বিশেষ সংবাদ
পদ্মা সেতু: শরীয়তপুরে পরিবহন খাতে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রত্যাশা
পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত দুটি জেলার অন্যতম শরীয়তপুরের পরিবহন মালিকরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, ২৫ জুন বহুল প্রতীক্ষিত সেতুটি উদ্বোধনের পর জেলার পরিবহন খাতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।
সেতুটি উদ্বোধনের পর শরীয়তপুর ও রাজধানী ঢাকার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালু হবে। যানবাহন চলাচলের প্রথম দিন থেকেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে নতুন বাস চালু করতে জেলার পরিবহন মালিকরা ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।
সম্প্রতি শরীয়তপুর পৌরসভা বাস টার্মিনালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাস টার্মিনালের দুই পাশে দুটি কারখানায় চলছে নতুন বাস নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। তারা ভলভো, অশোক লিল্যান্ড, টাটা কোম্পানির বাসের চেসিস কিনে বডি তৈরির কাজ করছেন। শরীয়তপুর ছাড়াও ঢাকা ও সাভারে বাসের বডি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
তবে শরীয়তপুরে তৈরিকৃত বাসগুলো কতটা মানসম্মত হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান স্থানীয় যাত্রীরা। তারা জানান, শরীয়তপুরের আঞ্চলিক রুটে যাতায়াতকৃত বাসগুলোর মান একদম নিম্ন মানের। এর মধ্যে অনেকগুলো একদম চলাচলের অনুপোযোগী। তাই ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে মানসম্মত বাস চালুর দাবি তাদের।
জেলা বাস মালিক সমিতির সূত্রে জানা যায়, কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি শরীয়তপুর থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ সরাসরি বাস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস, শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলস, শরীয়তপুর পরিবহন ও গ্লোরি পরিবহন। প্রতিটি কোম্পানি নতুন বাস আনার পরিকল্পনা করছে। তাদের মধ্যে পদ্মা ট্রাভেলস ও শরীয়তপুর পরিবহনের কয়েকটি বাস এরই মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত চলাচল করছে।
পড়ুন: পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
কোম্পানিগুলো প্রাথমিকভাবে ৩০০টি বাস প্রস্তুত করছে। যার একেকটিতে খরচ পড়ছে ৮০ লাখ থেকে ৯০ লাখ টাকা। এতে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন পরিবহন মালিকরা।
বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বিলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন থেকেই আমরা ঢাকার সঙ্গে সরাসরি বাস চালু হওয়ার আশা করছি। কয়েকটি পরিবহন ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে যাদের রুট পারমিট আছে, শুধুমাত্র তারাই এই রুটে বাস নামাতে পারবেন।’
শরীয়তপুর পদ্মা ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান ও নড়িয়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত কয়েকটি বাস পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছি। পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের শুরুর দিন থেকেই শরীয়তপুর থেকে ঢাকাতে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করার আশা করছি।’
শরীয়তপুর পরিবহনের পরিচালক এরশাদুজ্জামান বলেন, ‘গত বছরের শুরু থেকেই আমরা মাওয়া-সায়দাবাদ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে বাস চালু করেছি। পদ্মা সেতু চালু হলে আমরা ঢাকা-শরীয়তপুর রুটে সরাসরি বাস চালু করবো। আমাদের এসি ও নন-এসি দু’ধরনের বাস চলবে। আমরা যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকবো।’
শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের পরিচালক খালেক পালোয়ান বলেন, ‘টানা দুই বছর করোনার ধাক্কা সামলাতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা শরীয়তপুরের পরিবহন মালিকদের। তবে সেতু চালু হলে ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে এই আশায় রয়েছি। তাই অনেক কষ্ট করে নতুন করে বিনিয়োগ করেছি। আশা করছি পদ্মা সেতুর সুফল পাবো আমরা’
শরীয়তপুর জেলা শহরের বাসিন্দা আব্বাস কোতোয়াল বলেন, ‘এতদিন শরীয়তপুর থেকে ঢাকাতে সরাসরি কোন বাস ছিল না। নৌপথে ঢাকা যাতায়াতে দুর্ভোগ ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় শরীয়তপুর থেকে ঢাকাতে সরাসরি বাস চলাচল করবে। এতে আমাদের দুর্ভোগ কমবে।’
বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পড়ুন: পদ্মা সেতু যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটাবে: কামাল
পূজাও নেই, জন্মদিনের আয়োজনও নেই
পূজাও নেই, জন্মদিনের আয়োজনও নেই
নজমুল হুদা শাহীন
আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে বড় বিজ্ঞানী হতো। আমার মেয়ের মতো আর কারও যেন এমন মর্মান্তিক মৃত্যু না হয়। সম্ভামনাময়ী মেধার যেন অকালে ঝরে যেতে না হয়। ছয় বছর বয়সে সে তার মাকে হারিয়েছে। তখন ওর মায়ের বয়স ছিল ২৯ বছর। প্রায় একই বয়সে মেয়েও মারা গেলো। ১১ জুন তার জন্মদিন। উদযাপনের জন্য আয়োজন শুরু করা হয়েছিল। তা আর করা হলো না।
