্কা লাগে। এতে আরও ভেঙে যায় সেতুটি। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বেরুবাড়ী সেতুটি। ফলে নাগেশ্বরী উপজেলার সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন বেরুবাড়ী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ।
২০১৭ সালে বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতা ও স্থানীয়দের সমন্বয়ে ওই সেতুর উপর কাঠ একটি সাঁকো নির্মাণ করে এলাকাবাসী। কিন্তু দীর্ঘদিন ওই কাঠের সাঁকোটি সংস্কার না করায় সেটিও ভেঙে যায় এবং সম্প্রতি বন্যায় সেতুর একটি অংশ দেবে গিয়ে সেতুটি এখন এলাকাবাসীর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। এমতাবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার হচ্ছে স্থানীয়রা। যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা।
নাগেশ্বরী উপজেলার হাজিপাড়া, সরকারপাড়া, মন্ডলপাড়া, মিরারভিটা, চর বেরুবাড়ী, চর শালমারা, আকন্দপাড়া ও বেরুবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন ওই সেতু ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া স্কুল কলেজ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেরুবাড়ী বাজার হয়ে উপজেলা শহরে অফিস-আদালতে যেতে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হয়।
স্থানীয় মিরারভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বেরুবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাগেশ্বরী মহিলা সরকারি কলেজ, নাগেশ্বরী সরকারি কলেজ এবং ওই ইউনিয়নের প্রায় ৫টি ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে।
বেরুবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান আলী বলেন, ‘২০১৬ সালে ভূমিকম্পে সেতুটির দু’পাশে দেবে গিয়ে ভেঙে যায় এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও কাজ হচ্ছে না। সেতুতে যাতায়াতের সড়কটি আইডিভূক্ত না হওয়ায় উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, জটিলতটা আছে, সেতুটি সহসাই হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে কথা হলে কুড়িগ্রাম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘২০১৬ সালে সেতুটি ভেঙে যায় বলে শুনেছি। উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ২৩৬টি নতুন রাস্তাকে আইডিভূক্তির তালিকায় সেতুটির নাম পাঠানো হয়েছে। যদি সড়কটি আইডিভূক্ত হয় তাহলে সেতু নির্মাণ সহজ হবে। আশা করছি সেটি দ্রুত সম্ভব হবে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যায় এখনো ৭০০০ পরিবার পানিবন্দি
আগারগাঁও-মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন হবে ২০ অক্টোবর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম মেট্রোরেল আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করবেন আগামী ২০ অক্টোবর।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
ওইদিন প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশন উদ্বোধন করবেন। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশে ৭টি স্টেশন রয়েছে।
এগুলো হলো- বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল।
মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশটি চালু হলে যাত্রীরা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মাত্র ৩৮ মিনিটে যাতায়াত করতে পারবেন। যা ঢাকার জীবনযাত্রায় একটি অলৌকিক ঘটনা।
প্রাথমিকভাবে প্রতি ১৫ মিনিটে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পাঁচটি ট্রেন চলবে এবং সময়ের ব্যবধান কমিয়ে ধীরে ধীরে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানান মন্ত্রী।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক বলেন, ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনগুলো ২০ অক্টোবর চালু হচ্ছে।
স্টেশনের যাবতীয় কাজ শেষ হয়েছে। এখন স্টেশনে যাত্রীবাহী ওয়াকওয়ের কাজ চলছে এবং ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিদ্দিক।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু প্রমাণ করে আ. লীগ কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী: কাদের
প্রাথমিকভাবে সব ট্রেন মতিঝিল পর্যন্ত যাবে না। ট্রেনের নম্বর দেওয়া থাকবে। নম্বর অনুযায়ী কোন ট্রেন আগারগাঁও যাবে আর কোনটি মতিঝিল যাবে, তা শনাক্ত করা যাবে।
