বিশেষ-সংবাদ
করোনায় সংকটে খুলনার চিংড়ি চাষিরা
হিমায়িত চিংড়ি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত। অথচ উচ্চ মূল্যে চিংড়ির পোনা ক্রয়, মাছের খাবারের মূল্য বৃদ্ধি ও চিংড়ির দাম অর্ধেকে নেমে যাওয়ায় খুলনার চিংড়ি চাষিরা মহাসংকটে পড়েছেন।
ইতোমধ্যে চাষিদের লোকসান পুষিয়ে নিতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। করোনার প্রথম কয়েক মাস চিংড়ি রপ্তানিতে ভাটা পড়লেও সেটি এখন কেটে গেছে।
আরও পড়ুন: খুলনাঞ্চলে হিমায়িত চিংড়ির আন্তর্জাতিক বাজার পরিধি কমছে
মৎস্য কর্মকর্তা, হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ও চাষিরা জানান, দেশের সবচেয়ে বেশি খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষ হয়। ঘের মালিকরা চাষকৃত চিংড়ি আড়তগুলোতে সরবরাহ করেন। হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় মৎস্য আড়তদারদের কাছ থেকে বাগদা অথবা গলদা চিংড়ি সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রপ্তানি করে। কিন্তু করোনার কারণে চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো আড়তগুলো থেকে চিংড়ি সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়। ফলে পাইকারি বাজারে মাছের দরপতন হয়। সেই প্রভাব পড়ে ঘের ব্যবসায়ীদের ওপর।
খুলনা অঞ্চলের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ পরিদর্শক তৌফিক মাহমুদ বলেন, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে খুলনা অঞ্চল থেকে ২৯ হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানি হয়েছে। যার মূল্য দুই হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ২১ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন মাছ। যার মূল্য এক হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। করোনার মধ্যেই চলতি অর্থবছরের সাত মাসে রপ্তানি খুবই ভালো।
খুলনায় নদী দখল করে ইটভাটার রমরমা ব্যবসা
খুলনায় নদী দখল করে ইটভাটার রমরমা ব্যবসা চলছে। দখলকারীরা ক্ষমতাসীন হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তেমন ভূমিকা নিতে পারছেন না। তবে নদী দখলের পরিমাণ ও কারা দখলে আছে সেই তালিকা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী খুলনার চারটি নদীতে ২৮টি ইট ভাটা দখল করে আছে।
তথ্য অনুযায়ী, ভদ্র নদীর বাম ও ডান তীরে, হরি নদী, আপার শৈলমারী নদী এবং আতাই নদীর বাম তীর সংলগ্ন ৫ হাজার ৪৩৩ মিটার দখল করে আছে ২৮টি ইটভাটা।
আরও পড়ুন: লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা: পাইকগাছায় স্থানীয়দের নাভিশ্বাস
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া, গুটুদিয়া, রুদাঘড়া ইউনিয়ন, তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়ন, রূপসা উপজেলার আইচগাতি ইউনিয়ন এবং দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নে এসব নদী দখল করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কেপিবি ব্রিকস, জেবি-১ ব্রিকস, স্টোন ব্রিকস, এসকেএসব্রিকস, বিবিসি ব্রিকস, এমআরডি ব্রিকস, কেবি ব্রিকস, কেআরবি ব্রিকস, স্টার ব্রিকস, এফএমভি ব্রিকস, এএলএমবি ব্রিকস, মেরী ব্রিকস, লুইন ব্রিকস, এমএসব্রিকস, এনএনব্রিকস, জেসি ব্রিকস, রাবেয়া ব্রিকস, কেবিএম ব্রিকস, কেবিসি ব্রিকস, এবিসি ব্রিকস, রাজ ব্রিকস, সান ব্রিকস।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের প্রতিবাদ
খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, ইটভাটার কারণে নদী বন্ধ হচ্ছে না। ভবদহ নদীতে জোয়ার-ভাটা কমে অত্র এলাকার নদী বন্ধ হচ্ছে।
তিনি জানান, অনেক ব্যবসায়ী বন্দোবস্ত করা জমির ওপর ব্যবসা করে। তবে অনেকেই হয়ত নদী দখল করে ব্যবসা করছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ৬টি অবৈধ ইটভাটা ভেঙে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, খাস জমি দখল করে কেউ ব্যবসা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। পাশাপাশি বন্দোবস্ত করা জমিতে ব্যবসার কারণেও যদি নদীর ক্ষতি হয়, সেক্ষেত্রে প্রশাসনের উচিত ব্যবস্থা নেয়া।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ইটভাটার ব্যবসার জন্য নদীর মধ্যে যারা দখল করেছে তাদের তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকা চলমান। বিষয়টি জেলা প্রশাসককেও জানানো হয়েছে। যেহেতু নদী খাস জমি তাই আমরা ইট ভাটা মালিকদের নোটিশ করতে পারি না। তবে জেলা প্রশাসক এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটে অবৈধ ইটভাটাকে লাখ টাকা জরিমানা
পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক সাইফুর রহমান খান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কাছে লিখিত আকারে নদী দখল করে যারা ইটভাটা করেছে তাদের তালিকা চেয়েছি। এখনও এটা হাতে পাইনি। আমরা মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ইট ভাটার মালিকদের শর্ত ভঙ্গের কারণে লাইসেন্স বাতিল করে দিতে পারি।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে অবৈধ ইটভাটা সাতদিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘ইটভাটার বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম চলছে। একাধিক ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হয়েছে। যারা নদী দখল করে ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে সরকার
করোনাভাইরাসের উদ্বেগজনক সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে সপ্তাহের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) জারি করা ১৮ দফা নির্দেশনাগুলো কার্যকর করার লক্ষ্যে কঠোর অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত নিযেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৪৬৯ শনাক্ত এবং এর আগে টানা কয়েকদিন সংক্রমণ ৫ হাজারের বেশি হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইউএনবিকে জানিয়েছন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানে ৫০ শতাংশ জনবল দিয়ে অফিস কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪৬৯ শনাক্ত, মৃত্যু ৫৯
তিনি বলেন, আমরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা বুধবার থেকেই বাস্তবায়ন শুরু করেছি। বৃহস্পতিবার থেকে অন্যান্য সকল মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দেশনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি ডিউটি রোস্টার করে দিবে। অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারী তিনদিন অফিসে এসে কাজ করবেন এবং দুই দিন বাসায় থেকে কাজ করবেন। বাকিরাও দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এই নিয়মে কাজ করবেন।
গর্ভবতী নারী, ৫৫ বছরের বেশি বয়স, অসুস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা আছেন তারা বাসা থেকে অনলাইনে কাজ করবেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এছাড়াও বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান এবং অফিসগুলোতে ৫০ শতাংশ কর্মী অফিসে এসে এবং বাকিরা অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়েও আমরা মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করছি। অপ্রয়োজনে কেউ যাতে রাত ১০টার পর বাইরে না যায়, সেটি আমরা নিশ্চিত করব। এ বিষয়ে আমাদের পুলিশ প্রশাসন কাজ করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুই সপ্তাহ পর্যন্ত আমরা এ সিদ্ধান্তগুলো পালন করব এবং ১২ এপ্রিলের পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানায়, সোমবার ১৮ দফা নির্দেশনা জারির পর করোনার সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারের দেয়া নির্দেশনাগুলো জনসাধারণ ও সংশ্লিষ্টদের মেনে চলতে কর্ম-পরিকল্পনা তৈরি করেছে পুলিশ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ইউএনবিকে বলেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে এবং পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনা: সিলেটে ১১টি বিধি-নিষেধ জারি করল জেলা প্রশাসন
এছাড়াও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, স্বাস্থ্য নির্দেশনা বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখার জন্য প্রশাসন সব কিছু করবে।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে দেশে কোন হাসপাতালেই রোগী রাখার জায়গা থাকবে না। এজন্য করোনা বৃদ্ধি ঠেকাতে এখনই দলমত নির্বিশেষে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ১৮ দফা নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়নসহ সকল স্থানে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে না পারলে আগামীতে এই প্রকোপ ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনা: অনির্দিষ্টকালের জন্য মিরপুর ও রংপুর চিড়িয়াখানা বন্ধ
পরিবহনে বিধিনিষেধ
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ইউএনবিকে বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে বুধবার থেকেই ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘৫০ শতাংশ টিকিটের মধ্যে অর্ধেক বিক্রি হবে অনলাইনে এবং বাকি অর্ধেক বিক্রি হবে স্টেশন থেকে। আমরা এর আগেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন পরিচালনা করেছি। এবারও সরকারের নির্দেশনা শতভাগ নিশ্চিত করতে কাজ শুরু করেছি । স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আমরা কোন যাত্রী পরিহন করব না । প্রতিটি ট্রেন ও স্টেশনে স্বাস্থ্যবিধি মানতে যা যা করার দরকার তাই করব।