বিশেষ-সংবাদ
খুলনাঞ্চলে দফায় দফায় বাড়ছে গো-খাদ্যের দাম
খুলনাঞ্চলে দফায় দফায় গো-খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা। খাদ্যের এ দাম না কমলে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাদের।
আসাদুজ্জামান মঈন কাঠ ফাটা রোদ্রে শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের খেলার মাঠ থেকে ঘাস সংগ্রহ করছেন গরুর খাবারের জন্য। গরমে ঘাম ঝরছে শরীর থেকে, তারপরও ঘাস কাটছেন আর কিছুক্ষণ পর পর কপাল মুছে ঘাম সরিয়ে ফেলছেন।
কথা বলতেই তিনি বললেন, ভাই গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে, প্রতি সপ্তাহে বাজারে গেলে শোনা যায় দাম বাড়ছে। এখন আর আগের মতো ফাঁকা মাঠে, বিলে লম্বা ঘাস পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
চট্টগ্রামে এবার গরু ফ্যাশন শো!
তিনি আরও বলেন, গো-খাদ্যের যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে বিকল্প খাদ্য হিসেবে ঘাসের সন্ধানে নেমেছি। ঘাস কাটার সময়ে শরীরে প্রচণ্ড গরম অনুভূত হয়।
আগের মতো এখন ঘাস দেখা যায় না। এই জায়গায় কিছু ঘাস আছে, তবে ছোট ছোট ঘাস যতটুকু পারি গরুর পেটে একটু খাবার যোগান দিতে পারব।
এছাড়া এখন বাজারে ৩৭ কেজির দেশি গমের ভুসি বস্তাপ্রতি এক হাজার ৯০০ থেকে এক হাজার ৯৫০ টাকা, ৫০ কেজির ধানের গুড়া বস্তাপ্রতি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, ৩৭ কেজির সরিষার খৈল বস্তাপ্রতি এক হাজার ৪৫০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, ২৫ কেজির দানাদার ফিড বস্তাপ্রতি এক হাজার ৩৮০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সয়াবিন খৈলের এক কেজির দাম ৮৫ টাকা, পাশপাশি বিছালি এক মুঠি দাম আট টাকা পরিবহন খরচ বাদে।
খামারি মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, আমাদের আগে পাঁচটি গরু ছিল, এখন মাত্র তিনটি গরু আছে। দুটি গরু আসন্ন কুরবানি ঈদে বিক্রি করব। তারপর আর মনে হয় গরুর খামারের ব্যবসা করা হবে না। একটি বড় জাতের সবল পুরুষ গরু প্রতিদিন ২০০ টাকার খাবার খায়।
তিনি আরও বলেন যে নিজেদের পরিশ্রম করাসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে এখন খামারিরা খুবই লোকসানে আছে। যেসব খামারিদের দীর্ঘদিন যাবৎ গরুর খামার ছিল, তারাও এখন এই খামারি ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার মতো পর্যায়ে চলে এসেছে।
দুধের ও মাংসের দাম বাড়লেও খামারিরা খুব একটা লাভজনক অবস্থানে নেই। এভাবে চলতে থাকলে, সপ্তাহে সপ্তাহে দাম বাড়লে দেশীয় গরুর খামার এক সময় হারিয়ে যেতে পারে।
এখন আগের মতো গরু চড়ানোর বড় মাঠ আর ঘাস নেই। সব খাবার ক্রয় করে গরুর সামনে দিতে হয়।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে কর্মকর্তা ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল বলেন, গো-খাদ্যের দাম বেড়েই চলেছে। এখানে সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। মূলত কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব কারসাজি করছে। আর বিপদে পড়ছে গরিব খামারিরা।
তিনি আরও বলেন, আমার জানা মতে ভুট্টার দাম কিছু বেড়েছে, সেই সঙ্গে সয়াবিনের খৈলেরও। আমরা সরকারিভাবে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খামারিদের আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছি। বর্তমানে এক ধরনের ঘাস আছে যার নাম পাংচুন ঘাস। এই ঘাস দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। এক শতাংশ জমিতে বছরে প্রায় দুই হাজার কেজি ঘাস জন্ম হয়। এই ঘাস গরুদের খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। এখন এই ঘাস আড়ংঘাটা শাহাপুর এলাকায় দেখা যায়। আমার পরামর্শ, এই ঘাস চাষ করলে খামারিরা বিকল্প খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। তাতে খরচ অনেক কমাতে পারবে।
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে গরুকে আলিঙ্গন করার আবেদন প্রত্যাহার করল ভারত
মেঘনায় গরুবাহী ট্রলারে ডাকাতি, ৩০ লাখ টাকা লুট!