ডিএমটিসিএল এমডির মতে, একটি ট্রেন বাণিজ্যিকভাবে চলার আগে লাইনে তিন ধাপের পরীক্ষা চালানো হয়। ট্রায়াল রানের প্রথম ধাপ হলো দক্ষতা পরীক্ষা বা কর্মক্ষমতা পরীক্ষা। দ্বিতীয় ধাপে হবে সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন টেস্ট। চূড়ান্ত পর্যায়ে হবে ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক আন্দোলন।
সিদ্দিকী আরও বলেন, এখন আমরা দ্বিতীয় ধাপে আছি এবং উদ্বোধনের পাঁচ দিন আগে সব পরীক্ষা শেষ হবে।
মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের মতে, পুরো সিস্টেমটি চালু হলে প্রাথমিকভাবে সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পরিষেবা পাওয়া যাবে এবং তারপরে এটি রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। উল্লেখযোগ্যভাবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্পটি সমর্থন করার জন্য ঋণ আকারে ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা প্রদান করে এবং অবশিষ্ট অর্থ বাংলাদেশ সরকার প্রদান করে।
শুরুতে, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার অংশ নির্মাণের ফলে প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন জমি অধিগ্রহণ এবং বিভিন্ন নতুন সুযোগ-সুবিধা সংযোজন করায় ব্যয় বেড়েছে।
২০১৭ সালে প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা-আগারগাঁও সেকশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথমে এই রুটের মাত্র ৩টি স্টেশন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। পরে উত্তরা-আগারগাঁও রুটের ৯টি স্টেশন পর্যায়ক্রমে চালু হয়।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল রুট ২০ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
জাগো নিয়ে করভি রাখসান্দের যাত্রা: রায়ের বাজার বস্তি থেকে র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড
পুরষ্কার হলো কিছু বিশেষ কৃতিত্বের সম্মানে প্রদত্ত স্বীকৃতি ও উৎসাহের প্রতীক। যেটি কোনো একজন ব্যক্তি বা সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ও বিশেষত্বকেও নির্দেশ করে।
সারা বিশ্বে যোগ্য ব্যক্তি ও সত্ত্বাকে স্বীকৃতি দেওয়া পুরস্কারগুলোর মধ্যে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার হলো একটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। এই পুরস্কারটিকে প্রায়শই ‘এশিয়ার নোবেল পুরস্কার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই পুরস্কারটি আজকের বিশ্বে একটি বিশেষ একক ও তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
পুরস্কারটি ফিলিপাইনের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট র্যামন ম্যাগসেসের প্রশাসনে সততা, জনগণের প্রতি নির্ভীক সেবা এবং গণতান্ত্রিক সমাজের মধ্যে বাস্তববাদী আদর্শবাদের উদাহরণকে স্মরণ করতে প্রচলন করা। যা সম্মানের বার্ষিক ব্যাজ হিসেবে শুরু করা হয়েছিল।
এশিয়ান অঞ্চলে প্রভাবিত করে এমন এশীয় ব্যক্তিদের সততা, সাহস ও নিঃস্বার্থ সেবার মূল্যায়ন করতে ফিলিপাইন সরকারের সহযোগিতায় নিউইয়র্কভিত্তিক রকফেলার ব্রাদার্স ফান্ডের মাধ্যমে ১৯৫৭ সাল থেকে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার দেওয়া হয়।
এই লেখায় পুরস্কারগুলোকে বিশদভাবে বর্ণনা করার পেছনে একটি কারণ রয়েছে, বিশেষ করে র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার। কারণ জাগো ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রাখসান্দ তার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য ২০২৩ সালে নেতৃত্বের ক্যাটাগরিতে র্যামন ম্যাগাসেসে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
এ বছরের পুরস্কারের মাধ্যমে করভি রাখসান্দ ৩৪৪ জন অসামান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট তালিকায় উঠে এসেছেন। যাদের নিঃস্বার্থ সেবা তাদের সমাজে মানব উন্নয়নের সবচেয়ে জটিল সমস্যার কিছু সফল সমাধান এশিয়া ও বিশ্বকে দিয়েছে।
সম্মানের এই ব্যাজ অর্জনের মাধ্যমে তিনি অতীতে পুরস্কার জয়ী ১৩ জন বাংলাদেশির মর্যাদাপূর্ণ হল অব ফেম -এ যোগদান করেন। এই তালিকায় রয়েছেন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ফেরদৌসী কাদরী (২০২১), পরিবেশবাদী ও সমাজকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান (২০১২), সেন্টার ফর ডিসঅ্যাবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্টের (সিডিডি) প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এএইচএম নোমান খান (২০১০), প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। (২০০৫), শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ (২০০৪), সমাজকর্মী অ্যাঞ্জেলা গোমস (১৯৯৯), গ্রাম সমাজ সংস্কারক মোহাম্মদ ইয়াসিন (১৯৮৮), ঢাকার নটরডেম কলেজের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাদার রিচার্ড উইলিয়াম টিম (১৯৮৭), গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী (১৯৮৫), নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস (১৯৮৪), ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ (১৯৮০) এবং ১৯৭৮ সালে তাহরুন্নেসা আবদুল্লাহ সমাজে মুসলিম নারীদের জন্য সংস্কারক হিসেবে তার সামাজিক ভূমিকার জন্য স্বীকৃত।