এই কথাগুলো বলছিলেন এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকারের বাবা অতুল সরকার।
ইউএনবিকে মুঠোফোনে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পূজা ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
তিনি বলেন, এ কারণে অনেক আশা ছিল আমাদের পুরো পরিবারের। সে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যাবে। ওই সময় আমাদের কাছে বেড়াতে আসবে। অফিসে ব্যস্ততা, তাই জামাই ষষ্টির দাওয়াতে আসতে পারেনি তারা।
রুটিন মতো গত ৫ জুন অফিসের বাসে করে পূজা সরকার অন্যদের সঙ্গে ঢাকার হাটখোলা রোডের বাসা থেকে সাভারে কর্মস্থল আনবিক শক্তি কমিশনে যাচ্ছিলেন। বাসটি বলিয়ারপুর এলাকায় গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা সেইফ লাইন পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজন অতিক্রম করে আনবিক শক্তি কমিশনের বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পূজা সরকার, আরও দুই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী- এই চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাস চালক রাজীব ওইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের বহনকারী বাসটিকে ধাক্কা দেয়া সেইফ লাইন পরিবহনের চালক মারুফ হোসেন মুন্না মারা যান দুইদিন পর ৭ জুন। এছাড়া ৮ জুন রাতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাদের প্রতিষ্ঠানের আরেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফারহানা ইসলাম। ফারহানা ও পূজা সরকার দুইজন সহপাঠি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্রী ছিলেন।
অতুল সরকার জানান, স্ত্রী আলপনা সরকার দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর মেয়ে পূজাকে মায়ের স্নেহ দিয়ে বড় করেন। তিনি বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়ত। ভাল রেজাল্ট করেছিল। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্সে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে কৃতিত্ব অর্জন করে পূজা। ডেফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আটমাস শিক্ষকতা করে সে। এরই মধ্যে আনবিক শক্তি কমিশনে চাকরি হয় তার।
জনতা ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে থাকা (পিআরএল) অতুল সরকার বলেন, আমার মেয়ে বেঁচে থাকলে বড় বিজ্ঞানী হতো। তার অনেক আশা ছিল।
তিনি আরও বলেন, যে যন্ত্র দানব আমার মেয়েকে হত্যা করলো তার কোন ফিটনেস ছিল না। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বাসটির রুট পারমিট ছিল না। চালক কিভাবে এ গাড়িটি নিয়ে সড়কে বের হলো। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশে কি আইন কানুন নেই। সড়কে আর কত প্রাণ ঝরলে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ হবে ?
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দেশে কোন প্রতিবাদ হলো না। কেউ তেমন কথা বললেন না। যা মিডিয়াতেই এসেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে। কারও সন্তানের যেন এমন মৃত্যু আর না হয়।
আরও পড়ুন: গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
মাচায় ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন!
গাইবান্ধায় পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণেই ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দরও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে পটল চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক।
জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, সাঘাটাসহ সাত উপজেলার অনেক জমিতেই এ বছর পটল চাষ হয়েছে। কার্তিক মাসে জমিতে মাচা করে লাগানো পটলের সারিসারি খেত দেখলে কৃষকসহ সকলের মন ভরে ওঠে। মাচায় মাচায় ঝুলছে কৃষকের স্বপ্ন।
গাইবান্ধা ঘাগোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু বলেন, রাস্তার দু’পাশে যতো দূর চোখ যায় পটলসহ সাথী ফসলের খেত । শুধু পটল নয় একই মাচায় ঝুলছে চিচিংঙ্গা, ধুন্দল, করলাসহ নানা জাতের সাথী ফসল। গাইবান্ধার যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকা গিদারী , ঘাগোয়া , মালিবাড়ি, লক্ষ্মীপুর খোলাহাটি , রুপারবাজার জুড়ে, সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট , রসুলপুর , জামালপুর। এসব এলাকায় হাট বসে কয়েক জায়গায়। হাট থেকে পাইকাররা ট্রাক ভর্তি করে কিনে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