ঘেরে চিংড়ি মারা যাওয়ায় হতাশ খুলনার চাষীরা
দক্ষিণাঞ্চলের আয়ের অন্যতম উৎস সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি চাষ। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের অধিকাংশ মানুষ চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল। তবে বিক্রি উপযোগীর পূর্ব মূহুর্তে মারা যাচ্ছে ঘেরের চিংড়ি। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতেই পুঁজি হারিয়ে আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছেন চাষিরা। ঋণগ্রস্ত হয়ে ঘের ফেলে রেখে জীবিকার উদ্দেশে অন্যত্র পাড়ি জমাচ্ছেন অনেকে।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা, ঘেরের গভীরতা সংকট, পানির উৎসের সমস্যা, অক্সিজেন স্বল্পতা ও খাদ্য সংকটের পাশাপাশি অতিরিক্ত গরমে চিংড়ি মারা যাচ্ছে।
চিংড়ি চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর উৎপাদনের শুরুতেই অধিকাংশ ঘেরের চিংড়ি মাছ মারা গেছে। মৎস্য কর্মকর্তাদের পরামর্শে বিভিন্ন কিছু ব্যবহার করলেও চিংড়ি মৃত্যু বন্ধ হচ্ছে না। প্রথম দফার পূঁজি হারিয়ে ঋণ করে পরবর্তীতে চুনসহ আনুষঙ্গিক দ্রব্য প্রয়োগ করে পোনা ছাড়লেও ঘেরের পরিবেশ তেমন ভালো অবস্থায় নেই। সেই মাছও মারা যাচ্ছে অনেকের। ঘেরে বিনিয়োগ করা মূলধন হারিয়ে দিশেহারা তারা। এর সঙ্গে রয়েছে ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ পরিশোধের তাড়া। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অনেকে চরম আর্থিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে জীবিকার উদ্দেশে এলাকা ছাড়ছেন। বিগত কয়েক বছর যাবৎ ৩৫ থেকে ৪৫ দিন বয়সের চিংড়ি মারা যাচ্ছে। বিক্রি উপযোগী হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে বাগদা মারা যাওয়ায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। এতে বিনিয়োগের পাশাপাশি উৎপাদনের সময়ও নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া যে ঘেরে একবার মাছ মারা যায় তার পরিবেশ অনুকূলে থাকে না। ছোট পোনাও মারা যায়। একবার মাছ মরা ধরলে স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগে।
আরও পড়ুন: রপ্তানিতে সুদিন ফেরাতে পারে ভেনামি চিংড়ি, বাণিজ্যিক চাষ দাবি
চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায়, মাঘ মাসের শেষের দিকে দক্ষিণাঞ্চলে ঘের প্রস্তুতির পর পোনা ছাড়া শুরু হয়। পানি উত্তোলনে সমস্যার কারণে অনেকে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝিতে পোনা ছাড়ে। আর এসব পোনা বিক্রির উপযোগী হতে দুই থেকে তিন মাস লাগে। সাধারণত দুই মাস পরে প্রতিটি ১৫-২০ গ্রাম ওজনের হয়। আর তিন মাস পরে ৩০-৩৫ গ্রাম ওজনের হয়। বাগদা মারা যাওয়ার শঙ্কায় বর্তমানে অধিকাংশ চাষি দুই মাসের আগেই মাছ ধরা শুরু করে। প্রথম দফা পোনা ছাড়ার পর থেকে প্রতি মাসে বিঘা প্রতি দুই থেকে তিন হাজার পোনা ছাড়া হয়। আর মাছ ধরা শুরুর পর থেকে প্রতি গোণে কিছু কিছু মাছ ধরা হয়। এভাবে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত বাগদার চাষ করা হয়। ঘেরে ব্যবহার করা হয় চুন, সার, জিওলাইট, চিটাগুড়, অটো পালিস। অধিকাংশ ঘেরের পানির গভীরতা দেড় থেকে দুই ফুট। জৈব নিরাপত্তা নেই আর শ্যাওলায় ভরা। প্রায় ৯৫ শতাংশ ঘেরে এই পদ্ধতিতে বাগদা চাষ করা হয়। এটিকে সনাতন পদ্ধতি বলা হয়।খুলনার কয়রা উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের চিংড়ি চাষি তৈয়েবুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিতে চিংড়ি চাষ করি। পোনা ছাড়ার ৩৭ দিন পর মাছ মরা শুরু করে। আশা করেছিলাম ৫০-৫৫ দিন পর ৬০ থেকে ৭০ পিস এ কেজি হলে বাগদা ধরা (বিক্রি) শুরু করবো।
তিনি আরও বলেন, গত বছর উৎপাদন খরচ তুলতে পারিনি। এ বছর শুরুতেই ক্ষতির মুখে পড়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি।
একই এলাকার চিংড়ি চাষী আব্দুল হাই বলেন, নিজেদের ৫ বিঘা জমিতে বাগদা চাষ করি। সেই আয় দিয়ে সংসার চালাতে হয়। এক মাস ১০ দিন পর মাছ মরা শুরু হয়। ঘেরে ফের পোনা ও চুন-খাবার দেই। সেই ছোট পোনাও বড় বাগদার সাথে মরা পাচ্ছি। ঋণ করে সংসার চালাচ্ছি। বাধ্য হয়ে ঘের ফেলে রেখে বাইরে কাজে যাচ্ছি।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আবু দাউদ জানান, তাদের এলাকার অধিকাংশ ঘেরের চিংড়ি ৩৫ থেকে ৪৫ দিন বয়সে মারা যাচ্ছে। অনেকে ছোট থাকতে বাগদা বিক্রি শুরু করে কোন রকমে পোনা ছাড়ার টাকা তুলতে পেরেছে। তবে কিছু ঘের ভালো রয়েছে।
বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলা মৎস্য চাষী সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল বলেন, বর্তমানে বড় সমস্যা ৩৫ থেকে ৪৫ দিন বয়সের বাগদা মারা যাচ্ছে। এবছর অধিকাংশ ঘেরের প্রথম দফার চিংড়ি দেড় ইঞ্চি সাইজের হওয়ার পরে মারা গেছে। এখন কিছুটা ভালো থাকলেও মরা বন্ধ হয়নি। একবার কোন ঘেরে বাগদা মরা শুরু করলে পাশ্ববর্তী ঘেরগুলোও আক্রান্ত হয়। আর ঘেরের পরিবেশ ঠিক করতে প্রায় দুই থেকে তিন মাস লাগে। তবে দ্বিতীয়বার মারা গেলে চাষির ক্ষতির অন্ত থাকেনা।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় চিংড়ির চাহিদায় রদবদল, জনপ্রিয় হচ্ছে ভেনামি চিংড়ি
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে, খুলনা জেলায় ২০ হাজার ৪৩০ টি বাগদা চাষের ঘের রয়েছে। যার মোট আয়তন ৩২ হাজার ৯৯৮ হেক্টর। সাতক্ষীরা জেলায় ৬৬ হাজার ৫৯৭টি বাগদা চাষের ঘের রয়েছে। যার মোট আয়তন ৭৮ হাজার ২৪০ হেক্টর।
খুলনার কয়রার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুর হক বলেন, সম্প্রতি কোথাও কোথাও ইএমএস (আর্লি মর্টালিটি সিনড্রম) দেখা দিচ্ছে। এর ফলে ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে মাছ মারা যায়। ভিব্রিও প্যারাহিমোলাইটিক্যাস ও ভিব্রিও হার্বি নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এটি দেখা দেয়। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেও সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত প্রতিরোধে ঘেরের জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারপাশে নেট ব্যবহার করতে হবে। সব সময় ৩ থেকে ৫ ফুট পানি ধরে রাখতে অবশ্যই গভীরতা বাড়াতে হবে। এছাড়া ভাইরাসমুক্ত পিসিএফ পোনা ছাড়ার পাশাপাশি গুড এ্যাকোয়া কালচার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, ঘেরগুলোতে পানির গভীরতা না থাকায় অতিরিক্ত গরমে পানি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অক্সিজেন ঘাটতি হচ্ছে। এছাড়া ঘেরগুলোর ম্যানেজমেন্ট চিংড়ি চাষের উপযোগী নয়। চিংড়ি চাষীদের করণীয় সম্পর্কে আমাদের পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
তবে ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যাম্পল টেষ্ট করা হয়নি। পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব হবে না।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বলেন, ল্যাবে নমুনা পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত প্রকৃত কারণ বলা যাবে না। তবে অতিরিক্ত গরমে পরিবেশগত সমস্যায় বাগদা মারা যাচ্ছে। এছাড়া রোগেও মারা যেতে পারে। এক্ষেত্রে গভীরতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: অবশেষে বাণিজ্যিকভাবে ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমতি দিল সরকার
মাগুরায় উচ্চ তাপমাত্রা, বৃষ্টির অভাবে লাভজনক লিচু উৎপাদন হুমকির মুখে
মাগুরা জেলার সর্বত্র তীব্র তাপদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে লিচু, আমসহ বিভিন্ন ফলের গুটি। সপ্তাহজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে সারাদেশ। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড তাপদাহে ক্ষতি হচ্ছে ফসলি জমির।
গ্রীষ্ম মৌসুমে মাগুরা সদর উপজেলার ২০ গ্রামের উৎপাদিত লিচু সারাদেশে বেশ জনপ্রিয়। উপজেলার হাজরাপুর, মিঠাপুর, হাজীপুর, রাঘবদাইড়, শিবরামরামপুর, মির্জাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে আবাদ হওয়া লিচু প্রতিবছর প্রায় ১০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়।
এ সময় মাগুরা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়তদাররা লিচু কিনে তা বিক্রি করে ধাকে। কিন্তু এবার অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহের ফলে বাগান থেকেই লিচুর গুটি লাল হয়ে ঝরে যাচ্ছে। এখন লিচু একটু বড় হতে শুরু করেছে। এ সময় যদি একটু বৃষ্টি হয় তাহলে লিচুর ভালো ফলন হবে বলে জানিয়েছেন লিচুর বাগান মালিকরা।
মাগুরা সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের লিচু চাষি রাজা হোসেন বলেন যে তার ৪০০ লিচু গাছ রয়েছে। ফল (গুটি) আসা শুরু করলেই সে গাছের পরিচর্যা করতে থাকেন। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্প্রে নিয়মিত করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সেচের ব্যবস্থা করে চেষ্টা করছেন লিচু রক্ষার।
তবে তীব্র তাপদাহের ফলে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বর্তমানে লিচু লাল হয়ে ঝরে পড়ছে তা দেখে আরও ভেঙে পড়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: বাম্পার ফলনের আশা সোনারগাঁও লিচু চাষিদের
হিটস্ট্রোকে মরছে মুরগি, কুড়িগ্রামে মুরগির খামারে সর্বনাশ
কুড়িগ্রামে চলমান তাপপ্রবাহে পোল্ট্রি খামার শিল্পে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে এবং খামারিরা লোকসান মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
