বিশেষ-সংবাদ
বিশ্বজুড়ে সংকট সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি ইইউ: ইউএনবিকে গিলমোর
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আরও কী কী করা দরকার সে বিষয়ে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বিশেষত এই বছরে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাবার বরাদ্দ কমানোর বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে।
ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বিষয়টির সমাধান করতে হবে এবং মিয়ানমারেই এর সমাধান করতে হবে। এই সংকটের সমাধান হতেই হবে। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার; যাতে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সসম্মানে নিজ দেশে ফিরতে পারেন।’
গিলমোর সম্প্রতি বাংলাদেশে পাঁচ দিনের সফর শেষে ফিরে গেছেন।
তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক দাতাদের অর্থায়ন কমায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাবার বরাদ্দ প্রথমে ১২ ডলার থেকে ১০ ডলার (প্রতি মাসে জনপ্রতি) এবং পরবর্তী সময়ে ৮ ডলার করা হয়েছে।
তিনি কক্সবাজারে একটি পুরো দিন কাটান। এসময় তিনি ৬ বছর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা ও সমস্যার কথা শোনেন।
গিলমোর চার বছর আগেও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন।
এবারের সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করেছেন, বিশ্বজুড়ে বর্তমান সংকট সত্ত্বেও ইইউ রোহিঙ্গাদের ভুলে যায়নি।
তিনি বাংলাদেশ সরকার ও শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) অফিসের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী ও আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করছি।’
আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় গিলমোর সরকার ও রহমানের ‘বীরত্বপূর্ণ’ কাজের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও আরআরআরসি কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করছে।’
গিলমোর জানান, এ ছাড়া আরও কী করা দরকার তা নিয়ে তারা অন্যান্য দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হবে বলে আশা করছে ইইউ: একান্ত সাক্ষাৎকারে গিলমোর
অবশেষে চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানা
দীর্ঘ ২১ বছর ধরে বন্ধ থাকার পর অবশেষে চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও রেশম কারাখানা।
কারখানাটি চালু করতে কারিগরি কাজের অধিকাংশই শেষের পথে। কারখানার মেশিনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যেই প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসবে কারখানায়। কারখানার মেশিন দিয়ে কাপড় বোনার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
শহরের গোবিন্দনগরের ঠাকুরগাঁও রেশম কারাখানায় গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন বেশ কয়েকজন শ্রমিক এসেছেন। এসেছেন নতুন নিয়োগ পাওয়া শ্রমিক। সবার মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য। শ্রমিকেরা নতুন উদ্যোমে ২১ বছর থেকে পড়ে থাকা কারখানার মেশিনগুলো পরিষ্কার করছেন। সুতা লাগিয়ে কাপড় বোনার কাজও শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত, এক সময় ঠাকুরগাঁও জেলার ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানায় উৎপাদিত হতো মসৃণ সিল্ক কাপড়। এর মধ্যে ২০টি যন্ত্রচালিত তাঁত ও ২০টি হাতে বোনা তাঁত রয়েছে। এগুলো সচল করা হয়েছে।
রেশম কারখানা বন্ধ হওয়ার পর প্রায় পাঁচ হাজার রেশম চাষি বেকার হয়ে পড়েছিলেন। তার মধ্যেও প্রায় দুই থেকে তিন হাজার চাষি রেশম চাষ ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু তুঁতগাছের অভাবে তারা গুটিপোকা পালন করতে পারছিলেন না। এখন কারখানাটি চালু হলে রেশম চাষের সঙ্গে যুক্ত পাঁচ হাজার বা তারও বেশি চাষির আবারও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
রেশম চাষিদের গুটি পোকা পালনের মাধ্যমে তাদের সুতা দিয়ে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানায় উৎপন্ন হবে মসৃণ সিল্ক কাপড়। এই কাপড় আবারও দেশ ও দেশের বাহিরে রপ্তানি করতে পারবেন এই আশায় পাঁচ বছরের জন্য কারখানাটি লিজ নিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের সুপ্রিয় গ্রুপ।
জানা যায়, পাট কারখানাসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে সুপ্রিয় গ্রুপের।
গত ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাংলাদেশ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ঠাকুরগাঁও জেলার রেশম কারখানা চালুর বিষয়ে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়।
ওই বছর ১২ জুলাই কারখানাটি পরিদর্শন করেন কমিটির সদস্যরা। কারখানাটি চালু করা সম্ভব বলে কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করে। তখন থেকেই শোনা যাচ্ছিল মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিলে যে কোনো সময় কারখানাটি চালু হবে।
এরপর ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর কারখানায় সরেজমিনে পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ রেশম বোর্ডের মহাপরিচালক মুহ. আব্দুল হাকিম।
ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, কারখানা চালুর জন্য ৯ সদস্যের একটি টেকনিকেল কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কারখানাটি কীভাবে চালু করা যায় সেজন্য একটা পদ্ধতি নির্ধারণ করেছেন। সেই পদ্ধতির ভিত্তিতেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সুপ্রিয় গ্রুপকে পাঁচ বছরের জন্য কারাখানাটি লিজ দেওয়া হয়।
সুপ্রিয় গ্রুপ কারখানার মহাব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন মো. বেলায়েত হোসেনকে।
আর পড়ুন: রেশমের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে তাঁতিদের সহায়তা করা হবে: পাট মন্ত্রী
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হবে বলে আশা করছে ইইউ: একান্ত সাক্ষাৎকারে গিলমোর
নির্বাচনকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয় উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর আশা প্রকাশ করেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন 'অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত' হবে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) রাতে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে ইউএনবিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ আশা প্রকার করেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সহিংসতামুক্ত হবে এটিই আমাদের প্রত্যাশা। আর তাহলেই তা অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’
গিলমোর বলেন, ‘কীভাবে নির্বাচন আয়োজন করা হবে সে বিষয়ে আমি কোনো রাজনৈতিক মতামত দেব না। কিন্তু যখন কেউ নির্বাচনের কথা ভাবে, তখন শুধু ভোটের দিন কী হবে তা নিয়ে চিন্তা করে না। ‘নির্বাচনের পরিবেশ কী হবে তা নিয়েও আমরা ভাবছি। অনুসন্ধানমূলক মিশন ঠিক সেই বিষয়টিই দেখছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশের বেশিরভাগ নির্বাচনই সহিংসতা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়। রাজনীতির বৈশিষ্ট্যই হলো গণতান্ত্রিক সম্পৃক্ততা। আর এর মাধ্যমেই জনগণ তাদের পরিস্থিতিকে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও সম্মানজনক করে তুলে এবং এরপর ভোটাররা তাদের সিদ্ধান্ত নেয়।’
গিলমোর বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা এখানে একটি অনুসন্ধানমূলক মিশন সম্পন্ন করেছেন। তবে তারা এ সম্পর্কে এখনই বিস্তারিত বলতে পারছেন না। কারণ তারা মিশনটির প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছেন। যার উপর ভিত্তি করেই মূলত নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল মোতায়েন করা হবে কি না- সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মানবাধিকারের উন্নয়নে ঢাকার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ইইউ,বলছে সরকারি সূত্র
ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে, হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট
রাজধানীতে সরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনো খালি জায়গা নেই।ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ার কারণে দেখা দিয়েছে শয্যা (বেড) সংকটও। শয্যা বাড়িয়ে পৃথক সেল করেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিদিন শত শত ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের প্রচণ্ড চাপ বাড়ার কারণে শয্যা সংকটে অনেকেই চিকিৎসা নিতে এসে ফেরত যাচ্ছেন।সিট না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে ছুটছেন স্বজনরা।
ঢাকার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই নাজুক পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের আনাচে-কানাচেও বিছানো ম্যাট্রেসে আছে রোগীরা। শুধু হাসপাতালের মেঝেই নয়, হাসপাতালের বারান্দা, বাথরুমসংলগ্ন জায়গাও এখন রোগীতে ঠাসা। রোগী আর স্বজনদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া ভার।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়াল, একদিনে রেকর্ড ২৪১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকায় সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী সামাল দেওয়া মুগদা হাসপাতালে রোগী বেড়েছে কয়েকগুণ।
ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পরও বেশিরভাগ রোগীকে মশারি ছাড়াই থাকতে দেখা গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব রোগীদের মশারির ব্যবস্থা করে দিলেও গরমের কারণে অনেক রোগী মশারি টাঙাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন।
এই অবস্থা শুধু মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে চাপ সামাল দিতে রোগীদের মেঝেতেও রাখতে হচ্ছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বিভিন্ন জটিল রোগীদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এসব হাসপাতালে একাধিক রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা নিতে এসে বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে টিকিট কাটা, রক্ত জমা দেওয়া, টেস্টের ডেলিভারি রিপোর্ট পাওয়া, ডাক্তার দেখানো এবং ওষুধ সংগ্রহ করতে লম্বা সিরিয়ালে দাঁড়ানোসহ প্রতি পদে পদে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এসব হাসপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালে জনবল সংকট একটি বড় সমস্যা।রোগী বাড়লেও চিকিৎসক বাড়ছে না। তাই চাহিদার তুলনায় রোগী বেশি হওয়ায় চাপ সামলানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ১৪ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ২৬৫৩
ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকায় রাজধানীর কোভিড ডেডিকেটেড মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঘোষণার পর ডিএনসিসি হাসপাতালেও বাড়ছে রোগী।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নিয়াতুজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ও লোকবলের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি রোগী। আমরা এখন লিখিত শর্তে রোগী ভর্তি করছি, কোনো শয্যা দিতে পারব না। চিকিৎসক আছেন মাত্র পাঁচজন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য নতুন করে কোনো লোকবল নেই।
তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে প্যাথলজিতে প্রতিদিন ৩০০ জনের পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে।যেখানে আমরা সাধারণত দেড় হাজার থেকে ২ হাজার রোগীর নমুনা পরীক্ষা করতাম, সেখানে আমাদের করতে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার পরীক্ষা। আমাদের এখন তিন শিফট চালাতে হচ্ছে। তাই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা অতিরিক্ত রুটিন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি বলেন, বর্তমানে দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। একটি হচ্ছে ‘ক্লাসিক ডেঙ্গু সিনড্রোম’ (যেখানে রোগীর লক্ষণ থাকে জ্বর কিংবা হাত-পা ব্যথা) এবং অপরটি হচ্ছে ‘কমপ্লিকেটেড ডেঙ্গু সিনড্রোম’ (যে রোগীর এক থেকে তিনবারের বেশি ডেঙ্গু হয়েছে)। আর হাসপাতালগুলোতে ‘কমপ্লিকেটেড ডেঙ্গু সিনড্রোম’ রোগী সংখ্যা বেশি।
মিটফোর্ড হাসপাতালে নতুন ভবনের ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় ডেঙ্গু ইউনিট। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি। রোগী ও স্বজনদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা নেই। অনেক রোগীকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: রোগীতে পূর্ণ মুগদা হাসপাতাল, নতুন রোগী না যাওয়ার পরামর্শ
এ ব্যাপারে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড হাসপাতাল) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশিদ উন নবী সাংবাদিকদের বলেন, শুধু ডেঙ্গু রোগী নয়, এখানে সব ধরনের রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। ফলে রোগীদের কিছুটা ভোগান্তি হবে এটাই স্বাভাবিক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনে দুটি ডেঙ্গু ইউনিট রয়েছে। একটি ভবনের সপ্তম অপরটি ষষ্ঠ তলায়। এই দু’টি ইউনিটই নির্ধারিত শয্যার চেয়ে তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি। রোগীর এত চাপের পরও করা হয়নি আলাদা ইউনিট বা ওয়ার্ড। অন্য রোগীর সঙ্গে চলছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা।
মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডাক্তার এমএ মান্নান ইউএনবিকে বলেন, চিকিৎসার জন্য সার্জারি বিভাগের ওয়ার্ডটিতে শুধু ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিছানা, খাট অন্য ওয়ার্ড থেকে নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার বাইরের চিত্রও একই রকম। অনেক জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট না থাকায় রোগীদের পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। কোথাও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। শয্যা সংকট তো রয়েছেই। ডেঙ্গু চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা না থাকায় অনেক হাসপাতাল থেকে রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১০, আক্রান্ত ২৩৬১
ঝিনজিয়াংয়ে বন্দিশিবির নেই, বিদেশি গণমাধ্যমসহ সবার জন্য উন্মুক্ত: চীন
পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ সবার জন্য ঝিনজিয়াং উন্মুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনা কর্মকর্তারা। সেখানকার পরিস্থিতি দেখতে আগ্রহী এমন যে কাউকে সাদরে গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ঝিনজিয়াং পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমহাপরিচালক ঝ্যাং হুয়াঝং সাম্প্রতিক সফরের সময় এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনবিকে বলেন, ‘ঝিনজিয়াংয়ের দরজা পশ্চিমা গণমাধ্যমসহ সবার জন্য উন্মুক্ত।’
তিনি বলেন, তারা চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঝিনজিয়াং সম্পর্কে ‘আরও বিস্তৃত ও বস্তুনিষ্ঠ’ প্রতিবেদন দেখতে চান।
তাদের একটি ‘মুক্ত ও সম্যক’ মনোভাব রয়েছে উল্লেখ করে ঝ্যাং বলেন, ‘এখানে কোনো বন্দিশিবির নেই। এখানে সবাই সশরীরে এসে দেখতে পারেন। আপনারা (বাংলাদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধি দল) আমাদের দৈনন্দিন জীবন দেখেছেন। ‘বন্দিশিবির’ এর মতো শব্দের ব্যবহার করা একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নয়।’
