%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6
ক্রমেই কমছে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্ত হয়েছে আরও ৩২৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯৭ জনে। দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৪৮ হাজার ৪৭১ জনে পৌঁছেছে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৩৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এইদিন শনাক্তের হার এক দশমিক ৯৭ শতাংশ।
দেশে মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৮২৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৭০ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
বিশ্ব পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ কোটি ৯৫ লাখ ছাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ কোটি ৯৫ লাখ ১৬ হাজার ৬২৩ জনে ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৬০ লাখ ১৩ হাজার ৮৭৩ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা সাত কোটি ৯৩ লাখ ৬৯ হাজার সাত জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৯ লাখ ৬১ হাজার ৮৪৩ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট চার কোটি ২৯ লাখ ৭১ হাজার ৩০৪ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার ২১০ জনে।
এদিকে, ব্রাজিলে এই পর্যন্ত দুই কোটি ৯১ লাখ ৫২ হাজার ৩১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন ছয় লাখ ৫৩ হাজার ১৩৪ জন।
গোয়ালন্দে দা দিয়ে কুপিয়ে যুবকের হাত বিচ্ছিন্ন, গ্রেপ্তার ২
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রিয়াজ শেখ (২৫) নামে এক যুবককে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্প কোম্পানীর অধিনায়ক, পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী রিয়াজ শেখ দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সোরাপ মণ্ডল পাড়ার মো. বাবু শেখের ছেলে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. হুমায়ুন শেখ (১৮) ও মো. ফরহাদ শেখ (২৫)। হুমায়ুন গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া শামসু মাস্টার পাড়ার হাশেম শেখ এর ছেলে ও ফরহাদ একই গ্রামের মো. সালেক শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
র্যাব জানায়, গত রবিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে প্রেমঘটিত কারণে গোয়ালন্দের উত্তর দৌলতদিয়া শামসু মাস্টার পাড়ার মো. রিয়াজ শেখ নামের এক যুবককে কুপিয়ে এবং তার হাত বিচ্ছিন্ন করে, তাকে হত্যার চেষ্টা করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। অভিযুক্ত হুমায়ুনকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এলাকা থেকে বুধবার ভোররাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগে আরেক অভিযুক্ত ফরহাদকে মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, হুমায়ুন স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা। তারা দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশন এলাকায় মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
র্যাব আরও জানায়, অভিযুক্ত হুমায়ুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তার সঙ্গে পাশের এলাকার একটি মেয়ের প্রেম ছিল। কিন্তু ভুক্তভোগী রিয়াজের কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিয়াজের হাত বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করার চেষ্টা চালায় তারা।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা!
পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম জানান, আসামি মো. হুমায়ুন শেখ বিভিন্ন অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। কয়েক বছর আগে সে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় ১৪ দিন কারাভোগ করে, বর্তমানে সে জামিনে রয়েছে বলেও জানায় র্যাব-৮।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিদের রাজবাড়ীর রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
স্থানীয় কয়েকজন জানায়, গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রিয়াজ শেখ দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের পাশে দাড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলছিল। এসময় হুমায়ুন তার সহযোগীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে করে ধারালো ডাব কাটার সোল দিয়ে কোপ দেয়। এসময় রিয়াজ বাম হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে এক কোপে কব্জির ওপর থেকে (কনুইয়ের নিচ থেকে) হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে রেললাইনের ওপর পড়ে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করে। বর্তমানে রিয়াজ সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নাটোরের লালপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
মতিঝিলের ১৫ তলা ভবনকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা
রাজধানীর মতিঝিলে ‘মডার্ন ম্যানশন’ নামের ১৫ তলা ভবনের পাঁচটি পিলারে ফাটল দেখা দেয়ায়, ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম শাখা) শাহজাহান সিকদার বলেন, বুধবার পরিদর্শন শেষে কর্তৃপক্ষ এটিকে 'ঝুঁকিপূর্ণ ভবন' ঘোষণা করে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।
আরও পড়ুন: চকবাজার অগ্নিকাণ্ড: ওয়াহেদ ম্যানশন মালিকের ২ ছেলে রিমান্ডে
তিনি আরও জানান, ভবনের দ্বিতীয় তলায় তিনটি ও তৃতীয় তলায় দুটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে।
রবিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল ভবনটি পরিদর্শন করে। তাৎক্ষণিকভাবে ভবনটি খালি করা হয়।
প্রাচীন এই ভবনটি ১৯৬২ সালে নির্মাণের অনুমোদন পায়।
আরও পড়ুন: নির্মাণে ত্রুটির কারণেই ফ্লাইওভারে ফাটল: চসিক মেয়র
বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের পিলারে ফাটল, যানবাহন চলাচল বন্ধ
দেশে ফিরলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক বুধবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন।
একজন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোমানিয়া থেকে ২৮ জন নাবিককে নিয়ে তার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
রোমানিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী জানান, নাবিকরা ইউক্রেন থেকে মলদোভা হয়ে গত ৬ মার্চ রোমানিয়ায় পৌঁছেন।
পড়ুন: আগামীকাল দেশে ফিরছেন আটকে পড়া ২৮ নাবিক
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে সম্মত বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত
পারস্পরিক স্বার্থে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই ঐকমত্য হয়।
দুবাই এক্সিভিশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই নেতা নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম দুই দেশের মধ্যে এমিরেটস ফ্লাইট পরিচালনা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৪ সমঝোতা স্মারক সই
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এখন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই লক্ষ্যে আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রচুর পরিমাণে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবিলায় সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের প্রশংসা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনিও করোনা মোকাবিলায় ভালো করেছেন।’
শেখ হাসিনা দুবাইয়ে অসাধারণ উন্নয়নের জন্য আল মাকতুমের প্রশংসা করেন।
দুবাইয়ের নেতা বাংলাদেশের উন্নয়নের কথা বললে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আরও উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়েছে।
আল মাকতুম আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
পড়ুন: মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে: শেখ হাসিনা
বৈঠকে অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ-সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৪ সমঝোতা স্মারক সই
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) মঙ্গলবার চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে।
সমঝোতা স্মারক হলো- বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সহযোগিতা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং এমিরেটস সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের (ইসিএসএসআর) মধ্যে সমঝোতা স্মারক, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এবং দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক।
পড়ুন: মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে: শেখ হাসিনা
দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও এবং দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সমঝোতা স্মারক সই হয়।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন
দুই নেতার উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত সই বিনিময় হয়।
এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে শেখ হাসিনা সোমবার পাঁচ দিনের সরকারি সফরে উপসাগরীয় দেশটিতে পৌঁছেছেন।
পড়ুন: প্রযুক্তির যুগে নতুন প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া যাবে না: প্রধানমন্ত্রী
টঙ্গীতে এএসআই স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, পুলিশ কর্মকর্তা কারাগারে
গাজীপুরের টঙ্গীতে যৌতুকের টাকার দাবিতে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় স্বামী পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। সোমবার টঙ্গী পূর্ব থানায় কর্মরত এএসআই লিজা আক্তার (৩২) তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে খুলনায় কর্মরত অভিযুক্ত এএসআই এদেল হককে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়।
লিজা টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানার লুহুরিয়া গ্রামের গফুর মিয়ার মেয়ে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা এদেল হকের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট থানার ছাটমাধাই গ্রামে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে তাদের দুজনের বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর থেকে অভিযুক্ত এদেল হক লিজার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
পড়ুন: হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী বাবরের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত হতো: পুলিশ
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এদেল হক লিজার বর্তমান কর্মস্থল টঙ্গী পূর্ব থানায় তার বাসায় এসে পুনরায় তার কাছে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয় এবং পরে এদেল হক তার গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। গত ১ মার্চ ছুটি নিয়ে স্বামীর বাড়িতে যান এবং গত শনিবার স্বামীসহ টঙ্গীতে আসেন লিজা।
পরদিন রবিবার সন্ধ্যায় টঙ্গী পূর্ব থানার পুলিশ কোয়াটারের বাসায় যৌতুকের দাবিকৃত টাকা নিয়ে লিজার সাথে তার স্বামীর ঝগড়া হয়। এসময় তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করার একপর্যায়ে রুমে থাকা ধারালো বটি দিয়ে কোপ দিলে মাথা ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে জখম হন লিজা। খবর পেয়ে অন্য পুলিশ সদস্যরা লিজাকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভার্প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ জানান, এএসআই লিজার মামলার প্রেক্ষিতে তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পড়ুন: ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
শফিউদ্দিন হত্যা: কুমিল্লা কারাগারে ২ আসামির ফাঁসি কার্যকর
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর শফিউদ্দিন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শিপন হাওলাদার এবং নাইমুল ইসলাম ইমনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় কুমিল্লা কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।
তিনি জানান, সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে শিপন হাওলাদার এবং নাইমুল ইসলাম ইমনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আরও কিছু আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার পর তাদের মরদেহ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হবে।
পড়ুন: চাচা হত্যার দায়ে ৩ ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
প্রসঙ্গত, শফিউদ্দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ছিলেন । এছাড়া তিনি স্থানীয় রেলওয়ে আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়কও ছিলেন। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মদ, জুয়া ও রেলওয়ের অবৈধ সম্পদ দখলের প্রতিবাদে শফিউদ্দিন সোচ্চার থাকার কারণে রেলওয়ের জায়গা থেকে চার দফায় অবৈধ বস্তি ও কলোনি উচ্ছেদ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এসব ঘটনার জেরে সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০০৩ সালের ১৪ জুন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার সরকারি বাসায় ঢুকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে এলাকা ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় দুই ঘাতক শিপন ও ঈমনকে ফাঁসি ও অপর সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেন।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, উচ্চ আদালতে ফাঁসির সাজা বহাল রাখা এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়েছে।
পড়ুন: গাইবান্ধায় মাদক মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মায়ের মমতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করলে অবশ্যই জনগণের সমর্থন পাওয়া যায়। জনগণ অবশ্যই সমর্থন করবে।
তিনি বলেন, ‘নারীরা শুধু নারী নয়, মা-ও। আপনারা যদি মাতৃস্নেহে দেশ পরিচালনা করেন, তাহলে জনগণ অবশ্যই আপনাদের সমর্থন করবে।’
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত দুবাই এক্সপো ২০২০-এর উইমেন প্যাভিলিয়নে আয়োজিত ‘উইমেনস ফিউচার ফর উইমেন’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের পাওয়ার প্যানেলে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দেশ পরিচালনায় জনগণের সমর্থন ও আস্থা অর্জন করেছেন এবং এটাই তার প্রধান শক্তি।
তিনি বলেন, ‘মানুষ বুঝতে পেরেছে যে আমি এখানে থাকলে, তারা অবশ্যই উপকৃত হবে।’
কিন্তু এই যাত্রা এতটা সহজ ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার বাবা, মা, তিন ভাই এবং দুই বোনের শ্বশুরসহ তার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছিল এবং শুধুমাত্র সে এবং তার ছোট বোন এই হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: প্রযুক্তির যুগে নতুন প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া যাবে না: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা স্মরণ করে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর তিনি যখন দেশে ফিরেছিলেন তখন তার পরিবারের খুনিরা এবং যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় ছিল। সুতরাং, আমার যাত্রাটা খুব মসৃণ ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বারবার গুপ্তহত্যার চেষ্টা এবং অপপ্রচারের মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আমি এগুলোকে পাত্তা দিইনি। আমি শুধু ভেবেছি আমাকে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতি ও সরকার পরিচালনায় তাকে সহযোগিতা করার জন্য শেখ হাসিনা তার পুরুষ সহকর্মীদের প্রশংসা করে বলেন, আমি অবশ্যই তাদের প্রশংসা করি। তারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন।
নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সংসদে এক অনন্য পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা ও সংসদ উপনেতা নারী।
তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর সামরিক স্বৈরশাসকরা প্রায় ২১ বছর দেশ শাসন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন তিনি সরকার গঠন করেন তখন তিনি কোথাও নারীদের খুঁজে পাননি।
এরপর তিনি নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যার মধ্যে স্নাতক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে নারীদের শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং বিচার ও পুলিশ বিভাগের মতো অন্যান্য সেক্টরের উচ্চ পদে তাদের জন্য চাকরির সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়।
সামরিক শাসনামলে নারীদের জায়গা কম ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি নারীদের জন্য সব খুলে দিয়েছি।
জাতির পিতাকে তার পরামর্শদাতা হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তার কাছ থেকে দেশ ও দেশের সমস্যা সম্পর্কে জেনেছেন।
আরও পড়ুন: ৭ মার্চ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমি তার কাছ থেকে দেশ এবং সমস্যা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পেরেছি। আমার বাবা আমার পরামর্শদাতা ছিলেন- আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি । শুধু তাই নয়, আমি (তার কাছ থেকে) মানুষ ও দেশের প্রতি সহানুভূতি এবং ভালবাসা সম্পর্কেও শিখেছি। কীভাবে দরিদ্রদের জন্য কাজ করা যায়।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির কূটনৈতিক উপদেষ্টা ড. আনোয়ার বিন মোহাম্মদ গারগাশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রতিমন্ত্রী রিম আল হাশিমি, ইউএনএফপিএর নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম, ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ড. এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা এবং কার্টিয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিরিল ভিগনেরন প্যানেলে বক্তৃতা করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে দুবাই এক্সপো ২০২০-তে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন এবং ইউএই প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে মেরিন ক্যাডেটদের ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী
ওমিক্রন বাংলাদেশকে দ্রুত হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে সহায়তা করেছে: বিশেষজ্ঞদের অভিমত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা বাংলাদেশের জন্য আর গুরুতর স্বাস্থ্য হুমকি হিসেবে দেখা নাও দিতে পারে। কারণ দেশটি ইতোমধ্যেই করোনার অত্যন্ত সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ব্যাপক বিস্তারের ফলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছে।
যদিও সারাদেশের মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে উঠেছে, সে সম্পর্কে জানার জন্য কোনো বিশ্বাসযোগ্য গবেষণা বা পর্যবেক্ষণমূলক প্রতিবেদন নেই। তবে চিকিৎসা বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভাইরাসজনিত ওমিক্রন একটি প্রাকৃতিক ভ্যাকসিনের মতো কাজ করেছে। যা দেশের বেশিরভাগ জনসংখ্যাকে সংক্রামিত করার মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।
ইউএনবির সঙ্গে কথা বলার সময় দেশের অন্যতম শীর্ষ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিজন কুমার শীল, অধ্যাপক মুজাহেরুল হক এবং ডা. বে-নাজির আহমেদ বলেছেন, ভাইরাসের যে কোনও নতুন রূপ এখনও ওমিক্রন সংক্রমণের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনকারী ব্যক্তিদের সংক্রামিত করতে পারে। তবে সম্ভবত এর ফলে গুরুতর কোনো অসুস্থতার সৃষ্টি হবে না।
তারা অবশ্য সতর্ক করে বলেছে, করোনার যে কোন ভ্যারিয়েন্টই টিকা না নেয়া ও জটিল শারীরিক অসুস্থতা থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
হার্ড ইমিউনিটি হল একটি ধারণা যা একটি মারাত্মক রোগের (ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণ) বিস্তারের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্ষম করে তোলে। দুটি উপায়ে এটি অর্জন করা যেতে পারে-স্বাভাবিকভাবে বেশিরভাগ জনসংখ্যার সংক্রমণের মাধ্যমে এবং কৃত্রিমভাবে একটি দেশের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: দেশে উচ্চ মাত্রার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রেখে যেতে পারে ওমিক্রন: প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের
উচ্চ মানের ইমিউনিটি
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. বিজন কুমার শীল বলেন, ওমিক্রন যেভাবে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে তা দেশের মানুষের মধ্যে একটি উচ্চমানের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রেখে গেছে।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমি মনে করি আগামী দিনে করোনাভাইরাস দেশে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করবে না।’
তিনি বিশ্বাস করেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ইতোমধ্যে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছে।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এটি খুব ভাল মানের হার্ড ইমিউনিটি। প্রাকৃতিক হার্ড ইমিউনিটি টিকার মাধ্যমে তৈরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার চেয়ে অনেক ভালো। আমেরিকার সিডিসিও এখন স্বীকৃতি দিচ্ছে, ওমিক্রন সংক্রমণের মাধ্যমে অর্জিত প্রাকৃতিক ইমিউনিটি দুই বা তিন ডোজ টিকা দেয়ার মতোই উপকারী।’
তিনি বলেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের কারণে শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের অনেক দেশই প্রাকৃতিক হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করতে যাচ্ছে।
বিজন কুমার শীল আরও বলেন, ‘যেহেতু ওমিক্রন সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে, খুব কম মানুষই এই ওয়েভের দ্বারা সৃষ্ট প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডির বাইরে থাকবে।’
ডা. বিজন মনে করেন বাংলাদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ইতোমধ্যেই ওমিক্রনে সংক্রামিত হয়েছে। এবং ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সুতরাং,ভবিষ্যতে নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট তীব্র জটিলতা সৃষ্টির মতো বড় কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. বে-নাজির আহমেদ বলেন, ‘ওমিক্রন প্রাকৃতিক ভ্যাকসিন হিসেবে কাজ করছে, কারণ দেশের বেশিরভাগ মানুষ এটি দ্বারা সংক্রামিত হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: ৮৮ শতাংশ করোনা রোগী ওমিক্রনে আক্রান্ত: বিএসএমএমইউ’র জরিপ
তিনি বলেন, ‘সুতরাং, আমরা ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছি।’
তিনি বলেন, নতুন স্বাভাবিক জীবন প্রভাবিত হবে না এবং মানুষের বিদ্যমান ইমিউনিটিকে ধ্বংস করতে পারে এমন নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট না এলে, মানুষ হয়ত করোনায় আর খুব বেশি ভুগবে না।
ফ্লুর মতো হতে চলেছে
ডা. বিজন আশাবাদী যে অদূর ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস ফ্লুর মতো হয়ে উঠবে, তবে এটি পৃথিবী থেকে নির্মূল হবে না।
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে যদি একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবির্ভূত হয়, তবে এটি অন্যান্য ফ্লুগুলোর মতো উপসর্গ নিয়ে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, তবে নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলো টিকা না নেয়া মানুষগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
ডা. বিজন বলেন, সারা বিশ্বে ওমিক্রন সংক্রমণের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি, করোনাকে স্থানীয় রোগে রূপান্তর শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো অস্বাভাবিক ভ্যারিয়েন্ট আবির্ভূত না হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছয় মাসের মধ্যে করোনাকে স্থানীয় রোগ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।’
গবেষণা পরিচালনা
ডা. বিজন বলেন, ওমিক্রন সংক্রমণের মাধ্যমে কতজন মানুষ প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি অর্জন করেছে তা জানতে এবং বিভিন্ন ভ্যাকসিন এবং প্রাকৃতিক সংক্রমণ দ্বারা উৎপাদিত অ্যান্টিবডিগুলোর তূলনামূলক কার্যকারিতা এবং দীর্ঘায়ু জানতে সরকারের অবিলম্বে দেশব্যাপী একটি গবেষণা পরিচালনা করা উচিত।
তিনি বলেন, এই ধরনের গবেষণা চলমান টিকাদান কর্মসূচিকে উন্নত করতে এবং টিকাগুলোর বৈজ্ঞানিক ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ওমিক্রন তরঙ্গের পরে এখন কাকে টিকা দেয়া উচিত, তা জানার জন্য বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই এখন গবেষণা পরিচালনা করছে। আমাদেরও এটা করা উচিত।’
ডা. বিজনের কথার পুনরাবৃত্তি করে ডা. বে-নাজির বলেন, কোন শহর ও জেলায় মানুষের মধ্যে অ্যান্টিবডি বেশি এবং কোথায় কম তা জানার জন্য গবেষণা করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনের নতুন উপধরন আরও বেশি সংক্রামক: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদেরও জানা উচিত কোন ধরনের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। আমরা যদি এটি জানতে পারি, যেখানকার মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, আমরা সেখানে কার্যক্রম চালাতে পারব। এটি গণটিকাদান কর্মসূচিকে নতুন করে সাজাতে সহায়তা করবে।
এছাড়া দেশের বাস্তব পরিস্থিতি জানতে এবং বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সরকারের উচিত করোনা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণার পদক্ষেপ নেয়া।
টিকার প্রয়োজনীয়তা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল) সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক মুজাহেরুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ অবশ্যই ওমিক্রনের ব্যাপক সংক্রমণের ফলে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু হার্ড ইমিউনিটি অর্জনই যথেষ্ট নয়। এখনও আমাদের শিশুসহ শতভাগ লোককে ভ্যাকসিন দিতে হবে। কারণ আমরা নিশ্চিত নই যে এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা টেকসই হবে বা ভবিষ্যতে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব হলে এটি কতটা ভাল কাজ করবে।
ডা. হক বলেন, এটা নিশ্চিত যে করোনাভাইরাস শিগগিরই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে না, কারণ এর বিভিন্ন রূপ। এমনকি এর পুরানো ভ্যারেয়েন্টগুলোও টিকে থাকবে এবং মানুষকে সংক্রামিত করতে থাকবে।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সুতরাং, আমাদের হার্ড ইমিউনিটির ওপর নির্ভর করা উচিত নয়। বরং ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আমাদের টিকার ওপর নির্ভর করা উচিত।’
তিনি বলেন, এমনকি কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে ভাইরাস সংক্রমণের হার এক শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে। তবে নতুন কোনো ভাইরাসের উদ্ভব হলে তা যে কোনো সময় আরও বাড়তে পারে।
এই বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘সুতরাং, লোকেদের মাস্ক পরা এবং ভ্যাকসিন নেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মেনে চলা উচিত।’
টিকা তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিদ্যমান টিকার গুণমান উন্নত করতে গবেষণা চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন,‘আমরা অদূর ভবিষ্যতে একটি কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে পারি। যা আমাদের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আজীবন সুরক্ষা দেবে। যতক্ষণ না আমরা এই ধরনের ভ্যাকসিন পাই, ততক্ষণ আমাদের টিকাদান অভিযান চালিয়ে যেতে হবে এবং সবার জন্য বুস্টার ডোজ নিশ্চিত করতে হবে।’
ডা. বিজন বলেছেন, যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন এবং ওমিক্রনে সংক্রামিত হয়েছেন তাদের বুস্টার ডোজ প্রয়োজন নাও হতে পারে।
তার মতে, যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে যাদের জটিল রোগ আছে, তারা ছাড়া সকলের হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে পারে। কারণ ওমিক্রন আগের সব ভ্যারিয়েন্টকে অতিক্রম করেছে।