বিশেষ-সংবাদ
মাগুরায় হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি, চোখে পড়ে না বাসা
কালের বিবর্তনে মাগুরা থেকে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি ও তার সুদর্শন বাসা। এক সময় এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগাত এবং আত্মনির্ভশীল হতে উৎসাহ দিত। কিন্তু কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এই পাখি আমরা হারাতে বসেছি।
একসময় গ্রাম-গঞ্জের তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে এরা বাসা বেঁধে থাকতো। প্রকৃতি থেকে তাল আর খেজুর গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাবুই পাখিও হারিয়ে যেতে বসেছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় অতিথি পাখির অভয়ারণ্য এখন মহাদেবপুরের কুঞ্জবন
এক সময় মাগুরায় তিন প্রজাতির বাবুই পাখি দেখা যেত। দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই। তবে বাংলা ও দাগি বাবুই এখন বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কিছু দেশি বাবুই দেখা যায়, তবে বাসা তৈরির জন্য বাবুই পাখির প্রথম পছন্দ তাল গাছ। তাল গাছ প্রায় বিলুপ্তর সাথে সাথে দেশি বাবুই পাখি প্রায় বিলুপ্ত।
আরও পড়ুন: বাঁশি ব্যবহার করে অতিথি পাখি শিকার!
বাবুই পাখি নারিকেল, সুপারি ও খেজুর গাছ, খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবন দিয়ে বাসা বাঁধে। বাসার গঠনও বেশ জটিল, তবে আকৃতি খুব সুন্দর। বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি মজবুত।
আরও পড়ুন: অতিথি পাখিতে মুখরিত কুমিল্লার পুকুর আর দিঘিগুলো
বাসা তৈরির শুরুতেই বাসায় দুটি নিম্নমুখী গর্ত রাখে। অর্ধেক বাসা বাঁধার পর তার সঙ্গীকে খোঁজে। স্ত্রী বাবুইটির পছন্দ হলে মাত্র ৪ দিনে বাসা বাঁধার কাজ শেষ করে। বাসার নিম্নমুখী একটি গর্ত বন্ধ করে ডিম রাখার জায়গা করে নেয়। অন্যটি খোলা রাখে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য। বাসার ভেতরে-বাইরে কাদা লাগিয়ে রাখে। ফলে প্রবল ঝড়ে বা বাতাসেও টিকে থাকে বাসা। রাতে বাসা আলোকিত করার জন্য জোনাকি পোকা ধরে এনে রাখে। সাথী বানানোর জন্য কত কিছুই না করে পুরুষ বাবুই। স্ত্রী বাবুইকে নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে খাল-বিল ও ডোবায় গোসল সেরে ফূর্তিতে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।
সাধারণত মে থেকে আগস্ট বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। একটি পুরুষ পাখির একাধিক বাসা ও পরিবার থাকতে পারে। বাবুই পাখি দুই থেকে চারটি ডিম দেয়। স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। তিন সপ্তাহ পর বাচ্চা উড়ে যায়।
এরা মূলত বীজভোজী পাখি। তাই এদের ঠোঁটের আকৃতি সহজে বীজ ভক্ষণের উপযোগী চোঙাকার। আর ঠোঁটের গোড়ার দিকটা মোটা। এরা সাধারণত খুঁটে খুঁটে বিভিন্ন ধরনের বীজ, ধান, ভাত, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু-রেণু ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে।
মাগুরার কয়েকজন অভিজ্ঞ লোক জানান, আগে সোনালি ও সবুজ রঙের বাবুই পাখির কিচির মিচির ডাক শোনা যেত সন্ধ্যা ও সকালে। এ পাখি যেমন শিল্পী; তেমন ঘুম জাগানিয়া।বাবুই চমৎকার সুরে মানুষের ঘুম ভাঙাতো। এখন সেভাবে আর বড় তাল আর নারিকেল গাছ দেখা যায় না। বাসা বাঁধার জায়গা না থাকায় এ পাখি বংশ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়না, বংশ রক্ষার্থে পারি জমিয়েছে অন্যত্র। সরকারের কৃষি ও বন বিভাগের উদ্যোগে পরিবেশ ও পাখি সংরক্ষণের জন্য তাল, নারিকেল গাছ রোপণ করা জরুরি। এছাড়াও অবৈধভাবে এ পাখি শিকার করেন অনেকে, যা এই পাখি বিলুপ্ত হওয়ার আরেকটি প্রধান কারণ।
মাগুরার এলাকাবাসীরা জানান, ‘এখন কৃষকরা ক্ষেতে ও বীজতলায় কীটনাশক ব্যবহার করায় বাবুই পাখি মারা যায়। বংশ রক্ষার্থে তারা এলাকা ত্যাগ করতে শুরু করেছে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বাবুই পাখির বংশ বিস্তারে তাল, খেজুর ও নারকেল গাছ রোপণ করতে হবে। সেই সাথে কীটনাশকের অপব্যবহার রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
জেলায় ব্যাপকভাবে তালবীজ রেপন করতে হবে। এসকল বীজ যখন তাল গাছে পরিনত হবে। তখন বাবুই পাখি আবাসস্থল তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া সমাজের সকলের উচিত জমির চারপাশে বা বাড়ির আঙ্গিনায় বেশি করে খেজুর ও নারিকেল গাছ রোপণ করা। গাছগুলো রোপণ করলে একদিকে যেমন আর্থিক সহায়তা হবে অন্যদিকে শরীরের পুষ্টি চাহিদা যোগাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকবে।
চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজারে ভ্রমণপিপাসু মানুষের ঢল
চাঁদপুর জেলা শহরের বড় স্টেশন মোলহেড- এ অবস্থিত ‘চাঁদপুর পযর্টন কেন্দ্রের’ পাশেই ত্রিনদীর ( মেঘনা, পদ্মা ও ডাকাতিয়া) মিলনস্থল, যা অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সবার কাছে। ত্রিনদীর এই মোহনায় স্থলের ঠিক প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে জেগে উঠেছে একটি আধা কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বালু চর, যা মিনি কক্সবাজার নামে খ্যাতি অজর্ন করেছে গত ৫-৬ বছর যাবৎ।