আরও পড়ুন: ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান, বিজয়ী জিম্বাবুয়ের প্রতিষ্ঠানকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিবাদন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড
রাজধানীর রায়ের বাজার বস্তির একটি ছোট দলকে শিক্ষিত করা থেকে শুরু করে ২০২৩ সালের র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হওয়া পর্যন্ত করভি রাখসান্দ সারা বাংলাদেশে একটি বৈপ্লবিক সামাজিক রূপান্তরের নেতৃত্ব দিয়েছেন। একজন ভ্রমণকারী হিসেবে কোরভি রাখসান্দের ভূমিকা গভীরভাবে জানার জন্য সম্প্রতি রাজধানীতে জাগোর বনানী সদর দপ্তরে বিকালের আড্ডায় তার অফিস পরিদর্শন করেছে ঢাকা কুরিয়ার। কমপ্লেক্সের পুরো অফিস সেটিংটি দেশে বিগত ১৬ বছর ধরে জাগোর স্মারক যাত্রার স্মৃতির গলি হিসাবে পুনঃনির্দেশ করে। সংক্ষিপ্ত অফিস পরিদর্শন এবং ঢাকা কুরিয়ারের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারের মধ্যে করভি রাখসান্দ তার প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের অবস্থা সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘জাগো ফাউন্ডেশন ২০১৭ সালে রাজধানীর রায়ের বাজার বস্তিতে যাত্রা শুরু করেছিল। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ইংরেজি শেখানোর। কারণ আমরা ভেবেছিলাম এটি তাদের পরবর্তী কর্মজীবনের ধাপে ভাষার বাধাগুলোকে জয় করতে সাহায্য করবে, তা দেশের ভেতরে হোক বা বাইরে।
আমরা সেই ১৭ জন শিশুর প্রতিক্রিয়া দেখে অবাক হয়েছিলাম, যখন তারা পরবর্তী শ্রেণিতে পদোন্নতির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল। সেসময় আমরা উপলদ্ধি করেছিলাম যে তারা আমাদের উদ্যোগকে একটি স্কুল হিসাবে কল্পনা করেছিল এবং এটি রায়ের বাজার বস্তিতে প্রথম স্কুল শুরু করতে আমাদের উৎসাহিত করেছিল।
আমাদের প্রচেষ্টাগুলো আমাদের বেশ কয়েকটি ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে সমাজের দ্বারা স্বীকৃত হতে শুরু করে। কিন্তু আমরা ঢাকার বাইরেও আমাদের প্রচেষ্টা প্রসারিত করার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছি।
আমরা শ্রেণিকক্ষভিত্তিক এবং দূরবর্তী শিক্ষা উভয়ের পাঠ্যক্রমের একীকরণের মডেল তৈরি করেছি যা অসাধারণ সাফল্য এনেছে।
শিশুদের শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ করে মহামারির কঠিন সময়ে এবং এখন আমরা মূলধারার মানসম্পন্ন শিক্ষার দিকে মনোনিবেশ করছি। যারা ঐতিহ্যগত অধ্যয়ন সম্পূর্ণ করতে অক্ষম তাদের দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা দিয়ে শেখার শূন্যতা পূরণ করছি। বর্তমানে জাগো পাঁচটি ফোকাস ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে। এরমধ্যে- শিক্ষা, যুব, নারী, জলবায়ু পরিবর্তন ও শাসন নিয়ে।
সারা দেশে ৬০০ জনেরও বেশি কর্মচারী এবং ৫০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এটি।
আরও পড়ুন: চরকি অরিজিনাল ‘জাগো বাহে’: ঐতিহাসিক তিন গল্পের অমনিবাস চলচ্চিত্র
নাম নির্বাচন করার পেছনের কারণ:
‘বাংলায়, 'জাগো' নামটি কাউকে ঘুম থেকে জাগ্রত করার জন্য পুনঃনির্দেশ করে। শিক্ষা হলো সমাজের জন্য আলোক রশ্মি, যাতে জেগে ওঠা ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আমরা শিক্ষার সঙ্গে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জাগরণ আহ্বানের সূচনা করাকে আমাদের দায়িত্ব মনে করি। জাগোর সাহসী, বড় অক্ষরের শব্দগুলো প্রত্যেককে ভালোবাসা, সমর্থন ও অবদানের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনে যোগদানের জন্য একটি আমন্ত্রণ হিসেবে পুনঃনির্দেশ করে। প্রাণবন্ত হলুদ রঙটি সাধারণত বন্ধুত্বের রঙ হিসেবে স্বীকৃত হয় এবং আমরা এটিই করি৷ আমরা তাদের নিবেদিত বন্ধু হিসেবে সমাজে তাদের ব্যবধান কমাতে সেতুবন্ধন করি৷’
'বাংলাদেশের জন্য স্বেচ্ছাসেবক' :
রাখসান্দের দূরদর্শী নেতৃত্বে জাগো ফাউন্ডেশন ২০১১ সালে ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ (ভিবিডি) প্রোগ্রামেরও সূচনা করেছিল। ভিবিডি একটি যুব আন্দোলনে পরিণত হয়েছে যেখানে ৫০ হাজার নেতা সক্রিয়ভাবে সামাজিক উন্নতির জন্য কাজ করছে।