তিনি বলেন, ঝিনজিয়াংয়ের মানুষ সুখী জীবনযাপন করছে এবং এই অঞ্চল সবার জন্য উন্মুক্ত।
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণে ২ দেশের ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক উন্নয়নে মনোনিবেশ অব্যাহত রাখা উচিত।
চীনা সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘উভয় দেশ একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বেঁচে থাকার অধিকার, উন্নয়ন ও নিরাপত্তা হলো মূল মানবাধিকার।’
আরও পড়ুন: চীনের ঝিনজিয়াংয়ে 'বন্দিশিবিরের' দাবি ভিত্তিহীন: বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলকে অঞ্চলটির বৃহত্তম মসজিদের ইমাম
তিনি বলেন, তারা উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে চান এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা ও জনগণের কল্যাণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ঝিনজিয়াং প্রদেশের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কর্মকর্তারা ১০ সদস্যের বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলের কাছে এসব কথা বলেন। এই প্রতিনিধি দলের সপ্তাহব্যাপী সফরের ইতি টানার আগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চীনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপ করেন- ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগের উপমহাপরিচালক ইয়ান নাইমিন, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সাহিত্য ফেডারেশনের সহসভাপতি উইলিজান ইয়াকুব, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের নারী ফেডারেশনের সভাপতি আয়নুর মাহসেত, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জাতিগতবিষয়ক উপমহাপরিচালক (ধর্মবিষয়ক ব্যুরো) লি জিয়াং, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমিশনের উপমহাপরিচালক ইউ মিপিং, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সিপিসির ইউনাইটেড ফ্রন্ট ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের ধর্মবিষয়ক বিভাগের পরিচালক চু জিয়ান, ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন ব্যুরোর প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপক মা ঝিবিন, ঝিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক লি জিয়াওডং, শিক্ষার পররাষ্ট্র বিভাগের উপপরিচালক কিন শান এবং ঝিনজিয়াং পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক গু মেই।
কর্মকর্তারা বলেন, বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী উভয়ের অধিকার রক্ষায় পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চীন সরকার। একই সঙ্গে ঝিনজিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তারা বলেন, সরকার প্রণীত আইন ও প্রবিধান জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি সব ধর্মের অনুসারীদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়।
আরও পড়ুন: খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে বাংলাদেশ
ঝিনজিয়াং প্রদেশের জনগণের একটি বড় অংশ মুসলিম এবং মিডিয়ার একটি অংশে অভিযোগ রয়েছে যে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার ৮ দেশের সঙ্গে সীমান্তসংলগ্ন এই অঞ্চলে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঝ্যাং বলেন, ‘যা সম্পূর্ণ মনগড়া… চীনবিরোধী শক্তিগুলো চীনের অর্জিত বিস্তৃত গণমুখী সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য এসব অপপ্রচার করছে।’
লি জিয়াং বলেন, এ অঞ্চলের জনগণ পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার ভোগ করে থাকে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, তারা নাগরিকদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুরোপুরি সম্মান করেন এবং রক্ষাও করেন। ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আইন ও বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে।
চু জিয়ান বলেন, নীতি নির্ধারণী ফোরামে জাতিগত সংখ্যালঘুদেরও যথেষ্ট প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।
ইয়ান নাইমিন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও সংগীতের প্রচার করে আসছি। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঝিনজিয়াং ভ্রমণ করা খুব সুবিধাজনক।’
এলিজান ইয়াকুব বলেন, সিপিসি সাহিত্য ও লোককাহিনির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে এবং প্রতি বছর এই উদ্দেশ্যে ১০ মিলিয়ন আরএমবি (ইউয়ান) বরাদ্দ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘জাতিগত ঐক্য জোরদার করতে আমরা বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছি। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জন্য সংস্কৃতি ও সাহিত্যের উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
আইনুর মাহসেত বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ নারী ও শিশুদের উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়।
তিনি বলেন, উইঘুরের স্থানীয় সরকার মা ও শিশুর স্বাস্থ্য কল্যাণে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।সরকারের আইন ও প্রবিধান নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়।