প্রতিদিন শহর ও দূর দূরান্ত থেকে এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এবং প্রচন্ড গরমে গায়ে একটু মুক্ত বাতাস লাগানোর জন্য শত শত লোকজন এখানে আসেন।
পযর্টন কেন্দ্রে আসলে মন চাইবে এই চরে যেতে। এই চর যেনো সবাইকে ডাকে। এতে নদী ভ্রমণের পাশাপাশি মিনি কক্সবাজার বাজারও দেখা হয়। সতেজ হয় বিধ্বস্ত মন-প্রাণ।
আরও পড়ুন: ভ্রমণপিপাসু মানুষে মুখরিত মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্র
প্রবীণ মাঝি-মাল্লারা জানান, বিশাল মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে ওই চরে যেতে নৌকায় ২০ মিনিট সময় লাগে। নদী পাড়ি দিতে জনপ্রতি আসা যাওয়া বাবদ গুনতে হয় ১০০ টাকা। এখানে ২০-২২ টি নৌকা সবসময় প্রস্তুত থাকে। ইঞ্জিন চালিত এক নৌকায় ২০ জন হলেই নৌকা ছেড়ে যায় । বড় স্টেশন মোলহেড থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এ সুপ্রশস্ত বালুচর- যাকে সবাই বলে মিনি কক্সবাজার। কক্সবাজারের ছোঁয়াটা এখানে আসলে যেনো খানিকটা হলেও উপলব্ধি করা যায়।
শুক্রবার বিকেলে এখানে গিয়ে দেখা যায় প্রায় সবাই পানিতে নেমে পড়েছে, অনেকেই পানিতে নেমে ঢেউয়ের সাথে খেলা করছে, কেউবা সাঁতার কাটছে। অনেকেই আবার ছবি বা ভিডিও করতে ব্যস্ত। কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ যেন একটু বেশি।
কক্সবাজারের আমেজটা এখানে পাওয়া যাচ্ছে এমনটাই জানালেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষক। মিনি কক্সবাজার নাম শুনেই তারা এখানে এসেছেন বলে জানান।
মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাধি দক্ষিণ থেকে আসা লাভলী বেগম (৩৫) জানান, ‘আমি বাবা, বড় বোন, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসেছি। এখানে পানিতে দুষ্টামি করলাম, নদীর পানিতে গোসলও করলাম। খুব ভালো লাগলো।’
আরও পড়ুন: সাভারে ভ্রমণের জায়গাগুলোতে উপচে পড়া ভিড়
হাজারো ভ্রমণপিপাসু মানুষ সকাল বিকেলে এখানে আসছেন। তবে ছুটির দিনে বেশি লোকজন আসে বলে জানান এখানকার মাস্ক বিক্রেতা বজলুর রশিদ (৬০) ও বেলুন-সন পাপড়িওয়ালা সলেমান মিয়া (১৬)। একই কথা জানান কাঁচা আম, কালোজাম, শরবত, কোল্ড ড্রিংকস, চা-সিগারেট বিক্রি করা বিভিন্ন ফেরিওয়ালারা।
তবে এখানে কিছু অসুবিধা দেখা গেছে। এখানে নেই কোন নামাজের স্থান, টয়লেট, পানির ব্যবস্থা। তাছাড়া হঠাৎ বৃষ্টি বা ঝড় আসলে কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই। এছাড়াও বালু চরের লাগোয়া পশ্চিম পাশ এলাকাটি অরক্ষিত হওয়ায় বড় বড় বন গজিয়ে উঠেছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, পযর্টন কেন্দ্রে ও মিনি কক্সবাজারে কয়েকজনের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি। তাছাড়া পর্যটন কেন্দ্রের আশপাশে খাবারের ও অন্যন্য দোকানগুলোতেও স্বাস্থ্য বিধির মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ষাট গম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবনের পর্যটন এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক, (চাঁদপুর) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) আ: আল মাহমুদ জামান ইউএনবিন সাথে আলাপকালে জানান, ‘মেঘনার পশ্চিম পাড়ে জেগে ওঠা মিনি কক্সবাজার চাঁদপুর শহরের জন্য হুমকী। এরজন্যে মেঘনার স্রোতের পরিবতর্নের কারণে চাঁদপুর শহরে মেঘনার ভাঙন দেখা দিতে পারে। তবে প্রশাসনের মিনি কক্সবাজারের দিকে কোনও নজর নেই। ওখানে একলাখ টাকা খরচ করলে, সেটা পুরোটা পানিতেই চলে যাবে। আসলে চাঁদপুর শহর রক্ষা করা অতীব জরুরী।’
উল্লেখ্য গত বছর সাঁতার কাটতে নেমে কুমিল্লা শহর থেকে আগত এক যুবক মেঘনায় তলিয়ে যায়।
ফরিদপুরের পেঁয়াজের বাজারে হঠাৎ দামের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি
ফরিদপু, ২২ মে (ইউএনবি)- ফরিদপুরে রমজান মাসে পেঁয়াজের বাজারদর ছিল বেশ স্থিতিশীল। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই স্থিতিশীর বাজার দর বাড়তে শুরু করেছে। ক্রেতা-ভোক্তরা বলছেন বাজার তদারকি কমে যাওয়া এবং লকডাউনের কারণেই এমনটি ঘটেছে।
ফরিদপুরের বিভিন্ন হাট-বাজারে ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই আস্তে আস্তে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে বাজারে খুচরা মূল্য কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫৫ টাকা দরে। তবে অধিকাংশ খুচরা দোকানদার ৫০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুন: টিসিবির পণ্য: সাতক্ষীরায় পঁচা পেঁয়াজ না নিলে দেয়া হচ্ছে না তেল, চিনি
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, পাইকারিতে দাম বাড়ায় খুচরায় দাম বেড়েছে। তবে পাইকারি বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ফরিদপুরের পেঁয়াজের অন্যতম বাজার কানাইপুরে শুক্রবার কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা দরে।