রাখসান্দ বলেন, ‘যদিও জাগো ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি ছিল শিশুদের ও শিক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। তবে তরুণদের উৎসাহ দেখে আমাদের দায়িত্ব বেড়ে যায়। আমরা যুব উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের সমাধান করে আমাদের প্রচেষ্টাকে বৈচিত্র্যময় করেছিলাম। অবশেষে ' যারা সহযোগিতা করতে পারে আমাদের কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারে তাদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য বাংলাদেশ' (ভিবিডি) গঠন করি। ভিবিডিতে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের স্থানীয় নেতাদের নির্বাচন করে এবং তৃণমূল পর্যায়ে কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করার জন্য ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে বিকেন্দ্রীকরণ হয়।’
পুরস্কার জয়:
‘আমি দেশের বাইরে যেতে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলাম। সে সময় আমি একটি অজানা নম্বর থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সট পেয়েছি। ওই ব্যক্তি নিজেকে র্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট সুসান আফান হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভিডিও কল করতে চান। প্রাথমিকভাবে আমি ধরে নিয়েছিলাম যে তিনি অন্য কারো সঙ্গে আলোচনা করতে যাচ্ছিলেন। যখন তারা আমাকে জানান, আমি এই বছরের র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। তখন জেনে সত্যিই অবাক হয়েছিলাম। দেখা গেল যে তারা গত পাঁচ বছর ধরে জাগোর কার্যক্রম অনুসরণ করছে এবং এই সব জেনেও আমার কাছে বেশ বিস্ময়কর লাগছিল।
বর্তমান ও ভবিষ্যৎ:
রাখসান্দ বলেন, ‘২০২০ সালে আমরা এনজিও লাইসেন্স পেয়েছি। যা আমাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করতে সক্ষম করে তোলে। বর্তমানে আমরা ইউনিসেফ, ইউএসএআইডি ও এফসিডিও-র মতো সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারি কাজ করি এবং অনেক দাতা তাদের পরিচয় গোপন রাখতে পছন্দ করেন। জাগোতে যে কেউ প্রতি মাসে ২০০০ টাকা দিয়ে একটি শিশুর স্কুলিং স্পনসর করতে পারেন। আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের দৈনন্দিন জীবন ও অর্থনৈতিক অবস্থাকে সহজ করার জন্য একটি বিশেষ বৃত্তি কর্মসূচি চালু করেছি। গত বছর চালু করা হয়েছে। আমরা ১০০ জন শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে পেরেছি এবং ২০২৩ সালের জন্য ১৬০ জন শিক্ষার্থীকে তালিকাভুক্ত করেছি।’
‘প্রশংসা অবশ্যই অনুপ্রেরণাদায়ক কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি এই পুরস্কার আমাদের আরও জবাবদিহির সঙ্গে উন্নতি করতে সাহায্য করবে। আমি সত্যিই নিজেকে সফল বলে মনে করব যখন আমি দেখব, আমাদের কাজ তরুণদের মাঝে পরিবর্তন আনতে অনুপ্রাণিত করে এবং আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের যুবকরা সেই সক্ষম।’
কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ঢাকা কুরিয়ারের সঙ্গে কথোপকথন শেষ করেন করভি রাখসান্দ।
আরও পড়ুন: জাগো ফাউন্ডেশনের আয়োজনে চতুর্থ জাতীয় যুব সম্মেলন সমাপ্ত
ঝিনাইদহবাসী দেখিয়েছে স্থানীয়দের একতাই পারে উন্নত শহর গড়তে
বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মানুষ তাদের শহরটি গড়ে তোলার জন্য ফের একবার একতার শক্তি দেখিয়ে দিয়েছে।
পুরস্কার বিজয়ী স্থপতি দম্পতি খন্দকার হাসিবুল কবির ও সুহেলি ফারজানা ঝিনাইদহের বাসিন্দা। তারা স্থানীয়দের একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
জেলা শহরটির সাবেক ও বর্তমান মেয়রও এই উদ্যোগে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের ধারাবাহিক অংশগ্রহণ ও আর্থিক সহায়তা, নারীদের ব্যাপক সম্পৃক্ততা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং স্থানীয় কর্মীদের সহায়তায় ঝিনাইদহের নবগঙ্গা নদীর গতিপথ পরিষ্কার করার আপাতদৃষ্টিতে সহজ উদ্যোগ; সহজলভ্য উপকরণ ও নির্মাণ কৌশল দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে ও স্বল্পব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এভাবে একটি পরিত্যক্ত অনানুষ্ঠানিক আবর্জনা ফেলার স্থান একটি আকর্ষণীয় ও জনগণের চলাচলযোগ্য বহুমুখী স্থানে রূপান্তরিত হয়েছে; যা এখন ঝিনাইদহের মানুষের কাছে গর্বের বিষয়।
প্রকল্পটি নদী, এর তীর এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকির পরিবেশগত অবক্ষয় কমাতে সক্ষম হয়েছে।