তারা দাবি করছে, বৈদ্যুতিক পাখা দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রা জনিত পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোত্তম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, অবিরাম বিদ্যুৎ বিভ্রাট তাদের অকেজো করে দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের একটি খামারে গত চার দিনে হিটস্ট্রোকে অন্তত ৩০টি মুরগির মৃত্যু হয়েছে।
খামারি শাহিনুর রহমান বর্তমানে এক হাজার ব্রয়লার মুরগি পালন করছেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারজাত করার কথা রয়েছে। তবে প্রতিদিন মুরগি মারা যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
অন্যান্য কৃষকদের কাছ থেকেও একই রকম খবর এসেছে। সদরের হরিশ্বর কালোয়া গ্রামের খামারি মেহেদী হাসান জানান, গত দুই দিনে তার খামারে হিট স্ট্রোকে ১৫টি মুরগি মারা গেছে।
তিনি বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্যানগুলো কাজ করছে না, মুরগি সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
খামারিরা বলছেন, শুধু হিটস্ট্রোকই নয়, গরমের কারণে ব্রয়লার মুরগির ডায়রিয়া হয়েছে এবং তাদের মৃত্যু হচ্ছে।
ওষুধ দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান তারা।
হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে খামারের ছাদ ভেজাতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
তবে গ্রীষ্মে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়লেও কৃষকরা এখনো এ ধরনের সমস্যার বিষয়ে অধিদপ্তরের দ্বারস্থ হননি। কীভাবে হিটস্ট্রোক এড়ানো যায় সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বিভাগটি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রচারণা চালাচ্ছে।
জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯টি উপজেলায় ১,৪৩২টি লেয়ার, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির খামার রয়েছে, যার মধ্যে ১৭৪টি নিবন্ধিত ব্রয়লার মুরগির খামার এবং এক হাজার ১৯টি অনিবন্ধিত খামার রয়েছে।
খুলনায় তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন
দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। স্থানীয়রা জানান, সারাদিন কাজ শেষে রাতে বাড়িতে ফিরে শান্তি পাচ্ছে না কেউই। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে লোডশেডিং। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে খুলনার মানুষের।
উল্লেখ্য, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) সংস্থাটির সদর দপ্তর খুলনায়।
ওজোপাডিকোর লোড ডেসপাস সেন্টার থেকে জানা গেছে, শনিবার পিক আওয়ারে ২১ জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৮০ মেগাওয়াট, সরবরাহ ছিল ৬১৫ মেগাওয়াট, অর্থাৎ লোডশেডিং ছিল ৬৫ মেগাওয়াট। রবিবার বিকাল ৩টায় ২১ জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৬৯ মেগাওয়াট, সরবরাহ ছিল ৬০৬ মেগাওয়াট, অর্থাৎ লোডশেডিং ছিল ৬৩ মেগাওয়াট। রবিবার রাতে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিলো অন্যান্য দিনের চাইতে বেশি।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত এক মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ে আবাসিক এলাকার ১০টি ফিডারে প্রায় এক ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়। সেই হিসেবে গত দুই রাতে নগরীর অধিকাংশ এলাকাতেই কয়েক দফায় লোডশেডিং ছিলো।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে লোডশেডিং: সরকারের পক্ষে অবস্থান পাক জ্বালানি মন্ত্রীর
ওজোপাডিকোর তথ্যের মিল পাওয়া গেছে সামাজিক মাধ্যমে। রবিবার রাতভর ফেসবুক জুড়ে ছিল বিদ্যুৎহীনতার হাহাকার। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ের কষ্ট তীব্র ক্ষোভ হিসেবে ভেসে ওঠে মুঠোফোনের পর্দায়।
আল আমিন তালুকদার প্রিন্স নামে একজন লিখেছেন, রাত ৩টা বাজে। আশেপাশে শুধু শিশুদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে। সংবাদ কর্মী বশির হোসেন লিখেছেন, সন্ধ্যা থেকে পাঁচবার লোডশেডিং। এক ঘণ্টার পর এসে পাঁচ মিনিটও থাকল না। মাফ করো আল্লাহ।
সাংবাদিক রাশিদুল ইসলাম লিখেছেন, মধ্য রাতেও বিদ্যুৎবিহীন দেশ।
নগরীর শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা আরমান হোসেন জানান, সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত চারবার বিদ্যুৎ গিয়েছে।
ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তাদেরকে কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে কারণে তারা লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে খুলনায় ২৩ বছরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রবিবার (১৬ এপ্রিল) খুলনায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। প্রচণ্ড রোদে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠছেন।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। রবিবার (১৬ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন এই দুই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর খুলনায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাটের মোংলায় ৪১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরীর বাগমারা এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক সিদ্দিক মোল্লা বলেন, রোদে মনে হচ্ছে চামড়া জ্বলে যাচ্ছে। অসহ্য গরম। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি এ জন্য তাই নামতে হচ্ছে। তবে গরমের কারণে সেই অনুযায়ী যাত্রী নেই। দুপুরে রোদের তাপ অনেক বেশি থাকে, তখন ছায়া জায়গায় বিশ্রাম নেই। আজকে অন্যান্য দিনের চেয়ে গরম অনেক বেশি।
খালিশপুর নয়াবাটি এলাকার বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম বলেন, এই মাসে গরম বেড়েছে। রমযানের শুরুতে এমন গরম ছিল না। গরমের কারণে রাস্তায় বের হলে ছাতা ব্যবহার করতে হচ্ছে। আর ঘরে গেলে বিদ্যুৎ থাকছে না। শুধু দিনে নয়, মধ্যরাতেও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এই গরমে ঘন ঘন বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
ফুলতলা উপজেলার দামুদর গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, অসহনীয় গরম, সঙ্গে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন বৃষ্টি হয়।
এদিকে গরমে বেড়েছে হাতপাখার কদর। বিভিন্ন দোকানে হাতপাখা কিনতে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। নগরীর হাউজিং বাজারের দোকানি মুসলিমা বেগম বলেন, গত কয়েকদিন গরম বেশি থাকায় হাতপাখার বিক্রি বেড়েছে। প্রতিপিছ হাতপাখা ৩০ টাকায় বিক্রি করছি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সবুজ আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড গরম। গরমের সঙ্গে বিদ্যুৎও থাকছে না। ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গরমে একটু প্রশান্তির জন্য আজ ৯০ টাকা দিয়ে তিনটি হাতপাখা কিনেছি।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, খুলনা বিভাগে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। রবিবার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আরও দুই থেকে তিনদিন তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর খুলনায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিংয়ে ভুগছে ঢাকা, মোমবাতি কারিগরদের মুখে হাসি
বাংলাদেশের একটি জাতীয় হাইড্রোজেন কৌশল প্রয়োজন: অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ড. নওশাদ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ড. নওশাদ বলেছেন, ক্লিন হাইড্রোজেন সম্ভাবনা অন্বেষণে এবং এই বিশেষ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে বাংলাদেশের একটি ‘জাতীয় হাইড্রোজেন কৌশল’ থাকা দরকার।
অস্ট্রেলিয়া সরকারের কমনওয়েলথ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা সংস্থা (সিএসআইআরও)-এর প্রধান বিজ্ঞানী ড. নওশাদ হক মেলবোর্নে তার অফিসে ইউএনবিকে বলেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশের একটি হাইড্রোজেন কৌশল থাকা উচিত।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৯০টিরও বেশি দেশ হাইড্রোজেন কৌশল নিয়ে কাজ করছে এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো তাদের অনেকেরই আনুষ্ঠানিক হাইড্রোজেন কৌশল রয়েছে।
ড. নওশাদ বলেন, এই কৌশল দেশের জ্বালানি চাহিদা এবং জ্বালানি রপ্তানি, আমদানি ও ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রকৌশলী, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্পখাতে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে হবে। হাইডো্রজেন ইকোনমি একটি সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠতে পারে।’
ড. নওশাদ ‘কূটনীতি ও উন্নয়ন’ এর জন্য বিজ্ঞান ব্যবহারের ওপর জোর দেন এবং বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রযুক্তিগত গবেষণা, উন্নয়ন এবং ক্লিন এনার্জি প্রদর্শনের এক্সপোজার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “সামর্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা একটি চমৎকার হাতিয়ার হতে পারে। বাংলাদেশে ‘জাতীয় হাইড্রোজেন কৌশল’ উন্নয়নের জন্য কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।”