ফরিদপুর চেম্বর অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মো: সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘পেঁয়াজের খুচরা বাজারে কেনো দাম বেড়েছে তা বুঝতে পারছি না। তবে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করা হবে। আমরা চাই না কোনও ক্রেতা পণ্য কিনে অসন্তুষ্ট হোক।’
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. হয়রত আলী জানান, পেঁয়াজ উৎপাদনের দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ফরিদপুর। সরকারি হিসাব মতে, চলতি মৌসুমে এই জেলায় ৪০ হাজার ৯৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৫ মে.টন। যা গত বছরের তুলনায় ৮৮ হাজার টন বেশি।
তিনি আরো জানান, ফরিদপুর জেলার নয় উপজেলার মধ্যে পেঁয়াজ চাষের জন্য খ্যাতি রয়েছে সালথা, নগরকান্দা, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, ফরিদপুর সদর, মধুখালী এবং সদরপুর উপজেলা।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ বীজ ফরিদপুরের চাষিদের কাছে ‘কালো সোনা ’
গত মৌসুমে জেলায় পেঁয়াজের আবাদ হয়ে ছিল, ৩৭ হাজার ৬৭৮ হেক্টর, এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল ৫ লক্ষ ৫ হাজার মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে ৪০ হাজার ৯৭ হেক্টোর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৮৯ হাজার ১৮৫ মে.টন।
কেনো হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পেঁয়াজের যে দাম চলছে সেটি স্থিতিশীল থাকলে কৃষক লাভবান হবে, তবে এর চেয়ে বেড়ে গেলে ক্রেতারা সমস্যায় পড়বে। এই কারণেই বাজার তদারকির ওপর জোড় দিতে হবে।’
ফরিদপুরের কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মণ প্রতি পাইকারি পেঁয়াজের দর বেড়েছে গত কয়েক সপ্তাহে তুলনায় ৩’শ থেকে ৪’শ টাকা। এতে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও।
ফরিদপুর শহরের হাজী শরিয়াতুল্লা বাজারের ক্রেতারা জানালেন, রমজানে খুচরা পেঁয়াজ দাম ছিল ২৫ থেকে ২৮ টাকা কেজি, আর এখন সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫টাকা দরে। এটা কেনো হচ্ছে বিষয়টি প্রশাসনের ক্ষতিয়ে দেখার দরকার।
হাজী শরীয়াতুল্লা বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজ পাইকারি মণ প্রতি কিনতে হচ্ছে ১৫ থেকে সাড়ে ১৬শ টাকায়। যা রমজানে ছিলো ১১শ টাকা মণ।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
এইদিকে শহরতলীর কানাইপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানালেন, রমজানে লকডাউন কঠোর থাকায় মানুষ বের হয়েছে, তাই পেঁয়াজের চাহিদা কম থাকায় দামও কম ছিল। কিন্তু এখন মানুষ ঘর থেকে রেব হওয়া শুরু করেছে পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে। এই কারণে দাম বাড়ছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (ডিসি) অতুল সরকার জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা দ্রুতই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবো, প্রয়োজনে বিভিন্ন বাজারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে বাজার দর নিয়ন্ত্রণের পাশা-পাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
তিস্তা সেচ এলাকায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
নীলফামারীসহ তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে সেচের পানি নিশ্চিত করতে ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেয়ায় মানুষের মাঝে ফিরেছে স্বস্তির আশ্বাস। ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হবে এই প্রকল্পের কাজ।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে এই প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।
দীর্ঘদিন থেকে খালগুলো সংস্কার না হওয়ায় সেচ কমান্ডে পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুরের তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা ২৩১ শতাংশ থেকে ২৬৮ শতাংশে উন্নিত হবে। এছাড়া প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৫.২৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলে দাবি নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের। একই সাথে সেচ এলাকায় পরিবেশ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের উন্নতি, জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা, কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির আওতায় ৭৬৬.৩১ কিলোমিটার সেচ খালের ‘ডাইক’ পুনবার্সন ও শক্তিশালী করা হবে। ৭২ কিলোমিটার সেচ পাইপ স্থাপন করা হবে।প্রোটেকশন দেওয়া হবে ১০ দশমিক ০৮ কিলোমিটার ও মেরামত করা হবে ১.০৬ কিলোমিটার। বাইপাস সেচ খাল নির্মাণ করা হবে ৭ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। এছাড়াও ২৭টি কালভার্ট নির্মাণ, ৪টি সেতু নির্মান ও ২৭০ হেক্টর জলাধার পুন:খনন করা হবে।
এছাড়া সাড়ে নয় কিলোমিটারের চ্যানেল পুন:খনন করা হবে। ৬ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা নির্মান, ৫২.২৯ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা মেরামত, ৫৭টি নিকাশ কাঠামো নির্মাণ ও ৩টি মেরামত করা হবে। ২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ও ৬টি রেগুলেটর মেরামত করা হবে। এছাড়াও ১৮টি অনবাসিক ভবন মেরামত ছাড়াও ৮৭ হাজারের বেশি গাছ রোপন করা হবে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে খালগুলো সংস্কার না হওয়ায় সেচ কমান্ডে পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য আমরা তিস্তা এলাকাতে সেচ এলাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করার জন্য আমরা এই প্রকল্পটি পাঠাই। গত ৪ মে প্রধানমন্ত্রী একনেক এ এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়।
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রকল্প এলাকার এক লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৫.২৭ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা মনে করি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতি বছরে এক হাজার কোটি টাকার বেশি ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে।’
সরকারি বনায়ন ধ্বংসের অপচেষ্টা, পদক্ষেপ নিচ্ছে না বনবিভাগ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের চরাঞ্চলে সরকারি খালে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এর ফলে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে সরকারি বনায়নের গাছগুলো।
এদিকে সরকারি বনায়ন রক্ষায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
জানা যায়, উপজেলা পদ্মা নদীর চর হরিরামপুর ইউনিয়নের চর শালেপুর চরাঞ্চলে ১০৮ একর জমির ওপর সরকারি বনায়ন করেছে বন বিভাগ। বনায়ন সংলগ্ন একটি খালের মধ্যে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে গত একমাস যাবৎ দিনরাত বালু উত্তোলন করছেন ওই চরের বাসিন্দা প্রভাবশালী ফেরদৌস খান (৪৮)।
বনায়ন সংলগ্ন এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর কড়াল স্রোতে উপজেলার বৃহৎ সরকারি বনায়নটি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবৎ ওই প্রভাবশালী সরকারি বনায়ন ঘেষে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রমরমা বাণিজ্য করলেও স্থানীয়রা তার ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না।
উপজেলা বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে উপজেলার চরশালেপুর মৌজায় ১০৮ একর খাস জমির উপর বৃহৎ সামাজিক বনায়নটি গড়ে ওঠে। উক্ত বাগানে মোট ৯০ হাজার বনজ বৃক্ষ রোপন করা হয়। এসব বৃক্ষের মধ্যে আকাশ মনি, শিশু গাছ, রেন্ডি কড়াই ও বাবলা বৃক্ষ রয়েছে।
গত ১৫ বছরে চরাঞ্চলের উর্বর ভূমিতে বেশিরভাগ বনজ বৃক্ষগুলো ভারী হয়ে ওঠেছে। কিন্তু পদ্মা নদীর চরাঞ্চলে বনায়নটি গড়ার ফলে প্রতি বছর স্থানীয় জেলেরা এবং গৃহস্থ্যরা উক্ত বনায়নের ডালপালা কেটে উজার করলেও কেউ তদারকি করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি ওই চরের প্রভাবশালী ফেরদৌস খান বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বনায়নটি ধ্বংসের পাঁয়তারায় মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ করে এলাকাবাসী।
চরের বাসিন্দা আসলাম শেখ বলেন, 'চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জায়গা জমি ওই ড্রেজার মালিকের দখলে। ফেরদৌস খানের এসকল অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে আমরা আর এই চরে বসবাস করতে পারব না। তাই সকলেই মুখ বুঝে মেনে নিয়েছি।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চরাঞ্চলের এক বাসিন্দা বলেন, ওই প্রভাবশালী চরের সরকারি জমি দখল করে রেখেছে। আমরা ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করি না। এর আগে এক ব্যাক্তি প্রতিবাদ করায় তাকে মারপিট করেছিল প্রভাবশালী ফেরদৌস খান। এ কারণে এখন আর কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না।
তিনি বলেন, যেভাবে সরকারি বনায়নের পাশে খালের মধ্যে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তাতে বর্ষা মৌসুমে বনায়নের অনেকাংশই ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যাবে। বন বিভাগের লোকজন এখানে না আসায় আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ফেরদৌস খান।
এ ব্যাপারে ড্রেজার মালিক ফেরদৌস খান বলেন, ‘সরকারি বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে আমাদের নিজস্ব জায়গায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু মাটির ব্যবসা করছি, তাতে কারো কোনো আপত্তি থাকার কথা না।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ বনায়নটি পদ্মা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলের বিস্তৃর্ণ ভূমিতে গড়ে উঠার কারণে উপজেলার সামাজিক বনায়ন বিভাগের কেউ সেটি তদারকি করতে যান না। ফলে ওই এলাকার প্রভাবশালীরা উন্মুক্ত সামাজিক বনায়নটি নিজেদের প্রয়োজনে উজার করে চলেছেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, সরকারি বনায়ন ঘেষে খালের মধ্যে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে সেখানে আমি কি করব?
তিনি বলেন, 'ওই সরকারি বনায়নে আমি একবার গিয়েছিলাম। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় আর যাওয়া হয়নি।'
মীরেরডাঙ্গা সংক্রমক ব্যাধি হাসপাতাল নিজেই এখন অসুস্থ!
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র মীরেরডাঙ্গার সংক্রমক ব্যাধি (আইডি) হাসপাতাল দীর্ঘদিন যাবত নানা সমস্যায় জর্জরিত।
আম্পানের এক বছরেও ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি কয়রাবাসী
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের এক বছরেও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি কয়রাবাসী। প্রলয়ঙ্করী এ ঝড়ের শিকার অনেক এলাকার মানুষ আজো সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে।
ছাগলের সাথে বসবাস আম্পানে বিধ্বস্ত খাদিজার
এক সময় খাদিজাদের ঘর ছিল, ছিল জমিও। ৪৫ বছর আগে আবুল হোসেন শেখের সাথে তার বিয়ে হয়। তখন তার স্বামীর অনেক জায়গা জমি ছিল। প্রতি বছর নদী ভাঙ্গনে একটু একটু করে নদীগর্ভে বিলীন হতে থাকে তাদের জমি ও বাড়ি।
নদী ভাঙনের সাথে সাথে তারাও দূরে সরে এসে নতুন করে ঘর তৈরি করে বসবাস করতে থাকে। এক সময়ে শুধু বসতভিটা ছাড়া সব জমিই কপোতাক্ষ নদীর বুকে চলে যায়। কোন রকমে নদীতে মাছ ধরে টানাপোড়নের সংসার চলতে থাকে।
আরও পড়ুন: করোনা ও আম্পানের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান গদখালীর ফুল চাষিরা
এদিকে, তার স্বামী আবুল হোসেন শেখ এক মেয়ে ও এক ছেলেকে রেখে ২০০৮ সালে অন্য একজনকে বিয়ে করে পাড়ি জমায় ভারতে। শুরু হয় খাদিজার একলা চলার জীবন সংগ্রাম।
এরপর নদীতে জাল টেনে কোন দিন ১০০ কোন দিন ১৫০ টাকা আয় করে চলতে থাকে মা, মেয়ে ও ছেলের সংসার। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলায় তার শেষ সম্বল বসত ভিটাও নদী গর্ভে চলে যায়। রাস্তার স্লোভে পুনরায় ঘর বেধে জীবনযুদ্ধে লড়াই চলতে থাকে অভাবের সংসার।
তিনি নদীতে মাছ ধরার পাশাপাশি সেখানে ছাগলও পালতে থাকেন।
আরও পড়ুন: আম্পান: সাতক্ষীরায় ৬ মাসেও দুর্গত এলাকার মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেনি
এদিকে ছেলেও বড় হয়ে অভাবের সংসার ফেলে অন্য জায়গায় চলে যায়।
গেল বছরের আম্পানে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সেই ঝুঁপড়িও পানিতে ভেসে যায়। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় আসবাবপত্র ও ঘর, নিঃস্ব হয়ে যান তিনি। সেখানে ঘর বাধার জায়গা না পেয়ে সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কয়রা খালের গোড়ায় রাস্তার স্লোভে ছোট ঝুঁপড়ি বেধে কোন রকমে বসবাস করছেন। সেখানে চৌকির উপরে থাকেন তিনি আর চৌকির নিচে থাকে তার পালিত ৮ থেকে ১০টি ছাগল।
কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের কয়রা গোড়ায় ঝুপড়িতে বসবাসকারী খাদিজার সাথে স্বাক্ষাতকালে এসব কথা জানালেন তিনি।
৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল গফ্ফার বলেন, আমি তাকে চিনি। তারা খুবই অসহায়। কোন জায়গা জমি নেই। আম্পানের পরে তাদেরকে কিছু খাদ্যসামগ্রী দেয়া হয়েছিল। এছাড়া তেমন কোন সহায়তা তাকে করা হয়নি। তবে এনজিও থেকে কিছু সহায়তা পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের যে ঘর দিচ্ছেন সেই তালিকায় তার নাম রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তিনিও পাবেন। আমার ওয়ার্ডের ৪২ জনের নাম পাঠানো আছে। এর মধ্যে লটারির মাধ্যমে সাত জনকে ঘর দেয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য লটারি করায় তার চেয়ে স্বাবলম্বীরাও ঘর পাচ্ছেন।’
নানিয়ারচরে ভরাট হয়ে যাওয়া চেঙ্গী খাল খননের কাজ শুরু
মুজিব শতবর্ষের ডেল্টা প্লানের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার অভ্যন্তরে ছোট নদী, খাল, জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ চেঙ্গী খালের পুনঃখনন কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা যায়, ১৯৬০ সনে কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নদীতে বাধ দিয়ে সৃষ্টি হয় বিশাল কৃত্রিম হ্রদ। হ্রদ সৃষ্টির পর গত ৬০ বছরে হ্রদের ডেজিংয়ের কাজ হাতে নেয়া হয়নি। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদ। এতে শুষ্ক মৌসুম এলে নদীর পানি হ্রদ পাওয়ায় চেঙ্গী খালের উপর নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পানি গভীরতা বাড়িয়ে কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা ফেরাতে খাল পুন খননের কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: খাল পুনঃখনন: নতুন করে স্বপ্ন দেখছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৫ হাজার কৃষক
স্থানীয়রা জানান, খালটি খনন করে মাটি পাড়ে রাখা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে পানি বেড়ে খনন করা মাটি আবারও সেই খালে গিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা করে এই খাল খননের কাজ যদি করা হয় তা হলে এলাকাবাসী উপকৃত হবে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে খাল পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ, আদালতে মামলা
ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম বলেন, ২০১৮ সালে রাঙামাটি জেলায় খনন কাজ শুরুর কথা থাকলেও প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও বৈশ্বিক মহামারির কারণে খাল খননের কাজ সময়মতো শুরু করা যায়নি। এবার শুকনো মৌসুমে কাজ শুরু করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই প্রকল্পের আওতায় ৩ কিলোমিটার নানিয়ারচর চেঙ্গী খাল খনন করা হবে।
পরে এসব মাটি ধরে রাখতে গার্ড ওয়াল দিয়ে মাটিগুলোকে সংরক্ষণ করে সেখানে গাছ রোপন করা হবে বলে জানান তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলি রহমান তিন্নি জানান, নানিয়ারচর চেঙ্গী খালে শুষ্ক মৌসুমে নৌযান চলাচল করতে পারতো না এখন খননেরে পর কিছুটা হলেও নৌযান চলাচল করতে পারবে।
এতে এলাকায় উৎপাদিত পণ্য আনা-নেয়াসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে। আর নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসন চেঙ্গী খাল খননের কাজে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: খরা মোকাবেলায় নাটোরে সরকারি জলাশয় পুনঃখনন
রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ওবায়েদুল হক বলেন, রাঙামাটি জেলায় সর্বমোট প্রতিরক্ষা ও খাল খননের কাজ চলমান রয়েছে। যার আনুমানিক ব্যায় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। শুষ্ক মৌসুমে মানুষের যে দুর্ভোগ এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য চেঙ্গী খালটি খনন করা হচ্ছে। এতে করে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা হবে। তবে নদীর উপর দুবন্ত খাল তাই ২-৩ বছর পর পর খালটি খনন করতে হবে। আর চলতি শুষ্ক মৌসুমে চেঙ্গী খাল পুন খননের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।
নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, ‘চেঙ্গী খাল খননের কারণে স্থানীয় এলাকাবাসীরা এখন কিছুটা হলেও সুবিধা ভোগ করবে।’
অ্যানিহিলেশন: বাংলদেশের প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেমের ইতিবৃত্ত
আপনি যদি একজন গেম প্রিয় হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এতদিনে জেনে গেছেন বাংলাদেশের তৈরী প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেম অ্যানিহিলেশন এর কথা। গত ৫ জানুয়ারি গেমটির একটি টিজার প্রকাশের পর থেকে অনলাইন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় গেমটি। রাজধানী ঢাকা সহ বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলগুলো মূল লোকেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গেমটিতে।
তবে সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হলো, গেমটির একটি প্রধান চরিত্র হিসেবে ফিচার করা হয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা জগতের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহকে। ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার গেমটির প্রধান ডেভেলপার তরুণ গেমার ও প্রোগ্রামার সিয়াম হাসান উদয়।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী পাওয়া যাচ্ছে সুপার অ্যামোলেড গেমিং ফোন রিয়েলমি ৮
চলুন, বাংলাদেশের গেম শিল্পে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা এই গেমটির ব্যাপারে আরো কিছু জেনে নিই।
প্রথম ব্যাটেল রয়েল গেমটির শেষ খবর
গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যানারে গেমটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত ৩০ এপ্রিল। অ্যানিহিলেশন কমিউনিটি ৩ দিন আগে গুগল প্লে স্টোরে গেমটি সাবমিটও করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গুগল থেকে জানানো হয়, গেমটি প্রকাশে আরো দেরি হবে। সুতরাং মাল্টিপ্লেয়ার ভিডিও গেম প্রিয়দের গেমটি খেলার জন্য বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
অ্যানিহিলেশন গেমের পটভূমি
গেমটির গল্প মূলত বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর। সময় ২০৩০ সাল। বাংলাদেশের সাহসী সৈনিকরা একত্রে আন্দোলন গড়ে তুলছে ‘কাউন্সিল’ নামের একটি গুপ্ত সংগঠনের বিরুদ্ধে। বহিঃবিশ্ব সংক্রান্ত কিছু অদ্ভূত ঘটনাকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে পারে ঘটনা শুধু কাউন্সিলের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়। এর ভেতরে রয়েছে ভয়ঙ্কর এক বহুজাগতিক ধ্বংসের বীজ।
অতঃপর চূড়ান্তভাবে ঢাকা শহরে এলিয়েনদের অনুপ্রবেশকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হতে থাকে কাহিনী। মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সম্পন্ন এই এলিয়েনরা পারস্পরিক সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিতে থাকে শহরবাসীকে। মানুষ ক্রমশ এগিয়ে যায় গৃহযুদ্ধের দিকে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সাহসী সৈনিকরা এলিয়েনদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। নেপথ্যে থাকা এলিয়েনদের পরিচালনাকারী অদৃশ্য চরিত্র, একজন গেম ভক্ত হিসেবে আপনার রোমাঞ্চের খোরাক যোগাবে।
সব মিলিয়ে গেমটি করোনা পরবর্তী পৃথিবীর সম্ভাব্য সব রকম ভয়াবহতা তুলে ধরবে গেমারদের সামনে।
গেমপ্লের ফিচারসমূহ
ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার এই গেমটিতে মোট ৮টি চরিত্র থেকে আপনার পছন্দ মত একজন ফাইটার বাছাই করতে পারবেন সরাসরি এলিয়েনদের সাথে লড়াই করার জন্য। প্রত্যেক হিরোকে ক্রমান্বয়ে লড়তে হবে ৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে। এই ৮টি চরিত্রের মাঝেই প্রধান হিসেবে থাকছে সালমান শাহ চরিত্রটি। ইতিমধ্যে অবশ্যই আপনি গেম ট্রেইলার দেখে একটি বায়োনিক মানুষ বা রোবট চরিত্রের সাথে প্রিয় নায়কের সাদৃশ্যতা ধরতে পেরেছেন। রোবটটির চেহারা, গলার লকেট, পরণের পোশাক, চোখের গ্লাস, চুলের এবং হাটার স্টাইল প্রভৃতির সাথে অকপটেই সালমান শাহের ভক্তরা মিল খুঁজে পেয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহর সহ কিছু গ্রাম্য এলাকা ও আন্ডারগ্রাউন্ড দেখতে পাবেন। প্রতিটি ইভেন্টের জন্য দেখানো কাহিনীগুলোর মাধ্যমে পরবর্তীতে আপনি গেম খেলায় উৎসাহিত হবেন।
গেমটির একাধিক সিজন প্রকাশ হবে। প্রথমটা সিজন জিরো নামে আপনার নিকট পুরো প্লটটা তুলে ধরবে। ৮টি চরিত্রের প্রত্যেকের-ই থাকবে কিছু না কিছু ভালো এবং দুর্বল দিক। উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র, হিরোদের সাথে গল্পের সম্পর্ক সব কিছু বিস্তারিত জানতে পারবেন প্রাথমিক গেমিং মুডগুলোর সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে। ফার্স্ট পার্সন শ্যুটার হিসেবে যেহেতু আপনি একজন হিরোকে বাছাই করবেন, তাই আপনার প্রতিটি সিন্ধান্তের ওপর নির্ভর করে এগোতে থাকবে গেমের কাহিনীসূত্র।
সিজন ওয়ান এ আপনাকে সম্মুখীন হতে হবে এলিয়েনদের সাথে সংঘর্ষের। সিজন জিরোতে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী আপনি এখানে ব্যবহার করতে পারবেন মারণাত্মক অস্ত্র, লোকেশন ম্যাপ, প্রয়োজনীয় স্কিল।
যাই হোক, গেমটি বাংলাদেশের এলাকা নির্ভর হলেও আপনি গেমটিকে বাংলা ভাষায় পাচ্ছেন না। এর মূল কারণ হলো, নির্মাতারা গেমটিকে বিশ্বব্যাপী বাজারজাত করার উদ্দেশ্য নিয়েই বানিয়েছে। আপনি বাংলা ভাষায় গেমটির ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার পেতে পারেন। কিন্তু গেমের চরিত্রগুলো এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কণ্ঠগুলো সব গতানুগতিকভাবে ইংরেজিতেই কথা বলবে।