পটল চাষী আলতাফ হোসেন জানান, মাচায় যে পটল হয়েছে। ৪৩ হাজার টাকার পটল বিক্রি করেছি তারপরেও আরও অন্তত ৬০ হাজার টাকার পটল বিক্রি করতে পারবো । তাতে খরচ বাদ দিয়ে আমার লাভ হবে অন্তত ৮৫ হাজার টাকা ।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজা ই মাহমুদ জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ, কোচাশহর, গুমানীগঞ্জ , তালুক কানুপুর, হরিরামপুর, দরবস্ত , শালামারা ইউনিয়নের জমিতে জমিতে সবুজের সমারোহ। তিনি বলেন, উপজেলা সদরে হাট বসে পটলের। এই পটল কেনার জন্য দূরদুরান্ত থেকে পাইকাররা আসেন। তারপর বস্তা ভরে ট্রাকে করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি হয়।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চৈত্র, বৈশাখ মাস থেকে পটল উঠানো শুরু হয়। অনুকূল আবহওয়ায় এবছর পটলের ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি বাজার দর ভালো পাওয়ায় লাভবান হয়েছেন চাষীরা। প্রতি কেজি খুচরা বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
আরও পড়ুন: চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন
পটল চাষী মোহাম্মেল হোসেন জানান, তিনি এবার তার ৫ বিঘা জমিতে পটল চাষ করেছেন। পটল চাষে ঝামেলামুক্ত এবং অল্প খরচেই হয় বলে এ আবাদ বেশী লাভজনক। পটল মানেই নগদ টাকার আবাদ। লাভের অংশ বেশি হওয়ায় প্রতিবছরই কৃষকদের মাঝে পটল চাষের আগ্রহ বাড়ছে। আতিমাত্রায় বৃষ্টি বা বন্যা না হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে পটল আবাদ হয়েছে। এক বিঘার জমি থেকে সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত পটলের উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়াও পটলের মধ্য আদা, কাঁচা মরিচ, হলুদ, আদা, মুখী কচু আবাদ করছেন। বিক্রি করেও নিজের চলে যায়।
ব্যাপারী আহম্মেদ আলী এসেছেন ঢাকা থেকে পটল কিনতে। হাটবারে পটল কিনে রাতেই নিয়ে যাবেন। তিনি বলেন ,উৎপাদনের শুরুতেই বাজারে প্রতিমণ পটল এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখনও তা এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা কম লাভে আড়তে বিক্রি করি। কাঁচামালের ব্যবসা ভালো মন্দ দুই আছে। সে কারণে প্রতিদিন কিনি প্রতিদিন বিক্রি করি।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বেলাল হোসেন জানান, এবার জেলায় ৪শ’ ৮১ হেক্টর পটলের চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন ২০ মেট্রিক টন। সরকার এ সবজির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারলে এ চাষ আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন চাষীরা।
আরও পড়ুন: হালদায় আশানুরূপ মাছের ডিম মিলছে না
দু’বছর ধরে বন্ধ জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের ইমিগ্রেশন, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দুই বছর আগে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ সারা দেশের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টগুলো সরকার বন্ধ করে দেয়। সরকারি নির্দেশনা পেয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশনের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও পুরোপুরিভাবে যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দেয়া হয়।বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় দেশের সব সীমান্ত পথ খুলে দেয়া হলেও জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার এখনও বন্ধ রয়েছে। এ চেকপোস্ট দিয়ে ভারত যাওয়ার উদ্দেশে প্রতিদিন ভিসা নিয়ে অনেক যাত্রী জকিগঞ্জ স্টেশনে আসে। কিন্তু যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। প্রস্তুতি নিয়ে স্টেশনে এসেও ভারতে যেতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন যাত্রীরা। জরুরি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ঘুরে অন্য ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাচ্ছেন। এ নিয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ঘুরতে ইচ্ছুক ভ্রমণপিপাসুরা।ব্রিটিশ আমল থেকে চালু থাকা এ স্টেশন দিয়ে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে। তবে আমদানি-রপ্তানি অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতি: মঙ্গলবার বেনাপোলসহ ১১টি শুল্ক স্টেশনে পণ্য খালাস বন্ধএ চেকপোস্ট দিয়ে চিকিৎসা, পড়াশোনা, ভ্রমণ ও ব্যবসার জন্য পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ভারত-বাংলাদেশে চলাচল করেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার ফলে বর্তমানে দেশের সব সীমান্ত পথ খুলে দেয়া হলেও শুধু জকিগঞ্জ স্থলবন্দরটি বন্ধ রয়েছে। কী কারণে বন্ধ রয়েছে স্টেশনে কর্তব্যরতদের কাছ থেকেও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সিলেট ও ভারতের আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, ত্রিপুরাসহ কয়েকটি রাজ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ভারতে চিকিৎসা নেয়া অসুস্থ লোকজনও এ স্টেশন দিয়ে ভারতে যেতে না পেরে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরাও ভারত থেকে মালামাল ক্রয় করে লোকসান গুণছেন।স্টেশনটির কয়েক গজের মধ্যেই রয়েছে জকিগঞ্জ থানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক। অপরদিকে, সীমান্তরেখা কুশিয়ারা নদীর ওপারেই রয়েছে ভারতের জেলা শহর করিমগঞ্জ।
জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, করিমগঞ্জেও নিরাপত্তাজনিত এবং যোগাযোগের সকল সুযোগ-সুবিধা হাতের নাগালেই রয়েছে। এ জন্যই ব্রিটিশ আমল থেকে জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে আসছে।জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনে যাত্রী পারাপার কার্যক্রম যথারীতি চালুর দাবিতে সম্প্রতি সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আকরাম আলী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন: পাসপোর্ট প্রার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের আহ্বান সাংবাদিকদেরআকরাম আলী এ ব্যাপারে বলেন, এ স্টেশনের কার্যক্রম ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর চালু হয়। তখন থেকে শুল্ক স্টেশনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে আসছে। কিন্তু যাত্রীরা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এ চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যেতে পারছেন না।ভারতে চিকিৎসা নেয়া একজন পাসপোর্টধারী যাত্রী বলেন, অসুস্থতার কারণে ভারতে গিয়ে একজন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন। কিন্তু জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে যেতে পারছি না। অন্য এলাকা দিয়ে ঘুরে যেতে আমার খুব সমস্যা হবে।ভারতে পড়াশোনা করার জন্য যেতে চান এক শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গেলে সময় এবং খরচ কম হয়। সেই সঙ্গে বিড়ম্বনায়ও পড়তে হয় না। কিন্তু জকিগঞ্জ চেকপোস্ট দিয়ে গত দুই বছর ধরে ভারতে যেতে পারছি না। ভারতে যেতে হলে অন্য এলাকা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়। এতে সময় যেমন বেশি লাগে, অন্যদিকে টাকাও বেশি খরচ হয় এবং বিপাকেও পড়তে হয়।কয়েকজন আমদানিকারকও এই স্থলবন্দর খুলে দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তারা বলেন, জকিগঞ্জ স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি করেন। এসব পণ্য ভারতে গিয়ে দেখে-শুনে কিনতে হয়। সে ক্ষেত্রে ভারতে যাওয়া খুবই জরুরি। কিন্তু ভারতে যেতে হলে অন্য চেকপোস্ট দিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বেশি লাগে। জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন দিয়ে আগের মতো যেতে পারলে সময় কম লাগত এবং খরচ বাঁচত। ব্যবসায় লোকসান গুণতে হতো না।
জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমিনুল হক বলেন, জকিগঞ্জ স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কী কারণে যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে তা আমাদের জানা নেই।তবে আরেকটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যাত্রী গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করায় কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন: যেভাবে পাসপোর্টের ভুল তথ্য সংশোধন করবেন
গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে কদর বেড়েছে তালশাঁসের
গ্রীষ্মে ফলে ভরা মৌসুমে খেতে সুস্বাদু তালশাঁসেরও চাহিদা রয়েছে। তীব্র গরমে তালশাঁস প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। তবে দেশের অনেক জেলায় তালের চাহিদা বেশি না থাকায় তাল ছোট থাকতেই শাঁস বিক্রির জন্য এগুলো ঠাকুরগাঁওসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে নিয়ে আসে ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, তালশাঁসের চাহিদা প্রচুর থাকায় প্রত্যেক ব্যবসায়ী তা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হন। এ বছরও শহরের আমতলীর মোড়ে তালশাঁস বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি ও আমার খালাতো ভাই নাদিম বগুড়া আদমদিঘি থেকে এসেছি। সেখানে আমরা প্রতি বছর তালের বাগান কিনে থাকি। বাগানে প্রায় ১৩০-১৫০টি তালগাছ থাকে। এক থেকে দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাগান কিনে তা থেকে তাল ছোট থাকতেই আমরা দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা অনুসারে বিক্রি করে থাকি। এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি। প্রতি পিস বড় তাল ৩০ টাকা ও ছোট তাল ২০ টাকা বিক্রি করছি। বিক্রিও হচ্ছে ভালো।
শহরের হাজীপাড়া মহল্লার গৃহিণী ক্রেতা শাহনাজ পারভীন বলেন, প্রতি বছর এ সময়ে এটা পাওয়া যায়। খেতে অনেক সুস্বাদু ও ভালো লাগে। প্রতি পিস তাল থেকে দুই থেকে তিনটি শাঁস পাওয়া যায়। প্রতি পিস বড় তাল ৩০ টাকা ও ছোটগুলো ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ বছর দামটা একটু বেশি।
আরও পড়ুন: বাড়িরপাশে মরিচের আড়ৎ, ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক
পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার ছাত্রী সুবাহ তাহসিন বলেন, তালশাঁস আমাদের পরিবারের সকলে পছন্দ করে। প্রত্যেক আটি গত বছর ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দামটা আরেকটু কম হলে আরও বেশি পরিমাণে কেনা যেত।
তালশাঁস বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী নাদিম বলেন,বেশ কয়েকদিন হলো বগুড়া থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে এসেছি। বগুড়ার আদমদিঘি এলাকায় বেশ কয়েকটি তাল বাগান থেকে তাল কিনে এখানে বিক্রি করছি। পর্যাপ্ত বিক্রি হচ্ছে। প্রচুর ক্রেতা সমাগমও হচ্ছে। প্রতিদিন তাল বিক্রি করে সব খরচ বাদ দিয়ে ৭০০ টাকা লাভ হয়।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল তালশাঁসের উপকারের বিষয়ে বলেন, এটি অনেক ভালো একটি জনপ্রিয় ফল। তালশাঁসে এমন কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। তালশাঁস পানিশুন্যতা দূর করতে সহায়তা হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করে, হাড়ের গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
এছাড়াও তালশাঁসে ভিটিামিন এ, সি ও বি কমপ্লেক্স রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করতে সহায়তা করে। এতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভারের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। সর্বোপরি ত্বক সুন্দর, উজ্জ্বল ও দীপ্তময় করে তুলতে নিয়ম করে তালের শাঁস খাওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।
সবুজ জ্বালানির পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্যর্থ বাংলাদেশ: সরকারি নথি
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন খরচ, বিশেষ করে সৌর বিদ্যুতের, সাম্প্রতিক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে কমলেও দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়নি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) নথিতে এই হতাশাজনক তথ্য পাওয়া গেছে।
নথিপত্র অনুসারে,নবায়নযোগ্য জ্বালানি এখনও দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক শতাংশের নিচে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) গণশুনানির সময় দেয়া নথি থেকে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সবুজ জ্বালানি: মিনি সৌর গ্রিডগুলো বাঁচাতে চায় সরকার
সরকারি নথি থেকে আরও দেখা যায়, ক্রমবর্ধমান বার্ষিক আর্থিক ক্ষতি পূরণে সরকার জীবাশ্ম জ্বালানির প্রসারে মনোযোগ অব্যাহত রেখেছে বিশেষ করে ভাড়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
এদিকে বিপিডিবি ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম বর্তমান ৫ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে আরও ৬৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। আর তা না হলে সংস্থাটি ৩০ হাজার ২৫১ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানায়।
বিইআরসি’র কারিগরি মূল্যায়ন দল ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। তবে বিইআরসি এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিপিডিবি’র নথিতে দেখা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে (মার্চ পর্যন্ত) ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সরকারকে প্রতি ইউনিটে গড়ে ৪৩ দশমিক ৪২ টাকা খরচ করতে হয়েছে। তারপর ফার্নেস অয়েল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১৫ দশমিক ৫১ টাকা, কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২ দশমিক ৭৭ টাকা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে (সোলার) ১২ দশমিক ৬৪ টাকা, গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩ দশমিক ৪৬ টাকা এবং জলবিদ্যুৎ থেকে ২ দশমিক ৬৭ টাকা এবং আমদানি করা বিদ্যুতের জন্য ৫ দশমিক ৯৫ টাকা।
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাত উন্নয়নে মার্কিন বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে: নসরুল হামিদ
সর্বোচ্চ ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফার্নেস ওয়েল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ কয়লা চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, এক দশমিক ০৩ শতাংশ জলবিদ্যুৎ থেকে, ৯ দশমিক ২০ শতাংশ আমদানি এবং মাত্র শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে উৎপাদন করা হয়েছে।
খরচ উল্লেখযোগ্য হ্রাসের কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এত বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সবুজ জ্বালানির দিকে মনোযোগ দেয়া হয়নি।
বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দাবি করেছে, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ ৮৯ শতাংশ কমেছে।
টিআইবি বলছে, নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম দেশ যেখানে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বর্তমান উৎপাদন মাত্র ৭৭৯ মেগাওয়াট।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে ধীরগতির বিষয়ে বাংলাদেশ সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসআরইএ) জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি মুনাওয়ার মঈন বলেন, ‘বাজেটের সঙ্গে সঠিক নীতি সহায়তার অভাব এই খাতের উন্নয়নে প্রধান সমস্যা।’
আরও পড়ুন: প্রযুক্তি ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস ডেনমার্কের
এই মুহূর্তে একমাত্র সম্ভাব্য স্থাপনা হলো নেট মিটারসহ ‘রুফটপ সোলার’। তবে আর্থিক প্রণোদনাসহ উপযুক্ত অর্থায়ন বিকল্প শিল্প মালিকদের দ্রুত স্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্থাপনা বাড়ানোর জন্য বাজেট বরাদ্দসহ একটি লক্ষ্যভিত্তিক নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।’
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার নেট মিটারিং ও অন্যান্য নীতি নির্দেশিকাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।’
সম্প্রতি একটি ওয়েবিনারে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন,সবুজ জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ভূমি স্বল্পতার প্রধান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী প্রযুক্তির পাশাপাশি বিদেশি আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম আরও বাড়লে জনগণের জন্য বড় চাপ হবে: জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা
নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
চাকরির বাজারে বিক্রি না হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই বেছে নিচ্ছেন শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা। করোনার প্রায় দুই বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় অবসর সময়কে কাজে লাগিয়েছেন এই উঠতি উদ্যোক্তারা। পর্যাপ্ত সময়, স্বল্প মূলধন, অনলাইন নির্ভর বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করেই তরুণ উদ্যোক্তারা গ্রাহকদের সেবার মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
এদের মধ্যে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের একটি অংশ রয়েছে। উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে তারা নিজ নিজ কর্মস্থানে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
চাঁদপুরের ছেলে মো. রাকিবুজ্জামান পড়াশোনা করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর দেড় মাসের মাথায় করোনায় বন্ধ হয়ে যায় তার নিজ বিদ্যাপীঠ।পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার পর বছরের প্রথম দিন শাবিপ্রবির গেইটে চালু করেন ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট ‘দ্য বাইট ক্যাভ’।
আরও পড়ুন: ভ্যানচালক বাবা ও চা বিক্রেতা মায়ের মেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণে যাচ্ছে পর্তুগাল
শিক্ষার্থী মো. রাকিবুজ্জামান বলেন, এসএসসি পাস করার পর ১৭ বছর বয়সে মাথায় শুধু ঘুরপাক খেতে থাকে পড়াশোনার পাশাপাশি যেভাবেই হোক স্বনির্ভর হতে হবে। আর তার জন্য চাই পুঁজি। কলেজের পুরো সময়টা চলে গেলো কিছুটা পুঁজি জমাতে। ভার্সিটিতে পা রাখতে না রাখতেই 'করোনা'র মধ্যে পড়লাম। করোনাকালীন যেই সময়টা বাড়িতে ছিলাম, সেই সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম। রান্না-বান্নার প্রতি আমার সব সময়ই একটা আগ্রহ ছিল এবং বাসায় প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের রান্না করে আম্মুকে টেস্ট করাতাম। এই আগ্রহ থেকেই ভাবলাম ভার্সিটি গেইটে রেস্টুরেন্ট দেয়ার কথা।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমি যেই ক্ষেত্রেই কাজ করতে যাই বা ব্যবসা দাঁড় করাতে যাই না কেন, প্রথমে সেই সেক্টরে আমাকে নিজের প্রবেশ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। বাড়িতে করোনাকালীন সময়ে সন্ধ্যার পরের সময়টা এক বন্ধুর রেস্টুরেন্টে কাটাতাম। প্রায় ছয় মাস সেখানে আমি সময় দিলাম শুধু নিজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য। অবশেষে অনেক বাধা বিপত্তির পর ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিনে আমি ‘দ্য বাইট ক্যাভ’ রেস্টুরেন্টটি চালু করেছি। আমার সঙ্গে আমারই ডিপার্টমেন্টের বন্ধু মো. মহিউল ইসলাম যুক্ত রয়েছে।
মো.রাকিবুজ্জামান বলেন, আমার শুরু থেকে একটাই লক্ষ্য ছিল-স্টুডেন্ট ফ্রেন্ডলি বাজেটে কোয়ালিটিসম্পন্ন খাবার সরবরাহ করা। আমার রেস্টুরেন্টের কাস্টমারদের একটা বড় অংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খাবারের গুণগত মানের দিক ভালো হওয়ার কারণে খুব অল্প দিনেই ‘দ্য বাইট ক্যাভ’ সবার আস্থা অর্জন করেছে। আমাদের অনলাইন পেইজ দ্য বাইট ক্যাভ ও ফুড পান্ডা অ্যাপের মাধ্যমে আমাদের রেস্টুরেন্টের সেবা পুরো সিলেট শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার স্বপ্ন আছে দ্য বাইট ক্যাভের আরও একটি ব্রাঞ্চ চালু করার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদিবা মালিহা পড়াশোনার পাশাপাশি সময় দিচ্ছেন মেয়েদের গহনার দিকে।
ভ্যানচালক বাবা ও চা বিক্রেতা মায়ের মেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণে যাচ্ছে পর্তুগাল
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাঙাটুঙ্গী ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির খেলোয়াড় কাকলী আক্তার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। উন্নত ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য পর্তুগাল যাচ্ছেন তিনি।
রাঙাটুঙ্গি ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, রাণীশংকৈল উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেম ও বানেসার মেয়ে কাকলী আক্তার (১৬)। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট কাকলী। নিজস্ব বসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো আবাদি জমি নেই । ঋণের টাকায় একটি ভ্যান কেনেন তার বাবা। সেই ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়েই চলে ভরণপোষণ। কষ্ট করে সংসার চালিয়ে নিতেন কাকলীর মা বানেসা। দিন আনে দিন খায়, এমন পরিবারে অভাবের সঙ্গে অশান্তি যোগ হয় যখন কাকলীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে বসেন। মুহূর্তে আকাশ ভেঙে পড়ে পরিবারটির ওপর। অভাবের সঙ্গে অশান্তি যোগ হয়ে পরিবারের পরিবেশ বিষময় হয়ে ওঠে কাকলীর কাছে। এ অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে এগিয়ে আসেন কাকলীর মা বানেসা বেগম। তিনি নিজের কাছে জমানো কিছু টাকা দিয়ে শুরু করেন চা বিক্রি। রাস্তার ধারে ছোট একটি দোকানে চা বিক্রি করেই পরিবার ও কাকলীর খরচের জোগান দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
কয়েক বছর পর কাকলীর বাবা নিজ ভুল বুঝতে পেরে দ্বিতীয় সংসার ছেড়ে আবার ফিরে আসেন তাদের কাছে। পরে সব মেনে নিয়ে নতুন করে আবার সংসার চলা শুরু হয় তাদের। বর্তমানে অসুস্থ বয়োবৃদ্ধ বাবা চালান ভ্যান আর মা করছেন চা বিক্রি। তবে মেয়ের বিদেশে যাওয়ার কথা যেন সব কষ্ট ভুলিয়ে রেখেছে তাদের।
কাকলীর মা বানেসা বলেন, মোর বেটি ফুটবল খেলে। তাতে নানান জনে নানা ধরনের খারাপ কথা কহে। খারাপ লাগিলে কান্নাকাটি করেছে ফের খেলিবা যাছে।
তিনি বলেন, হামার থাকিবার জায়গা ছাড়া আর কিছু নাই। স্বামী ভ্যান চালায় আর মুই চা বিক্রি করু। এখন হামার বেটি বিদেশত যাছে, এইডা খুবে ভালো লাগেছে। সবাই মোর বেটির তানে দোয়া করিবেন”।
কাকলীর বাবা আবুল কাশেম বলেন, আমি দিনমজুরি করে সংসার চালাতাম। পরে একটা ভ্যান চালানো শুরু করি। এখনো ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। আর কাকলীর মা চা বিক্রি করে। আমি বয়সের কারণে নানা রোগে ভুগছি। পায়ের সমস্যা লেগেই আছে। মেয়েটা বিদেশে যাচ্ছে প্রশিক্ষণে, এটি আমার কাছে অনেক আনন্দের। যেখানে যাই সেখানকার লোকজন খোঁজখবর নেয়। চা খাওয়ায় আর কাকলীর গল্প করে। তখন বুকটা আনন্দে ভরে উঠে। আমার মেয়ের জন্য সকলে দোয়া রাখবেন।
কাকলী আক্তার বলেন, স্কুল পর্যায়ে যে বঙ্গমাতা ফুটবল খেলাগুলো হতো, সেখান থেকেই আমার শুরু। পরে আমার এক স্যার বললেন, আমি ফুটবলার হবো কিনা। আমি বলেছিলাম, যদি ভালো সুযোগ পাওয়া যায় তাহলে হব। পরে তিনি আমাকে রাঙাটুঙ্গিতে যোগাযোগ করিয়ে দেন। আমি বাবা-মাকে বিষয়টি বলি। তারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন এবং ফুটবল কিনে দিয়েছেন। এখন দেশের বাইরে যাচ্ছি আরও উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য। এটি আসলে অনেক বড় আনন্দের খবর আমার কাছে। তবে এ আনন্দের পেছনে অনেক পরিশ্রম রয়েছে। মেয়ে হিসেবে ফুটবল খেলতে এসে নানা ধরনের কটু কথা শুনতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই বছর পর পর্যটকে মুখর কক্সবাজার
এবিষয়ে রাঙাটুঙ্গি ইউনাইটেড মহিলা ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১১ জন ছেলে ব্রাজিলে ও ১১ জন মেয়ে পর্তুগালে ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছে। সেরা ১১ মধ্যে আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে একজন নির্বাচিত হয়েছেন। কাকলী নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। তার বাবা বৃদ্ধ মানুষ, ভ্যান চালান। কিন্তু এ বয়সে ঠিকমতো চালাতে পারেন না। ভ্যানই একমাত্র আয়ের উৎস তাদের। আর তার মা চা বিক্রি করেন। তাদের জন্য এ ঘটনা অনেক বড় কিছু।
রাণীশংকৈল পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার পৌরসভার এক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান কাকলী। আজ তিনি ফুটবলের উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য পর্তুগাল যাচ্ছে, বিষয়টি আমাদের পৌরসভার জন্য খুবই খুশির সংবাদ।
চুয়াডাঙ্গায় অবহেলায় পড়ে আছে ভারতের উপহারের আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স
চুয়াডাঙ্গায় ভারত সরকারের দেয়া উপহারের অ্যাম্বুলেন্সটি অবহেলায় পড়ে আছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ভেতরে। সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সটি বুঝে নেয়ার পর ৬ মাস পার হয়ে গেলেও চালু হয়নি জীবনরক্ষাকারী এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, দেশের অন্যান্য হাসপাতালের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারত সরকার উপহার হিসেবে প্রাপ্ত ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত একটি অ্যাম্বুলেন্স পেয়েছিল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সটি ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এসে পৌঁছায়। সেদিনই অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালে আইসিইউ সেবা চালু নেই। ছিল না একটিও আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স। করোনা মহামারির সময়ে গত বছরের ৭ আগস্ট সাজেদা ফাউন্ডেশন নিজস্ব জনবলে ও যন্ত্রপাতি নিয়ে অস্থায়ীভাবে সদর হাসপাতালের নতুন ভবনে আইসিইউ ও এইচডিইউ ইউনিট চালু করে। তবে জেলায় করোনা মহামারির প্রকোপ কমতে শুরু করায় চুক্তি শেষ হওয়ায় ফাউন্ডেশনটি আইসিইউ সেবা বন্ধ করে দেয়। তবে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে প্রতিনিয়তই মুমূর্ষু রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। যে কারণে এ জেলার একমাত্র আইসিইউ সুবিধার অ্যাম্বুলেন্সটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকেই ঝুঁকি নিয়ে অসুস্থ রোগীদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় অনেক প্রাণহানির ঘটনার সর্ম্পকে জানা গেছে। এ অবস্থায় এ জেলার সাধারণ মানুষ অত্যাধুনিক ও জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ অ্যাম্বুলেন্সটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, রোগী বহনে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও জনবলের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না। লাইফ সাপোর্ট না পাওয়ায় সাধারণ অ্যাম্বুলেন্সে অনেক সময় কার্ডিয়াক রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। লাইফ সাপোর্টযুক্ত অ্যাম্বুলেন্সটির সেবা চালু হলে বিপদ অনেকাংশে কমে আসবে।
তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট চালু করার বিষয়ে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আইসিউই ইউনিট চালু হলে আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সটিও সচল হবে বলে আশা করছেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাত হাসান বলেন, আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অধীনে রয়েছে। তবে সেটি সচল করে সেবা দিতে প্রশিক্ষিত জনবল ও চিকিৎসকের প্রয়োজন। জনবল না থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি সচল করা যাচ্ছে না।
তবে অ্যাম্বুলেন্সটি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অধীনে থাকায় তিনিই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে সিভিল সার্জন জানান।
আরও পড়ুন: ভারতের উপহার ৩০ অ্যাম্বুলেন্স পেট্রাপোল বন্দরে
ভারতের উপহার আরও ৪০ অ্যাম্বুলেন্স পেট্রাপোলে
জরাজীর্ণ রাস্তা: শেওলা স্থলবন্দরে ব্যবসা বাণিজ্য ব্যাহত
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ব্রিজ থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি অসংখ্য গর্তে জরাজীর্ণ হয়ে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে তিন কিলোমিটার রাস্তাটি মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আরও পড়ুন: বাড়িরপাশে মরিচের আড়ৎ, ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি কৃষক
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে গাড়ি চালকরা জানান, রাস্তার গর্তে বৃষ্টির পানি জমে বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ১১ এপ্রিল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সড়ক ভবন, চৌহাট্টা, সিলেট এ আবেদন করা হয়।
এর আগেও ব্যবসায়ীরা নিজ উদ্যেগে রাস্তাটি মেরামত করেছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে রাস্তাটি আবার জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।
সড়কটি সংস্কার করা না হলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
শেওলা স্থল বন্দর সিলেট বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল বন্দর। ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর, কয়লা, বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী পেঁয়াজ ও আদা আমদানি হয়ে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট, মাছ, তুলা ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী রপ্তানি হয়ে থাকে।
এই স্থলবন্দর দিয়ে সরকার বাণিজ্য থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করে।
এছাড়া শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে শত শত যাত্রী ভারতে যাতায়াত করে।
এদিকে, গত ৯ মে সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের একটি প্রতিনিধিদল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কার্যালয় সড়ক ভবনে সাক্ষাত করেন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: হাসপাতালের বেডে ঈদ
সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি চন্দন সাহা আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা ও সরকারের রাজস্বের স্বার্থে সড়কটি দ্রুত সংস্কারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।