এর পরবর্তী করণীয়গুলো হলো- নদী এলাকা জনসাধারণের ব্যবহারের সুবিধার্থে হাঁটার পথ, বাগান ও সাংস্কৃতিক সুবিধা তৈরি এবং নদীতে জীববৈচিত্র্য বাড়ানোর জন্য পরিবেশগত উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া।
ঝিনাইদহের স্থপতি এই দম্পতির নির্মিত আরবান রিভার স্পেস প্রকল্পটি স্থাপত্যের জন্য ২০২২ সালে আগা খান পুরস্কার লাভ করে।
ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল বলেন, ‘ঝিনাইদহের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আমি আপনাদের সাহায্য করব। নদী যে কোনো শহরের জন্য শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং আমাদের জন্য আশীর্বাদ যে আমাদের শহরে একটি নদী আছে।’
মেয়র জাহেদী জানান, তিনি তার পূর্বসূরি সাইদুল করিম মিন্টুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করে আধুনিক ও সুন্দর ঝিনাইদহের উন্নয়নে কাজ করবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আল্ট্রা হাইডেনসিটি পদ্ধতিতে আম চাষে সফল শামীম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আল্ট্রা হাইডেনসিটি পদ্ধতিতে আম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা ও আম রপ্তানিকারক ইসমাইল খান শামীম।
সনাতন পদ্ধতির চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ফলন হয়েছে তার বাগানে। প্রতিটি গাছে ঝুলছে ফ্রুট ব্যাগিং করা থোকায় থোকায় আম। তার এই সাফল্য ব্যাপক সড়া ফেলেছে এলাকায়।
নতুন এই পদ্ধতিতে আম চাষ হচ্ছে জেনে অনেকেই দেখতে আসছেন তার বাগান। উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এই পদ্ধতিতে আম চাষে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা ও আম রপ্তানিকারক ইসমাইল খান শামীম। ৬ বছর আগে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কয়েমবাটরে গিয়ে আল্ট্রা হাইডেনসিটি পদ্ধতিতে আম চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। সেখান থেকে ফিরে নিজ এলাকার একাডেমি মোড় এলাকায় ৫ বিঘা জমিতে এই নতুন পদ্ধতিতে গড়ে তোলেন কাটিমন জাতের আম বাগান।
প্রচলিত নিয়মে যেখানে এক বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১২টি গাছ লাগানো আছে। সেখানে এই বাগানে সাড়ে ৯ ফুট বাই সাড়ে ৬ ফুট দূরত্বে ২২৪টি গাছ রোপণ করা হয়েছে। সারি সারি ছোট ছোট গাছে শোভা পাচ্ছে ফ্রুট ব্যাগিং করা প্রচুর আম।
আরও পড়ুন: শেষ মৌসুমে ‘গৌড়মতি’ আম চাষে মামা-ভাগ্নের সাফল্য
চুয়াডাঙ্গায় ৭০ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়
দেশব্যাপী ডেঙ্গু প্রকোপ ও গরমের কারণে বেড়ে গেছে ডাবের চাহিদা। এরই সঙ্গে বেড়ে গেছে ডাবের দামও। চুয়াডাঙ্গায় ৭০ টাকার ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এনিয়ে চুয়াডাঙ্গায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে মূল্য তালিকা ঝুলানোর নির্দেশ দিয়েছে। তবে দোকানিরা মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখলেও ডাবের দাম কমেনি বলে দাবি ক্রেতাদের।
চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বর (চৌরাস্তা) মোড়, নিচের বাজার, রেল বাজার, পুরাতন জেলখানা মোড়, সদর হাসপাতাল রোডের উপশম মোড়, কবরী রোডের কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মোড়, কেদারগঞ্জ নতুন বাজার মোড় ও একাডেমি মোড়সহ শহরের যে কয়টি স্পটে ডাব বিক্রি হয় প্রত্যেকটি স্পটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি ডাবের খুচরা মূল্য আকার ভেদে ৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রকারভেদে এই ডাবের দাম বর্তমান বাজারে ৭০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা।
ডাব কিনতে আসা আলমগীর কবির শিপলু বলেন, গত সপ্তাহেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৭৫ টাকায়। এটা এখন দেখি ১০০ টাকা হয়ে গেছে। বড়টা তো ১৩০ টাকা। দাম এত বেড়েছে যে কিনতেই ইচ্ছে করছে না। আবার যে গরম ডাব না খাইলেও সমস্যা।
ডাব কিনতে আসা দেবাশীষ বিশ্বাস নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সিন্ডিকেটের কারণেই ডাব দাম বাড়ছে। বাজারের প্রতিটি জিনিসের দাম যেমন বেশি, সেই সঙ্গে ডাবের দামও বেশি। ডাব কিনে খাওয়ার উপায় নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদরের সরিষডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট বলেন, ‘বর্ষাকালেও গরম বেড়েছে বলে অনেক ব্যবসায়ী ডাবের দাম বাড়িয়েছে। এ গরমে ডাব খাওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে। এটা বুঝেই ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষের সুযোগ নিচ্ছে।’