ক্লিন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার জন্য এবং দেশে তা স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, পেশাজীবী ও সাংবাদিকদের অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো যেতে পারে বলেও জানান এই বিজ্ঞানী।
কোনো কার্বন নির্গমন না করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় ৩ গুণ বেশি উচ্চমাত্রার শক্তি ধারণ করায়, ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য হাইড্রোজেন জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা বিলোপের হাতিয়ার হতে পারে। তবুও বর্তমানে ৯৬ শতাংশ হাইড্রোজেন উৎপাদন হয় জীবাশ্ম জ্বালানির মাধ্যমে এবং যা টেকসই নয়।
কেননা হাইড্রোজেন জ্বালানি, পরিবহন ও শিল্প খাতকে ডিকার্বনিজ করতে বিস্তৃত সম্ভাবনাময় একটি উপায়।
ড. নওশাদ বলেন, বাংলাদেশকে জনগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের উপায় খুঁজে বের করে শক্তি ও সামর্থ্য বাড়াতে হবে।
২০১৮ সালে সিএসআইআরও এনার্জিতে যোগ দেন ড. নওশাদ। তিনি সিএসআইআরও’তে 'মাইন টু মেটাল' উৎপাদনের জন্য বেশ কয়েকটি অভিনব প্রযুক্তি এবং ফ্লোশিট তৈরিতে অবদান রেখেছেন।
তিনি বলেন, সাহায্য ও সহযোগিতা অপরিহার্য, কারণ একটি দেশের উদ্ভাবন অন্য দেশে ঠিক একইভাবে কাজ করে না। জ্বালানির চাহিদা, জ্বালানি ব্যবহারের ধরন, ব্যবহার, রপ্তানি ও আমদানির মতো বিষয়গুলো এক্ষেত্রে বিবেচ্য।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সাক্ষরতা বাড়াতে কাজ করছে বিএসইসি: অধ্যাপক শিবলী
তাহিরপুরে বোরো খেতে ভয়াবহ ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ, কৃষকেরা দিশেহারা
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ছোট-বড় বিভিন্ন হাওরে বোরো ধানখেতে ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্রি-২৮ ও ৮১ জাতের ধানে এর প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে। রোগের প্রভাবে ধানে চিটা হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন হাওর পাড়ের কৃষকরা। ধান নষ্ট হওয়ায় সারাবছর খাদ্যের যোগান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাওর পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বছর উপজেলার ছোট-বড় ২৩ টি হাওরে ১৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ হয়েছে হাওরে বেশি।
দিনে গরম ও রাতে ঠাণ্ডা থাকার কারণে ২৮ জাতের ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে কৃষি অফিস জানিয়েছে। ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও এর সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা।
শনিবার সকালে মাটিয়ান হাওর পাড়ের কৃষক নিলু দাস বলেন, মাটিয়ান হাওরে এবার ১১ কিয়ার জমিতে ধান চাষ করেছেন তিনি। এরমধ্যে তিন কিয়ার জমির ব্রি-২৮ ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার। আক্রান্ত তিন কিয়ার জমি থেকে কোনো ধান পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আরও পড়ুন: বরগুনায় বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
একই হাওরে সূর্য্যেরগাঁও গ্রামের বর্গাচাষী কৃষক আবুল কাশেম ২০ কিয়ার জমিতে বিভিন্ন জাতে ধান চাষাবাদ করেন এবার। এর মধ্যে ব্রি-৮১ জাতের ধান ছয় কিয়ার জমিতে চাষাবাদ করেন তিনি।
তিনি জানান, তার রোপিত ব্রি-৮১ জাতের ধান ছয় কিয়ার একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে।
শনির হাওর পাড়ের কৃষক মুক্তার আহমেদ বলেন, বর্তমানে হাওরে ধান পাকার সময়। এসময় ধানের শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু ২৮ ধানেই নয়, সুবর্ণ ধানেও এবার এরোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা কীটনাশক দিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুফল পাননি।
উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, এলাকার অনেক কৃষক আমাদের কাছে পরামর্শ চাচ্ছেন। আমরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। অনেকে উপকৃত হচ্ছেন, আবার অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন না।
বালিজুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আজাদ হোসেন জানান, তিনি নিজে হাওর ঘুরে দেখেছেন অনেকের ব্রি-২৮ ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি কৃষি বিভাগের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান-উদ-দৌলা বলেন, ব্রি-২৮ ধান রোপণ না করার জন্য আমরা হাওর পাড়ের কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে কৃষকরা তা মানছে না। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছেন এবং কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, হাওরের কিছু কৃষি জমিতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের বিষয়টি তিনি দেখেছেন। এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরাঞ্চলে শুরু হয়েছে তরমুজের চাষ। গত বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ শুরু হলেও এবার এগিয়ে এসেছেন অনেক কৃষক। ফলনও হয়েছে আশানুরূপ।