তিনি আরও বলেন, দল ও সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্র ও ফোরামে বিপুল সংখ্যক নারী অবদান রাখছেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রতিনিধি দলটিতে ছিলেন- দৈনিক যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদক মাসুদ করিম, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উপসম্পাদক টিটু দাস গুপ্ত, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ প্রতিবেদক মীর মোস্তাফিজুর রহমান, দ্য ডেইলি স্টারের কূটনৈতিক প্রতিবেদক পরিমল পালমা, ইউএনবির বিশেষ প্রতিবেদক একেএম মঈনুদ্দিন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিশেষ প্রতিবেদক নাফিজা দৌলা, এটিএন নিউজের প্রধান প্রতিবেদক আশিকুর রহমান অপু, দৈনিক সমকালের কূটনৈতিক প্রতিবেদক তাসনিম মহসিন মিশু, যমুনা টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আহমেদ রেজা এবং সময় টিভির কূটনৈতিক প্রতিবেদক তাজওয়ার মাহমিদ।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে: চীনা কর্মকর্তা
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে: চীনা কর্মকর্তা
'পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ' শীর্ষক প্রকল্পের পূর্ণ বাস্তবায়নের পর ঢাকা শহর ও তৎসংলগ্ন নারায়ণগঞ্জের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। যা হবে ডিজিটাল ঢাকা শহরের মূল ভিত্তি। এমনটাই জানিয়েছেন চীনের এক জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা।
টিবিইএ'র ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক মা ইউএনবিকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৭০ শতাংশেরও বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি বলেন যে ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পুরো প্রকল্পটি সম্পন্ন করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পরিচালক মা বলেন, টিবিইএ ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পের অধীনে কাজ করছে। যার অধীনে বেশ কয়েকটি উপপ্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে এই প্রকল্পটি দুই দেশের সরকারের মধ্যে বৃহত্তম বিদ্যুৎ সহযোগিতা প্রকল্প।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জরিমানা করেই দায় সারছে দুই সিটি করপোরেশন
বিদেশে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার বন্ধে কাজ করুন: দেশের রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের কাজ করতে বলেছেন। যাতে মিথ্যার কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিভ্রান্ত না হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলতে চাই আপনাদের উচিত আমাদের দূতদের প্রচারণা সম্পর্কে অবহিত করা। তাহলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে না। বিশেষ করে আমাদের আন্তর্জাতিক সংস্থাগুরোতে আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।’
ইতালির রাজধানী রোমে তার বাসভবনে ইউরোপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
ইউরোপীয় দেশগুলোতে অবস্থানরত ১৫ জন বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
তিনি বলেন, কিছু লোক দেশে অপরাধ করে বিদেশে আশ্রয় নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা কখনোই দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে পারেনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কিছু মানুষ আছে, যারা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দোষী সাব্যস্ত বা অপরাধী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিদেশে অবস্থান করে ক্রমাগত দেশের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। ‘সবাইকে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার করেছে, তাই তারা দেশের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। “তাদের কত আছে! তারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে, মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
বিদেশিরা প্রায়ই ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় তা নিয়ে দু-একটি দেশ ব্যস্ত থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া, যারা খুনিদের আশ্রয় দেয় এবং অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত তাদের কাছ থেকে আমাদের মানবাধিকারের কথা শুনতে হবে।’
আরও পড়ুন: সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা চালু করুন: জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অভিযুক্তদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত, কিন্তু নিহত, আত্মীয়-স্বজন বা যারা দগ্ধ হয়েছেন তাদের কোনো পরোয়া করেন না।
র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করেছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে তারা তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলে।’
তিনি বলেন, তারা একদিকে মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য আওয়াজ তুলছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের পক্ষে কথা বলছেন। বিশ্বব্যাপী দ্বৈতনীতি চালু রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়ে তার সরকারের অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানবাধিকার রক্ষা করে, আর যারা মানবাধিকারের কথা বলে; তারাই মানুষ হত্যা করে।
দেশের নাম উল্লেখ না করে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব খুনি তার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের গুলি করে হত্যা করেছে, তারা এখনও সে দেশে পলাতক রয়েছে।
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এখন রোমে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোমে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জরিমানা করেই দায় সারছে দুই সিটি করপোরেশন
সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। বিশেষ করে রাজধানীতে এর প্রভাব খুবই বেশি। প্রতিদিন নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন ধরে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিধনে দুই সিটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। এদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি শুধু জরিমানা করেই দায় সারছে।
এডিস মশার প্রজনন মৌসুমে মশার প্রজনন বন্ধে নেই কোনো কার্যকরী ব্যবস্হা এবং এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে তাদের তেমন কোনো কার্যক্রম নেই।
এ কারণে কোনো সুফল মিলছে না। দিন দিন শনাক্তের হার বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সারা বছর কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় এমন ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকার এখনো তেমন কোনো নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি।
তাই সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় মশা নিধন কর্মকাণ্ড অকার্যকর হয়ে পড়েছে। কোথাও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। তাই জরিমানা করে ও লোক দেখানো কিছু কাজ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হবে।
তারা বলছেন, একবার এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের পর সেখানে আবার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। লার্ভা শনাক্তে দুই সিটিতে কোনো গবেষণাগারও নেই। নেই কোনো কীটতত্ত্ববিদও। এ কারণে ডেঙ্গু রোধে লোক দেখানো কার্যক্রম ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, দুই সিটি করপোরেশন এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দাবি করছে, সর্বোচ্চ চেষ্টার মধ্যেও প্রতিনিয়তই বাড়ছে আক্রান্ত রোগী এবং মৃতের সংখ্যা।
এ ছাড়া দায়িত্বশীলদের লোক দেখানো অভিযান আর মশক নিধন কার্যক্রম পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
আরও পড়ুন: খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে বাংলাদেশ
এ বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সারা বছর কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় এমন ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ যখন কম থাকে তখনই কাজ শুরু করা উচিত। মৌসুমের আগে যেসব জায়গায় মশার উপদ্রব বেশি থাকে সেখানে মশা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার।
যেন মৌসুমের শুরুতে এডিস মশা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। এজন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কিন্তু এ ধরনের উদ্যোগ কারো নেই।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জরিমানার সিস্টেম বিভিন্ন দেশে থাকলেও আমাদের দেশে এ সিস্টেম চালু করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। জরিমানা করে কোনো লাভ হবে না। যেভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার সে অনুযায়ী কাজ করছে না রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন।
তিনি বলেন, ফলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি যেসব দিক-নির্দেশনা দিচ্ছে তা অবৈজ্ঞানিক ও ভুল। এ কারণে এসব নির্দেশনা ও কার্যক্রম কোনো কাজে আসছে না।
এ ছাড়া দুই সিটিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দক্ষ জনবল নেই। মনগড়া ও উলটাপালটা পরামর্শ নিয়ে তারা কাজ করছে। এতে কোনো সুফল বয়ে আনবে না। মশা মারতে তারা ফগিং ব্যবহার করছে-অথচ এতে মশা মরে না।
ডেঙ্গু সংক্রমণ কেন নিয়ন্ত্রণে আসছে না, জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. লেলিন চৌধুরী বলেন, এখানে বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। আমাদের সিটি করপোরেশনগুলো যে ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করে তার একটি প্রধান অংশই হচ্ছে প্রদর্শনবাদিতা।
অর্থাৎ তারা যতটা দেখায় ততটা কার্যকরি কাজ তারা করে না।
দ্বিতীয়ত হলো- সিটি করপোরেশন কিছু কাজ করলেও তাদের পক্ষে একা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। একসঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং জনপ্রতিনিধিদের যুক্ত করতে হবে। তাহলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আরও পড়ুন: ‘আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, মশা নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের কীটতত্ত্ব কারিগরি দক্ষতা নেই। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখছি না।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের প্রতিটি জোনে পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ ও সহকারী কীটতত্ত্ববিদ প্রয়োজন। উত্তর সিটিতে একজন কীটতত্ত্ববিদকে ডেপুটেশনে আনা হয়েছে।
দক্ষিণ সিটিতে একজনও কীটতত্ত্ববিদ নেই। পাশাপাশি এ বিষয়ে গবেষণার জন্য ল্যাবরেটরি দরকার। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় দরকার।
এভাবে ডেঙ্গুর প্রকোপ দূর করা যাবে না। বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদদের পরামর্শ মেনে এবং তাদের নেতৃত্বেই ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখনো তেমন কোনো নীতিমালা তৈরি করতে পারেনি। তাই সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় মশা নিধন কর্মকাণ্ড অকার্যকর হয়ে পড়েছে।
কোথাও প্রশিক্ষিত জনবল নেই। তাই জরিমানা করে ও লোক দেখানো কিছু কাজ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হবে।
তারা বলছেন, একবার এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের পর সেখানে আবার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। তারা তো প্রজননস্থল ধ্বংসে কার্যকরী কোনো ভূমিকা নেই। ডেঙ্গু যখন বৃদ্ধি শুধু অভিযান করলে হবে না।
ডেঙ্গু প্রজননস্থল ধ্বংসে কার্যকরী ব্যবস্হা নিতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার ইউএনবিকে বলেন, ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঠেকাতে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
আর এই প্রক্রিয়াতে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জনসাধারণকেও সরাসরি সম্পৃক্ত হতে হবে।
আগামী দুই মাস হটস্পট ম্যানেজমেন্টের পাশাপাশি মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের কার্যক্রমও চালাতে হবে।
ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কথা বলে জানা যায়, মশা নিধনে ওষুধ ছিটানোর ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
কোনো কোনো জায়গায় মশকনিধনকর্মীর দেখাই মেলেনি, আবার কোথাও টাকা দিলে ঘরের ভেতরে গিয়েও ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। আবার কোথাও কোথাও ওষুধ ছিটালেও মশা যায় না।
মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছর বড় অংকের টাকা ব্যয় করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশন খরচ করেছে ১২৮ কোটি টাকা।
এরমধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তুলনায় উত্তর সিটি করপোরেশনের ব্যয় প্রায় চার গুণ বেশি। কিন্তু ফলাফল অনেকটাই শূন্য।
তাদের ব্যর্থতায় ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার বিস্তার এখন দেশজুড়ে। ডেঙ্গু এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও প্রাণহানির সংখ্যা।
মশক নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৭৫টি ওয়ার্ডে কাজ করছে। মশক নিয়ন্ত্রণে ১০৯ দশমিক ২৫ বর্গকিলোমিটারের ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২০ কোটি ২ লাখ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩১ কোটি ২ লাখ, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৭ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৫৪টি ওয়ার্ডে মশক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ১৯৬ দশমিক ২২ বর্গকিলোমিটারের উত্তর সিটিতে মশক নিয়ন্ত্রণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে খরচ হয়েছে ৭০ কোটি টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৫ কোটি ৫০ লাখ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৯ কোটি ৮৫ লাখ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে নতুন রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে ভাবছে চীনা কফি উৎপাদনকারীরা
খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ টেকসই ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে খরচ ও শ্রম কমাতে চীনা বহুবর্ষজীবী ধান চাষ করতে পারে।
চীনের ইউনান প্রদেশের মেনহাই কাউন্টির ডেপুটি মেয়র কং ইয়াং সম্প্রতি সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের একটি দলকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যদি খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও বাড়াতে চায়, আমরা আমাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে প্রস্তুত।’
চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট কয়েক বছর আগে বহুবর্ষজীবী ধান চাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
ইউনান ক্রপ ভ্যারাসিটি অ্যাপ্রুভাল কমিটি ২০১৮ সালে এটিকে অনুমোদন দিয়েছে এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এটিকে একটি আন্তর্জাতিক কৃষি উদ্ভাবন প্রযুক্তি হিসেবে নির্বাচিত করেছে।
ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কৃষি বিদ্যালয় পেরিনিয়াল রাইস ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ধান গবেষণা কেন্দ্রের মতে, বন্য প্রজাতির ধানের রাইজোম বৈশিষ্ট্য, দীর্ঘজীবী ধান (ওরিজা লংস্টিমিনাটা) এবং বিভিন্ন শস্য ব্যবস্থাপনা কৌশলগুলো ব্যবহার করে বহুবর্ষজীবী ধান প্রযুক্তি’র জাতগুলো উদ্ভাবন করা হয়েছে।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকেরা শুধুমাত্র একবার জমিতে ধান রোপণ করবে, এরপর টানা ৩-৫ বছর ফসল আহরণ করতে পারবে। এই সময়ে বীজ কেনা, চারা দেওয়া, লাঙল দেওয়া ও চারা রোপণের মতো সাধারণ কৃষিকাজগুলো করার প্রয়োজন হয় না।
গবেষণা কেন্দ্রের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই প্রযুক্তিটি একটি দক্ষ ও টেকসই চাল উৎপাদন কৌশল নিয়ে এসেছে। এটি পরিবেশবান্ধব ও এবং খরচকমাতে কার্যকর।’
প্রথাগত মৌসুমি ও বহুবর্ষজীবী ধান উৎপাদন পদ্ধতির মধ্যে তুলনা ব্যাখ্যা করেছেন চীনা কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, ‘মৌসুমি ধানের উৎপাদন প্রক্রিয়া জটিল। এর জন্য লাঙল, নিড়ানি, বীজ বপন, রোপণ, ফসল কাটা ও শ্রমিক ব্যবহারের মতো কষ্টসাধ্য কাজ করা প্রয়োজন হয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে নতুন রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে ভাবছে চীনা কফি উৎপাদনকারীরা
বাংলাদেশে ডেটা হাব স্থাপন করবে আইজিসি-ব্র্যাক: আইজিসি প্রধান
লন্ডনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের (আইজিসি) নির্বাহী পরিচালক জোনাথন লিপ বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ভবিষ্যৎ চাহিদা ও ডিজিটাল অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে মানসম্পন্ন পাঠ্যক্রম গ্রহণ করা। সেজন্য প্রাক-বিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই পাঠ্যক্রম প্রণয়ন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি ডেটা হাব প্রতিষ্ঠার জন্য ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে কাজ করছে আইজিসি। দেশে আরও উন্নতমানের গবেষণাকে উৎসাহিত করতেই এ ডেটা হাব প্রতিষ্ঠা করা।
আইজিসি’র উদ্যোগে ‘পরিবর্তনশীল জলবায়ুতে সহনশীল ও পুনরুত্থিত বাংলাদেশ-টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি এখন ঢাকায় রয়েছেন জনাথন। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অর্থনীতি বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক। তিনি লন্ডনের একদল তরুণ গবেষকের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ ও উৎপাদনশীল মানবসম্পদ উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: ২০২৩ অর্থবছরের পূর্বাভাসের চেয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি: এডিবি
লিপ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য কীভাবে ডেটা আরও ব্যবহারযোগ্য এবং ব্যবহারকারীবান্ধব করা যায় তার উপর গুরুত্ব দিয়েছে আইজিসি। মহামারিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নীতি নির্দেশক হিসেবে ডেটার ভূমিকা নীতি নির্ধারকদের কাছে এর চাহিদা বাড়িয়েছে।
দক্ষতার ঘাটতি বিষয়ে এক প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে সম্পদে পরিণত করতে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী পাঠ্যক্রম প্রণয়ন প্রয়োজন।
তিনি বলেন, একাডেমিক গবেষণা নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি শেখার মাধ্যম হতে পারে। এ ছাড়া কী কাজ করছে এবং কী কাজ করছে না সে বিষয়ে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গবেষণা কাজ করতে পারে। এটি নীতিগুলোকে আরও কার্যকর এবং কম ব্যয়বহুল করতে সাহায্য করে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, এটি একটি নতুন ধারণাগত কাঠামোও সরবরাহ করতে পারে। এমনভাবে প্রশ্নগুলো সাজানো যা নতুন নীতি তুলে ধরে।
ঢাকায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক নীতিসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য নীতিনির্ধারক, গবেষক ও নাগরিকদের একত্রিত করুন। এটি সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প অর্জনের কেন্দ্রবিন্দু।
আরও পড়ুন: 'অভিন্ন অগ্রাধিকার' নিয়ে আলোচনায় বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর
সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেসব নীতিগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তার প্রমাণভিত্তিক সমাধানে অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে ১২ জন গবেষক তাদের সাম্প্রতিক গবেষণা উপস্থাপন করছেন। ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করেছেন।
লিপ বলেন, বাংলাদেশে আইজিসি জড়িত থাকার ফলে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে। বিদেশি, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো গবেষণা ও নীতিগত বিষয়ে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে সহায়তা ও অর্থায়ন করেছে।
তিনি বলেন, ব্র্যাক ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, আরও বিস্তৃতভাবে আইজিসি ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের মূল অংশীদার।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, র্যাপিড, পলিসি এক্সচেঞ্জ ও পিআরআই-এর সঙ্গে অন্যদের মধ্যে অংশীদারিত্বের মূল্যায়ন করেছি।
আরও পড়ুন: ইউএনডিপি-এসএমই ফাউন্ডেশনের সমঝোতা স্মারক সই