বিভিন্ন উপজেলার খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ছোট-বড় ডাব খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ৪০-৫৫ টাকায় বিক্রি করতেন। এখন সেটা বেড়ে দাম ৮০-১০০ টাকায় ঠেকেছে। যেমন বড় ডাব ১০০-১১০ টাকা, মাঝারি ৯০-১০০টাকা ও ছোট ডাব ৮০-৮৫ টাকায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের কিনতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যশোরে ৪৩২৩ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ
দেশের প্রথম বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার স্থাপনের উদ্যোগ
⏺ পাওয়ার সেল বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ করেছে
⏺ এটি বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে
⏺ এটি বিদেশি পরীক্ষাগারের উপর নির্ভরতা কমাবে
সক্রিয় পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় বিশ্বমানের পরীক্ষা, পরিদর্শন ও সার্টিফিকেশন পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে প্রথম বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার স্থাপনের পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও তৃতীয় পক্ষের পরীক্ষা ও সার্টিফিকেশনের জন্য বাংলাদেশে কোনো স্বীকৃত বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার (লো, মিডিয়াম বা হাই ভোল্টেজ) নেই।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগের কারিগরি শাখা পাওয়ার সেলের পক্ষ থেকে নিযুক্ত একজন ইতালীয় পরামর্শক ইতোমধ্যে পরীক্ষাগারের সম্ভাব্যতা, প্রযুক্তিগত ও আর্থিক দিকগুলোর বিষয়ে খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘যদি কনসালট্যান্টের রিপোর্ট নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হিসেবে গ্রহণ করা হয়, আমরা আশা করি তবে বৈদ্যুতিক পরীক্ষার গবেষণাগার স্থাপনের বিষয়ে আমরা বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারব।’
তিনি বলেন, এই গবেষণাগার শুধু দেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কেনা সরঞ্জামের মান ও গুণমান নিশ্চিত করবে না, এটি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হতে লাগতে পারে আরও এক বছর
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) গবেষণাগার থেকে সীমিত সেবা পাচ্ছি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরদাতার কাছ থেকে পরীক্ষার লিখিত রিপোর্ট পেতে আমাদের হাজার হাজার ডলার খরচ করতে হয়, যার ফলে একটি প্রকল্পের সামগ্রিক ব্যয় বেড়ে যায়।’
এ সংক্রান্ত একটি সরকারি নথি থেকে জানা যায়, সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে সবার কাছে মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গত এক দশকে বিদ্যুৎ খাতে প্রশংসনীয় অর্জন হয়েছে।
২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে।
ভিশন ২০৪১ অর্জনের জন্য, ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের বিশাল সম্প্রসারণসহ বিপুল সংখ্যক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।
বিদ্যুৎ খাতের প্রবৃদ্ধির ফলে বেসরকারি খাতের অনেক কোম্পানি বাংলাদেশে ট্রান্সফরমার, ব্রেকার, সিটি/পিটি ও সুইচগিয়ার তৈরির জন্য উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে উৎসাহিত হয়েছে।
বিদ্যুৎ খাতের প্রবৃদ্ধির জন্য ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন ইউটিলিটি প্রয়োজন। যাতে সংশ্লিষ্ট সুইচগিয়ার, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম ও লাইন আইটেমসহ শত শত এবং হাজার হাজার পাওয়ার ও ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার সংগ্রহ করা হয়।
স্বীকৃত বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগারের অনুপস্থিতিতে বৈদ্যুতিক ইউটিলিটি ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে বিদেশি বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগারের প্রশংসাপত্রের উপর নির্ভর করতে হয়, যার জন্য তাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়।
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত
বিদেশি পরীক্ষাগারের উপর নির্ভরতা কমাতে তাই দেশে একটি স্বীকৃত উচ্চ ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক পরীক্ষাগার প্রয়োজন।
অফিসিয়াল সূত্র জানায়, পাওয়ার সেল এখন বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) অর্থায়নে তার ইতালীয় পরামর্শকের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।