এ বছর আগাম বন্যা না হলে দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন কৃষকরা। তবে বাজার বিপণনে সরকার এগিয়ে আসলে এবং আর্থিক ব্যাংকগুলো সহজ কিস্তিতে ঋণ ব্যবস্থা করলে চরের বালু মাটিতে ফলবে সোনা; পাল্টে যাবে চরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা – এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ১৬টি নদ-নদীতে রয়েছে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক চর। আবাদযোগ্য জমি রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৩৬৮টি চরে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। এ সব চরাঞ্চলে ভুট্টা, তরমুজ, মিষ্টি কুমড়া, শসা ও মরিচ চাষ করা হয়েছে।
গত বছর জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চর বাগুয়া গ্রামে ৫০ একর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়। আগাম বন্যায় ৪০ একর ফসল নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপরও দমিয়ে যাননি কৃষকরা। এ বছর চরে ৩৪ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। তরমুজ উত্তোলনও শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। ফলে গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে এবার ভালো লাভের আশা করছেন তারা।
তবে চরে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হল বাজার বিপণন ব্যবস্থাপনা। এছাড়াও আর্থিক ব্যাংকগুলো সাধারণ কৃষককে ঋণ প্রদান না করায় ইচ্ছে থাকা সত্বেও অনেক কৃষক এসব ফসল চাষাবাদ করতে না পেরে জমি ফেলে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
বাগুয়া চরের দছিম উদ্দিন বলেন, ‘এই চরে তিনজন উদ্যোক্তা কৃষক ৪০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ পাওয়ায় তারা ব্যাপক আকারে চাষ করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের চাষাবাদ দেখে এখানকার অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠলেও অর্থনৈতিক কারণে তারা এগিয়ে আসতে পারছে না।’
তরমুজ চাষি আব্দুর সবুর জানান, গতবছর পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ করলেও আগাম বন্যায় তরমুজ খেত ভেসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এ বছর আগাম ১৪ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার ছয় থেকে সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ২০ হাজার তরমুজ উঠাতে পারব। এতে আমার ছয় থেকে সাত লাখ টাকা বাড়তি আয় হবে। তবে বড় সমস্যার জায়গা হলো তরমুজ বিপণন। পাইকাররা এখানে এসে কমমূল্যে তরমুজ কিনে নিয়ে যায়। আমরা শহরে নিয়ে গিয়ে তরমুজ বিক্রি করতে পারলে আরও বেশি লাভবান হতাম। এতে আরও কৃষক তরমুজ চাষে এগিয়ে আসতো।
এই কৃষক আরও জানান, পৌষ মাসের শুরুতে তরমুজের বীজ বপন করতে হবে। চার মাস পর চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে তরমুজ উত্তোলন করা যায়। তরমুজ চাষে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বালু জমিতে ১০ ইঞ্চি বাই ১০ ইঞ্চি স্কোয়ারে দেড় ফুট গর্ত করে গর্তের মধ্যে কিছু দোআঁশ মাটি, গোবর সার ও ডিএসপি দিতে হয়। প্রতি গর্তে ৪০ গ্রাম দিলেই হবে। এভাবে এক সপ্তাহ রাখার পর একটি গর্তে তিনটি করে বীজ বপন করা হয়। এছাড়াও নিয়মিতভাবে পোকামাকড় ও ইঁদুরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পরিচর্চা ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে হাতিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মাস্টার জানান, বর্তমানে চরাঞ্চলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা বিভিন্ন কৃষিজ পণ্য চাষাবাদে আগহী হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বাকি কৃষকরা এগিয়ে আসতে পারছে। এক্ষেত্রে আর্থিক ব্যাংক, জিও ও এনজিওরা এগিয়ে আসলে চরের পতিত জমিতে সোনা ফলানো সম্ভব।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শষ্য) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, গত বছর থেকে এ জেলায় তরমুজের আবাদ শুরু হয়েছে। এ বছর ২২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। বিপণনে কৃষকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য চরাঞ্চলে কালেকশন সেন্টার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে রমজান উপলক্ষে বাজারে আগাম তরমুজ, দাম আকাশচুম্বী
খুলনায় বৃষ্টিতে ১০ কোটি টাকার তরমুজ নষ্ট
মাঠ ভরা তরমুজ নিয়ে খুলনার কৃষকদের কান্নার সেই দৃশ্য এখনও ঝাপসা হয়নি। দাম কমে যাওয়ায় গেল বছর খেতেই নষ্ট হয়েছে কোটি কোটি টাকার তরমুজ। লোকসানের ধাক্কা কাটাতে এবারও আশার বীজ বুনেছিলেন কৃষকেরা।
তরমুজের ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু ভারি বর্ষণ এবং দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা ভর করেছে কৃষকদের মনে।
গত ২১ মার্চ একদিনের শিলা বৃষ্টিতেই নষ্ট হয়েছে ২০৩ হেক্টর জমির প্রায় ১০ কোটি টাকার তরমুজ।
তাই এখন মাঠ ভরা তরমুজ দেখেও স্বস্তি পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
স্থানীয় কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সালে খুলনা জেলায় তরমুজ চাষ হয়েছিল মাত্র ৪০৭ হেক্টর জমিতে। অল্প সময়ে স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভের আশায় গত কয়েকবছর ধরে খুলনার উপকূলীয় উপজেলাগুলোর কৃষকরা তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন। দিন দিন তরমুজ চাষের পরিমাণও বাড়ছিলো খুলনায়।
২০২১ সালে খুলনায় তরমুজ চাষ হয়েছিল সাত হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে।
বিপুল পরিমাণ মুনাফা হওয়ায় ২০২২ সালে রেকর্ড ১৩ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়।
কিন্তু অতিরিক্ত জমিতে দেরিতে চাষ শুরুই কাল হয়ে দাড়ায় কৃষকদের জন্য। তরমুজ বাজারে আসতে আসতে ঈদ চলে আসে। শুরু হয় বর্ষা মৌসুম। রাতারাতি দাম তলানিতে নেমে আসে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিন দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন পাকা ধান বিনষ্টের আশঙ্কা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গেলো আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষীরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরোর আবাদ করেছেন। এখন জেলা জুড়ে ফসলের মাঠে মাঠে শুধু সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, সেচ, সার সংকট না থাকাও পোকামাকড়ের তেমন উপদ্রব না হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার বোরোর ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার চাষী মুঞ্জুর আলী বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এ বছর বীজ ও সারের কোনো সংকট হয়নি। তবে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। জমিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রোগবালাই অনেক কম। আবহাওয়া ভালো আছে, তাপমাত্রা ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আশা করা যায় ভলো ফলন হবে।
আরও পড়ুন: আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
আতাহার এলাকার আরেক বেরো চাষী আকবর আলী বলেন, গেলো আমনে দর মোটামুটি ভালো পেয়েছিলাম। এ কারণে এবার সাত বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছি। এবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় সেচের কোনো সমস্যা হয়নি। পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনভাবে নাই। কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। তবে কীটনাশক ও বালাইনাশকের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। এখন ধানের অবস্থা খুব ভালো। কিছু কিছু জমিতে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে এ এলাকার সব জমিতে পুরোপুরি শীষ ফুটে যাবে।
দক্ষিণশহর এলাকার চাষী আবেদ আলী বলেন, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান গাছের অবস্থা ভালো আছে। জমিতে এসে ধান গাছ দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। পোকামাকড় তুলনামূলকভাবে এবার অনেক কম। দুই বার কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। বর্তমানে জমিতে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এরকম আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করা যায় ভালো ফলন পাব।
নাচোল উপজেলার নেজমপুর এলাকার চাষী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছেন। বর্তমানে শীষ আসতে শুরু করেছে। ধান গাছের চেহারা বেশ ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। এমনটি শেষ পর্যন্ত থাকলে ভালো ফলন আশা করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারজানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪০৫ হেক্টর বেশি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার জেলায় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন বোরো চাল উৎপাদিত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন: খরা: খুলনায় আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা