%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6
গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, নিচু এলাকা প্লাবিত
গাইবান্ধায় তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত না হলেও সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার ঘাঘট নদী এবং ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার চার উপজেলার নিচু এলাকার অন্তত ৩৫ চরে হাটু ও কোমর পানিতে ডুবে গেছে।
সোমবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে গাইবান্ধা শহরের ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজজ্জামান জানান, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, বেলকা, শ্রীপুর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, অন্তত পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে পানিতে ডুবে গেছে। অনেকেই নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই স্বজনদের বাড়িতে চলে গেছে।
তিনি বলেন, বন্যার পানিতে গাইবান্ধার তিস্তা, যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী ফুলছড়ির কঞ্জিপাড়া, উড়িয়া, ফুলছড়ি, গজারিয়াসহ অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কমতে শুরু করেছে শাবিপ্রবিতে বন্যার পানি
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। চরাঞ্চলে বন্যা শুরু হলেও জানমাল বাঁচাতে লোকজন বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছেন।
পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর নিয়ন্ত্রণের দুটি স্থানের বাঁধ ভেঙে ফেনীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
বন্যায় মাঠের ফসল, পুকুরের মাছ, ঘরবাড়িসহ এলাকার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয়রা জানায়, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর অংশের একটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে ওই ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া ও বৈরাগপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সাহায্যের আহ্বান তারকাদের
ফুলগাজী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, পানির তোড়ে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এতে আমার ইউনিয়নের চারটি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশ্রাফুর নাহার বলেন, মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের দুটি স্থানে ভাঙনের ফলে সদর ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিষয়টি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে।
পাউবোর ফেনী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, রাতে পানির প্রবাহ বেশি ছিল। সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। উজানে বৃষ্টি না হলে পানি দ্রুত নেমে যাবে।
আরও পড়ুন: কমতে শুরু করেছে শাবিপ্রবিতে বন্যার পানি
তিনি জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড ক্ষতিগ্রস্তি বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে মেরামতের ব্যবস্থা নেয়া হবে। পানি একটু কমলেই মেরামত শুরু হবে।
শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম প্রবেশপথ মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি নৌপথে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে।
রবিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিআইডব্লিউটিসি। পরে টানা ৭ ঘণ্টা পরে স্রোতের তীব্রতা কমে গেলে সোমবার ভোর ৫টার পরে ফেরি চলাচল আবার শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন: শিমুলিয়া ঘাটে দক্ষিণাঞ্চলগামী যানবাহনের চাপ
এদিকে ফেরি বন্ধ থাকায় নদী পারাপারের জন্য দুই শতাধিক ছোট-বড় যানবাহন আটকা পড়ে। ফেরি জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে অপেক্ষা করতে গিয়ে বৃষ্টির মধ্যে দুর্ভোগে পড়ে হয়েছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের।
বিআইডব্লিউটিসি জানায়, পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। সোমবার ভোর থেকে ফেরি কুঞ্জলতা, বেগম রোকেয়া, বেগম সুফিয়া কামাল, কুমিল্লা, ফরিদপুর দিয়ে রাতে আটকে থাকা যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।
এই নৌপথে এখন মোট পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে।
আরও পড়ুন: শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে নৌযান বন্ধ অব্যাহত
উল্লেখ্য, শনিবার গভীর রাতে নৌপথটির শরীয়তপুরের জাজিরা টার্নিংয়ে যাত্রীবাহী বেগম রোকেয়া ও বেগম সুফিয়া কামালের মুখোমিুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়। এছাড়া পদ্মায় ছিটকে পরে নিখোঁজ পিকাপ ভ্যান চালক শামীমের খোঁজ এখনো মিলেনি। এই ঘটনার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিসি। ফেরি দুটির দায়িত্বরত জুনিয়র মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা: উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার ১
২০০০ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক জঙ্গীকে শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার শেখ মো. এনামুল হক গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বাসিন্দা। তিনি কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব সদরদপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, একটি অভিযানের সময় শেখ মো. এনামুল হককে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, আদালতের রায় ঘোষণার পর থেকেই এনামুল হক পলাতক ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফুর রহমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ এবং সেখানে ২২ জুলাই এক সমাবেশে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেয়ার কথা ছিল।
এছাড়া ২০০০ সালের ২৩ জুলাই কোটালীপাড়া হেলিপ্যাডের কাছে সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞ স্কোয়াড ৪০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যারচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে শেখ মো. এনামুল হকও একজন।
মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলের বন্যার ভয়াবহতা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী
বন্যার ভয়াবহতা ও পানিবন্দি মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি ও দুর্ভোগ লাঘবে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করতে মঙ্গলবার সিলেট ও নেত্রকোণাসহ বন্যা কবলিত উত্তরাঞ্চল পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। পথে তিনি হেলিকপ্টার নিচে নামিয়ে নেত্রকোণা জেলার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।’
প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা হেলিকপ্টারটি সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলেও জানান তিনি।
সিলেট আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপ দেখতে আসবেন।’
নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট: অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা
মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ)কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যকারী ভারতের রাজনীতিবিদ ও বিজেপির বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে পোস্ট দেয়ার ঘটনায় নড়াইল সদরের মির্জাপুর আদর্শ কলেজের অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হচ্ছে। রবিবার এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা গেছে, মির্জাপুর আদর্শ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় গত তিন দিন আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে মন্তব্য করেন, “প্রনাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রী রাম”।
শনিবার সকালে রাহুল কলেজে আসার পর তার বন্ধুরা এ পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও সে তা করেনি। তখন ছাত্ররা বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের কাছে নালিশ জানায়। একপর্যায়ে অধ্যক্ষ কলেজের অন্যান্য শিক্ষকদের ডেকে এনে রাহুলকে স্থানীয় বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েক’শ ছাত্র ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে কলেজ ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিকাল ৪টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র-জনতা কলেজের গ্যারেজে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় একজন কলেজ শিক্ষকসহ ১০ জন ছাত্র-জনতা ও ২ পুলিশ সামান্য আহত হয়। পরে পুলিশ সুপার এবং ডিসি আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় অভিযুক্ত রাহুলকে পুলিশ আটক করে।
আরও পড়ুন: মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যে তীব্র নিন্দা
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পরদিন রবিবার বেলা ১১টার দিকে মির্জাপুর কলেজের হলরুমে নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি স্থানীয়দের সঙ্গে এক বৈঠকে দোষীর শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলেজ বন্ধ এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য এক শিক্ষককে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রিয়াজুল ইসলাম, মির্জাপুর কলেজের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্ত্তী, নতুন দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তার হোসেন টিংকু, সদর থানার ওসি শওকত কবির, স্থানীয় বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত ফকির প্রমুখ।
সদর থানার ওসি শওকত কবীর জানান, এ ঘটনায় এলাকায় শান্তি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। মামলা লেখার কাজ চলছে।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আক্তার হোসেন টিংকু বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং রেজুলেশনের মাধ্যমে আমাকে দায়িত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: ভারতে মুসলমানদের ব্যাপক বিক্ষোভ
মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: সারাদেশে বিক্ষোভ-মিছিল
মা-বাবার খোঁজে রনির রাবারের নৌকায় যাত্রা!
চারিদিকে বন্যা। সেই সঙ্গে নেই বিদ্যুৎ। মা-বাবার সঙ্গে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে না পেরে ঢাকায় জরুরি কাজ ফেলে রাবারের নৌকা কিনে সিলেটে আসেন তিনি। শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
রনি তালুকদার (৩০) নামের ওই যুবক ছাতক পৌরসভার মণ্ডলীভোগ গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, লাইফ জ্যাকেটসহ জীবন রক্ষাকারী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে গুগল ম্যাপ দেখে ছাতক শহরের উদ্দেশে তিনি সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানা এলাকা থেকে রওনা দেন। রাবারের নৌকা নিয়ে বন্যার পানিতে নেমে গন্তব্যে ছুটে চলেন রনি। একসময় পানির স্রোতে রাবারের নৌকাটি এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করলে তখন ভীত হয়ে পড়েন তিনি। দু হাতে বৈঠা নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা চালিয়ে বিপদের দিকে এগিয়ে যান তিনি। মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা রনি তালুকদারের আকুতির কথা শুনে মধ্যপথে ইঞ্জিন নৌকা থামিয়ে তাকে উদ্ধার করলেন জালালাবাদে ত্রাণ বিতরণে যাওয়া একদল লোক।
আরও জানা যায়, রনি তালুকদার প্রবাসে যাওয়ার জন্য জরুরি কাজে ঢাকায় যান গত সপ্তাহে। বন্যার পানি বাড়ার পর প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে খোঁজ রাখছিলেন পরিবারের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষবার তার মোবাইল ফোনে কথা হয়। এরপর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যার পানি কমছে, খাবার ও পানির সংকট
বিপদ থেকে বেঁচে যাওয়ার পর রবিবার রনি তালুকদার বলেন, ‘আমার পরিবারের কোনও খোঁজ পাইনি এখনও। তবে যতটুকু ধারণা করছি,তারা নিরাপদে আছে। এখন তাদের খোঁজে ট্রাকে করে ছাতকে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন,‘শেষ যখন কথা হয় তখন মা জানান,বাড়ির দোতলা পর্যন্ত পানি উঠেছে। পানি আরও বাড়ছে। কোনও উপায় না পেয়ে ঢাকা থেকে সাত হাজার টাকা দিয়ে নৌকা কিনে সিলেটে চলে আসি এবং ইঞ্জিন নৌকার খোঁজ করি। কিন্তু কেউ যেতে চায়নি। আবার কেউ যেতে চাইলে ৪০-৬০ হাজার টাকা ভাড়া চায়। তাই জীবনের ঝুঁকি থাকার পরেও পরিবারের জন্য পানিতে নেমে পড়ি।’
তিনি আরও জানান,গুগল ম্যাপ দেখে জানতে পারেন সদর উপজেলা থেকে পানিপথে ছাতকের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। এরপর যাত্রা শুরু করেন।
রনি তালুকদারকে উদ্ধারকারীদের একজন সিলেটের মদন মোহন কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবুল কাশেম বলেন,‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম,যুবকটি এমনিতেই বন্যার পানিতে নেমেছেন। পরে তার আকুতির পর তাকে উদ্ধার করি। সারাদিন তাকে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করে শনিবার রাতে তাকে সিলেটে নামিয়ে দিই।’
তিনি জানান,রনি তালুকদার আমাদের নৌকায় উঠে কিছুক্ষণ পর অঝোরে কাঁদতে থাকেন। পরিবারের প্রতি ভালোবাসার কারণে আবেগের বশে তিনি রওনা দিয়েছিলেন। আমাদের নৌকায় ওঠার পর তার বোধোদয় হয়েছে,এটা ছিল অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুযাত্রা।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের সাহায্যের আহ্বান তারকাদের
ভয়াবহ বন্যায় বন্দি সিলেটবাসী
রাত ৮টার পর যা যা খোলা থাকবে
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে আগামীকাল সোমবার থেকে রাত ৮টার পর সারাদেশে দোকান, বিপণি-বিতান, মার্কেট ও মুদি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রবিবার বিকালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
তবে আইন অনুযায়ী কোন কোন প্রতিষ্ঠান এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে তা তুলে ধরেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. এহছানে এলাহী।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- সোমবার থেকে রাত ৮টার পর ডক, জেটি, স্টেশন অথবা বিমান বন্দর এবং পরিবহন সার্ভিস টার্মিনাল অফিস, সবজি, মাংস, মাছ, দুগ্ধ জাতীয় সামগ্রী, রুটি, পেস্ট্রি, মিষ্টি এবং ফুল বিক্রির দোকান, ওষুধ, অপারেশন সরঞ্জাম, ব্যান্ডেজ অথবা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান, দাফন ও অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান, তামাক, সিগারেট, পান-বিড়ি, বরফ, খবরের কাগজ, সাময়িকী বিক্রির দোকান এবং দোকানে বসে খাওয়ার (হালকা) নাশতা বিক্রির খুচরা দোকান, পেট্রোল বিক্রির জন্য পেট্রোল পাম্প এবং মেরামত কারখানা নয় এমন মোটর গাড়ির সার্ভিস স্টেশন, নাপিত ও কেশ প্রসাধনীর দোকান, যে কোন ময়লা নিষ্কাশন অথবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, যে কোন শিল্প, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান যা জনগণকে শক্তি আলো-অথবা পানি সরবরাহ করে, ক্লাব, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খাবার দোকান, সিনেমা অথবা থিয়েটার খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: সোমবার থেকে রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ থাকবে: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
সামাজিক দূরত্ব: কাঁচাবাজারের সময় বাড়ানোর দাবি বিএইচআরসি’র
দুর্ভোগ লাঘবে করা সেতুতেই ভোগান্তি বাড়ল!
দুর্ভোগ লাঘবে করা সেতুতেই ভোগান্তি বাড়ল টাঙ্গাইল সদরের বেড়াডোমাবাসীর। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ওই এলাকার লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুটি মাঝখান দিয়ে দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
গত সপ্তাহে সেতুটির ওপরের অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর গাফিলতিতে সেতুটি নির্মাণ শেষ হওয়ার আগেই দেবে গেছে। এর ফলে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়ল বলে জানিয়েছেন তারা।
টাঙ্গাইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকার লৌহজং নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করছে। আট মিটার প্রশস্ত ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ঈদের সকালে বজ্রপাতে টাঙ্গাইলে ৩ কিশোরের মৃত্যু
২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ব্রিকস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড ও দ্য নির্মিত নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান বলেন, এই সেতুটির নির্মাণ কাজ অন্যজন পেয়েছিলেন। স্থানীয় এমপি তার কাছ থেকে প্রভাব খাটিয়ে কাজটি হাতিয়ে নেয়। পরে তার কর্মী আমিরুলসহ তার অনুসারীদের কাজটি দিয়েছে।
তিনি বলেন, যারা কখনো সেতু নির্মাণ করা দেখেই নাই তারা সেতু নির্মাণ করতে এসেছে। এটা দুঃখজনক। নদীতে তেমন পানি ও স্রোত না থাকলেও সেতুটি দেবে গেছে। সঠিক পদ্ধতিতে মান সম্মত সেতু নির্মাণ করার দাবি জানালেও তারা সব সময় এমপির দোহাই ও ক্ষমতা দেখিয়েছে।
সরকারের অর্থের অপচয় করার জন্য ঠিকাদারদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে পুলিশের গাড়িতে হামলা, বিএনপির ৪৯ নেতাকর্মী জেলহাজতে
৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোনো কথাই শুনে না। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেল।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম বলেন, তারা দু’জনই ঢাকা থেকে কাজ করছেন। তিনি তাদের পক্ষে কথা বললেও তিনি আসলে ওই প্রতিষ্ঠানের কেউ নন; এটা প্রমাণ করতেও আগ্রহী তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে কোনো কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
চট্টগ্রামে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসকারী ১৮৫ পরিবার উচ্ছেদ
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
রবিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া দিনভর চালানো অভিযানে ১৮৫টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া মোট ৩০০টি বসতঘর ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্ব ফিরোজশাহ ১ নম্বর ঝিল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে গঠিত টিম।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানী ঠেকাতে খোলা হল ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র
উচ্ছেদ কাজে জেলা প্রশাসনের পক্ষে সমন্বয় করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। প্রথম দিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ১৮৫টি ঘর উচ্ছেদ করেছি। উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ও বিজয় নগর এলাকায় টানা বৃষ্টির কারণে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় চারজন নিহত হন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে নিহত ৪