পরামর্শদাতার কাজের মধ্যে রয়েছে- একটি বিশ্বমানের বৈদ্যুতিক পণ্য পরীক্ষার গবেষণাগার স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা। এ ছাড়া একটি স্বাধীন মিডিয়াম-ভোল্টেজ কর্তৃপক্ষ এবং প্রস্তাবিত লো-ভোল্টেজ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষার জন্য প্রস্তাবিত গবেষণাগার হিসেবে হাই-ভোল্টেজের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশংসাপত্র প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নকশা করা।
এটি পণ্য, কাজ ও পরিষেবার মূল্য অনুমান, যন্ত্রপাতি ও পরীক্ষা এবং পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নসহ একটি বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই করবে।
এটি ল্যাবরেটরি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রশাসনিক ও আইনি নথিও প্রস্তুত করবে এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অন্যান্য উপযোগীদের দ্বারা বিদ্যমান বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পরীক্ষার ল্যাবরেটরি সুবিধাগুলোও পর্যালোচনা করবে।
এ ছাড়া প্রযুক্তিগত, আর্থিক, ব্যবস্থাপনা ও মানবসম্পদ প্রভৃতি বিষয়গুলো বিদ্যমান ল্যাবরেটরি সুবিধাগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে আরও ২০০ মেগাওয়াট ডিজেলচালিত বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করবে সরকার
বাংলাদেশের ‘বিস্ময়কর’ প্রবৃদ্ধি ও ‘অপ্রকাশিত’ উন্নয়ন সফলতার গল্প রয়েছে: ব্রিটিশ প্রধান অর্থনীতিবিদ
পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন কার্যালয়ের (এফসিডিও) অর্থনীতি ও মূল্যায়ন অধিদপ্তরের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও পরিচালক অধ্যাপক আদনান খান বলেছেন, তারা বাংলাদেশকে 'বিস্ময়কর' প্রবৃদ্ধির 'অপ্রকাশিত' উন্নয়নের সফলতার গল্প বলে মনে করেন, যা সারা বিশ্বে প্রায়ই বলা হয় না।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় অপ্রকাশিত উন্নয়নের সফলতার গল্প বলে মনে করেন। এটি একটি অলৌকিক গল্প। তবে এটি এমন একটি গল্প যা প্রায়শই সারা বিশ্বে বলা হয় না। আমি আমার কর্মজীবনে যেখানেই ছিলাম, সেখানেই আমি বিস্ময়কর প্রবৃদ্ধির গল্প বলেছি।’
বুধবার(১৩ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মজীবনে উন্নয়ন অর্থনীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি, উদ্যোক্তা ও সরকারি খাতের সংস্কারের বোঝার দিকে মনোনিবেশ করেছেন অধ্যাপক আদনান। তিনি বলেছেন, তারা বাংলাদেশের অর্জনগুলোকে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি দুর্দান্ত উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশ বিস্ময়কর গল্পে পরিণত হয়েছে। এই ঘটনা কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোতেও প্রতিফলিত হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি। মানব উন্নয়ন ও শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য মাত্রায় সহায়তা করে।’
প্রধান অর্থনীতিবিদ বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া ও অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ভালো করেছে। যেমন- শিক্ষা, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধা।
আরও পড়ুন: দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিসহ বাংলাদেশের উত্তরণ আনন্দের উপলক্ষ হবে: ওইসিডি
হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের সাবেক শিক্ষক এবং স্কুল অব পাবলিক পলিসির একাডেমিক সাবেক ডিরেক্টর অধ্যাপক আদনান বলেছেন, বড় সাফল্য ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য নিজস্ব চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে।
তিনি বলেন,‘এটি কেবল চ্যালেঞ্জ নয়, বিশাল সুযোগ নিয়ে আসে। তাই, আরও অগ্রগতির জন্য, নতুন উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।’
আরও অগ্রগতির জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার ওপর জোর দেন অধ্যাপক আদনান।
তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। শুধু শিক্ষিত জনগণ নয়, ভবিষ্যতের অগ্রগতির জন্য একটি লক্ষ্যযুক্ত সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি চিহ্নিত করা প্রয়োজন। কারা দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে এবং কাদের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন তা দক্ষতার সঙ্গে চিহ্নিত করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘দক্ষতার সঙ্গে এ কাজ সম্পন্ন করা চ্যালেঞ্জের পরবর্তী ধাপ। একইভাবে, তৈরি পোশাকের গল্পটি আমরা সবাই জানি। মূল্য শৃঙ্খল বৃদ্ধির সঙ্গে আরও অগ্রগতি করার সম্ভাবনা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, বাংলাদেশের যদি মালয়েশিয়া বা ভিয়েতনামে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আরও কিছু করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সামরিক খাতের আধুনিকীকরণসহ উভয় দেশ একসঙ্গে অনেককিছু করতে পারে: মার্কিন কর্মকর্তা মিরা রেসনিক