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিবস খন্দকার এনায়েত উল্লাহ ইউএনবিকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকাসহ সারা দেশে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন শুরু করেছি। প্রতিটি বাস স্প্রে করা হচ্ছে ও পরিষ্কার রাখা হচ্ছে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার ইউএনবিকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা কার্যকরের লক্ষ্যে বুধবার থেকে বিআরটিএ সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। যদি কোন বাস নির্দেশ না মানে তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে নৌ যান চলাচল করবে। নৌযানেও ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিহন করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীরা লঞ্চে উঠবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ ‘র চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় যুক্তরাজ্য ছাড়া পুরো ইউরোপ ও অন্যান্য অঞ্চলের ১২টি দেশ থেকে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
১২টি দেশ হচ্ছে- আর্জেন্টিনা, বাহরাইন, ব্রাজিল, চিলি, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, পেরু, কাতার, সাউথ আফ্রিকা, তুরস্ক, উরুগুয়ে।
তিনি বলেন, ৩ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যেসব এয়ারলাইন্স এসব দেশ থেকে বাংলাদেশে নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনা করে, তারা নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে কেবল ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার আনতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে ওই যাত্রীদের সেসব দেশে ট্রানজিটের সময় অবশ্যই বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের মধ্যে থাকতে হবে।
মফিদুর রহমান বলেন, বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের জন্য ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তারা বেবিচক নির্ধারিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার অথবা নির্ধারিত হোটেলে থাকবেন। অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদেরও ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে আগত ও বাংলাদেশ ত্যাগ করবে, প্রত্যেক যাত্রীকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার নেগেটিভ সনদপত্র সাথে রাখতে হবে (যাত্রার ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা দিতে হবে)।
তিনি বলেন, বিমানবন্দর ও ফ্লাইটে সব যাত্রীকে মাস্ক পরতে হবে। এছাড়া যেসব বিমানের প্রতি সারিতে সিট তিনটি করে, সেই ফ্লাইটের মাঝের সিটের যাত্রীকে মাস্কের পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ফেসশিল্ড পরতে হবে।
তিনি জানান, সরকারের দেয়া সকল নির্দেশনা ৩০ মার্চ থেকে কার্যকর করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের সব পর্যটন জাহাজ চলাচল স্থগিত করা হয়েছে এবং কক্সবাজার ও সিলেটের সকল পর্যটন স্পট বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে, নিয়মিত যাত্রী এবং প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিস বহনকারী জাহাজগুলির চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন (ইসি) সপ্তাহের শেষ দিকে ১১ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য সকল নির্বাচন স্থগিত করেছে। জাতীয় ক্রিকেট লীগও মাঝপথে স্থগিত করা হয়েছে।
সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু
সুন্দরবনে বৃহস্পতিবার থেকে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে।
প্রতিবছরের মতো এ বছরও একই সময় পারমিট দেয়া শুরু করে বন অফিসগুলো। এজন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় পাঁচ হাজার মৌয়াল।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের তথ্য মতে, এ বছর মৌসুমের তিন মাসে ৮০০ কুইন্টাল মধু এবং ২৫০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বৃহস্পতিবার স্টেশন অফিসগুলো থেকে পাস-পারমিট দেয়া শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের শিকারি চক্র
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শরণখোলা রেঞ্জের বন থেকে ৭১১ দশমিক ৫০ কুইন্টার মধু এবং ২১৩ দশমিক ৪৫ কুইন্টাল মোম আহরণ করা হয়।
পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, সুন্দরবনে মধু কম-বেশি হওয়া অনেকটা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ঠিক থাকবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকরী কৌশলপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে: মন্ত্রী
মৌয়ালদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরুতে খলিশা ফুলের মধু আসে। এরপর আসে গারণ ফুলের। শেষ আসে কেওড়া ও ছইলা ফুলের মধু। এই তিন প্রজাতির মধুর মধ্যে সবচেয়ে দামী হচ্ছে খলিশার মধু। কিন্তু এ বছর এ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হয়নি। আর বৃষ্টি না হলে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায় বলে মধু জমে না। তাই এ বছর মধু কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন মৌয়ালরা।
মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে যাওয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বন অফিসের ঘাটে পারমিটের অপেক্ষা করছেন মৌয়ালরা। আবার এখনো নৌকা প্রস্তুতির কাজ চলছে অনেকের।
মধু ব্যবসায়ী মো. রাসেল আহমেদ জানান, তিনি এ বছর তিনটি নৌকায় দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তার আরও বেশি বিনিয়োগের ইচ্ছা ছিল এবার। কিন্তু বৃষ্টির না হওয়ায় তিনি বেশি বিনিয়োগে সাহস করেননি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত বাঘের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন
মৌয়াল মো. ইউনুচ হাওলাদার (৬৫) জানান, তার নৌকাটি প্রস্তুত করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। কাজ প্রায় শেষের পথে। তার নৌকায় ১২ জন সহযোগী রয়েছে। মৌসুমের তিন মাসে মধু আহরণ করতে গিয়ে একেকজন মৌয়ালের খরচ হয় ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।
তিনি জানান, গত বছর একেকজন সহযোগী দুই মন করে মধু পেয়েছেন ভাগে। ২৫ হাজার টাকা মন দরে তা বিক্রি করেছেন।
এসিএফ জানান, এবারে সংশ্লিষ্ট বন অফিস থেকে ১৪ দিনের পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করে মৌয়ালরা। সংরক্ষিত অভয়ারণ্য এলাকা থেকে মধু আহরণ করা যাবে না এবং কোনো মৌয়াল নিষিদ্ধ বনাঞ্চলে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিক তার পারমিট বাতিল করা হবে।
এছাড়া, পাসধারী মৌয়ালরা মধু আহরণের জন্য মৌমাছি তাড়াতে অগ্নিকুন্ড, মশাল বা অনুরূপ কোনো দাহ্য পদার্থ এবং রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করতে পারবে না। এগুলোসহ ৯টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মৌয়ালদের। এই নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে বন আইনে শাস্তিও রয়েছে।
সিরাজগঞ্জে রসুনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাঠ জুড়ে এবারও বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠে মাঠে পুরুষদের সাথে নারীরাও এখন রসুন তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শস্যভান্ডার খ্যাত এবার চলনবিলের উপজেলার চর হামকুড়িয়া, চর কুশাবাড়ী, নাদো সৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ, মাগুড়াবিনোদ, বারুহাসসহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের মাঠে বিনা চাষে রসুনের চাষ করা হয়।
আরও পড়ুন: যশোরে রসুন চাষে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের
এ প্রসঙ্গে কৃষক আব্দুর রাজ্জাক, কোরবান আলীসহ অনেকেই জানান, এ অঞ্চলে প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। ধান চাষে তেমন লাভ না হওয়ায় বিনা চাষে এই রসুন চাষাবাদে ঝুকেছে কৃষকেরা। তবে শীত মৌসুমে বিনা চাষে এ রসুন বোনা হলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে খরচ হয়ে থাকে অনেক। এবার রসুন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় সাড়ে ৭ টন রসুন উৎপাদন হবে।
উৎপাদিত রসুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতি কেজি রসুন গড়ে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার মূল্য ভালো থাকলে এ রসুন চাষে স্বাবলম্বী হবেন বলে তারা জানান।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের প্রভাবে দাম বেড়েছে আদা, রসুনের
সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছর এ উপজেলায় ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর ৪৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুন চাষাবাদ করেছে কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে।
ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলের কৃষকেরা সিংহভাগ রসুন ঘরে তুলেছে।
আরও পড়ুন: আদা-রসুনের মূল্য: পাইকারিতে সস্তা, খুচরা বাজারে চড়া
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হানিফ বলেন, ‘শীতের মৌসুমে চলনবিলের জমির পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকেরা কাঁদা মাটিতে সার ছিটানোর পর বিনা চাষে এ রসুন চাষ করে। এ রসুন বোনার পর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেয়া হয় জমি। এ কৌশল অবলম্বনে ফলন ভালো হয়ে থাকে। জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে।’
এ রসুন চাষ চলনবিলে বেশি হয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি: আইসিইউ বেড ও বিশেষজ্ঞের সঙ্কট
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলো করোনার রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গুরুতর রোগী, যাদের নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন তাদের আইসিইউ বেড পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী- রাজধানীর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ১০৮টি। তার মধ্যে খালি আছে মাত্র চারটি।
অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড রয়েছে ১৮৮টি। তারমধ্যে রোগী ভর্তি আছে ১৪৪টিতে। সেখানে আইসিইউ বেড ফাঁকা আছে ৪৪টি ।
স্বল্প আয়ের লোকেরা সরকারি হাসপাতালকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কেননা সেখানে বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় চিকিৎসার খরচ অনেক কম।
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আইসিইউ বেডের তীব্র ঘাটতির অর্থ হলো গুরুতর রোগীদের মধ্যে খুবই সামান্য একটি অংশই কেবল আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩৫৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৩৫৮ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যা দেশে করোনা শনাক্তের পর একদিনে সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জনে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩৫৮ জনের করোনা শনাক্ত, আরও ৫২ মৃত্যু
রমজানের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে
সরবরাহ সঙ্কটের কারণে রাজধানীর বাজারের শাক সবজি ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তারা।
রবিবার রাজধানীর কয়েকটি বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকায় যা এক সপ্তাহ আগে ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল এবং গত মাসে ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
এছাড়া রমজান মাসের আগে বাজারগুলিতে সয়াবিন এবং পাম তেল, মুরগী, ময়দা এবং চিনিসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
ভোক্তারা এই কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যে পবিত্র রমজান মাসে নিত্য পণ্যের বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আমুলিয়ার বাসিন্দা শরিফুল আলম বলেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় আমাকে দ্বিগুণ দামে বেশিরভাগ সবজি কিনতে হয়েছে। ‘আজ আমি এক কেজি শসা কিনেছি ৫০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ২৫ টাকা ছিল। এ ছাড়া আমি এক কেজি ব্রয়লার কিনেছি ১৭০ টাকা দিয়ে যা এক সপ্তাহ আগে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।'
আরও পড়ুন: রমজানে দরিদ্র ও দুস্থতের জন্য ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ
রাজধানীতে এক হালি লেবু ৪০-৬০ টাকায়, প্রতি কেজি করলা ৫০-৬০ টাকায়, পেঁপে ৪০ টাকা, শিম ৪০-৬০ টাকায়, ঢেঁড়স ৬০ টাকায়, পটল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শরিফুল আরও বলেন, নিত্য পণ্যের বাজারগুলিতে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের উচিত যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া অন্যথায় কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যে ও রমজান মাসে বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা সর্বদা সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত লাভ নেয়ার চেষ্টা করেন। সুতরাং, সরকারের উচিত বাজারের সঠিকভাবে নজরদারি করা এবং অভাব হওয়ার আগে পণ্যটি আমদানি করে মজুদ বাড়াতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষকেই ভোগান্তিতে পড়তে হবে।’
সারুলিয়া বাজারের মুরগির ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান খান বলেন, গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লারের দাম ব্যাপক বেড়েছে। ‘পাইকারি বাজার থেকে আমাদের চড়া দামে কিনতে হওয়ায় আজ আমরা প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। গত পাঁচ দিনে দাম ২০ টাকা বেড়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ১২০-১৩০ টাকা।’
আনিসুর আরও জানান, সরবরাহ সঙ্কটের মধ্যে ২৯ মার্চ রাতে শবে-বরাত উদযাপিত হওয়ার আগে বিক্রিও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানের আগেই খুলনায় নিত্যপণ্যের বাজার চড়া
সারুলিয়া বাজারের দোকানদার মনজুরুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেছেন, রমজান মাসের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। ‘চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এ মাসে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের দাম বেড়ে যায়। যদি সরবরাহ বেড়ে যায় তবে দাম কমবে।’
যাত্রাবাড়ীর সবজি ব্যবসায়ী সালমান ফরাজী বলেন, একই কারণে অনেক প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে।
টিসিবির তথ্য অনুসারে, এক সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১.৬১ শতাংশ এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন এবার ২.৪৪ শতাংশ বেড়েছে।
টিসিবির তথ্যে দেখা গেছে, এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৩.৮৮%, এক লিটারের বোতলজাত তেলের দাম বেড়েছে ২৮.৩৭% এবং পাঁচ লিটারের বোতল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬% বেড়েছে।
বংশাল এলাকার গ্রাহক নাসির খান জানান, ঢাকার খুচরা বাজারে এখন চাল, তেল ও মাংসের দাম অনেক বেশি। ‘আমরা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পণ্যের দাম বাড়ায় চাপে রয়েছি। বাড়ি ভাড়াসহ আমাদের সামগ্রিক ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও আয় বাড়েনি। সরকারের উচিত নিত্য পণ্যের বাজারের সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যাতে মহামারি দ্বারা সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট পরিস্থিতির মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজানে দাম বাড়াতে না পারে।
ভারতীয় পরিষদের সভাপতি মো. বাহরানে সুলতান বাহার বলেছেন, অসাধু ব্যবসায়িরা অতিরিক্ত লাভ পাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় রমজানের আগে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। সুতরাং, তাদের এই কারণে শাস্তি দেয়া উচিত। রাজধানীতে প্রতিদিন চাল, তেল ও মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অতিরঞ্জিতভাবে বেড়ে যায়। জনগণ অসাধু ব্যবসায়িদের হাতে জিম্মি।
তিনি আরও বলেছেন, এই কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে পণ্যের দাম বাড়ানো অমানবিক। সুতরাং অসাধু ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা উচিত।
টেলি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিসিএবি) আহ্বায়ক মো. মুরশিদুল হক বলেছেন, বিভিন্ন কারণে মাথাপিছু আয়ের তুলনায় বাংলাদেশে মাথাপিছু ব্যয় উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আমাদের দেশে স্বল্প আয়ের উপার্জনকারীরা তাদের আয়ের বেশিরভাগ অংশ প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার জন্য ব্যয় করছে।
যশোরাঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিটি বেগুন চাষ
বৃহত্তর যশোরাঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিটি বেগুন চাষ। লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা বিটি বেগুন চাষে ঝুঁকছে। আর কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করছে যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কৃষি সরেজমিন গবেষণা বিভাগ।
সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ অঞ্চলে বারি বিটি বেগুন-১, বারি বিটি বেগুন- ২, বারি বিটি বেগুন-৩ এবং বারি বিটি বেগুন-৪ সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। জৈব পদার্থ ও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটি এবং উঁচু জমিতে এ বেগুন সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। জমিতে সেচ প্রয়োগের পরে মাটি মালচিং করতে হয়। এরপর সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়। এ জন্য আগাছা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে আগাছা বেশি হলে নিড়ানী দিয়ে জমি আগাছামুক্ত করতে হয়। প্রয়োজনীয় নিড়ানী ও মাটি মালচিং করলে গাছের শিকড়ের বৃদ্ধি ভাল হয়।
আরও পড়ুন: বেগুন খেতের আড়ালে গাঁজা চাষ!
আবহাওয়া ও মাটির অবস্থাভেদে ৪-৬টি সেচ প্রয়োগ করতে হয়। চারা রোপনের ১২০ থেকে ২০০ দিন পর্যন্ত ফসল সংগ্রহ করা যায়। ভালেঅ ব্যবস্থাপনায় হেক্টর প্রতি ৫০-৬০ টন বেগুন উৎপাদন সম্ভব।
কৃষি গবেষকরা বলছেন, প্রচলিত বেগুনের জাতে কীটনাশক প্রয়োগের পরও ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণের কারণে ৩০ থেকে ৬০ ভাগ ফসল নষ্ট হয়। ২০১৪ সালে প্রথম মাঠপর্যায়ে বিটি বেগুন চাষাবাদ শুরু হয়। কীটনাশকের ব্যবহার কমে যাওয়ায় অন্যান্য জাতের বেগুনের তুলনায় বিটি বেগুন চাষে ছয় গুণ বেশি আয় হয়।
আরও পড়ুন: বেগুন খেলে কমে ওজন, ঝলমল করে ত্বক
গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, অধিক ফলন এবং কম কীটনাশক ব্যবহারের কারণে বিটি বেগুন চাষ করতে কৃষক অনেক বেশি আগ্রহী। অধিক ফলন ও কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন না হওয়ায় বিটি বেগুন চাষে ঝুকে পড়েছেন যশোরাঞ্চলের কৃষকরা। এই জাতের বেগুনের উৎপাদনে যেমন খরচ অনেক কম, তেমনি বাজারে এর দামও ভালো।
ফরিদপুরে ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়কে এক বছরে নিহত ৩০, পঙ্গু অর্ধশতাধিক
সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। যত দিন যাচ্ছে, বড় হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বাস, ট্রাক ওভারটেকিং আইন করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না দুর্ঘটনা। ঢাকা-খুলনা (এন সেভেন) মহাসড়কের ফরিদপুর অংশের ফরিদপুর সদর থেকে মধুখালী উপজেলার কামারখালী ব্রিজ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির পাশাপাশি পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে অনেককে।
চালক নেই: আধুনিকমানের অ্যাম্বুলেন্স অলস পড়ে আছে আড়াই বছর
একজন চালকের অভাবে হাজিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি মুমূর্ষু রোগীদের কোনো কাজেই আসছে না।