গেমটির খেলোয়ার এবং ডেভেলপারদের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে পুরো গেমপ্লে এখনো উন্নত করা হচ্ছে, সংযোজিত হচ্ছে নতুন ফিচার। প্রতিযোগিতামূলক এই গেমটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। গেমটিকে পরিপূর্ণ ভাবে সব রকম টেকনিক্যাল সমস্যা মুক্ত করে বাজারে ছাড়ার চিন্তা ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের।
আরও পড়ুন: ঈদে আসছে স্লিম এবং ট্রেন্ডি রিয়েলমি ৮, সি২৫ এবং গেম প্রো কিট
ইন্টারনেট কানেকশনের সাথে লাইভ গেমটি খেলায় আপনার আনন্দ আরো দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিবে।
ডেক্সটপ কম্পিউটার ছাড়াও আপনি অ্যানিহিলেশন গেমটি খেলতে পারবেন স্টিম, প্লেস্টেশন কন্সোল্স, এক্সবক্স, অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ডিভাইসগুলোতে। অবশ্য প্লেস্টেশন, এবং এক্সবক্সে গেমটির সহজলভ্যতা নির্ভর করছে গেমারদের চাহিদার ওপর। চাহিদা বাড়লে ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট অবশ্য দু’টি প্ল্যাটফর্মের জন্যই গেমটি প্রকাশ করবে।
গেমটির নেপথ্যে যারা রয়েছেন
গেমটির প্রধান ডেভেলপার সিয়াম হাসান উদয়। তিনি বর্তমানে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এ সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রিতে পড়ছেন। এর আগে তিনি রাইজআপ ল্যাব্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের গেম ডেভেলপার ছিলেন।
গেমটির ফাইন্যান্স এবং মার্কেটিং ডিরেক্টর শাদমান সিয়ান। গেম ম্যানেজমেন্টে আছেন ফারুক ইমরান। অ্যানিহিলেশনের থ্রিডি ও লেয়ার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন নাহিদ উল কবির। আর প্রোগ্রামার হিসেবে আছেন মিসবাহ হাবিব।
গেমটি বাংলাদেশের গেমারদের নিকট চূড়ান্তভাবে উন্মুক্ত হবে সহকারী প্রতিষ্ঠান ক্রাইসিস এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যানারে।
গেম শিল্পে অ্যানিহিলেশনের সম্ভাবনা
টিজার এবং ট্রেইলার বের হবার পর পরই গেমটি অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। অনেকেই দাবী করেছেন যে, গেমটি দুর্বোধ্য, গেমপ্লে নিম্নমানের। গেমপ্লে থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবেশটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ট্রেইলারে। চরিত্র ও স্কিলগুলোর আধিক্য নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুন: বাজারে আসছে রিয়েলমি নারজো ৩০এ, শুরু হচ্ছে গেমিং চ্যাম্পিয়নশিপ
কিন্তু সবকিছুর ওপরে বাংলাদেশ এখনো এই শিল্পে হামাগুড়ি দিয়ে এগোচ্ছে। সে দিক থেকে ভাবলে, এরকম উচ্চ গ্রাফিক্স কোয়ালিটি সম্পন্ন গেম দেশের জন্য এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। ২০০২ সালে ঢাকা রেসিং, ২০০৪ সালে অগ্নিশিখা, ২০১১ সালে রেড ক্লাউড-৭১, ২০১২ সালে লিবারেশন-৭১, এভাবে গেমিংয়ের জগতে বাংলাদেশের প্রাথমিক যাত্রা অব্যাহত থাকে। সে সময় থেকে এখন অ্যানিহিলেশনের আবির্ভাবে নিমেষেই স্বীকার করা যায় যে, বাংলাদেশে গেম ডেভেলপমেন্ট সঠিক দিকেই এগোচ্ছে। এখন এই গেমটিকে টেক্কা দিতে হচ্ছে কল অফ ডিউটি, ফ্রি ফায়ার-এর মত জনপ্রিয় গেমগুলোকে। এভাবে চলতে থাকলে একদিন বাংলাদেশের গেমগুলো বিশ্বমানের প্রথম সাড়িতে অবস্থান করবে বলে আশা করা যায়। সে সূত্রে অ্যানিহিলেশনকে বিশ্বমানের গেমের মাইলস্টোনের অগ্রদূত বলা যেতে পারে। নিঃসন্দেহে তা বাংলাদেশে গেম শিল্পে আরো নতুনত্ব আনার পথিকৃৎ হয়ে থাকবে।
শেষাংশ
বাংলাদেশের গেম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ না হলেও অ্যানিহিলেশন অগ্রদূত হিসেবে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে। ফলশ্রুতিতে দেশের সফ্টওয়্যার নিয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পাবে পেশাগতভাবে অনুশীলনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।
আরও পড়ুন: অবরুদ্ধ সময়ে কিশোর-কিশোরীদের জন্য ফ্রি অনলাইন গেমস
শুধু তাই নয়, গেম শিল্পে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে তাদের দেশের বাইরে যেতে হবে না। বরং গেমের সমৃদ্ধশালী গ্রাহকদের সেবা সুনিশ্চিত করতে নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মাধ্যমে সুযোগ বাড়বে নতুন কর্মসংস্থানের। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব মানচিত্রে গেম ডেভেলপার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিজের জায়গা করে নিতে পারবে।