অধ্যাপক আদনান বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবিলা করা প্রয়োজন। ‘সেই অর্থ সঠিক প্রকল্পে ব্যয় করার বিষয়েও চ্যালেঞ্জ থাকে, যাকে আমরা পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট বলি।’
অধ্যাপক আদনান বলেন, বিশ্বব্যাপী উন্নয়নশীল দেশগুলোর গড় কর ও জিডিপির অনুপাত জিডিপির ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।
উন্নত দেশগুলোর গড় কর ও জিডিপি অনুপাত জিডিপির ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ।
বাংলাদেশে কর ও জিডিপির অনুপাত প্রায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, যা মধ্যম আয়ের দেশগুলোর গড় ১০ দশমিক ৭ শতাংশের কম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেহেতু উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হতে যাচ্ছে, তাই উচ্চমানের সরকারি সেবা প্রদানের জন্য উচ্চ পর্যায়ের রাজস্বের প্রয়োজন হবে।
ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ বলেন, জনসেবা প্রদানে রাষ্ট্রের কার্যকারিতার মধ্যে কর ব্যবস্থার উন্নতির চাবিকাঠি রয়েছে।
তিনি বলেছেন, যে দেশগুলো অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহে ভালো করে, তাদের রাজস্ব ঘাটতি বা বাজেট ঘাটতির মুখোমুখি হতে হয় না। তাদের বাইরের সহায়তার উপরও নির্ভর করতে হয় না।
অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ‘সুতরাং এটি সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যের জন্য ভালো। উচ্চ মানের সরকারি বিনিয়োগ, রাস্তা, সেতু, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষার জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ।’
বৈশ্বিক সংকটে বাংলাদেশ আক্রান্ত হলেও দেশটির এখনও বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক আদনান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়: মাইকেল কুগেলম্যান
তিনি বলেন, ‘সুতরাং বাইরের পরিস্থিতি আরও কঠিন। যাই হোক, আমার মতে, সুযোগগুলো ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি।’
অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকার চ্যালেঞ্জের প্রকৃতি উপলব্ধি করে এবং এটি খুবই উন্মুক্ত। ‘তারা জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে অন্যান্য দেশ থেকেও শিখতে আগ্রহী।’
উন্নয়ন সহযোগীদের ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির চাহিদাও পরিবর্তিত হচ্ছে, এজন্য জোর দেওয়া হচ্ছে।
অধ্যাপক আদনান বলেন, ‘যে দেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করছে, সে দেশ ভালো করেছে। এর জন্য প্রত্যক্ষ আর্থিক সহায়তা কম প্রয়োজন এবং নীতিগত ও প্রযুক্তিগত সহায়তার বেশি প্রয়োজন। কারণ সঠিক নীতি, সঠিক প্রতিষ্ঠান থাকলে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হবে, যা প্রচুর আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারে।’
তিনি চলতি সপ্তাহে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সঙ্গে পঞ্চম কৌশলগত সংলাপে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি দলেও ছিলেন।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়ে একটি নতুন সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার কথা ভাবছে।
তিনি অবশ্য এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড ভাঙা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এবং ২০২২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে সর্বোচ্চ ৫৬১ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগে (এফডিআই) সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এ ছাড়া ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে নতুন প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য।
আরও পড়ুন: যারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের ‘উপযোগী নয়’ বলে দাবি করছে, তারা কখনোই রাখাইন যায়নি: চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও